কারাগার থেকে ভার্চ্যুয়াল আদালতে হাজিরা দিলেন ইনু, মেনন, পলকসহ ৯ আসামি
Published: 12th, August 2025 GMT
সাবেক মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনুসহ ৯ জন কারাগার থেকে ভার্চ্যুয়ালি আদালতে হাজিরা দিয়েছেন। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুজ্জামান সোমবার ভার্চ্যুয়ালি তাঁদের হাজিরা নেন। প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের প্রসিকিউশন বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) মো.
পুলিশ ও আদালত সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, ভার্চ্যুয়ালি আদালতে হাজিরা দিয়েছেন সাবেক তথ্যমন্ত্রী ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু, সাবেক বেসামরিক বিমান পরিবহনমন্ত্রী ও বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, সাবেকমন্ত্রী শাজাহান খান, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি বিনিয়োগ ও শিল্পবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, সাবেক তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক, সাবেক সংসদ সদস্য সাদেক খানসহ ৯ জন।
আদালত কর্তৃক তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার আইন, ২০২০ অনুযায়ী ভার্চ্যুয়াল আদালত চালুর বিষয়ে ৬ আগস্ট ঢাকার সিএমএম মোস্তাফিজুর রহমান অফিস আদেশ জারি করেন। সেই আদেশে বলা হয়, ঢাকার সিএমএমসহ বিভিন্ন আদালতে চাঞ্চল্যকর মামলা বিচারাধীন। এসব মামলায় প্রতিদিন কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি ও কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে প্রচুরসংখ্যক আসামিকে বিভিন্ন যানবাহনে আনা–নেওয়া করা হয়। এই আসামিদের মধ্যে জঙ্গিসহ ভয়ংকর সন্ত্রাসী এবং রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নের অভিযোগ ও দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত আসামিরা রয়েছেন। এই আসামিদের আদালতে আনা–নেওয়ার ক্ষেত্রে প্রায়ই নিরাপত্তাঝুঁকি দেখা যায়।
এই আসামিদের প্রতি জনগণের প্রচণ্ড ক্ষোভ থাকায় জনগণ আদালত প্রাঙ্গণে প্রায়ই তাঁদের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটান। এমন পরিস্থিতি অবসানের জন্য সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচার শাখার বিজ্ঞপ্তি এবং তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার আইন অনুযায়ী অডিও, ভিডিও বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিকস ডিভাইসের মাধ্যমে সাক্ষ্য গ্রহণ, মামলার শুনানির নির্দেশনা রয়েছে। ওই আইন অনুযায়ী ঢাকার সিএমএম আদালতের ২৮ নম্বর আদালতের এজলাস কক্ষ ডিজিটাল কোর্ট রুম হিসেবে প্রস্তুত করা হয়েছে। এ জন্য জুম প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে ২৮ নম্বর আদালতে ভার্চ্যুয়াল পদ্ধতিতে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবারও সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, হাসানুল হক ইনুসহ বেশ কয়েকজন আসামির ভার্চ্যুয়ালি হাজিরা শুনানির দিন ধার্য রয়েছে।
জানতে চাইলে জুনাইদ আহ্মেদ পলকের আইনজীবী ফারজানা রহমান ও আনিসুল হকের আইনজীবী আসিফুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ভার্চ্যুয়াল পদ্ধতিতে তাঁদের মক্কেলদের হাজিরা দেওয়ার তথ্য জানা নেই।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: রহম ন
এছাড়াও পড়ুন:
জামিনের পর মামলা নিয়ে মেহজাবীনের বিবৃতি
ব্যবসায় অংশীদার করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ২৭ লাখ টাকা ‘আত্মসাৎ করা ও হত্যার হুমকি দেওয়ার’ অভিযোগের মামলায় আত্মসমর্পণ করে জামিন পেয়েছেন ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরী ও তার ভাই আলিসান চৌধুরী।
রবিবার (১৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ঢাকার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৩ এর বিচারক আফরোজা তানিয়া শুনানি শেষে তাদের জামিন মঞ্জুর করেন। গণমাধ্যমকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন মেহজাবীন চৌধুরীর আইনজীবী তুহিন হাওলাদার।
আরো পড়ুন:
আত্মসমর্পণ করে জামিন পেলেন মেহজাবীন চৌধুরী
