সাবেক সিইসি হাবিবুল আউয়াল ৩ দিনের রিমান্ডে
Published: 26th, June 2025 GMT
রাষ্ট্রদ্রোহ ও প্রহসনের নির্বাচন করার ঘটনায় শেরেবাংলা নগর থানার মামলায় সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালকে ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান রিমান্ড মঞ্জুর করে এ আদেশ দেন।
এদিন মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে কাজী হাবিবুল আউয়ালকে ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করা হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও শেরেবাংলা নগর থানার উপপরিদর্শক শামসুজ্জোহা সরকার এ আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষে রিমান্ড মঞ্জুর চেয়ে শুনানি করেন পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী।
অন্যদিকে আসামিদের রিমান্ড বাতিল ও জামিনের আবেদন করেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা। শুনানি শেষে জামিন নামঞ্জুর করে রিমান্ডের আদেশ দেন আদালত।
এর আগে গত ২৩ জুন এ মামলায় নুরুল হুদার চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। পরে বুধবার রাজধানীর মগবাজার থেকে হাবিবুল আউয়ালকে গ্রেপ্তার করে ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)।
গত ২২ জুন বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে নির্বাচন কমিশনের সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন না করে উল্টো ভয়-ভীতি দেখিয়ে জনগণের ভোট ছাড়াই নির্বাচন সম্পন্ন করার অভিযোগে মামলা করে বিএনপি। সংগঠনের জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন খান বাদী হয়ে এ মামলা করেন। পরবর্তীতে গত ২৫ জুন এ মামলায় নতুন করে রাষ্ট্রদ্রোহ, প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের ধারা যুক্ত করা হয়।
মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়েছে, ওই তিন নির্বাচনে গায়েবী মামলা, গণগ্রেপ্তার, অপহরণ, গুম খুন ও নির্যাতন চালিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের নির্বাচন প্রক্রিয়া থেকে দূরে রাখা হয়। সংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হওয়া সত্ত্বেও সংবিধান লঙ্ঘন, সরকারি কর্মচারী হয়েও অবৈধভাবে ভোটে হস্তক্ষেপ, ভয়ভীতি দেখিয়ে ভোটের কাজ সম্পন্ন করা ও জনগণের ভোট না পেলেও সংসদ সদস্য হিসেবে মিথ্যাভাবে বিজয়ী ঘোষণা করে আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ করেন নির্বাচন কমিশনারসহ অন্যান্য আসামিরা।
এ ঘটনার সাক্ষী সকল ভোট কেন্দ্র এলাকার ভোটাররা এবং ভোটারদের মধ্যে যারা ভোট প্রদান করতে বঞ্চিত হয়েছেন তারাসহ ভোট কেন্দ্রে নিয়োজিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অনেক সদস্যরা।
এছাড়া ভোট কেন্দ্রে অনেক সৎ প্রিজাইডিং অফিসার, পুলিং অফিসারসহ স্থানীয় লোকজনসহ আরো অন্যান্যরা ঘটনার সাক্ষী হবে। এছাড়া ব্যালট পেপারে যে সিল ও স্বাক্ষর রয়েছে, তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই প্রকৃতভাবে তারা ভোট দিয়েছে কিনা সে বিষয়ে উল্লেখিত ঘটনার সঠিক রহস্য তদন্তে সত্য উদঘাটিত হবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: হ ব ব ল আউয় ল
এছাড়াও পড়ুন:
নার্সদের অমর্যাদাকর অবস্থানে রাখা হয়েছে: ফরহাদ মজহার
বাংলাদেশে জনগণের স্বাস্থ্যব্যবস্থা নিশ্চিত করাটা অত্যন্ত জরুরি হলেও এখানে পেশা হিসেবে নার্সদের অমর্যাদাসম্পন্ন একটা অবস্থানে রাখা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন কবি ও রাষ্ট্রচিন্তক ফরহাদ মজহার।
ফরহাদ মজহার বলেন, ‘নার্সদের ডাক্তারি ব্যবস্থার অধীন একটা পেশা হিসেবে যে দেখা হয়, আমরা মনে করি এটা ভুল। এখান থেকে মুক্ত হতে হবে। নার্স সেবাটা স্বাস্থ্যসেবার একটা মৌলিক দিক। ফলে তাঁদের স্বাধীনভাবে এই পেশাকে চর্চা করবার সুযোগ–সুবিধা দিতে হবে।’
আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন ফরহাদ মজহার। সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বাংলাদেশ নার্সেস অ্যাসোসিয়েশন (বিএনএ) ও স্বাস্থ্য আন্দোলন। স্বাস্থ্য আন্দোলনের পক্ষে বক্তব্য দেন ফরহাদ মজহার।
সরকার স্বাস্থ্যকে এখন আর জনগণের অধিকার হিসেবে স্বীকার করছে না বলে অভিযোগ করেন ফরহাদ মজহার। তিনি বলেন, ‘এখন স্বাস্থ্যকে অধিকার নয়, বাজারজাত পণ্য বানানো হয়েছে। টাকা থাকলে চিকিৎসা পাবেন, টাকা না থাকলে নয়।’
নার্সদের স্বাধীন পেশাগত চর্চা, পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ, ন্যায্য বেতন ও মর্যাদা নিশ্চিতের জন্য জাতীয় নার্সিং কমিশন গঠনের দাবি জানিয়ে ফরহাদ মজহার বলেন, নার্সদেরকে ডাক্তারদের হুকুমমতো চলতে হবে—এই ধারণা ভাঙতে হবে। স্বাস্থ্য মানে শুধু প্রেসক্রিপশন নয়, প্রতিরোধও একটি বড় দিক। নার্সদের মর্যাদা ও স্বাধীনতা নিশ্চিত হলে জনগণ প্রকৃত স্বাস্থ্যসেবা পাবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফরহাদ মজহার বলেন, নার্সিং স্বাস্থ্যসেবার এক মৌলিক দিক। কিন্তু আমাদের সমাজে চিকিৎসাকে ডাক্তারিকরণ বা মেডিক্যালাইজেশন করা হয়েছে। অনেক রোগে ডাক্তার কিংবা ওষুধের প্রয়োজনই হয় না। এ জায়গায় নার্সরা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ নার্সেস অ্যাসোসিয়েশনের (বিএনএ) সভাপতি মো. শরিফুল ইসলাম। এক মাসের মধ্যে নার্সিং কমিশন গঠনের এক দফা দাবি বাস্তবায়ন না হলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনের সঞ্চালনা করেন বিএনএর সহসভাপতি মাহমুদ হোসেন তমাল। এতে উপস্থিত ছিলেন স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারপারসন জরিনা খাতুন, সহসভাপতি মনির হোসেন ভূঁইয়া এবং সংগঠনের অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতা-কর্মী।