আমার হৃদয় ভেঙে গেছে: থালাপতি বিজয়
Published: 28th, September 2025 GMT
তামিলনাড়ুর কারুর জেলায় নিজের সমাবেশে পদদলিত হয়ে প্রাণহানির ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন তামিলাগা ভেত্রি কাজাগাম (টিভিকে) দলের প্রধান থালাপতি বিজয়।
অভিনেতা থেকে রাজনীতিক বনে যাওয়া বিজয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে লিখেছেন, ‘আমার হৃদয় ভেঙে গেছে; আমি অসহনীয়, ভাষায় বর্ণনা করা যায় না এমন যন্ত্রণা ও শোকে কাতর। কারুরে প্রাণ হারানো আমার প্রিয় ভাই-বোনদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। হাসপাতালে চিকিৎসাধীনদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি।’
গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় তামিলনাড়ুর কারুর জেলায় পদদলিত হয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। এখন পর্যন্ত ৩৬ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
কারুর-ইরোড মহাসড়কের ভেলুসামাইপুরামে থালাপতি বিজয়ের ‘ভেলিচাম ভেলিয়েরু’ নামের এক জনসভায় হাজার হাজার মানুষ জড়ো হয়েছিলেন। তিনি বক্তব্য দেওয়ার সময় বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয়। একপর্যায়ে তিনি বক্তৃতা বন্ধ করতে বাধ্য হন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত পৌনে আটটার দিকে বিপুলসংখ্যক লোক থালাপতি বিজয়কে একনজর দেখার জন্য মঞ্চের ব্যারিকেডের দিকে এগিয়ে যান। ওই সময় ঘটনার সূত্রপাত হয়। লোকজন হুড়োহুড়ি করে সামনে যাওয়ার সময় অনেকেই অচেতন হয়ে পড়েন।
পুলিশের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, সমাবেশে ধারণার চেয়ে অনেক বেশি লোক সমাগম হয়। এতে ৩০ হাজারের মতো মানুষকে অংশ নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। তবে স্থানীয় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রায় ৬০ হাজার মানুষ সেখানে জড়ো হয়েছিলেন।
তামিলনাডুর মুখ্যমন্ত্রী এম.
এম.কে. স্টালিন বলেন, বিজয়ের নির্বাচনী প্রচারণার সমাবেশে পদদলিত হয়ে অন্তত ৩৬ জন নিহত এবং ৫০ জনের বেশি আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ৮ শিশু ও ১৬ নারী রয়েছেন। ঘটনাটি ঘটেছে তামিলনাডুর কারুর জেলায়, যেখানে বিজয়ের রাজনৈতিক দল তামিলাগা ভেত্রি কাজহাগাম (টিভিকে)-এর সমাবেশ অনুষ্ঠিত হচ্ছিল।
রাজ্যের এক আইনপ্রণেতা সেন্টিল বালাজি সাংবাদিকদের বলেন, এ ঘটনায় ৫৮ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বিজয়কে দেখতে অনেক জড়ো হয়
গত তিন দশকে তামিল সিনেমার অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেতা বিজয় ২০২৪ সালে দল গঠনের পর থেকে বিপুল জনসমাগম ঘটিয়ে আসছেন। তাঁর দল টিভিকে রাজ্যের ক্ষমতাসীন ডিএমকে এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভারতীয় জনতা পার্টিকে লক্ষ্য করে রাজনৈতিক প্রচারণা চালাচ্ছে। তিনি ২০২৬ সালের শুরুর দিকে অনুষ্ঠেয় রাজ্য নির্বাচনের আগে প্রচারে নেমেছেন।
স্থানীয় গণমাধ্যমের ভিডিওতে দেখা গেছে, হাজারো মানুষ একটি বড় গাড়ির চারপাশে জড়ো হয়েছেন। সেই গাড়ির ওপর দাঁড়িয়ে বক্তব্য দেন বিজয়। ভিড় নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে তাঁকে পুলিশের সহায়তা চাইতে দেখা যায়।
এটি প্রথমবার নয় যে বিজয়ের সমাবেশে নিরাপত্তাজনিত সমস্যা দেখা দিয়েছে। গত বছর অক্টোবর মাসে দলের প্রথম সমাবেশে অন্তত ৬ জনের মৃত্যুর খবর দিয়েছিল স্থানীয় সংবাদমাধ্যম।
