বিশ্বসেরা গবেষকদের তালিকায় রাবির ১৮ গবেষক
Published: 22nd, September 2025 GMT
বিশ্বসেরা ২ শতাংশ বিজ্ঞান গবেষকের তালিকায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ১৮ জন গবেষক স্থান পেয়েছেন। এর মধ্যে ১৩ জন বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে কর্মরত আছেন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় এবং নেদারল্যান্ডসভিত্তিক বিশ্বের প্রথম সারির চিকিৎসা ও বিজ্ঞানবিষয়ক নিবন্ধ প্রকাশনা সংস্থা ‘এলসেভিয়ার’ এর সমন্বিত জরিপের ভিত্তিতে এ তালিকা প্রকাশ করা হয়।
আরো পড়ুন:
জবিতে ৩৩টি পানির ফিল্টার স্থাপন করল ছাত্রশিবির
বিশ্বসেরা গবেষকদের তালিকায় জাবির ৮ শিক্ষক-শিক্ষার্থী
তালিকায় স্থান পাওয়া গবেষকেরা হলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব, ফলিত গণিত বিভাগের অধ্যাপক ড.
আরো আছেন, ফার্মেসি বিভাগের অধ্যাপক মো. আব্দুল আলিম আল-বারি, ম্যাটেরিয়াল সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক মির্জা হুমায়ুন কবির রুবেল, ফার্মেসি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মহিতোষ বিশ্বাস, ফিসারিজ বিভাগের অধ্যাপক মো. ইয়ামিন হোসাইন, রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক হাসান আহমাদ, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ইমেরিটাস প্রফেসর এ কে এম আজহারুল ইসলাম, পপুলেশন সায়েন্স অ্যান্ড হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট বিভাগের অধ্যাপক মশিউর রহমান, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ সদ্য নিয়োগ পাওয়া প্রভাষক ড. আবু সালেহ মুছা মিয়া।
এছাড়া রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাফিলিয়েশনে আরো পাঁচজন গবেষকের নাম তালিকাভুক্ত হয়েছে। তারা হলেন, মোহাম্মাদ আব্দুল হাদি, মোহাম্মাদ শফি উল্যাহ, মনোয়ার হোসাইন খন্দকার, মো. রফিকুল ইসলাম ও মো. চানমিয়া শেখ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মোহাম্মাদ আব্দুল হাদি রাবির শিক্ষক নন। তিনি একটি সরকারি কলেজে অধ্যাপনা করেন। তবে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছেন। শফি উল্যাহ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সাবেক শিক্ষার্থী ও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। মনোয়ার হোসাইন খন্দকার রাবির ম্যাটেরিয়ালস সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী। বর্তমানে তিনি জাপানে গবেষণা করছেন।
স্কোপাস ডাটাবেজের পদ্ধতিগত কারণে মো. রফিকুল ইসলাম ও মো. চানমিয়া শেখের পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। কারণ স্কোপাস ডাটাবেজের পদ্ধতি হলো একাধিক গবেষকের নামের বানান হুবহু একই হলে ওই সব গবেষকের নামে একটাই অ্যাকাউন্ট থাকবে—যদি না তারা ভিন্নভাবে নিজেদের অ্যাকাউন্ট তৈরির দাবি না করেন। ফলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের গবেষকদের নাম হুবহু একই হলে বড় একটা সমস্যা তৈরি হয়।
এই জটিলতার কারণে এই দুজন গবেষকের ক্ষেত্রে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাফিলিয়েশন আসলেও তারা রাবির কোনো শিক্ষক নন। তারা রাবির অ্যাফিলিয়েশন ব্যবহার করেছেন মাত্র।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব বলেন, “এটা নিশ্চয়ই বেশ খুশির খবর। গবেষকরাই একটা বিশ্ববিদ্যালয়কে সারা দুনিয়ার সামনে পরিচিত করে। আশা করি আগামী বছর এই সংখ্যাটা আরো বাড়বে। এই তালিকায় স্থান পাওয়া এবং যারা নিরলসভাবে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন তাদের প্রাণঢালা অভিনন্দন। আমরা গবেষণা খাতে বাজেট বাড়াব।”
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
স্কুলে নাচ-গানের শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে বিরোধ পরিহারের আহ্বান ৫১ নাগরিকের
প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীত ও নাচের শিক্ষক নিয়োগের প্রজ্ঞাপন বাতিলের দাবি জুলাই অভ্যুত্থানের সফলতায় বিভক্তি তৈরির অপপ্রয়াস উল্লেখ করে এ নিয়ে বিরোধ পরিহারের আহ্বান জানিয়েছেন ৫১ জন নাগরিক।
সোমবার তাঁদের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সংগীতবিষয়ক শিক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত বাতিল চেয়ে একটি পক্ষের লাগাতার বক্তব্য, বিবৃতি, কর্মসূচি গভীর উদ্বেগ তৈরি করছে। আমরা মনে করি, সংগীতের শিক্ষক নিয়োগ বিষয়ে তাদের বিরোধিতা জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার বিপরীত।’
জুলাই আন্দোলনে সব শ্রেণি–পেশা এবং ধর্ম ও মতের মানুষ অংশ নিয়েছিল উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘তবে সফল অভ্যুত্থানের পরপরই নানা ধরনের বিভক্তি তৈরির অপপ্রয়াস চলছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীত ও নাচের শিক্ষক বাতিলের দাবি এ বিভাজনকে আরও জটিল পরিস্থিতির দিকে নিয়ে যাবে।’
বিবৃতিতে নাগরিকেরা বলেছেন, ‘আমরা মনে করি, শিশুর নৈতিক ও ধর্মীয় শিক্ষা যেমন প্রয়োজন রয়েছে, তেমনি মেধা ও মননের বিকাশে সংগীত ও নৃত্যকলার প্রয়োজনও রয়েছে। সংস্কৃতিচর্চার মধ্য দিয়ে শিশুরা আধ্যাত্মিক সৌন্দর্যকে নিজের ভেতরে ধারণ করতে সক্ষম হবে। বিশ্ব সংস্কৃতির পরিসরে বাংলাদেশের হয়ে তারা অংশ নিতে পারবে। পৃথিবীর ইতিহাসে দেখা গেছে, ইসলামি সভ্যতায় গানের চর্চা ও সাধনার সমৃদ্ধ ঐতিহ্য রয়েছে। গান ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ইসলাম তার সৌন্দর্যের প্রকাশ ঘটিয়েছে, যা মানুষকে ইসলাম ধর্মের প্রতি আকৃষ্ট করেছে।’
বাংলাদেশ গান, নাচ ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এখানকার শিশুদের অধিকার রয়েছে তার সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার। আমরা মনে করি, এ ক্ষেত্রে বাধা দেওয়ার পরিণতি সুখকর হবে না।’
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ধর্ম শিক্ষকের যে দাবি উঠেছে, তা মেনে নিয়েও সংগীত শিক্ষক বহাল রাখা ন্যায়সংগত। একটিকে বাদ দিয়ে অন্যটিকে স্থাপন শিশুর বিকাশের পরিবেশ সংকীর্ণ করবে।’
বিবৃতি দেওয়া ৫১ নাগরিকের মধ্যে আছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সৌভিক রেজা, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জি এইচ হাবীব, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রায়হান রাইন, মানবাধিকারকর্মী রেজাউর রহমান লেনিন, লেখক ও গবেষক পাভেল পার্থ, কথাসাহিত্যিক জিয়া হাশান, সালাহ উদ্দিন শুভ্র, গাজী তানজিয়া, এহসান মাহমুদ প্রমুখ।