রাতে ঘর থেকে গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার, সকালে স্বামীর ৩ বাড়িতে আগুন দিল এলাকাবাসী
Published: 7th, August 2025 GMT
গাজীপুরের শ্রীপুরে স্ত্রীকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে পৃথক স্থানে এক ব্যক্তির তিনটি বাড়িতে আগুন দিয়েছে এলাকাবাসী। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে উপজেলার বরমী ইউনিয়নের মধ্যপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ছাড়া হত্যাকাণ্ডে জড়িত অভিযোগে গৃহবধূর শাশুড়িকে আটক করেছে পুলিশ।
এর আগে গতকাল বুধবার রাতে একটি বাড়ি থেকে সুইটি আক্তার (২০) নামের ওই গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তিনি ময়মনসিংহের পাগলা থানার চাকুয়া গ্রামের আফসারুল ইসলামের মেয়ে ও শ্রীপুর উপজেলার বরমী মধ্যপাড়া গ্রামের নুরুল ইসলামের স্ত্রী। দেড় বছর আগে তাঁদের বিয়ে হয়েছিল। তাঁদের ৪ মাস বয়সী একটি মেয়ে আছে।
নুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য কেনাবেচার অভিযোগ আছে। এ নিয়ে বিয়ের পর থেকে স্ত্রীর সঙ্গে নুরুলের ঝগড়া হতো। কয়েক দিন আগে স্ত্রী তাঁর মাদক ব্যবসা নিয়ে আশপাশের লোকজনকে জানালে তিনি আরও ক্ষুব্ধ হন। এর জেরে গত কয়েক দিন ধরেই তাঁদের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা চলছিল। গতকাল বুধবার রাত ১১টার দিকে ঘরে শিশুর কান্না শোনা যাচ্ছিল। প্রতিবেশীরা কাছে গিয়ে দেখতে পান বিছানায় সুইটি আক্তার নিশির নিথর মরদেহ পড়ে আছে, তার শরীরজুড়ে আঘাতের চিহ্ন। পাশে শুয়ে কাঁদছে ৪ মাসের শিশুসন্তান।
স্থানীয় একাধিক বাসিন্দা জানান, নুরুল মাদকদ্রব্যের কারবার করেন। বিষয়টি নিয়ে স্ত্রী সুইটির সঙ্গে তাঁর প্রায়ই ঝগড়া হতো। কয়েক দিন সুইটি বিষয়টি আশপাশের লোকজনকে জানালে আরও উত্তেজিত হন নুরুল। এর জেরে কয়েক দিন ধরেই তাঁদের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা চলছিল। বুধবার রাতে তাঁদের ঘর থেকে অনবরত শিশুর কান্না শোনা যাচ্ছিল। প্রতিবেশীরা কাছে গিয়ে দেখেন বিছানায় সুইটির মরদেহ পড়ে আছে এবং শরীরজুড়ে আঘাতের চিহ্ন। আর পাশেই শুয়ে কাঁদছে চার মাসের শিশুটি।
বরমী ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান রতন মিয়া বলেন, ঘরের ভেতর সুইটির মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে প্রতিবেশীরা থানায় খবর পাঠান। অভিযুক্ত নুরুল ঘটনার পর থেকেই পলাতক। খোঁজ মিলছে না তাঁর অন্য স্বজনদেরও। নুরুল মাদকের কারবার করে বিপুল সম্পদ অর্জন করেছেন। স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগ ওঠার পর আজ সকালে এলাকাবাসী উত্তেজিত হয়ে নুরুলের তিনটি বাড়িতে আগুন দেন। বাড়িগুলো একই এলাকায় সল্প দূরত্বে অবস্থিত।
এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে জানিয়ে শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহম্মদ আবদুল বারিক বলেন, ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহটি গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। মরদেহের গায়ে আঘাতের চিহ্ন আছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বাঘাইছড়িতে বৃষ্টি থামায় কমছে পানি, এখনো আশ্রয়কেন্দ্রে মানুষ
রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলায় পাহাড়ি ঢলে তলিয়ে যাওয়া নিম্নাঞ্চলের পানি কমতে শুরু করেছে। তবে আজ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এই উপজেলার দেড় শতাধিক মানুষ বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছেন। পানি কমায় কিছু সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হলেও এখনো পাঁচটি সড়কে যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।
উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্র জানায়, গত কয়েক দিন টানা বৃষ্টির কারণে উপজেলার কাচালং নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় পাহাড়ি ঢলের সৃষ্টি হয়। এতে বাঘাইছড়ি উপজেলা সদরের বেশ কিছু নিচু এলাকা তলিয়ে যায়। দেড় শতাধিক বাড়িতেও পানি ওঠে। পরে দেড় শতাধিক মানুষ উপজেলার চারটি আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বৃষ্টি কমায় আজ ভোর ছয়টা থেকে পানি কমতে শুরু করে। উপজেলার সদরের মাস্টারপাড়া, মধ্যমপাড়া, মুসলিম ব্লক, বটতলী ও পোস্ট অফিস সড়ক থেকে পানি সরে গেছে। এ কারণে এসব সড়কে যান চলাচল শুরু হয়েছে। তবে এখনো বটতলী-উগলছড়ি, সদর-বাবুপাড়া সড়কে পানি রয়েছে। এসব রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে বৃষ্টি না হলে আজ বিকেলের মধ্যে এসব সড়ক থেকে পানি নেমে যাবে বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের ধারণা।
বাঘাইছড়ি উপজেলা ব্যবসায়ী নিলবরণ চাকমা প্রথম আলোকে বলেন, গতকালের চেয়ে আজ পাহাড়ি ঢল অনেক কমেছে। কিছু রাস্তা থেকে পানি সরে গেছে। এখন মানুষ ও যানবাহন স্বাভাবিক যান চলাচল করছে।
জানতে চাইলে বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিরিন আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, ‘পাহাড়ি ঢল ও ডুবে যাওয়ার এলাকা থেকে পানি কমতে শুরু করেছে। সকাল থেকে বেশ কিছু এলাকায় থেকে পানি সরে গেছে। চার থেকে পাঁচটি আশ্রয়কেন্দ্রে দেড় শতাধিক মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। আশা করছি, বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢল না হলে আজকের মধ্যে বেশ কিছু পানি সরে যাবে।’