আফগানিস্তানের বাগরাম বিমান ঘাঁটি দখলে নেওয়ার পরিকল্পনার কথা জানানোর পর এবার দেশটিকে হুমকি দিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আফগানিস্তান যদি ঘাঁটিটি ওয়াশিংটনের হাতে তুলে দিতে রাজি না হয়, তাহলে দেশটির জন্য ‘খারাপ কিছু’ ঘটতে যাচ্ছে বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। তবে ঘাঁটিটি ফিরিয়ে দেওয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দিয়েছে কাবুল।

২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পর আফগানিস্তানে সামরিক অভিযান শুরু করে মার্কিন বাহিনী। তখন তাদের প্রধান ঘাঁটি ছিল বাগরাম। টানা দুই দশক ঘাঁটিটি নিয়ন্ত্রণে রাখার পর ২০২১ সালে তালেবানের অগ্রযাত্রার মুখে ঘাঁটিটিসহ আফগানিস্তান ছাড়েন মার্কিন সেনারা। তার পর থেকে ঘাঁটিটি ক্ষমতাসীন তালেবান সরকারের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে গতকাল শনিবার ট্রাম্প লেখেন, ‘বাগরাম ঘাঁটিটি যারা নির্মাণ করেছে, অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্রের কাছে যদি ঘাঁটিটি ফিরিয়ে না দেয়, তাহলে খারাপ কিছু ঘটতে যাচ্ছে।’ তবে এই ‘খারাপ কিছু’ যে আসলে কী, তা খোলাসা করেননি মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এর আগে গত বৃহস্পতিবার লন্ডনে সাংবাদিকদের সামনে বাগরাম নিয়ন্ত্রণের প্রসঙ্গ তুলেছিলেন ট্রাম্প।

সেদিন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেছিলেন, চীনকে মোকাবিলার জন্যই ঘাঁটিটি আবার ফিরে পেতে চায় ওয়াশিংটন। কারণ, চীন যেখানে নিজেদের পরমাণু অস্ত্র তৈরি করে, সেখান থেকে বাগরাম মাত্র এক ঘণ্টার পথ। ট্রাম্প এ–ও বলেছিলেন যে তালেবানের সম্মতি নিয়েই ঘাঁটিটির দখল নেবে যুক্তরাষ্ট্র। তবে ট্রাম্পের ওই বক্তব্যের পর আফগানিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে তা নাকচ করা হয়।

কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় ট্রাম্প

বাগরাম ফিরে পেতে নিজের প্রশাসনের জাতীয় নিরাপত্তাসংক্রান্ত কর্মকর্তাদের সঙ্গে ট্রাম্প আলাপ করছেন বলে উল্লেখ করেছে বিষয়টি নিয়ে জানাশোনা আছে, এমন তিনটি সূত্র। পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে তারা বলে, অন্তত এক মাস ধরে ঘাঁটিটি ফিরে পাওয়ার বিষয়ে ট্রাম্প প্রশাসনে আলোচনা চলছে।

বাগরাম ঘাঁটির একটি রানওয়ে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র আফগ ন স ত ন

এছাড়াও পড়ুন:

বিএনপির জনসংযোগে গুলি করে ‘সন্ত্রাসী’ সরোয়ার হত্যায় দুজন গ্রেপ্তার

চট্টগ্রামে বিএনপি মনোনীত প্রার্থীর জনসংযোগে গুলি করে ‘সন্ত্রাসী’ সরোয়ার হোসেন ওরফে বাবলাকে হত্যার ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। আজ শুক্রবার দুপুরে র‍্যাব-৭ এর চান্দগাঁও ক্যাম্পে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে এ ছাড়া চট্টগ্রামের রাউজানে গোলাগুলির ঘটনায় তিনজন এবং বায়েজিদে এক অটোরিকশাচালককে গুলি করার ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তারের তথ্য জানিয়েছে র‍্যাব।

সরোয়ার হত্যায় গ্রেপ্তার দুজন হলেন হেলাল হোসেন ওরফে মাছ হেলাল ও আলা উদ্দিন। গ্রেপ্তার দুজনই মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে নগরের বায়েজিদের হাজিরপুল এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাব-৭-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল হাফিজুর রহমান বলেন, সরোয়ার হোসেন হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দুজন র‍্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা অস্বীকার করেছেন। তবে সন্ত্রাসী সাজ্জাদ আলীসহ মামলার অন্য আসামিদের সঙ্গে চলাফেরা রয়েছে বলে তাঁরা জানিয়েছেন। তাঁদের কাছ থেকে বিস্তারিত তথ্য জানতে রিমান্ডের প্রয়োজন রয়েছে।

গত বুধবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম নগরের চালিতাতলী এলাকায় বিএনপির মনোনীত প্রার্থী এরশাদ উল্লাহর জনসংযোগে গুলি করে হত্যা করা হয় সরোয়ারকে। চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের করা সন্ত্রাসীদের তালিকায় সরোয়ারের নাম রয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে রয়েছে অস্ত্র-চাঁদাবাজির ১৫টি মামলা। একই ঘটনায় সরোয়ার ছাড়াও পাঁচজন গুলিবিদ্ধ হন। এর মধ্যে বিএনপির প্রার্থী এরশাদ উল্লাহও রয়েছেন।

র‍্যাব জানায়, সরোয়ারকে গুলি করার পরদিন চালিতাতলী এলাকায় ইদ্রিস নামে এক অটোরিকশাচালককে গুলি করা হয়। এ ঘটনায় আরমান আলী নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার আসামি জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন, গুলি করার সঙ্গে ‘সন্ত্রাসী’ শহীদুল ইসলাম ওরফে বুইস্যা ও মিজান জড়িত।

এদিকে গত বুধবার রাতে রাউজানের বাগোওয়ান এলাকায় বিএনপির দুই পক্ষের গোলাগুলিতে পাঁচজন আহত হন। এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ইশতিয়াক চৌধুরী অভি, মোহাম্মদ জেকি ও মো. জনি নামে তিনজনকে র‍্যাব গ্রেপ্তার করেছে। তাঁদের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল ও গুলি উদ্ধার হয়েছে বলে জানায় র‍্যাব।

সংসদ নির্বাচনের আগে গোলাগুলির ঘটনা রোধে র‍্যাব তৎপর রয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান র‍্যাব-৭-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল হাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, নির্বাচন সামনে রেখে প্রার্থীরা যাতে নির্বিঘ্নে জনসংযোগ করতে পারেন, সে লক্ষ্যে নিরাপত্তা জোরদারসহ গোয়েন্দা নজরদারি বাড়িয়েছে র‍্যাব।

সম্পর্কিত নিবন্ধ