জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের এক ছাত্রীকে হেনস্তার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির দুই সদস্যসহ তিন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ওই ছাত্রীকে হেনস্তা করা হয় বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।

হেনস্তার ঘটনায় ভুক্তভোগী ছাত্রী বৃহস্পতিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসে বিচার চেয়ে একটি লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন। তাতে ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী উল্লেখ করেন, বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার দিকে ক্লাস শেষে ফিন্যান্স বিভাগের সামনের সিঁড়ি দিয়ে যাওয়ার সময় ছাত্রদলের সদস্য আবদুর রহমান তাঁকে বাজেভাবে উত্ত্যক্ত করেন। তখন তাঁর সঙ্গে থাকা দুই সহপাঠী প্রতিবাদ করলে আবদুর রহমান বলেন, ‘আমরা মেয়ে দেখলেই টিটকারি দেব। যা পারেন করেন।’ আবদুর রহমান আরও বলেন, নিজ বিভাগে তিনি যা ইচ্ছা, তা-ই করবেন। তাঁর সঙ্গে থাকা দুই সহপাঠী তাঁকে সমর্থন করে ইন্ধন দেন।

লিখিত অভিযোগে ওই ছাত্রী বলেন, ‘এমন ঘটনায় আমরা মেয়েরা নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। ওই ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।’

হেনস্তার বিষয়ে প্রথম আলোকে ভুক্তভোগী ছাত্রী বলেন, ‘ক্লাস শেষে সিঁড়ি দিয়ে নামার সময় মোবাইলে কথা বলছিলাম। তখন আবদুর রহমান খুব বাজেভাবে কথা বলেন। আমার সঙ্গে থাকা দুই বান্ধবী তাঁর কথার প্রতিবাদ করে। তখন তাঁদেরও হেনস্তা করেন আবদুর রহমানের সঙ্গে থাকা আরও দুইজন।’

ওই ছাত্রী বলেন, ‘তারা তখন বলে, “মেয়ে দেখলে টিজ করবই। আমরা বিভাগেও করি, খোঁজ নিয়ে দেখেন! যা পারেন কইরেন।”’

ওই ছাত্রী আরও বলেন, ‘আমি ঘটনার সঠিক বিচার চাই। আমরা পরিচয় দেওয়ার পরও সে আমাদের সঙ্গে খুব বাজে ব্যবহার করে, যা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। আমি তাঁর সিনিয়র হয়েও যদি এমন ঘটনার সম্মুখীন হই, তাহলে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের জুনিয়র মেয়েদের কী হবে? আমাদের ক্যাম্পাসে কি নারী শিক্ষার্থীদের কোনো নিরাপত্তা নেই?’

এ ধরনের ভাষা ও আচরণ শুধু অশোভন নয়, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের নারীবান্ধব পরিবেশের জন্য একটি স্পষ্ট হুমকি বলে মন্তব্য করেন ওই শিক্ষার্থী।

ঘটনার সময় ওই ছাত্রীর সঙ্গে থাকা (নাম প্রকাশ না করার শর্তে) এক সহপাঠী প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা ঘটনাটি সরাসরি দেখেছি। ক্লাস শেষে সিঁড়ি দিয়ে নেমে যাচ্ছিলাম। আমার বান্ধবী আমাদের সামনে দিয়ে যাচ্ছিলেন। তাঁকে দেখে আবদুর রহমান খারাপ ইঙ্গিত করেন।’

হেনস্তার ঘটনায় অভিযুক্ত তিনজনই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র। তাঁদের মধ্যে আবদুর রহমান ফিন্যান্স বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সুমন সরদারের অনুসারী। অপর দুজনের মধ্যে সৈকত মাহমুদও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য। সোহাগ গাজী একই বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে।

এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সদস্যসচিব শামসুল আরেফিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমরা খবর নিচ্ছি। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় তদন্ত করা হবে। যদি কারও ব্যাপারে গুরুতর অভিযোগ পাওয়া যায়, তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক তাজাম্মুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা অভিযোগ পেয়েছি। ইভ টিজিংয়ের অভিযোগ খুব গুরুতর। আদালতের নির্দেশনা আছে এসব অভিযোগ পেলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রিপোর্ট দেওয়ার জন্য। আমরা দুইজন সহকারী প্রক্টরকে ঘটনার তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছি। তাঁরা রিপোর্ট প্রদান করলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আবদ র রহম ন প রথম আল ক ছ ত রদল র ওই ছ ত র র সদস য আম দ র ঘটন র ঘটন য়

এছাড়াও পড়ুন:

প্রশ্ন: গুণিতক ও গুণনীয়ক কাকে বলে?

# গুণিতক কী:

গুণিতক হলো কোনো সংখ্যাকে ১ থেকে শুরু করে যেকোনো ‘পূর্ণ সংখ্যা’ দিয়ে গুণ করলে যে ফল পাওয়া যায়।

উদাহরণ: ৩–এর গুণিতকগুলো হলো ৩, ৬, ৯, ১২ ইত্যাদি।

# গুণনীয়ক কী:

গুণনীয়ক হলো সেই সব সংখ্যা, যা দিয়ে কোনো নির্দিষ্ট সংখ্যাকে ভাগ করলে কোনো ‘ভাগশেষ’ থাকে না, অর্থাৎ নিঃশেষে ভাগ করা যায়।

উদাহরণ:

১০-এর গুণনীয়ক: ১, ২, ৫ ও ১০

১২-এর গুণনীয়ক: ১, ২, ৩, ৪, ৬ ও ১২

১৩-এর গুণনীয়ক: ১ ও ১৩

আরও পড়ুনমৌলিক সংখ্যা কাকে বলে, দেখুন উদাহরণসহ১৯ অক্টোবর ২০২৫

# গুণিতক কাকে বলে?

কোনো সংখ্যাকে ১, ২, ৩, ৪... ইত্যাদি যেকোনো পূর্ণ সংখ্যা দিয়ে গুণ করলে যেসব সংখ্যা পাওয়া যায়, সেগুলোই ওই সংখ্যার গুণিতক।

উদাহরণ: ৩-এর গুণিতক ৩, ৬, ৯, ১২, ১৫...ইত্যাদি।

সহজভাবে বলতে গেলে বলা যায়, গুণিতক হলো একটি ‘সংখ্যার নামতা’।

# গুণনীয়ক কাকে বলে?

কোনো সংখ্যাকে যে যে সংখ্যা দিয়ে ভাগ করলে কোনো ভাগশেষ থাকে না, সেই সব সংখ্যাকে ওই নির্দিষ্ট সংখ্যার গুণনীয়ক বলা হয়।

গুণনীয়কের অপর নাম উৎপাদক।

উদাহরণ: ১২–এর গুণনীয়কগুলো হলো ১, ২, ৩, ৪, ৬ ও ১২। কারণ, এসব সংখ্যা দিয়ে ১২-কে ভাগ করলে কোনো ভাগশেষ থাকে না।

লেখক: রতন কান্তি মণ্ডল, সিনিয়র শিক্ষক, উদয়ন উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়, ঢাকা

আরও পড়ুনসংগীত ও শারীরিক শিক্ষা বিষয়ে শিক্ষক নিয়োগ বাদ দেওয়ার বিষয়ে যে ব্যাখ্যা দিল অন্তর্বর্তী সরকার০৪ নভেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