নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহের দাবিতে চট্টগ্রামে সার কারখানার শ্রমিক ও কর্মচারীদের বিক্ষোভ
Published: 14th, August 2025 GMT
নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ ও একই বেতন স্কেলের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন চট্টগ্রামের আনোয়ারায় রাষ্ট্রায়ত্ত সার কারখানা চিটাগাং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেডের (সিইউএফএল) শ্রমিক ও কর্মচারীরা। আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত সিইউএফএলের প্রধান ফটকের সামনে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
সিইউএফএল শ্রমিক-কর্মচারী ঐক্যজোটের ব্যানারে হওয়া বিক্ষোভ শেষে ফটকের সামনে সমাবেশ হয়। এতে বক্তারা বলেন, একই কারখানার শ্রমিক-কর্মচারীদের জন্য দুটি বেতনকাঠামো চালু থাকায় বৈষম্যের সৃষ্টি হয়েছে। কারখানার উৎপাদন ও রক্ষণাবেক্ষণ শ্রমিকদের ওপর নির্ভর করে। তাঁদের সঙ্গে এমন বৈষম্য মেনে নেবেন না।
কারখানার মাস্টার অপারেটর সৈয়দ আসলাম আলী এ কর্মসূচির সভাপতিত্ব করেন। আরেক মাস্টার অপারেটর শ্যামল কান্তি নাথের সঞ্চালনায় এতে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ কেমিক্যাল ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের যুগ্ম সম্পাদক আনোয়ারুল আজিম, সহসভাপতি হারুনুর রশীদ, শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলম মজুমদার, সিইউএফএল এমপ্লয়িজ ক্লাবের সভাপতি ফরিদুল আলম চৌধুরী প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, কারখানাটি চালু থাকলে দৈনিক ১১ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া সার উৎপাদন হয়। প্রতি মেট্রিক টন সার ৩৮ হাজার টাকা। সেই হিসাবে কারখানাটিতে দৈনিক ৪ কোটি ১৮ লাখ টাকার সার উৎপাদিত হয়। তবে চলতি বছর ১১ এপ্রিল গ্যাসের অভাবে ইউরিয়া উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করে আবার সার উৎপাদন করার ব্যবস্থা করতে হবে।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ কেমিক্যাল ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের যুগ্ম সম্পাদক আনোয়ারুল আজিম প্রথম আলোকে বলেন, জাতীয় মজুরি কমিশন থেকে জাতীয় বেতন কমিশনে স্থানান্তর করলে করপোরেশনের অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় হবে না। তাই বিসিআইসির অধীন সব টেকনিশিয়ান ও অপারেটরকে জাতীয় বেতন স্কেলে অন্তর্ভুক্ত করে একই বেতন স্কেলে নিয়ে আসতে হবে। বিসিআইসির পরিচালনা পর্ষদ ও মন্ত্রণালয়কে এ বিষয়ে নির্দিষ্ট সময়সীমা ও রূপরেখা প্রণয়ন করতে হবে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
চলতি অর্থবছরে ৫% জিডিপি প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস এডিবির; ৪ কারণে চাপে প্রবৃদ্ধি
চলতি অর্থবছর মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) কিছুটা বাড়বে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। এডিবির পূর্বাভাস অনুসারে, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৫ শতাংশ হতে পারে। গত অর্থবছরের জন্য জিডিপি প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলন হলো ৪ শতাংশ।
এডিবি আরও বলেছে, তৈরি পোশাক রপ্তানি স্থিতিশীল থাকলেও রাজনৈতিক পরিবর্তন, ঘন ঘন বন্যা, শিল্প খাতে শ্রমিক অস্থিরতা এবং বিরাজমান উচ্চ মূল্যস্ফীতি কারণে দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা দুর্বল হয়ে পড়েছে। এই চার কারণে প্রভাব পড়ছে সামগ্রিক প্রবৃদ্ধিতে।
আজ মঙ্গলবার এডিবি এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুক (এডিও) সেপ্টেম্বর সংস্করণ প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি সম্পর্কে এমন পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
এডিবি আরও বলেছে, চলতি অর্থবছরে ভোগ্যব্যয় বাড়বে। কারণ, রেমিট্যান্সের প্রবৃদ্ধি পাবে। এ ছাড়া আসন্ন নির্বাচনসংক্রান্ত নানা ধরনের খরচের কারণেও ভোগব্যয় বাড়াবে।
বাংলাদেশে এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর হো ইউন জিয়ং বলেন, ‘ভবিষ্যৎ প্রবৃদ্ধিনির্ভর করবে ব্যবসায়িক পরিবেশ উন্নয়নের মাধ্যমে প্রতিযোগিতা বাড়ানো, বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা এবং নির্ভরযোগ্য জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করার ওপর। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের বাণিজ্যে মার্কিন শুল্কের প্রভাব এখনো স্পষ্ট নয়। দেশের ব্যাংক খাতের দুর্বলতা অব্যাহত রয়েছে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা টেকসই প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য জরুরি।
এডিবির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০২৬ অর্থবছরের জন্য কিছু ঝুঁকি রয়ে গেছে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যসংক্রান্ত অনিশ্চয়তা, ব্যাংক খাতের দুর্বলতা এবং নীতি বাস্তবায়নের অনাগ্রহ প্রবৃদ্ধির অগ্রগতিতে বাধা হতে পারে। এ জন্য সঠিক সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি বজায় রাখা এবং কাঠামোগত সংস্কার দ্রুততর করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
প্রতিবেদনে জানানো হয়, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৭ শতাংশ। গত অর্থবছরের তা বেড়ে দাঁড়ায় ১০ শতাংশ। এর পেছনে রয়েছে পাইকারি বাজারে সীমিত প্রতিযোগিতা, বাজার তথ্যের ঘাটতি, সরবরাহ শৃঙ্খলে বাধা এবং টাকার অবমূল্যায়ন।
এডিবি বলছে, চলতি অর্থবছরে প্রবৃদ্ধির মূল চালিকাশক্তি হবে ভোগব্যয়, যা শক্তিশালী রেমিট্যান্স প্রবাহ ও নির্বাচন-সংশ্লিষ্ট ব্যয়ের কারণে বাড়বে। তবে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি ও রাজস্বনীতি এবং বিনিয়োগকারীদের সতর্ক মনোভাব বিনিয়োগকে মন্থর করতে পারে। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রপ্তানির ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নে প্রতিযোগিতা বাড়ায় রপ্তানি খাত এবং এর প্রবৃদ্ধি চাপ বাড়াবে। ফলে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে রপ্তানিকারকদের মূল্য কমাতে হতে পারে।