টেক্সাসের বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৪৩ জনে
Published: 6th, July 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যে আকস্মিক বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪৩ জনে দাঁড়িয়েছে। অঙ্গরাজ্যের স্যান অ্যান্টোনিও শহরে তুমুল বৃষ্টির কারণে নদীর পানি বেড়ে হঠাৎ বন্যা হয়। এতে একটি খ্রিষ্টান গ্রীষ্মকালীন ক্যাম্প থেকে নিখোঁজ হয়েছেন দুই ডজনের বেশি শিশু। সূত্র : রয়টার্স
স্থানীয় সময় শুক্রবার অঙ্গরাজ্যের স্যান অ্যান্টোনিও শহরে প্রবল বর্ষণের ফলে সেখানকার গুয়াদালুপ নদীর পানি প্রায় নয় মিটার (২৯ ফুট) বেড়ে যায়। গ্রীষ্মকালীন ওই ক্যাম্পটি নদীর ধারেই ছিল। এতে ৭৫০ শিশু অবস্থান করছিল।
কার কাউন্টির পুলিশ কর্মকর্তা ল্যারি লেইথা শনিবার সাংবাদিকদের জানান, যারা বন্যায় মারা গেছেন, তাদের মধ্যে ১৫ জনই শিশু। শনিবার সকালে বন্যার পানি সরে যেতে শুরু করলে ওই অঞ্চল থেকে প্রায় ৮৫০ জনকে সরিয়ে নেওয়া হয়। কার কাউন্টির কাছের শহর কারভিলের নগর ব্যবস্থাপক ডাল্টন রাইস জানিয়েছেন, ক্যাম্পে অংশগ্রহণকারী ২৭ জন এখনো নিখোঁজ রয়েছেন।
এদিকে জাতীয় আবহাওয়া পরিষেবা (এনডব্লিউএস) জানিয়েছে, কার কাউন্টিতে বন্যার জরুরি অবস্থা মূলত শেষ হয়ে এসেছে। তবে তারা আরও ভারী বৃষ্টির সতর্কতা দিয়েছে এবং বন্যা পর্যবেক্ষণ চালু আছে।
ডাল্টন রাইস বলেন, উদ্ধার ও তল্লাশি অভিযানে সহায়তার জন্য এক হাজারেরও বেশি উদ্ধারকর্মী ঘটনাস্থলে আছেন। এতে হেলিকপ্টার ও ড্রোন ব্যবহার করা হচ্ছে। কিছু মানুষকে গাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। সহায়তার জন্য মার্কিন কোস্টগার্ডের গার্ডের হেলিকপ্টারও এসেছে।
শনিবার সকালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, কেন্দ্রীয় সরকার বন্যা মোকাবিলায় রাজ্য ও স্থানীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে একযোগে কাজ করছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র বন য ন হত
এছাড়াও পড়ুন:
মানিকগঞ্জে তাজিয়া মিছিল দেখতে সড়কের পাশে মানুষের ভিড়
মানিকগঞ্জে গড়পাড়া ইমামবাড়ি থেকে জেলা শহরের সরকারি দেবেন্দ্র কলেজ পর্যন্ত প্রায় আট কিলোমিটার সড়কের দুই পাশে ছিল মানুষের ভিড়।
আজ রোববার পবিত্র মহররমের তাজিয়া মিছিল দেখতে তাঁরা এই দীর্ঘ পথে সারিবদ্ধ হয়ে অবস্থান করেন। সড়কের পাশে ভবনগুলোর ছাদেও মানুষের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।
যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে মানিকগঞ্জে শত বছরের প্রাচীন গড়পাড়া ইমামবাড়ি অন্যান্য বারের মতো এবারও পবিত্র আশুরা পালন করছে। এ উপলক্ষে ১০ দিন ব্যাপী ব্যাপক কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়।
আজ বেলা সাড়ে তিনটার দিকে গড়পাড়া ইমামবাড়ি থেকে দেশের অন্যতম বড় তাজিয়া মিছিল বের হয়। হজরত ইমাম হোসেনের শেষ মঞ্জিলের নকশা ‘তাজিয়া’, তাঁর নিজের ব্যবহার করা ঘোড়া ‘দুলদুল’ এবং কারবালা যুদ্ধের স্মৃতি বহনকারী নিশান নিয়ে হাজার হাজার ইমামভক্তরা এই শোকমিছিলে অংশ নেন। বিগত সময়ের মতো এবারও শোকমিছিলে ‘হায় হোসেন, হায় ইমাম’ শোকধ্বনি গাইবেন ইমামভক্তরা।
