হিন্দু সম্প্রদায়ের পবিত্র উৎসব রথযাত্রা আগামীকাল শুক্রবার। ঢাকাসহ সারাদেশে জাঁকজমকপূর্ণভাবে আয়োজিত হবে এ উৎসব। এ উপলক্ষে পর্যটক ও ভক্তদের নিরাপত্তা এবং সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার বিষয়টিকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে প্রশাসন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে রথযাত্রার প্রস্তুতি ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

ঢাকার আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ (ইসকন) বুধবার রাজধানীর স্বামীবাগ আশ্রমে শ্রীশ্রী জগন্নাথদেবের রথযাত্রা মহোৎসব উপলক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। উপস্থিত ছিলেন ইসকন বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক চারু চন্দ্র দাস ব্রহ্মচারী, কোষাধ্যক্ষ জ্যোতিশ্বর গৌর দাস ব্রহ্মচারী, কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য বিমলা প্রসাদ দাস, হৃষিকেশ গৌরাঙ্গ দাস, নন্দন আচার্য্য দাস এবং ইসকনের উত্তরা আশ্রমের অধ্যক্ষ শুভ নিতাই দাসসহ অনেকে।

চারু চন্দ্র দাস ব্রহ্মচারী জানান, এবারও সারাদেশে উৎসবমুখর পরিবেশে রথযাত্রা অনুষ্ঠত হবে। ইসকনের অধীনে ১২৮টি রথযাত্রার আয়োজন করা হয়েছে। এতে লক্ষাধিক ভক্তের সমাগম আশা করা হচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। মহোৎসব সফল করতে সরকারের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, শোভাযাত্রায় পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী নিয়োজিত থাকবে। পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে তাদের মতবিনিময় হয়েছে।

উৎসব ও শোভাযাত্রায় অংশ নিতে সনাতন সম্প্রদায়সহ ভক্তদের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে চারু চন্দ্র ব্রহ্মচারী বলেন, শুক্রবার বিকেল ৩টায় রথযাত্রার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। স্বামীবাগ থেকে রথের শোভাযাত্রা শুরু হয়ে ইত্তেফাক মোড়, মতিঝিল, দৈনিক বাংলা হয়ে বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেট পার হয়ে, প্রেস ক্লাবের সামনে দিয়ে হাইকোর্টের মোড় হয়ে শহীদ মিনারের সম্মুখ সড়কের ঢাকেশ্বরী মন্দিরে গিয়ে শেষ হবে। ৯ দিন পর ৫ জুলাই একই রাস্তা দিয়ে রথ ফিরে আসবে স্বামীবাগ মন্দিরে। একে উল্টো রথযাত্রা বলা হয়।

মতবিনিময় সভায় জানানো হয়, ঢাকার এ উৎসব পৃথিবীর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রথযাত্রা উৎসব। স্বামীবাগ আশ্রমে কাল সকাল ৮টায় বিশ্ব শান্তি ও মঙ্গল কামনায় অগ্নিহোত্র যজ্ঞের মধ্য দিয়ে শুরু হবে শুভ রথযাত্রা মহোৎসব। দুপুর দেড়টায় আলোচনা সভা শেষে বিকেল ৩টায় রথের বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার উদ্বোধন করা হবে।
প্রতিবছর আষাঢ় মাসে শুক্ল পক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে শুরু হয় শ্রীশ্রী জগন্নাথদেবের রথযাত্রা। এর ৯ দিনের মাথায় হয় উল্টো রথযাত্রা।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

নারায়ণগঞ্জে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো শারদীয় দুর্গোৎসব

বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে নারায়ণগঞ্জে শেষ হয়েছে বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা।

বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) শহরের ৫নম্বর খেয়াঘাটে সন্ধ্যা থেকে প্রতিমা বিসর্জন চলে। শহরের বিভিন্ন পূজামন্ডপের প্রতিমা শীতলক্ষ্যা নদীতে বিসর্জন করা হয়। ঢাকের বাদ্য আর উলুধ্বনির সাথে প্রতিমা বিসর্জনের সাথে সাথে যেন বিদায়ের সুর বেজে ওঠে শীতলক্ষ্যার তীরে।

শহরের বিআইডব্লিউটিএ’র ৩নং ঘাটে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনের আয়োজনে ও সিটি করপোরেশনের সহযোগিতায় এবং নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সার্বিক তত্ত্বাবধানে প্রতিমা বিসর্জন দেয়ার আয়োজন করা হয়।

প্রতিমা বিসর্জনে একে একে চলে রামকৃষ্ণ মিশন, আমলাপাড়া, সাহাপাড়া, উকিলপাড়া, নিতাইগঞ্জ, টানবাজারসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত অন্যান্য মন্ডপের প্রতিমা বিসর্জন। এছাড়া শহরতলীর বিভিন্ন মন্ডপ ও উপজেলা পর্যায়ে মন্ডপগুলোর প্রতিমা কাছাকাছি নদীতে বিসর্জন দেওয়া হয়েছে।