গ্রেপ্তারি পরোয়ানা প্রসঙ্গে যা বললেন মেহজাবীন
সোমবার (১৭ নভেম্বর) সকালে মেহজাবীন চৌধুরী তার ভেরিফায়েড ফেসবুকে একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছেন। তাতে এ মামলার বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেছেন এই অভিনেত্রী।
মেহজাবীন চৌধুরী বলেন, “একজন অজানা ব্যক্তি ২০২৫ সালের মার্চ মাসে আমার ও আমার ১৯ বছর বয়সি ছোট ভাইয়ের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেছেন। গত নয় মাসে আমি এই মামলার কোনো তথ্য পাইনি, কারণ অভিযোগকারী পুলিশকে আমার সঠিক ফোন নম্বর, সঠিক ঠিকানা বা কোনো যাচাইকৃত তথ্য দিতে পারেননি। তিনি দাবি করেন যে, ২০১৬ সাল থেকে তিনি আমার সাথে ‘ব্যবসা’ করছিলেন।”
মেহজাবীন চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগের কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি অভিযোগকারী। এ বিষয়ে মেহজাবীন চৌধুরী বলেন, “তবে যোগাযোগের কোনো প্রমাণ নেই। তিনি বলেন, ‘তিনি ২০১৬ সাল থেকে আমাকে ফেসবুকে মেসেজ দিতেন। কিন্তু তিনি যা দেখাতে পারেননি।’ একটি মেসেজ যেটা তিনি আমাকে পাঠিয়েছিলেন মেসেজের, হোয়াটসঅ্যাপ বা আমার নম্বরে, কিংবা আমার পক্ষ থেকে একটি উত্তর, এমনকি একটি স্ক্রিনশটও না।”
অভিযোগকারীর পরিচয় অসম্পূর্ণ। এ তথ্য উল্লেখ করে মেহজাবীন চৌধুরী বলেন, “তার পরিচয় অসম্পূর্ণ। তার সম্পূর্ণ পরিচয়পত্র এখনো জমা দেয়া হয়নি। তার এনআইডি পর্যন্ত অনুপস্থিত। অভিযোগকারী ও তার আইনজীবী ফোন বন্ধ করে রেখেছেন। গতকাল খবর প্রকাশ হওয়ার পর থেকে অভিযোগকারী তার ফোন বন্ধ করে রেখেছেন, এমনকি তার আইনজীবীর নম্বরও বন্ধ।”
আর্থিক লেনদেনের কোনো নেই। মেহাজাবীনের ভাষায়, “আর্থিক লেনদেনের কোনো প্রমাণ নেই। তিনি দাবি করেন যে, তিনি আমাকে ২৭ লক্ষ টাকা দিয়েছেন। কিন্তু তিনি দেখাতে পারেননি—কোনো ব্যাংক লেনদেন, কোনো চেক, বিকাশ লেনদেন, কোনো লিখিত চুক্তি, কোনো রশিদ, কোনো সাক্ষী, কিছুই না। একটি কাগজপত্রও নেই।”
অপহরণের অভিযোগের বিষয়ে মেহজাবীন চৌধুরী বলেন, “১১ ফেব্রুয়ারির ঘটনাটি সম্পূর্ণ প্রমাণহীন। তিনি দাবি করেন ১১ ফেব্রুয়ারি আমি তাকে চোখ বেঁধে হাতিরঝিলের একটি রেস্টুরেন্টে নিয়ে গিয়েছিলাম, আমার ছোট ভাইসহ আরো ৪–৫ জনকে নিয়ে। গত নয় মাসে তিনি দেখাতে পারেননি রেস্টুরেন্ট বা আশেপাশের রাস্তার এক সেকেন্ডেরও সিসিটিভি ফুটেজ, কোনো সাক্ষী, কোনো প্রমাণ, কিছুই না। হাতিরঝিল ঢাকার সবচেয়ে বেশি সিসিটিভি-নিয়ন্ত্রিত এলাকা, তবু তিনি একটি ছবি বা ভিডিও ফুটেজ দেখাতে পারেননি।”
মামলা হওয়ার পর ৯ মাস কেটে গেলেও কোনো নোটিশ পাননি মেহজাবীন চৌধুরী। এ তথ্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, “গত নয় মাসে আমি কোনো নোটিশ পাইনি। এই নয় মাসে আমি কোনো পুলিশ স্টেশনের ফোন কল, কোনো কোর্টের নোটিশ বা ডকুমেন্ট। একটি নোটিশ পেলেও আমি অনেক আগে থেকেই আইনি ব্যবস্থা নিতাম।”
আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার কারণে আত্মসমর্পণ করে জামিন নিয়েছেন মেহজাবীন। তার ভাষায়, “আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। এই মামলার কোনো ভিত্তি না থাকলেও, যখন জানতে পারলাম যে একটি অ্যারেস্ট ওয়ারেন্ট জারি হয়েছে, তখন আমি আইনি প্রক্রিয়া মেনে জামিন নিয়েছি। কারণ আমি আমাদের আইন ও নিয়ম মানি। প্রমাণ ছাড়া দায়ের করা মামলা কখনো সত্য হয়ে যায় না। সত্য খুব দ্রুতই আদালতে পরিষ্কার হয়ে যাবে। এখনকার দিনে কাউকে অপমান করা, মানহানি করা বা ভাইরাল হওয়ার জন্য অন্যকে ব্যবহার করা খুবই সহজ হয়ে গেছে। এই ব্যক্তির যে উদ্দেশ্যই থাকুক, আমার বা আমার পরিবারের সুনাম ক্ষুণ্ণ করার চেষ্টা করে, সে যা-ই করতে চায়—আমি বিশ্বাস করি সবকিছু খুব দ্রুতই পরিষ্কার হয়ে যাবে।”
অনুরোধ জানিয়ে মেহজাবীন চৌধুরী বলেন, “এর আগ পর্যন্ত আমি সবাইকে অনুরোধ করব—দয়া করে সহানুভূতিশীল হোন, দয়া করে মানবিক হোন এবং কাউকে না জেনে কোনো মিডিয়া ট্রায়াল শুরু করবেন না। গত ১৫ বছর ধরে আমি আমার কাজ, আমার পেশা এবং আমার দর্শকদের জন্য যে পরিমাণ পরিশ্রম এবং নিষ্ঠা দিয়ে এসেছি, সেই পরিশ্রমের পরেও আজ আমাকে এসব ব্যাখ্যা করতে হচ্ছে—এটাই সবচেয়ে দুঃখজনক।”
ঢাকা/শান্ত