ফেনীতে সমাবেশ শেষে চট্টগ্রামের পথে ‘বন্দর রক্ষার দাবিতে’ রোডমার্চ
Published: 28th, June 2025 GMT
জাতীয় সম্পদ ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় চার দাবিতে ‘সাম্রাজ্যবাদবিরোধী দেশপ্রেমিক জনগণ’ নামের ব্যানারে ঢাকা থেকে শুরু হওয়া রোডমার্চ ফেনীতে সমাবেশ শেষে চট্টগ্রাম রওনা হয়েছে। এর আগে শনিবার সকালে ফেনীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
শনিবার দুপুরে ‘বন্দর বাঁচাও, দেশ বাঁচাও’, ‘চুক্তির নামে দেশ বিক্রি, চলবে না চলবে না’, ‘মা-মাটি-মোহনা বিদেশিদের দেব না’, ‘স্টারলিংকের সঙ্গে চুক্তি, বাতিল কর, করতে হবে’ ইত্যাদি স্লোগান নিয়ে চট্টগ্রামের উদ্দেশে পদযাত্রা শুরু করেন তারা।
এ সময় বাসদের (মার্কসবাদী) সমন্বয়ক মাসুদ রানা, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্সসহ নের্তৃবৃন্দ বক্তব্য প্রদান করেন।
সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তারা বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার বিপরীত পথে হাঁটছে। দেশকে সাম্রাজ্যবাদের হাতে তুলে দেওয়া এই সরকারের দায়িত্ব হতে পারে না। অবিলম্বে বিদেশি শক্তির কাছে বন্দর ইজারা বা করিডর দেওয়ার যেকোনো পরিকল্পনা বাতিল করতে হবে। অন্যথায় আগামীতে কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা দেওয়া হবে।
বক্তব্যে বাসদের (মার্কসবাদী) সমন্বয়ক মাসুদ রানা বলেন, জুলাই আন্দোলনের মাধ্যমে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় এলেও তারা এখন সেই আকাঙ্ক্ষার বিপরীত পথে হাঁটছে। দেশের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে তারা সাম্রাজ্যবাদী শক্তির সঙ্গে একের পর এক চুক্তি করছে। জুলাই আন্দোলনের নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান ছিল ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান। এই আকাঙ্ক্ষার বিরুদ্ধাচারণ কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না। সরকার এখতিয়ার বহির্ভূতভাবে করিডোর দিতে ও বন্দর ইজারা দিতে চাইছে, যা দেশের জন্য বিপজ্জনক। চুক্তির নামে দেশবিরোধী কোনো চক্রান্ত মেনে নেওয়া হবে না।
এর আগে শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে জাতীয় সম্পদ ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার দাবিতে দুই দিনের ঢাকা-চট্টগ্রাম রোড মার্চ শুরু করেন সাম্রাজ্যবাদবিরোধী দেশপ্রেমিক জনগণের ব্যানারে বামপন্থি বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা। রোডমার্চটি নারায়ণগঞ্জ ও কুমিল্লা অতিক্রম করে রাত সাড়ে এগারটার দিকে ফেনীতে এসে পৌঁছায়। ফেনী শহরের প্রধান সড়ক গুলো প্রদক্ষিণ করে তারা দাউদপুল ব্রিজের পাশ থেকে পরিবহনে চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওনা দেন। এতে প্রগতিশীল বাম গণতান্ত্রিক জোট ও দেশপ্রেমিক শক্তির বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
নার্সদের অমর্যাদাকর অবস্থানে রাখা হয়েছে: ফরহাদ মজহার
বাংলাদেশে জনগণের স্বাস্থ্যব্যবস্থা নিশ্চিত করাটা অত্যন্ত জরুরি হলেও এখানে পেশা হিসেবে নার্সদের অমর্যাদাসম্পন্ন একটা অবস্থানে রাখা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন কবি ও রাষ্ট্রচিন্তক ফরহাদ মজহার।
ফরহাদ মজহার বলেন, ‘নার্সদের ডাক্তারি ব্যবস্থার অধীন একটা পেশা হিসেবে যে দেখা হয়, আমরা মনে করি এটা ভুল। এখান থেকে মুক্ত হতে হবে। নার্স সেবাটা স্বাস্থ্যসেবার একটা মৌলিক দিক। ফলে তাঁদের স্বাধীনভাবে এই পেশাকে চর্চা করবার সুযোগ–সুবিধা দিতে হবে।’
আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন ফরহাদ মজহার। সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বাংলাদেশ নার্সেস অ্যাসোসিয়েশন (বিএনএ) ও স্বাস্থ্য আন্দোলন। স্বাস্থ্য আন্দোলনের পক্ষে বক্তব্য দেন ফরহাদ মজহার।
সরকার স্বাস্থ্যকে এখন আর জনগণের অধিকার হিসেবে স্বীকার করছে না বলে অভিযোগ করেন ফরহাদ মজহার। তিনি বলেন, ‘এখন স্বাস্থ্যকে অধিকার নয়, বাজারজাত পণ্য বানানো হয়েছে। টাকা থাকলে চিকিৎসা পাবেন, টাকা না থাকলে নয়।’
নার্সদের স্বাধীন পেশাগত চর্চা, পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ, ন্যায্য বেতন ও মর্যাদা নিশ্চিতের জন্য জাতীয় নার্সিং কমিশন গঠনের দাবি জানিয়ে ফরহাদ মজহার বলেন, নার্সদেরকে ডাক্তারদের হুকুমমতো চলতে হবে—এই ধারণা ভাঙতে হবে। স্বাস্থ্য মানে শুধু প্রেসক্রিপশন নয়, প্রতিরোধও একটি বড় দিক। নার্সদের মর্যাদা ও স্বাধীনতা নিশ্চিত হলে জনগণ প্রকৃত স্বাস্থ্যসেবা পাবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফরহাদ মজহার বলেন, নার্সিং স্বাস্থ্যসেবার এক মৌলিক দিক। কিন্তু আমাদের সমাজে চিকিৎসাকে ডাক্তারিকরণ বা মেডিক্যালাইজেশন করা হয়েছে। অনেক রোগে ডাক্তার কিংবা ওষুধের প্রয়োজনই হয় না। এ জায়গায় নার্সরা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ নার্সেস অ্যাসোসিয়েশনের (বিএনএ) সভাপতি মো. শরিফুল ইসলাম। এক মাসের মধ্যে নার্সিং কমিশন গঠনের এক দফা দাবি বাস্তবায়ন না হলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনের সঞ্চালনা করেন বিএনএর সহসভাপতি মাহমুদ হোসেন তমাল। এতে উপস্থিত ছিলেন স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারপারসন জরিনা খাতুন, সহসভাপতি মনির হোসেন ভূঁইয়া এবং সংগঠনের অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতা-কর্মী।