পুলিশের আরোপিত বিধিনিষেধ—যেমন মিছিলের আকার সীমিত রাখা ও ভেন্যু পরিবর্তনের মতো পদক্ষেপ—সত্ত্বেও বিপুল জনসমাগম স্থানীয় অবকাঠামোকে বারবার বিপর্যস্ত করছে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এক্সে লিখেছেন, কারুরে রাজনৈতিক সমাবেশে ঘটে যাওয়া এই দুঃখজনক ঘটনাটি অত্যন্ত বেদনাদায়ক।
আরও পড়ুনভারতে থালাপতি বিজয়ের জনসভায় পদদলিত হয়ে নিহত বেড়ে ৩৬২ ঘণ্টা আগেআরও পড়ুনভারতে থালাপতি বিজয়ের জনসভায় পদদলিত হয়ে অন্তত ৩১ জন নিহত৪ ঘণ্টা আগেউৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
আগামী নির্বাচন ও বাংলাদেশকে নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে: আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও বাংলাদেশকে নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের।
আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়ন জামায়াতের আয়োজনে চৌমুহনী বাজার মুজিবুল হক উচ্চবিদ্যালয় মাঠে নির্বাচনী জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের এ কথা বলেন। আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের কুমিল্লা-১১ (চৌদ্দগ্রাম) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য।
আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেন, ‘পত্রিকায় দেখলাম, নিরাপত্তা উপদেষ্টা ভারতে গিয়েছেন। সেখানে কী আলোচনা হয়েছে—সংবাদ সম্মেলন করে সরকারকে তা জাতির কাছে পরিষ্কার করতে হবে। জীবন দিয়ে, রক্ত দিয়ে ভারতের আধিপত্যবাদকে বাংলার মানুষ এই দেশ থেকে তাড়িয়েছে। ভারতের আধিপত্যবাদ ও বশ্যতা বাংলার মানুষ আর কখনোই গ্রহণ করবে না। এই অন্তর্বর্তী সরকার যদি ভারতের অন্যায় কোনো আবদারে এবং অন্যায় সিদ্ধান্তের প্রতি নতি স্বীকার করতে চায়, তাহলে আপনাদের পরিণতিও শুভ হবে না। জনগণ আপনাদের ক্ষমা করবে না।’
অন্তর্বর্তী সরকার বিএনপির ফাঁদে পা দিয়েছে উল্লেখ করে জামায়াতের নায়েবে আমির বলেন, ‘একটি দল সংস্কার চাচ্ছে না। তারা পুরোনো বস্তাপচা নিয়মে নির্বাচন করতে পাঁয়তারা করছে। অন্তর্বর্তী সরকারও ওই দলের ফাঁদে পা দিয়েছে। সরকারের সিদ্ধান্তে জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটেনি। যদি সংস্কার না হয়, শহীদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করা হবে। সে জন্য আমরা গণভোটের কথা বলেছি। সরকার গণভোট দেবে বলেছে, কিন্তু প্যাঁচ লাগিয়ে দিয়েছে। সেটা হচ্ছে, গণভোট ও জাতীয় নির্বাচন একসঙ্গে হবে। তাদের বুঝতে হবে, এই দুটো নির্বাচন এক জিনিস নয়। কিন্তু ওই দলটি আলাদা গণভোট চায় না। কারণ, ডাকসু, চাকসু, জাকসু ও রাকসুর নির্বাচনের ফলাফল। জনগণ সংস্কারের পক্ষে। জাতীয় নির্বাচনের আগে যদি গণভোট হয়, তাহলে শতকরা ৮০ ভাগ লোক আমাদের পক্ষে রায় দেবে বলে আমি বিশ্বাস করি।’
চৌদ্দগ্রামের শ্রীপুর ইউনিয়ন জামায়াতের আমির মাওলানা আবদুল হাকিমের সভাপতিত্বে জনসভায় প্রধান বক্তা ছিলেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম। বিশেষ অতিথি কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা জামায়াতের আমির মুহাম্মদ শাহজাহান। আরও উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য শাহাব উদ্দিন, চৌদ্দগ্রাম উপজেলা জামায়াতের আমির মাহফুজুর রহমান, সেক্রেটারি বেলাল হোসাইন, চৌদ্দগ্রাম পৌর আমির মাওলানা মু. ইব্রাহীম, ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় মাদ্রাসাবিষয়ক সম্পাদক আলাউদ্দিন, কুমিল্লা জেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সেক্রেটারি খায়রুল ইসলাম প্রমুখ।