জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে পুলিশি হেফাজতে (রিমান্ড) নির্যাতনের ঘটনায় চিকিৎসক দিয়ে আসামির শরীর পরীক্ষা করে আঘাতসংক্রান্ত প্রতিবেদন এবং সিভিল সার্জনকে তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার জয়পুরহাটের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক এ আদেশ দেন।

আক্কেলপুর থানার উপপরির্দশক (এসআই) গোলাম রব্বানীর বিরুদ্ধে পুলিশি হেফাজতে থাকা ওই আসামিকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। আদালতের আদেশের পর গোলাম রব্বানীকে থানা থেকে প্রত্যাহার করে জেলা পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে।

আক্কেলপুর থানা সূত্রে জানা যায়, গত মার্চে ইসলামী ব্যাংকের আক্কেলপুর এজেন্ট শাখায় গ্রাহকদের টাকা আত্মসাতের ঘটনা ধরা পড়ে। এ ঘটনায় থানা ও আদালতে পৃথক আটটি মামলা করা হয়। এসব মামলায় তিনজনকে আসামি করা হয়। তাঁরা হলেন এজেন্ট শাখার মালিক জাহিদুল ইসলাম, ব্যবস্থাপক রিজওয়ানা ফারজানা ও ক্যাশিয়ার মাসুদ রানা। তিন আসামি কারাগারে ছিলেন। ৪ আগস্ট তিন আসামিকে তিন দিনের পুলিশি হেফাজতে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। আসামি সোহেল রানা পুলিশি হেফাজতে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই গোলাম রব্বানী গতকাল আদালতে মাসুদ রানাকে হাজির করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি রের্কডের আবেদন করেন এবং আরও পাঁচ দিন পুলিশি হেফাজতের নেওয়ার জন্য আদালতে আবেদন করেন। তবে আদালত ওই আবেদন নামঞ্জুর করে একটি আদেশ দেন।

আদালতের আদেশে বলা হয়েছে, আসামি জাহিদুল ইসলাম ও রিজওয়ানা ফারজানাকে পৃথকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তাঁরা এ অপরাধের সঙ্গে জড়িত নন বলে দোষ স্বীকার করতে অস্বীকৃতি জানান। অপর আসামি মাসুদ রানাকে জিজ্ঞাসাবাদে জানান, ৪ আগস্ট তাঁকে পুলিশি হেফাজতে এনে এসআই গোলাম রব্বানী জানালার সঙ্গে হাতকড়া লটকায়ে বেধড়ক মারপিট করেছেন। তাঁর শরীরের ক্ষতচিহ্ন আদালতের পরীলক্ষিত হয়। তিনি আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিতে ইচ্ছুক নন। এ ছাড়া পুলিশি হেফাজতে নিয়ে শারীরিক নির্যাতন করায় তাঁর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করার আইনগত সুযোগ নেই।

আদালত একজন রেজিস্টার্ড চিকিৎসক দিয়ে মাসুদ রানার দেহ পরীক্ষা করে শরীরের আঘাতসংক্রান্ত প্রতিবেদন জয়পুরহাট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ককে আগামী ১০ আগস্ট দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন। আদালতের আদেশে বলা হয়েছে, আসামি মাসুদ রানার জবানবন্দি পর্যালোচনায় দেখা যায়, আক্কেলপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আসামির শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ না করেই পুলিশের কথা শুনে সার্টিফিকেট দিয়েছেন। এটি দায়িত্বের চরম অবহেলা। ঘটনাটি তদন্ত করে ১৭ আগস্ট সিভিল সার্জনকে আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে এসআই গোলাম রব্বানী প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি তিনজন আসামির কাউকেই পুলিশি হোফাজতে নির্যাতন করিনি। আসামি মাসুদ রানা টাকা আত্মসাতের কথা গ্রাহকদের সামনে স্বীকার করেছেন। এখন মামলাগুলো অভিযোগপত্র প্রস্তুতের পর্যায়ে রয়েছে। মাসুদ রানা মামলা থেকে বাঁচতে কৌশল খুঁজছেন।’

জয়পুরহাটের পুলিশ সুপার (এসপি) মুহম্মদ আবদুল ওয়াহাব গতকাল রাতে প্রথম আলোকে বলেন, এসআই গোলাম রব্বানী পুলিশি হেফাজতে থাকা আসামির সঙ্গে অপেশাদার আচরণ করেছেন। এ কারণে তাঁকে থানা থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আস ম র আগস ট

