মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (মাভাবিপ্রবি) কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (মাকসু) প্রতিষ্ঠার দাবিতে আমরণ ও প্রতীকী অনশন কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষার্থীরা।

সোমবার (১১ আগস্ট) বেলা  ১১টার দিকে প্রশাসনিক ভবন প্রাঙ্গণে অপরাধ তত্ত্ব ও পুলিশবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতকোত্তর শ্রেণির শিক্ষার্থী আক্তারুজ্জামান সাজু আমরণ অনশন শুরু করেন। তার সঙ্গে সংহতি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আরো কয়েকজন শিক্ষার্থী প্রতীকী অনশনে অংশ নেন। 

মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) দ্বিতীয় দিনের মতো কর্মসূচি চলছে। অনশনরত আক্তারুজ্জামান অসুস্থ হওয়ায় স্যালাইন দেওয়া হয়েছে।

শিক্ষার্থীরা জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৯ দফা দাবির অন্যতম হলো দেশের প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে ছাত্র সংসদ প্রতিষ্ঠা। এই লক্ষ্যেই ২১ জুলাই তারা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে দাবিপত্র দেন। কিন্তু নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও রিজেন্ট বোর্ড থেকে কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি।

পরবর্তীতে ২ আগস্ট প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে ১০ আগস্টের মধ্যে রিজেন্ট বোর্ডে প্রস্তাবটি পাস করানোর আহ্বান জানানো হয়। তবে সেই সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও দাবি বাস্তবায়িত হয়নি। 

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত  আমরণ অনশন চালিয়ে যাবেন।

অনশনস্থলে শিক্ষার্থীরা “ভাত নয়, আইন খাবো”, “তালা ভাঙছি, মাকসু আনবো”, “ইনকিলাব জিন্দাবাদ”সহ বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন। 

গতকাল রাত ১০টার দিকে অনশনরত শিক্ষার্থীদের শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণে এসে শিক্ষার্থী কল্যাণ ও পরামর্শদান কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক ড.

মো. ফজলুল করীম বলেন, “শিক্ষার্থীদের দাবিটি পরবর্তী রিজেন্ট বোর্ডে তুলব। যদি তখনও সমাধান না আসে, তারা পরবর্তী কর্মসূচি নিতে পারেন। আমরা অনশন ভাঙানোর চেষ্টা করেছি এবং সার্বক্ষণিক নজরদারি রাখছি যেন কোনো নিরাপত্তা বা স্বাস্থ্যঝুঁকি না হয়।”

বিশ্ববিদ্যলয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. ইমাম হোসেন বলেন, “শিক্ষার্থীদের আবেদনের বিষয়ে প্রশাসন আলোচনা করেছে এবং একটি মিটিংও হয়েছে। আবেদনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী কীভাবে বাস্তবায়ন করা যেতে পারে, সেই প্রক্রিয়া চলছে।”

ঢাকা/আবিদ/ইভা 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আগস ট

এছাড়াও পড়ুন:

রাবি উপাচার্যের বাসভবনে সাবেক ছাত্রদল নেতার তালা

হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উর্দু বিভাগে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া চালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ তুলে উপাচার্যের বাসভবনের গেটে তালা দেন ছাত্রদলের সাবেক এক নেতা।

সোমবার রাত ৮টার দিকে তালা দেওয়ার আধা ঘণ্টা পর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা সেটি ভেঙে ফেলেন।

তালা দেওয়া ব্যক্তি বুলবুল রহমান রাবি শাখা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম-আহ্বায়ক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের উর্দু বিভাগের ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি নিয়োগপ্রত্যাশী হিসেবে এই প্রতিবাদ করেছেন।

আরো পড়ুন:

ডাকসুর মনোনয়নপত্র বিতরণ শুরু

ডাকসু নির্বাচনে শিবিরের প্যানেলে ভিপি-জিএস প্রার্থী চূড়ান্ত 

ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, নিয়োগ প্রত্যাশী বুলবুল রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩ সালের শিক্ষক নিয়োগ নীতিমালা অনুযায়ী উর্দু বিভাগের ২০২৩ সালের শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী আবেদন করেন। যেখানে আবেদনের যোগ্যতা ছিল অনার্স ও মাস্টার্সে সর্বনিম্ন ৩.৫০ সিজিপিএ। বুলবুল রহমানের মাস্টার্সের ফলাফল সিজিপিএ ৩.৫০ এর ওপরে থাকলেও অনার্স পরীক্ষার ফলাফল ছিল সিজিপিএ ৩.৩৫। ফলে তিনি শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে অযোগ্য হিসেবে বিবেচিত হন।

পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ২০২৫ সালে উর্দু বিভাগে তিনজন শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করলে বুলবুল রহমান সেটিকে মানবাধিকার লঙ্ঘন উল্লেখ করে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। রিট পিটিশন নম্বর ৮৮৩৭। হাইকোর্ট ১৩ জুলাই থেকে ৪ মাসের মধ্যে রুল নিষ্পত্তির আদেশ দেন।

