প্রতিবন্ধকতা জয় করে তুলির আঁচড়ে জীবন চলে তমজিদের
Published: 6th, July 2025 GMT
তমজিদ উদ্দিন কথা বলতে পারেন না, শোনেন না কানেও। চল্লিশ ছুঁই ছুঁই এই প্রতিবন্ধী ব্যক্তির কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেই। তবু চমৎকার ছবি আঁকেন, নিখুঁত বিন্যাসে ব্যানার-পোস্টার ও দেয়ালিকা লেখেন। এভাবে যা আয় হয়, তা দিয়ে সংসার চালান। দরিদ্র পরিবারে জন্ম হলেও তমজিদ উদ্দিন কারও বোঝা হতে চাননি। তাঁর দাবি, নিজের চেষ্টায় এই দক্ষতা অর্জন করে দুই যুগ ধরে কাজটি করে যাচ্ছেন।
তমজিদ উদ্দিনের বাড়ি নেত্রকোনার মদন উপজেলার বাঁশরী গ্রামে। একই গ্রামের মৃত শামছুল ইসলাম ও শাহেরা আক্তার দম্পতির পঞ্চম সন্তান তিনি। বর্তমানে মদন পৌর শহরের শ্যামলী এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় সপরিবারে থাকেন তমজিদ। স্ত্রী, দুই মেয়ে ও এক ছেলে নিয়ে তমজিদ উদ্দিনের সংসার। তাঁর স্ত্রীও বাক্ ও শ্রবণপ্রতিবন্ধী। ছয় বছরের বড় মেয়ে তমা আক্তার স্থানীয় একটি স্কুলে পড়াশোনা শুরু করছে। মেজ মেয়ের বয়স চার আর ছেলের বয়স দুই বছর।
স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা ও তমজিদের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তমজিদ উদ্দিনের বয়স যখন আড়াই বছর, তখন তাঁর একবার টাইফয়েড জ্বর হয়। সেই থেকে তিনি বাক্ ও শ্রবণশক্তি হারিয়ে ফেলেন। পরিবারের আর্থিক সামর্থ্য না থাকায় ওই সময় চিকিৎসা করানো সম্ভব হয়নি। ফলে এসব শারীরিক সমস্যা সঙ্গে করেই বেড়ে ওঠেন তিনি। সমবয়সীদের স্কুলে যেতে দেখে তাঁর ইচ্ছা জাগলেও শারীরিক প্রতিবন্ধকতা ও দারিদ্র্যের কারণে পেরে ওঠেননি। মাত্র আট বছর বয়সে স্থানীয় বাজারের একটি চায়ের দোকানে কাজ শুরু করেন। সেখানে বঞ্চনা সহ্য করতে না পেরে পরে কাঠের আসবাব তৈরির একটি দোকানে কাজে যোগ দেন। কিন্তু সেখানেও প্রতিবন্ধকতার কারণে ক্রেতাদের অবহেলার পাত্র হতে হয়। বছর পাঁচেক পর মনঃকষ্টে সেখান থেকে বাড়ি ফিরে আসেন।
এর মধ্যে অবাক করার মতো একটি ঘটনা ঘটে বলে দাবি করেন তমজিদের বড় ভাই তৌহিদ মিয়া। তিনি বলেন, তমজিদের বয়স যখন প্রায় ১৫, তখন এক রাতে হঠাৎ ঘুমের মধ্যে চিৎকার দিয়ে ওঠেন। এরপর শুরু করেন কান্না। পরদিন সকালে তাঁর প্রতিবেশী এক বন্ধুর কাছ থেকে কাগজ-কলম এনে বাড়িতে বসে ছবি আঁকা শুরু করেন তমজিদ। এর কিছুদিন পর থেকে নিজে নিজেই বাংলা লেখা শুরু করেন। এমন প্রতিভা দেখে পরিবারের লোকজন তাঁকে রংতুলি কিনে দেন। এর পর থেকে তমজিদ দক্ষতার সঙ্গে রংতুলির কাজ করে যাচ্ছেন।
সপরিবারে তমজিদ উদ্দিন.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: তমজ দ র ন তমজ দ পর ব র র বয়স
এছাড়াও পড়ুন:
এইচএসসিতে জিপিএ–৫ পেয়েছেন ৬৯ হাজার ৯৭ জন
২০২৫ সালের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে। গড় পাসের হার ৫৮ দশমিক ৮৩ শতাংশ। এবারের পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৬৯ হাজার ৯৭ জন শিক্ষার্থী। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে দেশের ১১টি শিক্ষা বোর্ড একযোগে ফলাফল প্রকাশ করা হয়। বাংলাদেশ আন্তশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক খন্দোকার এহসানুল কবির এ ফল প্রকাশ করেন।
এখন এইচএসসির ফলাফল দেশের শিক্ষা বোর্ডগুলোর ওয়েবসাইট, সংশ্লিষ্ট সব পরীক্ষাকেন্দ্র, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও এসএমএসের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা পাবেন।
পরীক্ষার্থীরা তিনভাবে এইচএসসির ফলাফল জানতে পারছেন। এবার ১১টি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ১২ লাখ ৫১ হাজার ১১১ শিক্ষার্থী পরীক্ষা দেন।
আরও পড়ুনএইচএসসি পরীক্ষার ফল পুনর্নিরীক্ষণে মানতে হবে ৯টি নিয়ম১৪ অক্টোবর ২০২৫শিক্ষার্থীরা ফলাফল দেখবেন যেভাবে
১.
সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইটের রেজাল্ট (Result) কর্নারে ক্লিক করে বোর্ড ও প্রতিষ্ঠানের EIIN–এর মাধ্যমে ফলাফল ডাউনলোড করতে পারবেন। সব শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইটে Result কর্নারে ক্লিক করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের EIIN এন্ট্রি করে নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের রেজাল্ট শিট ডাউনলোড করতে পারবেন।
২.
পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষার ফলাফল নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষা বোর্ডগুলোর সমন্বিত ওয়েবসাইট ঠিকানা ও সংশ্লিষ্ট বোর্ডের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ফলাফল সংগ্রহ করতে পারবেন।
৩.
নির্ধারিত Short Code–16222–এ এসএমএসের মাধ্যমে ফলাফল পাবেন শিক্ষার্থীরা। পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের পর এসএমএসের মাধ্যমে HSC Board Name (First 3 Letters) Roll Year টাইপ করে 16222 নম্বরে পাঠাতে হবে শিক্ষার্থীদের।
উদাহরণ: HSC Dha 123456 2024 লিখে 16222–তে পাঠাতে হবে।
শিক্ষা বোর্ড, শিক্ষা মন্ত্রণালয় বা পত্রিকা অফিসে ফলাফল পাওয়া যাবে না বলে শিক্ষা বোর্ডের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।
চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরু হয়েছিল গত ২৬ জুন। লিখিত পরীক্ষা গত ১৯ আগস্ট শেষ হয়। ব্যবহারিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় ২১ থেকে ৩১ আগস্ট। এবার ১১টি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ১২ লাখ ৫১ হাজার ১১১ শিক্ষার্থী পরীক্ষা দেন।
আরও পড়ুনএসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, জানা যাবে তিনভাবে১০ জুলাই ২০২৫