এছাড়াও পড়ুন:

পোশাককর্মীর এক মোবাইল ফোন উদ্ধারে গিয়ে ১৪৮টি জব্দ

চট্টগ্রাম মহানগরীতে এক পোশাককর্মীর চুরি যাওয়া মোবাইল ফোন উদ্ধার করতে গিয়ে ১৪৮টি মোবাইল ফোন জব্দ করেছে চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (পশ্চিম জোন)। এ সময় দুটি ডিএসএলআর ক্যামেরাও জব্দ করা হয়েছে। আটক করা হয়েছে মোবাইল চুরি ও বিক্রয় সিন্ডিকেটের তিন সদস্যকে। 

শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রামের দামপাড়ায় মহানগর পুলিশের মিডিয়া সেন্টারে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন সিএমপি ডিবি বন্দর জোনের উপ-কমিশনার মোহাম্মদ আবু বক্কর সিদ্দিক। চট্টগ্রাম নগরের কোতোয়ালী থানার পুরাতন রেলওয়ে স্টেশন ও চৈতন্য গলি এলাকা থেকে এই বিপুল সংখ্যক মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে।

প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, গত ২৪ আগস্ট ভোরে চট্টগ্রাম নগরের চান্দগাঁও থানাধীন জাহাঙ্গীর কলোনির টিনশেড বাসা থেকে পোশাক শ্রমিক আকবর হোসেনের ভিভো ব্র্যান্ডের একটি মোবাইল ফোন কে বা কারা চুরি করে নিয়ে যায়। অসহায় এই শ্রমিক প্রায় ২০ দিন পর তার মোবাইল ফোন উদ্ধারে গোয়েন্দা পুলিশ পশ্চিম জোনের শরণাপন্ন হন। 

অভিযোগ পেয়ে মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করতে ডিবি পশ্চিম জোনের এসআই মো. ইমাম হোসেনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। পরে উপ-কমিশনার মোহাম্মদ আবু বকর সিদ্দিকের দিকনির্দেশনায় পুলিশ পরিদর্শক ধীমান মজুমদারের তত্ত্বাবধানে এসআই মো. ইমাম হোসেনের নেতৃত্বে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাতে নগরের কোতোয়ালী থানার পুরাতন রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় অভিযান চালানো হয়। এ সময় পোশাককর্মী আকবরের চুরি যাওয়া মোবাইল ফোনসহ ৪৮টি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়। গ্রেপ্তার করা হয় সোহেল মিয়া (৩৩) নামের মোবাইল চোর চক্রের এক সদস্যকে। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে কোতোয়ালী থানাধীন স্টেশন রোড ও চৈতন্য গলি এলাকায় অভিযান চালিয়ে চোর চক্রের দুই সদস্য আবদুল হাকিম (২৭) ও মো. ইয়াছিনকে (২০) গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় দুটি আইফোন ও দুটি ডিএসএলআর ক্যামেরা। 

আটক ব্যক্তিরা দীর্ঘদিন ধরে মোবাইল ফোন চুরি, ছিনতাই ও বিক্রির সঙ্গে জড়িত থাকার কথা পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। 

জব্দ করা মোবাইল ফোনগুলো আইনি প্রক্রিয়ায় প্রকৃত মালিকদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার আবু বক্কর সিদ্দিক।

ঢাকা/রেজাউল/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কুমিল্লায় ৪ মাজারে হামলার ঘটনায় আরও দুজন গ্রেপ্তার
  • ঢাকার বংশালে বৃষ্টির জমা পানিতে পড়ে অচেতন, হাসপাতালে মৃত ঘোষণা
  • কুমিল্লায় চার মাজারে হামলার তিন দিন পর গ্রেপ্তার ২
  • বৈষম্যবিরোধী মামলায় কুবি কর্মচারী গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ
  • মায়ের কোলে ১১ দিনের নবজাতক, প্রিজন ভ্যানে চেপে কারাগারে
  • গোপালগঞ্জে দু শিক্ষার্থী ছিনতাইয়ের কবলে: ছিনতাইকারী গ্রেপ্তার
  • পোশাককর্মীর এক মোবাইল ফোন উদ্ধারে গিয়ে ১৪৮টি জব্দ