বুলবুল রহমানের অভিযোগে, কলা অনুষদ থেকে শিক্ষক নিয়োগের যোগ্যতা সিজিপিএ ৩.৫০ রাখা হলে বাণিজ্য অনুষদের ক্ষেত্রে সেটা ৩.৭৫ বা ৩.৮০ সিজিপিএ রাখা উচিত। কারণ বাণিজ্য অনুষদে রেজাল্ট ভালো করা তুলনামূলক সহজ এবং কলা অনুষদের ক্ষেত্রে আবেদনের যোগ্যতা ৩.৫০ সিজিপিএ রাখা মানবাধিকার লঙ্ঘন।

বুলবুল রহমান আরো বলেন, ‍আমি উর্দু বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ সম্পর্কে হাইকোর্টে একটি রিট করেছিলাম। রিটে আমার পক্ষে রায় আসে এবং ৬ মাস শিক্ষক নিয়োগ স্থগিতের আদেশ জারি করেন। পরবর্তীতে আমার রিটের বিপরীতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন হাইকোর্টে আপিল করে। সেটাতে তাদের পক্ষেও রায় আসে, আমার পক্ষেও রায় আসে। সেখানে বলা আছে, ৪ মাসের মধ্যে পূর্ণ শুনানি করতে হবে। যেহেতু পূর্ণ শুনানি হয়নি, তাহলে শিক্ষক নিয়োগ তো স্থগিত রাখা উচিত। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সেটা অমান্য করে শিক্ষক নিয়োগের চেষ্টা করছে।

গত ৭ আগস্ট ভাইভাতে (মৌখিক) ১৮ জনকে লিখিত পরিক্ষায় টেকানো হয়েছে এবং ছয়জনকে সিলেকশন করা হয়েছে। কিন্তু নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে ছিল তিনজন নেওয়ার কথা। এ বিষয়ে আমি উপ-উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন খান স্যারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে কথা বলি। তিনি বলেন, ২০২৩ সালে ৩ জনের সার্কুলার ছিল এবং ২০২৫ সালে ৩ জনের সার্কুলার হয়। এই অন্যায়ের প্রতিবাদ জানিয়ে আমি ভিসি স্যারের বাস ভবনে তালা দিয়েছি। তার কারণ হলো তারা আইন অবমাননা করে কলা অনুষদের শিক্ষক নিয়োগ দিচ্ছেন।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপচার্যের বাসভবনের প্রধান গেটে তালা ঝুলিয়ে দেন রাবি শাখা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম-আহ্বায়ক বুলবুল রহমান।

বি প্রশাসন হাইকোর্টের আদেশ অমান্য করে উর্দু বিভাগের নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করছে কি না, জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের লিগ্যাল সেলের প্রশাসক অধ্যাপক আব্দুর রহিম মিয়ার মোবাইল নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তার সাড়া পাওয়া যায়নি।

রাবির প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান বলেন, একজন শিক্ষার্থী নিজেকে ভুক্তভোগী মনে করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ডিপার্টমেন্টে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। আজকে সেগুলো চূড়ান্ত করার জন্য সিন্ডিকেটের সভা ছিল। আমার ধারণা, সে উপাচার্যের বাসভবনে তালা দিয়ে সিন্ডিকেট সভা বিঘ্নিত করার চেষ্টা করেছিল, যাতে সিন্ডিকেট সভার সদস্যরা আসতে না পারেন। তার কথা হচ্ছে, তাকে বঞ্চিত করা হয়েছে।

আমার ধারণা, তার যোগ্যতা না থাকায় তার বিভাগ হয়তোবা তার আবেদনপত্র গ্রহণ করেনি। সে মামলাও করেছে, মামলার শুনানিও হয়েছে। মামলার নির্দেশনা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তার বিভাগের নিয়োগের সম্পন্ন করেছে। সে চাইলে আবার আপিল করতে পারে। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মনে করে বিশ্ববিদ্যায়রে একজন সাবেক শিক্ষার্থীর উপচার্যের বাসভবনে তালা দেওয়া সমীচীন নয়। এটা আমাদের জন্য দুঃখজনকও," যোগ করেন অধ্যাপক মাহবুবর রহমান।

ঢাকা/ফাহিম/রাসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পণ্ডিত অমরেশ রায় চৌধুরী আর নেই
  • রাবি উপাচার্যের বাসভবনে সাবেক ছাত্রদল নেতার তালা
  • এক দফা দাবিতে আমরণ অনশনে সরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের শিক্ষার্থীরা
  • ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদের দাবি, আমরণ অনশনে এক শিক্ষার্থী
  • ছাত্র সংসদের দাবিতে আমরণ অনশনে ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী
  • ইসির প্রাথমিক বাছাইয়ে উত্তীর্ণ এনসিপিসহ ১৬ দল
  • রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে মৌলিক পরিবর্তন আনতে হবে: আমীর খসরু
  • চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনারে তেজস্ক্রিয়তা শনাক্ত
  • রাস্তায় মানষিক ভারসাম্যহীন নারীর সন্তান প্রসব, যেভাবে বাঁচল নবজাতক