‘বন্দর ইজারা ও করিডোরের সিদ্ধান্ত বাতিল না হলে নতুন কর্মসূচি’
Published: 28th, June 2025 GMT
বামজোটের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ও সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেছেন, চট্টগ্রাম বন্দর ইজারা ও করিডোর দেওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিলসহ দেশের সার্বভৌমত্ববিরোধী কর্মকাণ্ড বন্ধ না করলে ৫ আগস্টের পর কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। এক সেকেন্ড দেরি না করে সরকারকে ঘোষণা করতে হবে তারা বন্দর লিজ দেবে না।
শনিবার চট্টগ্রাম বন্দরের ৪ নম্বর জেটির সামনে দেশের বামপন্থি দল ও সংগঠনগুলোর সমন্বয়ে গঠিত ‘সাম্রাজ্যবাদবিরোধী দেশপ্রেমিক জনগণ’ নামের ব্যানারে রোর্ডমার্চ শেষে সমাবেশে বক্তারা এসব কথা বলেন। চট্টগ্রামে সমাপনী সমাবেশের আগে ফেনী ও ব্রাক্ষণবাড়িয়ায় রোর্ডমার্চের অংশ হিসেবে পথসভা করেন তারা।
চট্টগ্রাম জেলা সিপিবির সভাপতি অশোক সাহা’র সভাপতিত্বে এবং বাসদের জেলা ইনচার্জ আল কাদেরি জয়ের সঞ্চালনায় চট্টগ্রাম বন্দরের সামনে অনুষ্ঠিত সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন- বাসদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ, বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির জাহিদ, বাসদ (মার্ক্সবাদী) ও গণতান্ত্রিক বাম জোটের সমন্বয়ক মাসুদ রানা, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, ফ্যাসিবাদবিরোধী বাম মোর্চার সমন্বয়ক ও গণমুক্তি ইউনিয়নের সমন্বয়ক নাসির উদ্দিন আহম্মদ, বাংলাদেশের সাম্যবাদী আন্দোলনের আহ্বায়ক শুভ্রাংশু চক্রবর্তী, বাংলাদেশের সোশ্যালিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, গেল ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে বিতাড়িত করে এদেশের মানুষ আশায় বুক বেঁধেছিল। কিন্তু সরকার এখন বিদেশিদের তাবেদার হয়ে উঠেছে। দেশ প্রেমিক মানুষ এখন দেখছে ইন্টেরিম সরকার দেশের জনগণের অধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে। তারা জনমতের তোয়াক্কা না কওে দেশের হৃৎপিন্ড খ্যাত চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কন্টেইনার টার্মিনালসহ বন্দর ব্যবস্তাপনা বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার ষড়যন্ত্রে মেতেছে।
এর আগে চার দফা দাবিতে রাজধানী ঢাকা থেকে শুরু হওয়া রোডমার্চের বহর বিকেলে চট্টগ্রামে এসে পৌঁছেছে। রোডমার্চে অংশ নেওয়া নেতা-কর্মীদের হাতে ছিল বিভিন্ন স্লোগান সংবলিত প্ল্যাকার্ড। এসবের মধ্যে রয়েছে ‘ইন্টেরিম সরকার, সাম্রাজ্যবাদের পাহারাদার’, ‘বন্দর-করিডর, বিদেশিদের দেব না’, ‘চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়া চলবে না’, ‘জাতীয় স্বার্থবিরোধী সকল অসম চুক্তি বাতিল কর’, ‘মার্কিন, ভারতসহ সকল সাম্রাজ্যবাদী আধিপত্যের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াও’। সহস্রাধিক মানুষ এ কর্মসূচিতে অংশ নেন।
সমাবেশে বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন (প্রিন্স) রোডমার্চ কর্মসূচির চার দফা দাবি তুলে ধরেন। সেগুলো হলো নিউমুরিংসহ চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবস্থাপনা বিদেশিদের হাতে দেওয়া চলবে না, রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে পরিচালনা করতে হবে, রাখাইনে করিডর দেওয়ার ষড়যন্ত্র বন্ধ করতে হবে, স্টারলিংক, সমরাস্ত্র কারখানা, করিডরের মাধ্যমে বাংলাদেশকে সাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধ চক্রে জড়ানোর উদ্যোগ বন্ধ করতে হবে, মার্কিন-ভারতসহ ‘সাম্রাজ্যবাদী আধিপত্যবাদী দেশগুলোর’ সঙ্গে বিগত সব সরকারের আমলে স্বাক্ষরিত সব চুক্তি প্রকাশ করতে হবে এবং জাতীয় স্বার্থবিরোধী অসম চুক্তি বাতিল করতে হবে।
রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর দেশের গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় সম্পদ। দেশের অর্থনীতির চালিকা শক্তি, হৃৎপিণ্ড। আমরা আশা করব, বিগত সরকারের ধারাবাহিকতায় অর্ন্তবর্তী সরকার বন্দর ইজারা দেওয়াসহ যে কাজ করতে চাইছে, তা থেকে তারা পিছু হটবে। আর এটা নিয়ে আমাদের আজকের রোডমার্চের শেষ করছি।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: সম ব শ সমন বয়ক র সমন সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের রাজনৈতিক তৎপরতা বন্ধ করতে হবে: জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল
ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসনের সঙ্গে বিএনপি, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), জামায়েতে ইসলামীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের বৈঠকের কঠোর সমালোচনা করেছে জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল। সংগঠনটি বলেছে, কূটনৈতিক শিষ্টাচারের সীমারেখার বাইরে গিয়ে বাংলাদেশে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের রাজনৈতিক তৎপরতা বন্ধ করতে হবে।
আজ বুধবার সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সম্পাদক ফয়জুল হাকিম।
বিবৃতিতে বলা হয়, জুলাই গণ-অভ্যুত্থান শুধু পতিত ফ্যাসিস্ট, মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত পলাতক শেখ হাসিনা ও তাঁর সরকারকে উচ্ছেদ করেনি। একই সঙ্গে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলোর আধিপত্য বিস্তারের বিরুদ্ধে প্রবল প্রতিরোধ ঘোষণা করেছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের শাসকশ্রেণির রাজনৈতিক দলগুলো ৫৪ বছর ধরে সাম্রাজ্যবাদী রাষ্ট্রের পদ লেহন করে দেশের স্বার্থ, জনগণের স্বার্থ বিলিয়ে দিয়েছে। যার নিকৃষ্ট উদাহরণ পতিত ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার সরকার।
গত বছরের জুলাইয়ে সংঘটিত ছাত্র-শ্রমিক-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের শক্তিগুলোকে এখন সংগঠিত হতে হবে বলে উল্লেখ করা হয় বিবৃতিতে। এতে বলা হয়, সাম্রাজ্যবাদী-পুঁজিবাদী স্বার্থের ‘নতুন বন্দোবস্তের’ বিরুদ্ধে শ্রমিক-কৃষক নিপীড়িত জাতি ও জনগণের দেশব্যাপী ব্যাপক জাতীয় প্রতিরোধ সংগ্রাম জোরদার করতে হবে।