এর আগে বিজয়া দশমী উপলক্ষে বিভিন্ন পূজামন্ডপ ও মন্দিরে চলে পূজা ও অর্চনা। হিন্দু সম্প্রদায়ের নারীরা ঢাকের তালে মাতেন সিঁদুর খেলায়। হিন্দু সম্প্রদায়ের বিশ্বাসমতে পূজনীয় দেবী দুর্গা এবার ঘোড়ায় চড়ে মর্ত্যে আসেন এবং বিজয়া দশমীতে তিনি ঘোড়ায় আসীন হয়ে স্বর্গে প্রত্যাবর্তন করেছেন।

বিসর্জন উপলক্ষে ঘাটে পরিচ্ছন্নতার পাশাপাশি সকল ব্যবস্থা আগেই সম্পন্ন করে রেখেছিল নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন। শহরের গুরুত্বপূর্ণ মোড় ও ঘাট এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার ছিল।

ট্রাক, পিকআপ, ভ্যানে করে দলে দলে প্রতিমা বিসর্জনের জন্য শীতলক্ষ্যার পাড়ে আসেন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা। বিসর্জনে পুলিশ, র‌্যাবের পাশাপাশি সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল দেখা গেছে।

শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে এবার পুরো জেলায় ২২৪টি পূজামন্ডপে দুর্গাপূজার আয়োজন করা হয়। আলোকসজ্জায় ও বাহারি কারুকার্যে সাজানো হয় প্রতিটি মন্ডপ। 

নারায়ণগঞ্জের পূজামন্ডপ পরিদর্শনে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, সচিব, বিভাগীয় কমিশনার, পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি র্যাব মহাপরিচালক, ডিসি , এসপি থেকে শুরু থেকে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ আসেন। 

মন্ডপগুলোতে ছিল বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকেও ছিল কড়া নজরদারি। কোন প্রকার বিশৃঙ্খলা ছাড়া এবার নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন পূজা মন্ডপে দুর্গোৎসবের আয়োজন শেষ হয়েছে।

নারায়ণগঞ্জ জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শিখণ সরকার শিপন বলেন, নারায়ণগঞ্জে শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশের মধ্য দিয়ে পাঁচ দিনব্যাপী এই দুর্গোৎসব দেবীর বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হচ্ছে। যা বুঝিয়ে দিয়েছে ধর্ম যার যার উৎসব সবার। এবারে পুজোয় আনন্দের কোন কমতি ছিলো না।

তিনি আরও বলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগরে এবার ২২৪টি পূজা মন্ডপে শারদীয় দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে । কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই শান্তিপূর্ণভাবে পালিত হয়েছে । এতেই বোঝা যায় নারায়ণগঞ্জ একটি সাম্প্রদায়ীক সম্প্রীতির জেলা ।

সকল উৎসব আমরা একসাথে উৎযাপন করে থাকি । শারদীয় দুর্গোৎসব শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপিত হওয়ায় জেলা ও পুলিশ প্রশাসন, স্থানীয় বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলনসহ সকল রাজনৈতিক দলসহ নারায়ণগঞ্জবাসীকে জেলা ও মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।

এসময়ে প্রতিমা বিসর্জন ঘাটে উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান, সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু, যুগ্ম আহ্বায়ক ফতেহ মোহাম্মদ রেজা রিপন, সদস্য মাসুদ রানা, ডাঃ মজিবুর রহমান, নারায়ণগঞ্জ সদর থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল হক, নারায়ণগঞ্জ জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি সাংবাদিক শংকর কুমার দে, সাধারণ সম্পাদক শিখণ সরকার শিপন, সহ- সভাপতি তিলোত্তমা দাস, মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বিষ্ণুপদ সাহা, সাধারণ সম্পাদক সুশীল দাস, সহ- সভাপতি সাংবাদিক উত্তম কুমার সাহা, জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি প্রদীপ কুমার দাশ, মহানগরের সভাপতি লিটন চন্দ্র পালসহ বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দ এবং প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নারায়ণগঞ্জে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো শারদীয় দুর্গোৎসব
  • দিনাজপুরে মেতেছে বিজয়া দশমীর সিঁদুর খেলা
  • দেবী দুর্গা শক্তি ও সাহসের মূর্ত প্রতীক: মির্জা ফখরুল 
  • আওয়ামী লীগের ঘাপটি মেরে থাকা অনুচরেরা এখনো তৎপর: মির্জা ফখরুল
  • ঢাকেশ্বরী-রমনা মন্দির পরিদর্শন বিজিবি মহাপরিচালকের
  • সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে সব রাজনৈতিক দলের সদিচ্ছা সদিচ্ছা অপরিহার্য: নিসচা
  • ‎চার দিনের ছুটিতে পুঁজিবাজার
  • ব্যাংক টানা ৪ দিন বন্ধ থাকবে, প্রয়োজনে টাকা তুলবেন কীভাবে
  • পূজার ছুটিতে খোলা থাকবে কাস্টম হাউস ও শুল্ক স্টেশন
  • চার দিনের ছুটিতে কক্সবাজার রুটে চলবে ‘ট্যুরিস্ট স্পেশাল’ ট্রেন