যশোরে বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে পেট্রলপাম্প দখলচেষ্টার অভিযোগ
Published: 21st, September 2025 GMT
যশোরের শার্শা উপজেলায় জোরপূর্বক একটি পেট্রলপাম্প দখলচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় বিএনপির এক নেতার বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে তনিমা তাসনুমা আজ রোববার দুপুরে যশোর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ তুলেছেন।
ওই নেতার নাম আনোয়ার হোসেন। তিনি বাগআঁচড়া ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তনিমা তাসনুমা বলেন, আনোয়ার হোসেন জালিয়াতি করে কাগজপত্র বানিয়ে এবং রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে তাদের পাম্পটি দখলের চেষ্টা চালাচ্ছেন। তাঁর বাবা গোলাম কিবরিয়া ১৯৯৫ সালে বাগআঁচড়া মৌজার ১৭ শতক জমি কিনে ‘মেসার্স গোলাম কিবরিয়া ফিলিং স্টেশন’ নামে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। ২০২২ সালে তাঁর মৃত্যু হয়। এরপর ২০২৩ সাল থেকে আনোয়ার হোসেন ও তাঁর সহযোগীরা জাল দলিল তৈরি করে বারবার পাম্পটি দখলের চেষ্টা করেন।
তনিমার অভিযোগ, সর্বশেষ ১৯ সেপ্টেম্বর শুক্রবার সকালে আনোয়ার হোসেন ফিলিং স্টেশনে প্রবেশ করে চাবিসহ সব কাগজপত্র নিয়ে যান এবং প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপককে বের করে দেন। পুলিশকে জানালে তাঁরা সরে যান। তবে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে পাম্প দখলের হুমকি অব্যাহত রেখেছেন। এ পরিস্থিতিতে সম্পদ রক্ষায় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে ভুক্তভোগী পরিবার।
তবে আনোয়ার হোসেন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, সংবাদ সম্মেলনকারী তনিমা তাসনুমার বাবা গোলাম কিবরিয়ার কাছ থেকে তিনি ৬ কোটি ৮ লাখ টাকা দিয়ে জমিসহ ফিলিং স্টেশন কিনেছেন। ১৯৯৯ সাল থেকে ফিলিং স্টেশনটি তাঁর দখলে ছিল এবং চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত তিনি এটি পরিচালনা করেছেন। কিন্তু কিবরিয়ার স্ত্রী-সন্তানেরা দলিল ও চুক্তিনামা মানছেন না। তাঁরা পেট্রলপাম্প মালিক সমিতি ও পুলিশকে দিয়ে পাম্পটি দখল করেছেন বলে দাবি করেন তিনি।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে শার্শা উপজেলা বিএনপির সভাপতি হাসান জহির প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ বিষয়ে আগেই আমাদের কাছে উভয় পক্ষ নালিশ করেছে। অভিযোগকারী তনিমার বাবা গোলাম কিবরিয়াও বিএনপির রাজনীতি করতেন। অভিযুক্ত আনোয়ার হোসেন বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। এই ফিলিং স্টেশনের সব কাগজপত্র আমি দেখেছি। জাল জালিয়াতের একটি অভিযোগ করা হচ্ছে, সেটি সাবরেজিস্ট্রি অফিসে খোঁজ নিলে জানা যাবে।’
হাসান জহির বলেন, আনোয়ার হোসেনের কাছ থেকে কয়েক কোটি টাকা নিয়েছিলেন গোলাম কিবরিয়া। ওই টাকার বিনিময়ে তিনি জমি ও ফিলিং স্টেশন আনোয়ার হোসেন ও তাঁর ভাইয়ের নামে দলিল করে দেন। গোলাম কিবরিয়ার পরিবারের লোকজনের পেট্রলপাম্পের ব্যবসা আছে। পেট্রলপাম্প সমিতির প্রভাব খাটিয়ে তাঁরা আগেই আনোয়ারের দখলে থাকা ফিলিং স্টেশনটি দখল করেছেন। আনোয়ার হোসেন তাঁর সম্পত্তি ফিরে পেতে চান। কারণ, জমি ও লাইসেন্স তাঁর নামে রয়েছে। এখানে রাজনৈতিক প্রভাবের কোনো বিষয় নেই।
শার্শা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল আলিম বলেন, ভুক্তভোগীদের লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি তদন্তাধীন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গ ল ম ক বর য় প ট রলপ ম প ব এনপ র কর ছ ন র জন ত
