জাতিসংঘে শতাধিক প্রতিনিধি, কর্তৃত্ববাদী চর্চার পথেই হাঁটল অন্তর্বর্তী সরকার: টিআইবি
Published: 25th, September 2025 GMT
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে শতাধিক প্রতিনিধির অংশগ্রহণে তীব্র হতাশা প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সংস্থাটি বলছে, পতিত কর্তৃত্ববাদী সরকারের অনুকরণে এমন ‘বিব্রতকর চর্চা’ অব্যাহত রেখে অন্তর্বর্তী সরকার কী বার্তা দিতে চাইছে, সে প্রশ্নের উত্তর জনগণের জানার অধিকার রয়েছে।
আজ বুধবার এক বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, পতিত কর্তৃত্ববাদী শাসনামলে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে শতাধিক প্রতিনিধি প্রেরণের সংস্কৃতি দেখা গেছে, যা কখনো কখনো দুই শতাধিক ছাড়িয়েছে। আমরা আশা করেছিলাম, রক্তক্ষয়ী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে গঠিত সরকার স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির পথ বেছে নেবে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে বর্তমান সরকারও সেই পুরোনো পথেই হাঁটল।
বিবৃতিতে বলা হয়, গত বছর অন্তর্বর্তী সরকার ৫৭ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল পাঠিয়েছিল, যা কিছুটা হলেও স্বচ্ছতার আভাস দিয়েছিল। এবার সে ধারায় না গিয়ে উল্টো শতাধিক প্রতিনিধি পাঠানোর মাধ্যমে সরকার নিজের জারি করা পরিপত্রেরই বিরোধিতা করেছে।
ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘দায়িত্ব গ্রহণের পর সরকার অহেতুক বিদেশ সফর বন্ধে যে নির্দেশনা দিয়েছিল, সেটির বিপরীতে বর্তমান পদক্ষেপ সরকার সম্পর্কে আস্থাহীনতা সৃষ্টি করে।’
টিআইবির মতে, যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া বা চীনের মতো পরাশক্তিরাও সাধারণত শতাধিক প্রতিনিধি পাঠায় না। কিছু সুশাসনবর্জিত দেশের ব্যতিক্রমী দল পাঠানোর নজির থাকলেও সেগুলোর পেছনে প্রকৃত কূটনৈতিক প্রয়োজন নয়, বরং ‘ভ্রমণবিলাস’-এর প্রবণতাই মুখ্য।
এ বিষয়ে ইফতেখারুজ্জামান প্রশ্ন তুলে বলেন, জাতীয় স্বার্থের দৃষ্টিকোণ থেকে প্রতিনিধিদলের সদস্যদের ভূমিকা কী, আলোচ্য বিষয়গুলোর সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা বিবেচনায় প্রতিনিধি নির্বাচন করা হয়েছে কি না, জনগণের করের টাকায় এই খরচের যৌক্তিকতা কোথায়—এসব প্রশ্নের জবাব রাষ্ট্র সংস্কারের দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকারের অবশ্যই দেওয়া উচিত।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক আরও বলেন, জাতীয় স্বার্থে আন্তর্জাতিক মঞ্চে অংশগ্রহণ অবশ্যই প্রয়োজন। তবে সেই অংশগ্রহণের ব্যয়, যৌক্তিকতা ও জবাবদিহি নিয়েও প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক। জনগণ এসব প্রশ্নের জবাব প্রত্যাশা করে। টিআইবি মনে করে, গণ–অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত একটি অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য এমন প্রশ্নবিদ্ধ পদক্ষেপ অত্যন্ত বিব্রতকর ও হতাশাজনক।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সরক র র ট আইব গ রহণ
এছাড়াও পড়ুন:
কোনো চাঁদাবাজ দলের ক্ষমতায় যাওয়ার সিঁড়ি হবো না: চরমোনাই পীর
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও পীর সাহেব চরমোনাই মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেছেন, ‘‘বিদেশিদের প্রেসক্রিপশনে বাংলাদেশের মানুষ আর চলতে চায় না। স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরেও মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। তাই মানুষ ইসলামকে ক্ষমতায় দেখতে চায়। এজন্য দেশপ্রেমিক ইসলামিক দলগুলো ঐক্যবদ্ধ হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আগামীতে ইসলামের পক্ষে ভোটের বাক্স হবে একটি। আমরা ইসলামী দলগুলো আর কোনো চাঁদাবাজ দলের ক্ষমতায় যাওয়ার সিঁড়ি হবো না।’’
শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ লক্ষ্মীপুর জেলা শাখা আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রেজাউল করীম বলেন, ‘‘একটি দল আছে, যারা পূর্বে ক্ষমতায় গিয়ে দেশকে একাধিকবার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন করেছিল। চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, দলবাজিসহ নানা অপরাধ করেছে। গণঅভ্যুত্থান পরবর্তীও করছে। আবারো ক্ষমতায় যেতে ওরা মরিয়া হয়ে উঠেছে। এ দেশের ছাত্র-জনতা জীবন দিয়ে ফ্যাসিস্ট বিদায় করেছে পুরনো বন্দোবস্তর জন্য নয়। নতুন সিস্টেম ও নতুন কাউকে ক্ষমতায় দেখতে চায়। কারণ দেশের মানুষ গত ৫৩ বছর বিএনপি, আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির ক্ষমতা দেখেছে।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘দেশের মানুষ পুরনো সিস্টেম আর দেখতে চায় না। পুরনো বউকে নতুন কাপড়ে সাজিয়ে এনে জনগণের সামনে উপস্থাপন করলে জনগণ আর মেনে নেবে না। তাই নির্বাচনের পূর্বে গণভোট দিতে হবে। পিআর কার্যকর করতে হবে। জুলাই সনদের আইনিভিত্তি নির্বাচনের পূর্বেই দিতে হবে। বিদেশি অথবা দেশের কোনো অপশক্তির ইশারায় যদি এগুলো কার্যকর করা না হয়। তাহলে, ইসলামী আন্দোলন দেশের মানুষকে নিয়ে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবে।’’
ঢাকা/জাহাঙ্গীর/রাজীব