নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের অধিকারের প্রথম পদক্ষেপ বাস্তবায়িত হবে: তারেক রহমান
Published: 10th, August 2025 GMT
স্বৈরাচার পালিয়ে যাওয়ার পর এখন জনগণের শাসন ও রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেছেন, ‘আমরা দেখছি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সেই পথে ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছে। সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়েছে, ইনশাআল্লাহ আগামী রোজার আগে দেশে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে জনগণের অধিকারের প্রথম পদক্ষেপ বাস্তবায়িত হবে।’
আজ রোববার বিকেলে রাজশাহী মহানগর বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তারেক রহমান এ কথা বলেন। রাজশাহী নগরের পাঠানপাড়া এলাকায় কেন্দ্রীয় ঈদগাহের পাশের সড়কে প্রায় দেড় যুগ পর রাজশাহী মহানগর বিএনপির এই সম্মেলন আয়োজন করা হয়।
দেশের ভঙ্গুর প্রতিষ্ঠানগুলোকে পুনর্গঠন করা বিএনপির অন্যতম প্রধান লক্ষ্য উল্লেখ করে সম্মেলনে তারেক রহমান বলেন, ‘বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার একটি সংস্কার কমিশন গঠন করেছে। আপনারা পত্রপত্রিকায় দেখেছেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে নিয়ে সংস্কার কমিশনে যে আলাপ-আলোচনা হয়েছে, যত সংস্কার আলাপ-আলোচনা হয়েছে, তার অধিকাংশ সংস্কার বিএনপি আড়াই বছর আগেই জাতির সামনে রাষ্ট্র মেরামতের দফা হিসেবে ৩১ দফা উপস্থাপন করেছিল। সংস্কার কমিশনের দেওয়া প্রস্তাবের অধিকাংশ প্রস্তাব বিএনপির দেওয়া রূপরেখার সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। বিএনপিই সর্বপ্রথম দেশের মানুষের সামনে রাষ্ট্র মেরামত দফা হিসেবে পরিচিত ৩১ দফা উপস্থাপন করেছিল। কারণ, আমরা বিশ্বাস করি, এই দেশকে যদি সামনে এগিয়ে নিতে হয়, দেশের মানুষের জীবনব্যবস্থার যদি উন্নতি করতে হয়, তাহলে কতগুলো ব্যাপারে রাষ্ট্রের সংস্কার করতে হবে।’
আরও পড়ুনতারেক রহমানের ঢাকায় বাড়ি নেই, তাই ভাড়া বাড়ি খুঁজছেন: আবদুস সালাম৫৮ মিনিট আগেক্ষমতায় গেলে বিএনপি রাষ্ট্র মেরামত ও পুনর্গঠনের ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নেবে বলে জানিয়ে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আরও বলেন, বিগত স্বৈরাচার সরকার দেশের সব সাংবিধানিক ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিয়েছে। নির্বাচনব্যবস্থা থেকে শুরু করে বিচার বিভাগ, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাত, বিচারব্যবস্থা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, অর্থনৈতিক ব্যবস্থা—প্রতিটি ক্ষেত্রেই সংস্কারের মাধ্যমে দেশকে পুনর্গঠন করতে হবে।
দলীয় নেতা–কর্মীদের উদ্দেশে তারেক রহমান আরও বলেন, ‘দেশের মানুষ আজ বিএনপির দিকে তাকিয়ে আছে। তারা বিশ্বাস করে, একমাত্র বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল, একমাত্র আপনাদের প্রিয় দল বিএনপির পক্ষেই সম্ভব ধীরে ধীরে এই দেশকে আবার গড়ে তোলা।’ তিনি বলেন, শুধু নির্বাচন হলেই হবে না। ভোটের মাধ্যমে সরকার গঠন করলেই হবে না। সামনে অনেকগুলো চ্যালেঞ্জ আছে। এই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করতে হবে। তা না হলে দেশ পিছিয়ে যাবে, দেশের মানুষ আরও কষ্ট পাবে।
