দ্বিতীয় ধাপে জগন্নাথের ৫০০ ছাত্রের আবাসনের ব্যবস্থা করবে আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন
Published: 29th, June 2025 GMT
আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন পরিচালিত ‘মেধাবী’ প্রকল্পের আওতায় শিক্ষার্থীদের হলে আসন বরাদ্দে দ্বিতীয় ধাপে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।
রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হল–০১ ও মেধাবী প্রকল্পের হাসনাবাদ শাখার হল প্রাধ্যক্ষ মুহম্মদ আসাদুজ্জামান সাদী স্বাক্ষরিত এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন পরিচালিত ‘মেধাবী’ প্রকল্পে দ্বিতীয় ধাপে ৫০০ জন ছাত্রের আবাসনের লক্ষ্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের (২০তম ব্যাচ, প্রথম বর্ষ) আগ্রহী ছাত্রদের ৩ জুলাইয়ের মধ্যে গুগল লিংক এবং সরাসরি আবেদন ফরমে আবেদন করতে বলা হলো।
আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন পরিচালিত ‘মেধাবী’ প্রকল্পের সমন্বয়ক (কো-অর্ডিনেটর) মামুনুর রশিদ প্রথম আলোকে বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এবং তাঁদের আর্থিক সমস্যার কথা বিবেচনা করে আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন দ্বিতীয় ধাপে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ৫০০ জন ছাত্রের আবাসনের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। আগামী ৩ জুলাইয়ের মধ্যে অনলাইন এবং অফলাইনে আবেদন করতে পারবেন। আবেদন যাচাই-বাছাই করে ৬ জুলাই থেকে তাঁদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ শুরু হবে। সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে নির্বাচিত শিক্ষার্থীরা ১ আগস্ট থেকে মেধাবী প্রকল্পের আবাসনে উঠতে পারবেন।
আসন বরাদ্দ পাওয়া শিক্ষার্থীদের ১০ হাজার টাকা ফি দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘মেধাবী’ প্রকল্পের ১ জন শিক্ষার্থীর জন্য প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকা ব্যয় হবে। প্রত্যেক শিক্ষার্থী তার সামর্থ্য অনুযায়ী অর্থ প্রদান করবে, বাকি টাকা আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন থেকে স্কলারশিপ হিসেবে প্রদান করা হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকার পোর্ট কনটেইনার রোডে একটি ১০ তলা ভবন অস্থায়ী আবাসন হিসেবে বরাদ্দ করেছে আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন। ২০২৪ সালের ১০ ডিসেম্বর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ও আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন এ–সংক্রান্ত একটি চুক্তি সই করে।
চুক্তি অনুযায়ী, কেরানীগঞ্জের বসুন্ধরা রিভারভিউ প্রজেক্ট এলাকায় আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন প্রাথমিকভাবে ৭০০ শিক্ষার্থীর আবাসনের ব্যবস্থা করবে। পর্যায়ক্রমে এই সংখ্যা পাঁচ হাজার শিক্ষার্থীতে উন্নীত করা হবে।
চুক্তিপত্রে বলা হয়েছে, শিক্ষার্থীদের আবাসিক ভবন থেকে একাডেমিক ভবনে পরিবহনের ব্যবস্থা করবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প রকল প র
এছাড়াও পড়ুন:
থাইল্যান্ডে চালের দাম ১৫ বছরে সর্বনিম্ন, বিশ্ববাজারে এ বছর কমেছে ১৪%
এশিয়াসহ বিশ্বের চালের বাজারে নিম্নমুখী প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। এশিয়ায় চালের অন্যতম বৃহৎ সরবরাহকারী থাইল্যান্ডে চালের দাম ১৫ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে। মূলত বাজারে চালের সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
