নানা আয়োজনে ঢাবির ১০৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপিত
Published: 2nd, July 2025 GMT
বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা, দৃষ্টিনন্দন আলোকসজ্জাসহ বিপুল আয়োজনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপিত হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সব হল, হোস্টেল ও প্রশাসনিক ভবন থেকে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা স্মৃতি চিরন্তন চত্বরে সমবেত হন। সেখান থেকে উপাচার্য অধ্যাপক ড.
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি চত্বরসংলগ্ন স্মৃতি চিরন্তনের সামনে থেকে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মচারীদের নিয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়া আহমদ খানের নেতৃত্বে শোভাযাত্রা বের হয়।
সকাল ১০টায় ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের সম্মুখস্থ পায়রা চত্বরে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জাতীয় পতাকা, বিশ্ববিদ্যালয় ও হলগুলোর পতাকা উত্তোলন এবং কেক কাটা হয়। টিএসসি মিলনায়তনে ‘বৈষম্যহীন ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ বিনির্মাণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়’ শিরোনামে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ। অনুষ্ঠানে একটি স্মরণিকার মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
১৯২১ সালের ১ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরু হয়। দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে উপাচার্য ভবন, কার্জন হল, কলা ভবন ও ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও সড়কসমূহে আলোকসজ্জা করা হয়।
সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেবল একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নয়, এটি জাতির আত্মপরিচয়ের প্রতীক, সভ্যতা গঠনের শিকড় ও স্বাধীনতার জাগরণ গাঁথা।
অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রেষ্ঠ অর্জন হচ্ছে এটির অন্তর্ভুক্তিমূলক বৈশিষ্ট্য। এখানে ধনী-গরিব, শহর-গ্রাম, নারী-পুরুষ ও সংখ্যাগরিষ্ঠ-সংংখ্যালঘু সবাই পেয়েছেন সমান মর্যাদা। এখানে প্রতিটি কণ্ঠের রয়েছে মূল্য, প্রতিটি স্বপ্নের রয়েছে ছুঁয়ে দেখার অধিকার। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্মই হয়েছিলো বৈষম্য দূরীকরণের তাগিদে।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু হয়েছিল মাত্র ৬০ জন শিক্ষক ও ৮৭৭ জন শিক্ষার্থী নিয়ে। আজ সেই প্রতিষ্ঠান পরিণত হয়েছে দেশের সর্ববৃহৎ উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৪০ হাজার এবং শিক্ষক আছেন প্রায় ২ হাজার। এর বাইরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছে ২০০টি প্রতিষ্ঠান। যেখানে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় দেড় লাখ। এটি আমাদের জন্য একটি গর্বের বিষয়।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক ভূমিকা পালনের পাশাপাশি শিক্ষার মানোন্নয়নেও আমরা দায়বদ্ধ। যারা গণঅভ্যুত্থানে রক্ত দিয়েছে, প্রাণ দিয়েছে তারা আমাদের কাঁধে কিছু দায় ও দায়িত্ব রেখে গেছে। সেই দায়িত্ব হচ্ছে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার পরিবেশ নিশ্চিত করা, শিক্ষক-শিক্ষার্থীর মধ্যে বিশ্বাস ও সহযোগিতার বন্ধন অটুট রাখা।
উপাচার্য আরও বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পথচলা কখনো শুধু একাডেমিক পরিসরে সীমাবদ্ধ ছিল না। ১৯৫২, ১৯৬৯, ১৯৭১ এবং ১৯৯০-এর প্রতিটি আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদান ইতিহাসে গর্বের সঙ্গে উচ্চারিত হয়। ২০২৪-এর গণঅভ্যুত্থান আমাদের সংগ্রামের নতুন অধ্যায়। দেশের মানুষ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর ভরসা রেখেছে বলেই প্রতিটি ক্রান্তিকালে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকে সাড়া দিয়েছে।