রাজশাহী মহানগর বিএনপির সম্মেলনে অংশ নেওয়া নেতা–কর্মীদের একাংশ। আজ রোববার বিকেলে আজ রোববার বিকেলে নগরের পাঠানপাড়া এলাকায়.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ত র ক রহম ন র ব এনপ ব এনপ র ব যবস থ গঠন কর সরক র র গঠন
এছাড়াও পড়ুন:
নার্সদের অমর্যাদাকর অবস্থানে রাখা হয়েছে: ফরহাদ মজহার
বাংলাদেশে জনগণের স্বাস্থ্যব্যবস্থা নিশ্চিত করাটা অত্যন্ত জরুরি হলেও এখানে পেশা হিসেবে নার্সদের অমর্যাদাসম্পন্ন একটা অবস্থানে রাখা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন কবি ও রাষ্ট্রচিন্তক ফরহাদ মজহার।
ফরহাদ মজহার বলেন, ‘নার্সদের ডাক্তারি ব্যবস্থার অধীন একটা পেশা হিসেবে যে দেখা হয়, আমরা মনে করি এটা ভুল। এখান থেকে মুক্ত হতে হবে। নার্স সেবাটা স্বাস্থ্যসেবার একটা মৌলিক দিক। ফলে তাঁদের স্বাধীনভাবে এই পেশাকে চর্চা করবার সুযোগ–সুবিধা দিতে হবে।’
আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন ফরহাদ মজহার। সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বাংলাদেশ নার্সেস অ্যাসোসিয়েশন (বিএনএ) ও স্বাস্থ্য আন্দোলন। স্বাস্থ্য আন্দোলনের পক্ষে বক্তব্য দেন ফরহাদ মজহার।
সরকার স্বাস্থ্যকে এখন আর জনগণের অধিকার হিসেবে স্বীকার করছে না বলে অভিযোগ করেন ফরহাদ মজহার। তিনি বলেন, ‘এখন স্বাস্থ্যকে অধিকার নয়, বাজারজাত পণ্য বানানো হয়েছে। টাকা থাকলে চিকিৎসা পাবেন, টাকা না থাকলে নয়।’
নার্সদের স্বাধীন পেশাগত চর্চা, পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ, ন্যায্য বেতন ও মর্যাদা নিশ্চিতের জন্য জাতীয় নার্সিং কমিশন গঠনের দাবি জানিয়ে ফরহাদ মজহার বলেন, নার্সদেরকে ডাক্তারদের হুকুমমতো চলতে হবে—এই ধারণা ভাঙতে হবে। স্বাস্থ্য মানে শুধু প্রেসক্রিপশন নয়, প্রতিরোধও একটি বড় দিক। নার্সদের মর্যাদা ও স্বাধীনতা নিশ্চিত হলে জনগণ প্রকৃত স্বাস্থ্যসেবা পাবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফরহাদ মজহার বলেন, নার্সিং স্বাস্থ্যসেবার এক মৌলিক দিক। কিন্তু আমাদের সমাজে চিকিৎসাকে ডাক্তারিকরণ বা মেডিক্যালাইজেশন করা হয়েছে। অনেক রোগে ডাক্তার কিংবা ওষুধের প্রয়োজনই হয় না। এ জায়গায় নার্সরা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ নার্সেস অ্যাসোসিয়েশনের (বিএনএ) সভাপতি মো. শরিফুল ইসলাম। এক মাসের মধ্যে নার্সিং কমিশন গঠনের এক দফা দাবি বাস্তবায়ন না হলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনের সঞ্চালনা করেন বিএনএর সহসভাপতি মাহমুদ হোসেন তমাল। এতে উপস্থিত ছিলেন স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারপারসন জরিনা খাতুন, সহসভাপতি মনির হোসেন ভূঁইয়া এবং সংগঠনের অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতা-কর্মী।