জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে শতাধিক প্রতিনিধির অংশগ্রহণে তীব্র হতাশা প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সংস্থাটি বলছে, পতিত কর্তৃত্ববাদী সরকারের অনুকরণে এমন ‘বিব্রতকর চর্চা’ অব্যাহত রেখে অন্তর্বর্তী সরকার কী বার্তা দিতে চাইছে, সে প্রশ্নের উত্তর জনগণের জানার অধিকার রয়েছে।

আজ বুধবার এক বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, পতিত কর্তৃত্ববাদী শাসনামলে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে শতাধিক প্রতিনিধি প্রেরণের সংস্কৃতি দেখা গেছে, যা কখনো কখনো দুই শতাধিক ছাড়িয়েছে। আমরা আশা করেছিলাম, রক্তক্ষয়ী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে গঠিত সরকার স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির পথ বেছে নেবে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে বর্তমান সরকারও সেই পুরোনো পথেই হাঁটল।

বিবৃতিতে বলা হয়, গত বছর অন্তর্বর্তী সরকার ৫৭ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল পাঠিয়েছিল, যা কিছুটা হলেও স্বচ্ছতার আভাস দিয়েছিল। এবার সে ধারায় না গিয়ে উল্টো শতাধিক প্রতিনিধি পাঠানোর মাধ্যমে সরকার নিজের জারি করা পরিপত্রেরই বিরোধিতা করেছে।

ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘দায়িত্ব গ্রহণের পর সরকার অহেতুক বিদেশ সফর বন্ধে যে নির্দেশনা দিয়েছিল, সেটির বিপরীতে বর্তমান পদক্ষেপ সরকার সম্পর্কে আস্থাহীনতা সৃষ্টি করে।’

টিআইবির মতে, যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া বা চীনের মতো পরাশক্তিরাও সাধারণত শতাধিক প্রতিনিধি পাঠায় না। কিছু সুশাসনবর্জিত দেশের ব্যতিক্রমী দল পাঠানোর নজির থাকলেও সেগুলোর পেছনে প্রকৃত কূটনৈতিক প্রয়োজন নয়, বরং ‘ভ্রমণবিলাস’-এর প্রবণতাই মুখ্য।

এ বিষয়ে ইফতেখারুজ্জামান প্রশ্ন তুলে বলেন, জাতীয় স্বার্থের দৃষ্টিকোণ থেকে প্রতিনিধিদলের সদস্যদের ভূমিকা কী, আলোচ্য বিষয়গুলোর সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা বিবেচনায় প্রতিনিধি নির্বাচন করা হয়েছে কি না, জনগণের করের টাকায় এই খরচের যৌক্তিকতা কোথায়—এসব প্রশ্নের জবাব রাষ্ট্র সংস্কারের দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকারের অবশ্যই দেওয়া উচিত।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক আরও বলেন, জাতীয় স্বার্থে আন্তর্জাতিক মঞ্চে অংশগ্রহণ অবশ্যই প্রয়োজন। তবে সেই অংশগ্রহণের ব্যয়, যৌক্তিকতা ও জবাবদিহি নিয়েও প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক। জনগণ এসব প্রশ্নের জবাব প্রত্যাশা করে। টিআইবি মনে করে, গণ–অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত একটি অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য এমন প্রশ্নবিদ্ধ পদক্ষেপ অত্যন্ত বিব্রতকর ও হতাশাজনক।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সরক র র ট আইব গ রহণ

এছাড়াও পড়ুন:

নার্সদের অমর্যাদাকর অবস্থানে রাখা হয়েছে: ফরহাদ মজহার

বাংলাদেশে জনগণের স্বাস্থ্যব্যবস্থা নিশ্চিত করাটা অত্যন্ত জরুরি হলেও এখানে পেশা হিসেবে নার্সদের অমর্যাদাসম্পন্ন একটা অবস্থানে রাখা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন কবি ও রাষ্ট্রচিন্তক ফরহাদ মজহার।