এছাড়াও পড়ুন:
ঋণ নিয়ে গাড়ি কেনার আগে যা দেখতে হবে
একটি গাড়ির স্বপ্ন দেশের প্রায় সব মধ্যবিত্ত পরিবারের। কিন্তু স্বপ্ন ও সাধ্যের যোগসূত্র ঘটে না। এই যোগসূত্র ঘটাতে অনেকেই গাড়ি কেনার জন্য ঋণ নেন।
ঋণ নিয়ে গাড়ি কিনলে হিসাবটা ঠিকমতো না করলে বিপদের আশঙ্কাও থাকে। বাজারদর, গাড়ির অবস্থান, কাগজপত্র—সব মিলিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে কিছু বিষয় ভালোভাবে দেখা জরুরি।
ঋণ নিয়ে গাড়ি কেনা ভুল সিদ্ধান্ত নয়। তবে সিদ্ধান্তটা হতে হবে বুঝেশুনে। আর্থিক ঝুঁকি কমাতে সময় নিন, যাচাই করুন, তারপরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত।
এ নিয়ে কিছু পরামর্শ দেওয়া হলো—
১. বাজেট ঠিক করুন
নতুন ও রিকন্ডিশন্ড—দুই ধরনের গাড়ির ঋণ পাওয়া যায়। শুরুতেই আপনি যে ধরনের গাড়ি কিনতে চান, সেসব গাড়ির দাম কত টাকা তা জেনে নিন। এরপর একটি বাজেট ঠিক করুন। সেই বাজেটের কত অংশ আপনি দিতে পারবেন, বাকি কত অংশ ঋণ নিতে হবে, তা নির্ধারণ করতে হবে। সম্ভব হলে মোট দামের ২০ থেকে ৩০ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট দিন। এতে ঋণের চাপ কমবে।
২. ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান ঋণ দেয়
বর্তমানে বেশ কয়েকটি বেসরকারি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বেশ কম সুদে গাড়ির ঋণ দিচ্ছে। আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে এগিয়ে আছে আইপিডিসি, আইডিএলসি ও লংকাবাংলা। এ ছাড়া ব্যাংকগুলোর মধ্যে ব্র্যাক, সিটি, ডাচ্-বাংলা ও ইস্টার্ন গাড়ি ঋণের শীর্ষে আছে। কিছু ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান এখন নিজেরাই গাড়ি বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হচ্ছে। সহজ শর্তে ঋণ দেওয়া ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের গাড়ি ঋণের বিস্তারিত জেনে নিন।
৩. সুদের হার তুলনা করে দেখুন
ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সুদের হার, সার্ভিস চার্জ ও মেয়াদ—সবকিছু তুলনা করুন। অনেক সময় কম ইএমআই দেখে আমরা খুশি হই, কিন্তু মোট ঋণ ব্যয় বেশি পড়ে যায়। তাই মোট কত টাকা পরিশোধ করতে হবে—সেটা জানাটা জরুরি।
৪. ঋণের কিস্তি সাধ্যের মধ্যে রাখতে হবে
ঋণের মাসিক কিস্তি আয় অনুযায়ী হওয়াই নিরাপদ। সাধারণভাবে আয়ের ২০-২৫ শতাংশের বেশি ইএমআই রাখা ঠিক নয়। এর বেশি হলে মাসিক খরচে চাপ পড়ে।
৫. গাড়ির বাজারদর যাচাই করুন
বাজারে গাড়ির দাম যাচাই–বাছাই করে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। একই মডেলের একেকজন একেক দামে বিক্রি করেন। তাই একই মডেলের গাড়ি কত দামে বিক্রি হচ্ছে, তা বিক্রয়ডটকমের পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের গাড়ি বেচাকেনাসংক্রান্ত বিভিন্ন পেজে যাচাই–বাছাই করা যেতে পারে। তাহলে গাড়ির দাম নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে সুবিধা হবে।
৬. যান্ত্রিক পরীক্ষা করুন
গাড়ির বাইরের দিক দেখে সিদ্ধান্ত নেবেন না। একজন বিশ্বস্ত মেকানিক দিয়ে ইঞ্জিনের শব্দ, স্মোক, সাসপেনশনের অবস্থা, ব্রেক ও গিয়ার পরীক্ষা করান। নতুন গাড়িতে তেমন একটা সমস্যা থাকে না, কিন্তু রিকন্ডিশন্ড বা পুরোনো গাড়িতে এসব সমস্যা থাকতে পারে। গাড়িতে এসব জায়গায় সমস্যা থাকলে পরে বড় অঙ্কের মেরামত খরচ আসে।
৭. কাগজপত্র মিলিয়ে নিন
গাড়ির সব কাগজপত্র ঠিক আছে কি না, তা দেখতে হবে। যেমন রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট, ট্যাক্স টোকেন ও ফিটনেস, ইঞ্জিন ও চেসিস নম্বর, ইনস্যুরেন্স ইত্যাদি। কাগজে গরমিল থাকলে গাড়ি কিনতে যাওয়া উচিত নয়।