এ শোকমিছিল মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড হয়ে জেলা শহরে সরকারি দেবেন্দ্র কলেজের মাঠে গিয়ে শেষ হয়। এ মিছিল দেখতে সহস্রাধিক মানুষ সড়কের দুই পাশে ভিড় করেন।
মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় তাজিয়া মিছিল দেখতে আসা শামীম হোসেন বলেন, ‘তাজিয়া মিছিলে কারবালার ময়দানে শোকাবহ ঘটনার কথা মনে করিয়ে দেয়। সেই সমবেদনা জানাতে এখানে এসেছি।’
মিছিল শেষে আজ সন্ধ্যায় সরকারি দেবেন্দ্র কলেজ মাঠে ইফতার ও মাগরিবের নামাজের পর আশুরার গুরুত্ব, তাৎপর্য ও মর্যাদা সম্পর্কে এক সভা হয়। এতে গড়পাড়া ইমামবাড়ি দরবার শরিফের প্রধান খাদেম এবং বাংলাদেশ স্পোর্টস জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের (ভিএসজেএ) সভাপতি শাহ আরিফুর রহমান সভাপতিত্ব করেন। সভায় হজরত ইমাম হোসেনের আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করা হয়। সভায় হজরত ইমাম হোসেনের আত্মার প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা প্রদর্শন করা হবে। মানিকগঞ্জের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা এ শোকসভায় কারবালার মহান শহীদদের মহান আত্মত্যাগ সম্পর্কে আলোচনা করেন। আলোচনা সভা শেষে ইসলাম ও বিশ্ব শান্তির উদ্দেশ্যে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। গড়পাড়া ইমামবাড়ির অন্যতম খাদেম শাহ্ শাহজাদা রহমান বাঁধন এ পর্ব পরিচালনা করেন।
এদিকে শোকমিছিল উপলক্ষে গড়পাড়া ইমামবাড়ি ও জেলা শহরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সদস্য মোতায়েন করা হয়। মিছিলে সুশৃঙ্খলা রক্ষায় ইমামবাড়ির স্বেচ্ছাসেবকেরা দায়িত্ব পালন করেন। এ ছাড়া সেনাসদস্যরা সড়কে টহলের পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় দায়িত্ব পালন করেন।
এদিকে গড়পাড়া ইমামবাড়ির পাশে তিন দিনব্যাপী মেলা বসেছে। মেলায় গেরস্তালি বিভিন্ন জিনিসপত্র, মনিহারি, লোহা-তামার জিনিসপত্র, শিশুদের খেলনাসহ বিভিন্ন খাবারের পসরা নিয়ে বসেছেন দোকানিরা। আশপাশের বিভিন্ন এলাকার শিশু থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সী মানুষজন মেলায় ভিড় করেন।
শাহ আরিফুর রহমান বলেন, ‘মুসলমানদের কাছে ১০ মহররমের দিন অত্যন্ত শোকের। ইয়াজিদ চেয়েছিল রাজতন্ত্র কায়েম করতে। তবে ইসলাম তথা মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর নীতি ও আদর্শের মধ্যে রাজতন্ত্র ছিল না। ইসলাম উদার ও শান্তির ধর্ম। ইমাম হোসেন ও তাঁর মাতামহ মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) সেই নীতি ও আদর্শ অনুযায়ী চলতে বলেছেন। দেখিছেন ইসলাম সত্য ও শান্তির ধর্ম; ইসলাম অসত্য, অন্যায় ও অবিচারের ধর্ম নয়। ইমাম হোসেনের সেই শিক্ষাই আমাদের নেওয়া উচিত।’