বগুড়ায় নানা আয়োজনে টিএমএসএসের বিশ্ব হার্ট দিবস পালন
Published: 29th, September 2025 GMT
‘ডোন্ট মিস এ বিট’ স্লোগানকে সামনে রেখে বগুড়ায় টিএমএসএস হার্ট সেন্টারের উদ্যোগে বর্ণিল আয়োজনে বিশ্ব হার্ট দিবস পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে দিনব্যাপী নানা স্বাস্থ্যসচেতনতামূলক কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
কর্মসূচির মধ্যে ছিল সাইক্লিং প্রতিযোগিতা, ম্যারাথন দৌড়, সাতার প্রতিযোগিতা, বিনা মূল্যে স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও শোভাযাত্রা। বগুড়া শহর থেকে শুরু হওয়া সাইক্লিং প্রতিযোগিতা মাটিডালি বিশ্বরোড হয়ে টিএমএসএস মেডিকেল কলেজ ও রফাতুল্লাহ কমিউনিটি হাসপাতালে গিয়ে শেষ হয়।
হার্ট দিবস উপলক্ষে টিএমএসএস হাসপাতাল চত্বর এবং বগুড়া শহরের সাতমাথায় দুটি হেলথ চেকআপ বুথে বিনা মূল্যে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। এতে হৃদ্রোগ প্রতিরোধে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন ও খাদ্যাভ্যাস সম্পর্কে সচেতনতামূলক পরামর্শসহ বিনা মূল্যে পরামর্শ প্রদান করেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা।
এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন বগুড়া বিএমএর সভাপতি অধ্যাপক মো.
এদিকে ‘সাঁতার কাটুন, হৃদয় সুস্থ রাখুন’—এই বার্তা ছড়িয়ে দিতে পাঁচ তারকা হোটেল মমইন সুইমিংপুলে অনুষ্ঠিত হয় সাঁতার প্রতিযোগিতা। এ ছাড়া টিএমএসএস হাসপাতাল প্রাঙ্গণ থেকে শুরু হয় বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা। হৃদরোগ প্রতিরোধের বার্তা ছড়িয়ে বিশ্বরোড ও নওদাপাড়া হয়ে এ কর্মসূচি টিএমএসএস ক্যানসার সেন্টারে এসে শেষ হয়। এ ছাড়া নারী চিকিৎসকদের নিয়ে আয়োজন করা হয় ‘বালিশ বদল’ বদল খেলা।
দিবসের গুরুত্ব তুলে ধরে আয়োজিত আলোচনা সভায় অতিথি ছিলেন টিএমএসএসের প্রতিষ্ঠাতা নির্বাহী পরিচালক ও টিএমএসএস মেডিকেল কলেজের চেয়ারম্যান অধ্যাপক হোসনে আরা বেগম। টিএমএসএস মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন টিএমএসএস পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান গুলনাহার পারভীন, উপদেষ্টা আয়েশা বেগম, টিএমএসএস উপ-নির্বাহী পরিচালক মো. মতিউর রহমান, পরিচালক (হাসপাতাল) এফ এম মুছা আল মানছুর, ডোমেইন প্রধান অধ্যাপক অনুপ রহমান চৌধুরী, হার্ট সেন্টারের প্রকল্প পরিচালক অধ্যাপক মো. মজিবর রহমান প্রমুখ।
সভায় বক্তারা বলেন, প্রতিবছর দেশে হৃদ্রোগে মৃত্যু হয় প্রায় পৌনে তিন লাখ মানুষের। অথচ সচেতনতা ও স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তুললে ৮০ শতাংশ হৃদ্রোগ প্রতিরোধ সম্ভব।
বক্তারা হৃদ্রোগ ঝুঁকি এড়াতে ওজন নিয়ন্ত্রণ, নিয়মিত ব্যায়াম, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ, ধূমপান ত্যাগ, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ ও মানসম্পন্ন ঘুমের অভ্যাস গড়ে তোলা ছাড়াও যেকোনো সমস্যায় দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার আহ্বান জানান।
