গ্রিপ উইকনেস বা হাতের মুঠোর দুর্বলতা দূর করবেন কীভাবে
Published: 7th, August 2025 GMT
কেন হয়, লক্ষণ কী
বেশ কিছু কারণে এই সমস্যা হয়। এর মধ্যে রয়েছে কারপাল টানেল সিনড্রোম, ঘাড়ের মেরুদণ্ডে রেডিকুলোপ্যাথি, স্নায়ুজনিত সমস্যা (ডায়াবেটিসের কারণে হতে পারে), স্ট্রোকের পর দুর্বলতা ও মোটর নিউরন ডিজিজের মতো নিউরোলজিক্যাল সমস্যা। এ ছাড়া ডি কুইরভেনস টেনোসাইনোভাইটিস, রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস বা অস্টিওআর্থ্রাইটিস, ট্রিগার ফিঙ্গার ও টেনডন ইনজুরির কারণেও হতে পারে। মায়োপ্যাথি ও মাসকুলার ডিসট্রফির মতো পেশির সমস্যা এবং হাতের ফ্র্যাকচার ও নার্ভে ইনজুরির মতো আঘাতজনিত সমস্যায় হাতের মুঠো দুর্বল হয়ে যায়।
গ্রিপ উইকনেস হলে বেশ কিছু লক্ষণ দেখা যায়। এর মধ্যে রয়েছে কোনো বস্তু ধরতে গেলে হাত থেকে পড়ে যাওয়া, লেখার সময় কলম ঠিকমতো না ধরতে পারা, বোতাম লাগানো ও নব ঘুরিয়ে দরজা খুলতে সমস্যা হওয়া, হাতে ঝিমঝিম বা অবশ ভাব ও পেশির ক্ষীণতা ইত্যাদি।
আরও পড়ুনমিডি ড্রেসে ৬ রঙে কেয়া পায়েল, ২৫টি ছবিতে দেখুন তাঁর সাজপোশাকের খুঁটিনাটি২ ঘণ্টা আগেচিকিৎসা ও করণীয়ফিজিয়্যাট্রিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে এ রোগের উপশম সম্ভব। এর জন্য আগে মূল কারণ নির্ণয় করতে হবে। এ ক্ষেত্রে রোগের সঠিক ইতিহাস ও কিছু পরীক্ষার প্রয়োজন পড়ে। যদি সন্দেহ হয় যে নিউরোপ্যাথি, তাহলে ইমএমজি বা এনসিভি পরীক্ষা করতে হবে। টেনডন ইনজুরি বা নার্ভে চাপ মনে হলে সে ক্ষেত্রে এমআরআই বা আলট্রাসাউন্ড করতে হবে।
কিছু থেরাপি বেশ কাজের। এর মধ্যে একটি হলো হাতের ফিজিওথেরাপি। ফিঙ্গার স্ট্রেচ, রিস্ট এক্সটেনশন ফ্লেক্সন স্ট্রেচ করা যেতে পারে। হ্যান্ড গ্রিপার ব্যবহার, বিশেষ বস্তু নিয়ে স্কুইজ, রাবার ব্যান্ড দিয়ে ফিঙ্গার এক্সটেনশন করতে পারেন। বাটনিং প্র্যাকটিস ও পেগ বোর্ড গেমেও উপকার পাওয়া যায়।
ব্যথা হলে টেনস থেরাপি, কারপাল টানেল বা টেনডনের প্রদাহে আলট্রাসাউন্ড থেরাপি, পেশির শক্তি ও নমনীয়তা বাড়াতে নিউরোমাস্কুলার ইলেকট্রিক্যাল স্টিমুলেশন, স্প্লিন্ট ব্যবহার, রিস্ট কক আপ স্প্লিন্ট, থাম্ব স্পিকা স্প্লিন্ট, রেস্টিং হ্যান্ড স্প্লিন্ট করা যেতে পারে। স্ট্রোকের পর মিরর থেরাপি কার্যকর।
আরও পড়ুনবান্দরবানের গহিনে একটি কুকুর যেভাবে গাইড হয়ে আমাকে পথ দেখাল৯ ঘণ্টা আগেচিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী প্রদাহরোধী ওষুধ সেবন করা যেতে পারে। নিউরোপ্যাথি থাকলে গাবাপেনটিন বা প্রিগাবালিন, ভিটামিন বি১, বি৬, বি১২ ও রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস বা অন্য বাতরোগ থাকলে তার চিকিৎসা নিতে হবে।
সহজে ধরা যায়, এমন সরঞ্জাম ব্যবহার করতে হবে। এক হাতে কাজ করার উপায় শিখে নিতে হবে। স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রপাতির ইলেকট্রিক টুথব্রাশ, স্বয়ংক্রিয় তালা, ভয়েস অ্যাকটিভেটেড ফোন ব্যবহার করতে পারেন। কাজের ফাঁকে ফাঁকে বিশ্রাম নিতে হবে। ভারী বস্তু তোলা যাবে না।
ডা.