থাইল্যান্ডসহ চালের অন্যান্য বড় উৎপাদনকারী দেশ ভারত ও মিয়ানমারে উৎপাদন বেড়ে যাওয়ায় বিশ্ববাজারেও চালের দাম কমছে। বিশ্ব খাদ্য সংস্থার খাদ্যসূচক অনুযায়ী, চলতি বছর চালের দাম কমেছে ১৩ দশমিক ৪০ শতাংশ। এমনকি বিশ্ববাজার চালের দাম আগস্ট মাসে আট বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে আসে। খবর দ্য নেশনের
থাইল্যান্ডে চালের দামের এই নিম্নমুখী প্রবণতা একদম নতুন কিছু নয়, বেশ কয়েক মাস ধরেই এ প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে দেশটির কৃষিবিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, দীর্ঘ সময় ধরে চালের দাম কম থাকায় দেশটির কৃষকেরা ধানের আবাদ কমিয়ে দিতে পারেন।
থাইল্যান্ডে গত বৃহস্পতিবার ৫ শতাংশ খুদযুক্ত চালের দাম দাঁড়ায় টনপ্রতি ৩৩৫ ডলার। আগের সপ্তাহে যা ছিল ৩৩৮ ডলার। থাইল্যান্ডের কৃষি খাত–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, গত ১৪ বছরে থাই সরকারের জনতুষ্টিমূলক নীতির কারণে এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। সরকার কৃষকদের সন্তুষ্ট করতে বিভিন্ন ধরনের নিশ্চয়তা দিয়েছে। এসব কর্মসূচিতে প্রায় ৪০ বিালিয়ন বা ৪ হাজার কোটি ডলার ব্যয় হলেও একধরনের নীতিগত ফাঁদ তৈরি হয়েছে। ফলে কৃষকেরা প্রযুক্তি উন্নয়ন, দক্ষতা বাড়ানো কিংবা বৈশ্বিক প্রতিযোগিতার সঙ্গে খাপ খাওয়ানো থেকে নিরুৎসাহিত হয়েছেন।
সেই সঙ্গে থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীরা জানান, বর্ষা মৌসুমের শেষ দিকে বাজারে নতুন চালের সরবরাহ এসেছে। এটাও দাম কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ। অন্যদিকে ভারত ও মিয়ানমারের মতো প্রতিযোগী দেশগুলো চালের গুণগত মানের উন্নতি করেছে। আধুনিকতা এনেছে উৎপাদনব্যবস্থায়। ফলে তারা কম খরচে ভালো মানের চাল রপ্তানি করতে পারছে। কিন্তু থাইল্যান্ড এখনো ভর্তুকিনির্ভর ব্যবস্থায় আটকে আছে। এ পরিস্থিতিতে দেশটির কৃষকেরা ক্ষতির মুখে পড়ছেন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।
এফএওর সূচক কমেছেপ্রতি মাসেই খাদ্যমূল্যসূচক করে থাকে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও)। তাতে দেখা যাচ্ছে, চলতি বছর বিশ্ববাজারে চালের দাম কেমেছে ১৩ দশমিক ৪০ শতাংশ। গত অক্টোবর মাসে চালের মূল্যসূচক নেমে এসেছে ৯৮ দশমিক ৪–এ। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে তা ছিল ১১৩ দশমিক ৬। সেই সঙ্গে ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে চালের মূল্যসূচক ছিল ১২৫ দশমিক ৭। সেই হিসাবে এক বছরে চালের দাম কমেছে ২১ দশমিক ৭ শতাংশ।
চালের দামের এই পতন শুরু হয় ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে। বিশ্বের সর্ববৃহৎ চাল রপ্তানিকারক দেশ ভারত ধাপে ধাপে রপ্তানি–নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে শুরু করে তখন। এ ঘটনা চালের বাজারে বড় প্রভাব ফেলে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, এ বছর সব ধরনের চালের মূল্যসূচক ১৩ শতাংশ কমেছে। খবর ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসের
অথচ ২০২৪ সালের শুরুতে এর উল্টো চিত্র দেখা গেছে। তখন ভারত একের পর এক রপ্তানি সীমাবদ্ধতা জারি করলে ২০০৮ সালের পর চালের দাম সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছায়। বিশ্বজুড়ে ভোক্তাদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। মানুষের মধ্যে মজুতের প্রবণতা তৈরি হয়। অন্যান্য উৎপাদক দেশেও সুরক্ষাবাদী পদক্ষেপ নেওয়া হয়। এর পর থেকে চালের দাম কমতে শুরু করে।