লালবাগে বাসার নিচ থেকে রক্তাক্ত কলেজছাত্রকে উদ্ধার, পরে মৃত্যু
Published: 8th, August 2025 GMT
পুরান ঢাকার লালবাগে একটি বাড়ির নিচ থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় সোলেমান শাহাদত (২০) নামে এক কলেজছাত্রকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। সেখানে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। পুলিশ প্রাথমিকভাবে মনে করছে, বাসার ছাদ থেকে শাহাদত নিচে পড়ে গেছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে সোলেমান মারা যান। তাঁর বাবা নাজমি শাহদাত নিরাপত্তাকর্মী। সোলেমান লালবাগের স্থানীয় একটি কলেজে পড়াশোনার পাশাপাশি ধানমন্ডির একটি রেস্তোরাঁয় খণ্ডকালীন চাকরি করতেন।
লালবাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নাজমুল হোসেন বলেন, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, গতকাল রাতে সোলেমান রেস্তোরাঁর কাজ শেষে তাঁর বন্ধু সিয়ামের বাসায় যান। তাঁরা দুজন বাড়ির তৃতীয় তলার ছাদে বসে ছিলেন। একপর্যায়ে সোলেমান ছাদের রেলিং থেকে দুই ভবনের মাঝের ফাঁকা জায়গা দিয়ে নিচে পড়ে যান। রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে গতকাল রাত পৌনে ১২টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক সোলেমানকে মৃত ঘোষণা করেন।
পুলিশ কর্মকর্তা নাজমুল আরও বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে সিয়াম পুলিশকে বলেছেন, ছাদের রেলিংয়ের উচ্চতা কম ছিল। সোলেমান রেলিংয়ে বসে কথা বলছিলেন। অসাবধানতাবশত হঠাৎ সেখান থেকে সোলেমান নিচে পড়ে গেছেন।
সোলেমানের মৃত্যুর পেছনে অন্য কোনো কারণ রয়েছে কি না, তা তদন্ত শেষে ও ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর বলা যাবে বলছে পুলিশ। সোলেমানের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে রাখা হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: তদন ত
এছাড়াও পড়ুন:
ভারতে থাকা লালনের গানের পাণ্ডুলিপি ফেরত চাইলেন কুষ্টিয়ার ডিসি
কুষ্টিয়ার আশ্রম থেকে বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহের ৩১৪টি গানের মূল পাণ্ডুলিপি ভারতের কলকাতায় নিয়ে গিয়েছিলেন শিলাইদহের তৎকালীন জমিদার বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। ঐতিহাসিক সেই গানের পাণ্ডুলিপি বর্তমানে দেশটির পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বীরভূম জেলার ভোলপুর শহরে অবস্থিত শান্তি নিকেতন রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে পাণ্ডুলিপি ফেরত আনার দাবি জানাচ্ছিলেন লালন ভক্ত, অনুরাগী, অনুসারী ও গবেষকরা। তবে তা ফেরত পাওয়া যায়নি।
কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক (ডিসি) আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফীন কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়ার লালন একাডেমিতে পাণ্ডুলিপিগুলো ফেরত চেয়েছেন। এ জন্য সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে লিখিত আবেদন দিয়েছেন তিনি। সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) এ আবেদন পাঠানো হয়েছে।
লিখিত আবেদনে ডিসি উল্লেখ করেছেন, কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়াস্থ লালন আশ্রম থেকে লালন শাহের গানের একটি খাতা কলকাতায় নিয়ে গিয়েছিলেন কুষ্টিয়ার শিলাইদহের তৎকালীন জমিদার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। যা বর্তমানে শান্তি নিকেতনে সংরক্ষিত আছে। প্রায় ১৩৫ বছরের পুরোনো উক্ত খাতায় লালন শাহের ৩১৪টি গান রয়েছে। ইতোপূর্বে শান্তি নিকেতন থেকে লালন শাহের গানের পাণ্ডুলিপির একটি অনুলিপি প্রেরণ করা হলেও, মূল পাণ্ডুলিপি সেখানেই রয়ে গেছে।
প্রতি বছর লালন তিরোধান দিবস ও লালন স্মরণোৎসব উপলক্ষে কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়াস্থ লালন একাডেমিতে লক্ষ লক্ষ দেশ-বিদেশি লালন ভক্ত, অনুরাগী, অনুসারী ও লালন গবেষকদের আগমন ঘটে। তাদের সবার পক্ষ থেকে বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহের গানের মূল পাণ্ডুলিপি শান্তি নিকেতন থেকে কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়াস্থ লালন একাডেমিতে ফেরত আনার দাবি উঠেছে। তদুপরি সরকার ১৭ অক্টোবর লালন তিরোধান দিবসকে ‘ক’ শ্রেণির দিবস হিসেবে ঘোষণা এবং জাতীয়ভাবে পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করায় লালন তিরোধান দিবসের গুরুত্ব আরো বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে। ভক্ত, অনুরাগী, অনুসারী ও লালন গবেষকদের দাবির প্রেক্ষিতে লালন গবেষণার কাজে ব্যবহারের জন্য ফকির লালন শাহের গানের মূল পাণ্ডুলিপি শান্তি নিকেতন থেকে সংগ্রহ করে কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়াস্থ লালন একাডেমিতে সংরক্ষণ করা প্রয়োজন।
এমতাবস্থায় বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহের গানের মূল পাণ্ডুলিপি শান্তি নিকেতন থেকে কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়াস্থ লালন একাডেমিতে ফেরত এনে সংরক্ষণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হলো।
কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফীন বলেন, “লালনের ৩১৪টি গানের মূল পাণ্ডুলিপি ফেরত আনার জন্য আমরা সার্বিকভাবে চেষ্টা করছি। আমরা কলকাতা থেকে সেগুলো দ্রুত কুষ্টিয়ায় ফেরত আনতে চাই। এ জন্য সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে লিখিত আবেদন করা হয়েছে।”
ঢাকা/কাঞ্চন/মাসুদ