সাকিব আল নাহিয়ান, ফিজিক্যাল মেডিসিন বিশেষজ্ঞ, গ্রিন লাইফ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, ঢাকা
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
রাকসু নির্বাচন পেছানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত বিকেলে
শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ডাকা কম্পলিট শাটডাউনের মধ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (রাকসু), হল সংসদ ও সিনেট প্রতিনিধি ভোট পিছিয়ে দেওয়া হবে কি না সে সিদ্ধান্ত সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে নেবে নির্বাচন কমিশন। বিকেল ৫টায় নির্বাচন কমিশন এ ব্যাপারে সভা ডেকেছে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার ড. এফ নজরুল ইসলাম দুপুর দেড়টায় সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এ তথ্য জানিয়েছেন।
আরো পড়ুন:
শাটডাউনের মধ্যে রাকসু নির্বাচন হতে পারে না
দুর্গাপূজার পরে রাকসু নির্বাচন চায় ছাত্রদল
তিনি বলেন, “বিকেলে নির্বাচন কমিশনের সভা ডাকা হয়েছে। শিক্ষক কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের শাটডাউন কর্মসূচির কারণে যদি নির্বাচনের পরিবেশ না থাকে, তাহলে সে বিষয়ে কমিশনে আলোচনা হবে। আগামী ২৫ সেপ্টেম্বরই ভোট গ্রহণ হবে কিনা সে সিদ্ধান্তই সভায় নেওয়া হবে।”
প্রধান নির্বাচন কমিশনার ব্রিফ করার আগে সচেতন শিক্ষার্থী সংসদ, রাকসু ফর র্যাডিকাল চেঞ্জ, সর্বজনীন শিক্ষার্থী সংসদ ও ইউনাইটেড ফর রাইটস প্যানেলের প্রার্থীরা তাকে একটি স্মারকলিপি দেন। এতে তারা উল্লেখ করেন, পোষ্য কোটা ইস্যুতে শিক্ষক কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের চলমান আন্দোলন কর্মসূচির মধ্যে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হতে পারে না। তারা এ বিষয়টি বিবেচনার জন্য নির্বাচন কমিশনকে অনুরোধ জানান।
এর আগে, আজ দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন মাকেটে প্যানেল চারটির পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করা হয়। সেখানে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সর্বজনীন শিক্ষার্থী সংসদের ভিপি প্রার্থী ও সাবেক সমন্বয়ক তাসিন খান।
তিনি বলেন, “আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর রাকসু নির্বাচন উপলক্ষ্যে আমরা সবাই উৎসবমুখর পরিবেশে প্রচারণা করছিলাম। পোষ্য কোটাকে সামনে এনে বিশ্ববিদ্যালয়ে যে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি হয়েছে সেখানে ছাত্র, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী সবাই পরষ্পরের মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে, যা আমাদের কখনোই কাম্য নয়। রাকসু আমরা চাই, রাকসু দিতে হবেই। নির্বাচন কোনোভাবেই বন্ধ করা চলবে না। নির্বাচনের প্রাণ শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ না হলে সেই নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হবেই।”
তাসিন বলেন, “পোষ্য কোটা ইস্যুতে ক্যাম্পাস কমপ্লিট শাটডাউনের শিক্ষার্থীরা অলরেডি বাসায় যাওয়া শুরু করেছে। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দুর্গাপূজা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ ছুটির পাশাপাশি অনাকাঙ্ক্ষিত এই কমপ্লিট শাটডাউন আমাদের সব প্যানেলের, সব সতন্ত্র প্রার্থীর প্রচারণায় বাঁধা হয়ে দাড়িয়েছে এবং দীর্ঘ ৩৫ বছর পর হতে যাওয়া রাকসু নির্বাচনকে সরাসরি প্রশ্নবিদ্ধ করবে।”
তিনি বলেন, “আমরা চাই শান্তিপূর্ণ, আনন্দমুখর পরিবেশে রাকসু নির্বাচন যা শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের নিয়েই সম্ভব যে পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয় এখন নেই। বিশ্ববিদ্যালয়কে কমপ্লিট শাটডাউনে রেখে কোনোভাবে রাকসু নির্বাচন হতে পারে না। এটা সুস্পষ্ট রাকসু নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র।”
সংবাদ সম্মেলন থেকে বলা হয়, রাকসু নির্বাচন হতে হবে এবং কোনোভাবে সেটা প্রশ্নবিদ্ধ করা যাবে না। তবে ক্যাম্পাস শাটডাউন, ক্লাস অফ রেখে শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাস বিমুখ রেখে কোনোভাবে রাকসু নির্বাচন হতে পারে না। সবার অংশগ্রহণে সুষ্ঠু রাকসু নির্বাচন হবার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অতি দ্রুত পোষ্য কোটা ইস্যু মিমাংসা করে ক্যাম্পাসের স্থিতিশীল পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে হবে।
তাসিন বলেন, “লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড রেখে রাকসু নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে। আমরা কোনোভাবে আমাদের প্রাণের রাকসু নির্বাচনকে একতরফা নির্বাচন হতে দিতে চাই না। ক্যাম্পাসের অস্থিতিশীল পরিবেশ, কমপ্লিট শাটডাউন, পূজার ছুটি সব কিছু বিবেচনা করে রাকসু নির্বাচন কমিশনারকে পরবর্তী পদক্ষেপ অতি দ্রুত নিতে হবে।”
সংবাদ সম্মেলনে এই প্যানেলগুলোর তাপসি রাবেয়া, সোহরাওয়ার্দী হল, জিয়া হল, বিজয় ২৪ হল ও সৈয়দ আমির আলি হলের প্রার্থীরাও উপস্থিত ছিলেন।
রাকসু নির্বাচনে মোট ১১টি প্যানেল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। এর মধ্যে চারটি প্যানেল শাটডাউনের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে স্মারকলিপি দিল।
ঢাকা/কেয়া/মাসুদ