ফরহাদ মজহার বলেন, ‘নার্সদের ডাক্তারি ব্যবস্থার অধীন একটা পেশা হিসেবে যে দেখা হয়, আমরা মনে করি এটা ভুল। এখান থেকে মুক্ত হতে হবে। নার্স সেবাটা স্বাস্থ্যসেবার একটা মৌলিক দিক। ফলে তাঁদের স্বাধীনভাবে এই পেশাকে চর্চা করবার সুযোগ–সুবিধা দিতে হবে।’

আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন ফরহাদ মজহার। সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বাংলাদেশ নার্সেস অ্যাসোসিয়েশন (বিএনএ) ও স্বাস্থ্য আন্দোলন। স্বাস্থ্য আন্দোলনের পক্ষে বক্তব্য দেন ফরহাদ মজহার।

সরকার স্বাস্থ্যকে এখন আর জনগণের অধিকার হিসেবে স্বীকার করছে না বলে অভিযোগ করেন ফরহাদ মজহার। তিনি বলেন, ‘এখন স্বাস্থ্যকে অধিকার নয়, বাজারজাত পণ্য বানানো হয়েছে। টাকা থাকলে চিকিৎসা পাবেন, টাকা না থাকলে নয়।’

নার্সদের স্বাধীন পেশাগত চর্চা, পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ, ন্যায্য বেতন ও মর্যাদা নিশ্চিতের জন্য জাতীয় নার্সিং কমিশন গঠনের দাবি জানিয়ে ফরহাদ মজহার বলেন, নার্সদেরকে ডাক্তারদের হুকুমমতো চলতে হবে—এই ধারণা ভাঙতে হবে। স্বাস্থ্য মানে শুধু প্রেসক্রিপশন নয়, প্রতিরোধও একটি বড় দিক। নার্সদের মর্যাদা ও স্বাধীনতা নিশ্চিত হলে জনগণ প্রকৃত স্বাস্থ্যসেবা পাবে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফরহাদ মজহার বলেন, নার্সিং স্বাস্থ্যসেবার এক মৌলিক দিক। কিন্তু আমাদের সমাজে চিকিৎসাকে ডাক্তারিকরণ বা মেডিক্যালাইজেশন করা হয়েছে। অনেক রোগে ডাক্তার কিংবা ওষুধের প্রয়োজনই হয় না। এ জায়গায় নার্সরা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।

সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ নার্সেস অ্যাসোসিয়েশনের (বিএনএ) সভাপতি মো. শরিফুল ইসলাম। এক মাসের মধ্যে নার্সিং কমিশন গঠনের এক দফা দাবি বাস্তবায়ন না হলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনের সঞ্চালনা করেন বিএনএর সহসভাপতি মাহমুদ হোসেন তমাল। এতে উপস্থিত ছিলেন স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারপারসন জরিনা খাতুন, সহসভাপতি মনির হোসেন ভূঁইয়া এবং সংগঠনের অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতা-কর্মী।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সংস্কার, বিচার ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য তরুণ নেতৃত্বের বিকল্প নেই: রাশেদ খান
  • প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য দেশের পরিস্থিতি অস্থির করে তুলছে: ফারুক
  • নার্সদের অমর্যাদাকর অবস্থানে রাখা হয়েছে: ফরহাদ মজহার
  • ১৭ বছর এক অসুর জনগণের ভোটাধিকার হরণ করেছিল: নিপুন রায় 
  • নির্বাচিত সরকার না থাকায় অনেক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি: আমীর খসরু
  • অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বেই ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে: অ্যাটর্নি জেনারেল
  • ড. ইউনূসের নেতৃত্বেই ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে: অ্যাটর্নি জেনারেল
  • চাঁদপুরে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করায় এনসিপির নিন্দা
  • রাষ্ট্র মানে কিন্তু গ্রামীণ ব্যাংক চালানো নয়: ফরহাদ মজহার
  • ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক নিষেধাজ্ঞা আরোপের পক্ষে ভোট