রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন চান ইউক্রেন আত্মসমর্পণ করুক, এমন মন্তব্য করেছেন জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোহান ওয়াদেফুল। তিনি বলেছেন, তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে চলমান যুদ্ধের অবসান ঘটাতে স্থগিত শান্তি আলোচনার মধ্যে পুতিন তার সর্বোচ্চ দাবির কোনোটিতেই পিছু হটছেন না। পুতিন আলোচনা চান না, তিনি ইউক্রেনের আত্মসমর্পণ চান।

ইউক্রেনে কয়েক সপ্তাহ ধরে রাশিয়ার হামলা বৃদ্ধির পর স্থানীয় সময় আজ সোমবার তিনি এ কথা বলেন। বর্তমানে তিনি কিয়েভ সফরে আছেন। খবর এএফপির।

এদিকে, ইউরোপীয় দেশগুলো ও কানাডা ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা আরও বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা স্থগিত থাকার ঘাটতি পূরণে ভূমিকা রাখবে।

ন্যাটোর মহাসচিব মার্ক রুটে জানান, ২০২৪ সালের প্রথম ছয় মাসেই ইউরোপ ও কানাডা মিলে ইউক্রেনকে ৩৫ বিলিয়ন ডলারের সামরিক সহায়তা দিয়েছে, যা গত বছরের পুরো পরিমাণ ৫০ বিলিয়নের কাছাকাছি পৌঁছে গেছে।

অন্যদিকে ট্রাম্প প্রশাসন এখনও পর্যন্ত সামরিক সহায়তা তেমনভাবে শুরু না করলেও, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদেমির জেলেনস্কি ‘প্যাট্রিয়ট’ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা কেনার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।


ট্রাম্প জানান, কিছু সরঞ্জাম দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় রয়েছে, তবে এগুলো খুবই দুর্লভ এবং বর্তমানে ইসরায়েলকেও সরবরাহ করা হচ্ছে।

রাশিয়া স্পষ্ট করে জানিয়েছে, অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ না হলে যুদ্ধবিরতি সম্ভব নয়। শনিবার ক্রেমলিন মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ সেই শর্ত পুনরায় উল্লেখ করেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইউক র ন ইউক র ন সহ য ত

এছাড়াও পড়ুন:

হঠাৎ পাম্পগুলোতে পেট্রোল-অকটেনের সংকট

হঠাৎ করে পেট্রোল ও অকটেনের সংকট দেখা দিয়েছে। রাজধানীর অধিকাংশ পাম্প ঘুরে জ্বালানি তেল পাচ্ছেন না বাইক ও অন্যান্য গাড়িচালকরা। অনেক পাম্পে তেল না থাকার ব্যাপারে সাইনবোর্ডও টাঙানো হয়েছে। 

পাম্প মালিকরা বলছেন, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) চাহিদা অনুসারে তেল সরবরাহ না করায় সংকট দেখা দিয়েছে। তবে বিপিসি বলছে, মধ্যপ্রাচ্যের সংকটে একাধিক তেলবাহী জাহাজ সময়মতো দেশে আসেনি। এ ছাড়া তেলের দাম বাড়ার আশঙ্কায় অনেক পাম্প মালিক তেল মজুত করেছেন– এমন হতে পারে। তবে দাম অপরিবর্তিত রেখে রোববার জুলাই মাসের তেলের দাম ঘোষণা করা হয়েছে। 

রোববার রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ পাম্পে পেট্রোল ও অকটেন নেই। জ্বালানি সংগ্রহে চালকদের এক পাম্প থেকে আরেক পাম্প ঘুরতে দেখা গেছে। কয়েকটি পাম্পে পেট্রোল মিললেও অকটেন ছিল না বললেই চলে। অনেকেই এক থেকে দেড় ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে জ্বালানি সংগ্রহ করেছেন। 

মালিবাগ মোড়ে দুপুরে পাম্পে কথা হয় প্রাইভেটকারচালক রাতুলের সঙ্গে। তিনি বলেন, বেলা ১১ থেকে বাড্ডা, রামপুরার বিভিন্ন পাম্প ঘুরে মালিবাগের পাম্পে এসে জ্বালানির সন্ধান মিলেছে। প্রায় সোয়া এক ঘণ্টা ধরে লাইনে রয়েছেন। সামনে আরও চারটি গাড়ি রয়েছে। এর পর হয়তো তেল মিলবে। 

তেজগাঁওয়ে কথা হয় পাঠাও রাইডার আকবরের সঙ্গে। তিনি বলেন, বাইকে তেল প্রায় শেষের পথে। সকাল থেকে সাতটি পাম্পে ঘুরেও অকটেন মেলেনি। পরে আসাদগেটের পাম্পে তেল পেয়েছি। 