আলোচনা সভায় টিএমএসএস হার্ট সেন্টারের কার্ডিয়াক সেবা, এনজিওগ্রাম, স্টেনটিং, প্রাইমারি পিসিআইসহ ক্লিনিক্যাল ও ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজি, হার্ট ফেইলিউর ও অ্যারিদমিয়া, করোনারি আর্টারি বাইপাস সার্জারির মতো উন্নত চিকিৎসা সুবিধার কথা তুলে ধরা হয়।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ট এমএসএস হ রহম ন
এছাড়াও পড়ুন:
দিনাজপুরে মেতেছে বিজয়া দশমীর সিঁদুর খেলা
দিনাজপুরে শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে বিজয়া দশমীতে অনুষ্ঠিত হলো ঐতিহ্যবাহী সিঁদুর খেলা।
বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) দুপুর থেকে শহরের বিভিন্ন পূজামণ্ডপ ও প্রতিমা বিসর্জন কেন্দ্রে হিন্দু ধর্মাবলম্বী নারী-পুরুষ, তরুণ-তরুণী, শিশু ও প্রবীণ সবাই অংশ নেন এই আনন্দঘন উৎসবে।
আরো পড়ুন:
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে উৎসবমুখর পরিবেশে প্রতিমা বিসর্জন
বুড়িগঙ্গায় প্রতিমা বিসর্জন, সদরঘাটে ভক্তদের ঢল
শঙ্খধ্বনি, ঢাক-ঢোলের তালে প্রতিমার সামনে একে অপরের মুখে, কপালে ও গালে সিঁদুর লেপন করে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন ভক্তরা। লাল রঙে রঙিন হয়ে ওঠে চারপাশ, সৃষ্টি হয় এক অনিন্দ্যসুন্দর পরিবেশ। সিঁদুর খেলাকে কেন্দ্র করে শহরে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করে।
দিনাজপুর শহরের বড় মণ্ডপ থেকে শুরু করে বিভিন্ন পূজা মণ্ডপে একই দৃশ্য দেখা গেছে। প্রতিমা বিসর্জনের আগে এভাবেই মা দুর্গাকে বিদায় জানান ভক্তরা।
পণ্ডিতদের মতে, বিজয়া দশমীর সিঁদুর খেলা মূলত মা দুর্গাকে বিদায়ের আগে তাকে শুভকামনা ও আশীর্বাদ জানানোর একটি প্রতীকী রীতি। বিশেষত বিবাহিত নারীরা একে অপরকে সিঁদুর পরিয়ে স্বামীর দীর্ঘায়ু ও পরিবারের মঙ্গল কামনা করেন।
দিনাজপুর শহরের রাজবাটি, কালীতলা, বড় মণ্ডপসহ বিভিন্ন পূজামণ্ডপে ছিল এই উৎসবের প্রাণবন্ত আয়োজন। ছোট-বড় সবাই লাল সিঁদুরে রঙিন হয়ে একে অপরকে আলিঙ্গন করে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
শেষ বিকেলে ঢাক-ঢোলের বাদ্য, শঙ্খধ্বনি ও উলুধ্বনির মধ্য দিয়ে দেবী দুর্গার প্রতিমা বিসর্জনের প্রস্তুতি শুরু হয়। দিনাজপুরে সিঁদুর খেলার এ উৎসব শুধু ধর্মীয় আবেগ নয়, বরং বাঙালি সংস্কৃতির প্রাণের এক রঙিন প্রকাশ।
স্থানীয় পূজারী সুবর্ণা রায় বলেন, “মা দুর্গাকে বিদায় জানাতে মন খারাপ লাগে। তবে সিঁদুর খেলা আনন্দের মধ্য দিয়ে সেই বিষাদকে কিছুটা কমিয়ে দেয়।”
অর্পিতা এক কলেজ ছাত্রী জানান, সারা বছর অপেক্ষা করি দুর্গাপূজার জন্য। আজকের দিনটা আবেগের, আবার আনন্দেরও। মা-কে বিদায় জানালেও সিঁদুর খেলায় মন ভরে যায়।
দিনাজপুর পৌর এলাকার বাসিন্দা শান্তনু চক্রবর্তী বলেন, “সিঁদুর খেলা আমাদের সংস্কৃতির অংশ। এই খেলায় আমরা শুধু আনন্দই পাই না, বরং ঐক্যের বার্তাও ছড়িয়ে যায়।”
আরেক তরুণ ভক্ত রুবেল দেবনাথ বলেন, “সিঁদুর খেলা শুধু একটি আচার নয়, এটি আমাদের মাঝে ভ্রাতৃত্ব ও আনন্দ ভাগাভাগি করার এক বিশেষ উপলক্ষ।”
ঢাকা/মোসলেম/মেহেদী