অনুষ্ঠানে সংগীত বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে জাতীয় সংগীত ও উদ্দীপনামূলক দেশাত্মবোধক গান পরিবেশিত হয়। এছাড়া বিদেশি শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে অন্য একটি সংগীত পরিবেশিত হয়। আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
পিআর পদ্ধতিতে স্থায়ী সরকারব্যবস্থা হয় না: সালাহউদ্দিন আহমদ
আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতির নির্বাচন ব্যবস্থা প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, পিআর পদ্ধতি হচ্ছে একটি পার্মানেন্ট রেস্টলেসনেস, যার মধ্য দিয়ে সব সময় অস্থিতিশীল পরিস্থিতি বিদ্যমান থাকে। এটা বিভিন্ন দেশে দেখা গেছে।
সালাহউদ্দিন আহমদ মন্তব্য করেন, পিআর পদ্ধতির মাধ্যমে কোনো স্থায়ী সরকারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয় না। কখনো সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে সরকার গঠন করা সম্ভব হয় না। একটি ঝুলন্ত পার্লামেন্ট থাকে।
আমরা পিআর মানে মনে করি, পাবলিক রিলেশনস। আমরা পিআর মানে মনে করি, জনসংযোগ। এখন সবাই জনসংযোগে আছে। সেই পিআরে আমরা বিশ্বাস করি।—সালাহউদ্দিন আহমদ, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য।আজ মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন সালাহউদ্দিন আহমদ। জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ধর্মের ভিত্তিতে রাজনীতিতে কোনো বিভাজন বিএনপি চায়নি, চায়ও না। সামনেও দলটি এ ধরনের রাজনীতি করবে না। গণতান্ত্রিক সংস্কারের মাধ্যমে শক্তিশালী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সবাইকে অংশ নিতে হবে।
আরও পড়ুনপিআর সম্পর্কে ধারণা নেই ৫৬ শতাংশের২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫দেশের মানুষ পিআর পদ্ধতির বিপক্ষে বলেন সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি আরও বলেন, একটা জরিপে ৫৬ শতাংশ মানুষের পিআর পদ্ধতি সম্পর্কে ধারণা নেই বলে জেনেছেন। আরেক জরিপে দেখেছেন, কোনো একটা দল বলছে, ৭০ শতাংশ লোক পিআর চায়। এই দুই জরিপের প্রসঙ্গ তুলে ধরে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘যদি ৫৬ পার্সেন্ট মানুষ পিআর পদ্ধতি না-ই বোঝে, তাহলে ৭০ পার্সেন্ট মানুষ কীভাবে পিআর পদ্ধতি চায়, সেটি আমাদের বুঝে আসে না।’
পিআর পদ্ধতি প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আমরা পিআর মানে মনে করি, পাবলিক রিলেশনস। আমরা পিআর মানে মনে করি, জনসংযোগ। এখন সবাই জনসংযোগে আছে। সেই পিআরে আমরা বিশ্বাস করি। যারা প্রোপোশনাল রিপ্রেজেন্টেটিভ মানে, পার্মানেন্ট রেস্টলেসনেস প্রতিষ্ঠা করতে চায়, তারা সফল হবে না।’
আরও পড়ুনপিআর মানে হলো ‘পারমানেন্ট রেস্টলেসনেস’: সালাহউদ্দিন আহমদ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫দেশের জনগণ এখন নির্বাচনমুখী উল্লেখ করে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, দেশে এখন নির্বাচনী আমেজ চলছে। সব প্রার্থী, সম্ভাব্য প্রার্থী এবং জনগণ জনসংযোগে আছেন। এ অবস্থায় কোনো দল যদি বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে, নির্বাচন অনুষ্ঠান বাধাগ্রস্ত করতে চায়, তাহলে জনগণ তাদের চিহ্নিত করবেন। রাজনৈতিকভাবে তাদের প্রত্যাখ্যান করারও সম্ভাবনা আছে।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক উত্তরণের প্রক্রিয়াতে বাধা সৃষ্টি করতে কেউ কেউ ষড়যন্ত্র করছে। এখানে আন্তর্জাতিক মহলও থাকতে পারে।
আরও পড়ুন‘৭০ ভাগ জনগণ পিআর পদ্ধতির পক্ষে সমর্থন জানিয়েছে’১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