দেশের জ্বালানি তেলের চাহিদার ৯২ শতাংশ পূরণ হয় আমদানি করা তেলের মাধ্যমে। যার অধিকাংশই আনা হয় সৌদি আরবভিত্তিক সৌদি অ্যারাবিয়ান অয়েল কোম্পানি (সৌদি আরামকো) এবং আমিরাতের আবুধাবি ন্যাশনাল অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের (অ্যাডনক) কাছ থেকে। এ ছাড়া আটটি দেশের কাছ থেকে জিটুজি ও আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে তেল আমদানি করা হয়।

বহির্বিশ্ব থেকে দেশে জ্বালানি তেল আমদানির অন্যতম রুট হলো হরমুজ প্রণালি। সৌদি আরবসহ অন্যান্য আরব দেশ এই প্রণালি ব্যবহার করে তেল রপ্তানি করে থাকে। ১৩ জুন ইসরায়েল ইরানে হামলা করার পর দেশটি হরমুজ প্রণালি বন্ধের হুঁশিয়ারি দেয়। পরে ২২ জুন ইরানের পার্লামেন্ট প্রণালি বন্ধের অনুমোদন দেয়। এর ফলে তেলবাহী জাহাজ চলাচল ব্যাহত হয়। 

এ বিষয়ে বিপিসির একজন পরিচালক বলেন, ৩০ হাজার টনের একটি অকটেনবাহী জাহাজ ২৭ জুন দেশে আসার কথা ছিল। কিন্তু জাহাজটি আসবে জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে। দেশে দৈনিক অকটেনের চাহিদা ১ হাজার ৩০০ থেকে ১ হাজার ৪০০ টন। ওই জাহাজ এলেই ২০-২৫ দিনের অকটেন মজুত হয়ে যাবে। 

তবে বিতরণ কোম্পানি পদ্মার একজন ব্যবস্থাপক বলেন, প্রতি মাসের শেষ দিকে বিপিসি পরের মাসের তেলের দর ঘোষণা করে। ব্যবসায়ীরা ভেবেছিলেন মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধের কারণে তেলের দাম বাড়বে। তাই তেল মজুত করে কৃত্রিম সংকট তৈরি করা হয়েছে। এ জন্য বিপিসি দাম অপরিবর্তিত রেখে নতুন দর রোববারই ঘোষণা করেছে।

জানতে চাইলে পেট্রোল পাম্প ও ট্যাঙ্কলরি মালিক ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক নাজমুল হক বলেন, ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধের ফলে তেলবাহী জাহাজ সময়মতো দেশে আসতে পারেনি। তাই তেল সরবরাহে কিছুটা বিঘ্ন ঘটেছে। তবে এটা সাময়িক সমস্যা, দ্রুত ঠিক হয়ে যাবে।

জুলাইয়ে তেলের দাম অপরিবর্তিত থাকবে 

ভোক্তা পর্যায়ে ডিজেল, কেরোসিন, পেট্রোল ও অকটেনের দাম জুলাই মাসে অপরিবর্তিত থাকবে। অর্থাৎ, চলতি মাসের দামেই আগামী মাসে এসব জ্বালানি মিলবে। ‌রোববার জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ এ-সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করেছে।

এর আগে চলতি মাসের জন্য কেরোসিনের দাম লিটারপ্রতি ১০ টাকা বাড়িয়ে ১১৪ টাকা, ডিজেলের দাম লিটারপ্রতি ২ টাকা কমিয়ে ১০২ টাকা এবং অকটেন ও পেট্রোলের দাম ৩ টাকা করে কমিয়ে যথাক্রমে ১২২ টাকা ও ১১৮ টাকা নির্ধারণ করে সরকার। 

বিশ্ববাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে গত বছরের মার্চ থেকে জ্বালানি তেলের স্বয়ংক্রিয় মূল্য নির্ধারণ করে আসছে সরকার। এই হিসেবে প্রতি মাসে নতুন দাম ঘোষণা করা হয়। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ২৩ ধরনের ওষুধ সরবরাহ বন্ধ
  • পাইপলাইনে তেল পরিবহন শুরু চলতি মাসেই
  • অস্বাভাবিকভাবে ইলিশের দাম বাড়ানো যাবে না: মৎস্য উপদেষ্টা
  • হঠাৎ পাম্পগুলোতে পেট্রোল-অকটেনের সংকট
  • অত্যাবশ্যক পরিষেবা ঘোষণা কী, আন্দোলন থামাতে এটা কীভাবে কাজ করে
  • পর্যটন শহরে করোনা, ডেঙ্গু ও ম্যালেরিয়ার প্রকোপ
  • খেলাপি ঋণ ও উচ্চ মুদ্রাস্ফীতিতে ব্যবসায়ের পরিবেশ সংকুচিত হচ্ছে: ঢাকা চেম্বার
  • চীন–যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যচুক্তিতে সই করেছে: ডোনাল্ড ট্রাম্প