মেডিকেলে কোটায় ভর্তি কার্যক্রম আপাতত স্থগিত
Published: 3rd, February 2025 GMT
২০২৪ সালে কোটাবিরোধী আন্দোলন এবং পরবর্তীতে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে স্বৈরাচারী শাসনের অবসানের পর কোটা থাকবে কি না, এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের মধ্যে দ্বিধাদ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে। ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে মেডিকেল কলেজের ভর্তি পরীক্ষায় মুক্তিযোদ্ধা কোটাধারীদের উত্তীর্ণ হওয়া নিয়ে সমালোচনা ওঠায় আপাতত এ শিক্ষাবর্ষে সব কোটাধারীদের ভর্তি কার্যক্রম স্থগিত রাখার কথা জানিয়েছে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর।
সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (চিকিৎসা শিক্ষা) অধ্যাপক ডা.
এতে বলা হয়েছে, মেডিকেল কলেজে এমবিবিএস কোর্সে ভর্তির অনলাইন আবেদন ও মাইগ্রেশন সংক্রান্ত সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস কোর্সে সরকারি মেডিকেল কলেজে সব কোটায় প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত প্রার্থীদের কোটার স্বপক্ষে সনদ/প্রমাণ যাচাই বাছাই চলমান রয়েছে। পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত সব কোটায় প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের ভর্তি কার্যক্রম স্থগিত রাখার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো। এতে মহাপরিচালক মহোদয়ের সদয় সম্মতি রয়েছে।
অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক রুবিনা ইয়াসমিন বলেন, ‘‘কোটায় ভর্তির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে আগামী উপদেষ্টা পরিষদ সভার পর। উপদেষ্টা পরিষদ সিদ্ধান্ত নেবে, এরপর সেটা স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর জানাবে। মুক্তিযোদ্ধাসহ অন্যান্য কোটায় উত্তীর্ণদের ভর্তি প্রক্রিয়া আপাতত স্থগিতই রাখছি আমরা। বিষয়টি ইতোমধ্যেই উপদেষ্টা পরিষদকে অবহিত করা হয়েছে।’’
এর আগে গত ১৭ জানুয়ারি এ শিক্ষাবর্ষের সরকারি-বেসরকারি সব মেডিকেল কলেজের ভর্তি পরীক্ষা আয়োজন করা হয়। তাতে উত্তীর্ণদের মেধা তালিকার ভিত্তিতে সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তির সময়সীমা আগামী ২-৮ ফেব্রুয়ারি। আর বেসরকারিতে ৩ ফেব্রুয়ারি (সোমবার) থেকে ভর্তি কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তবে গত ৩০ জানুয়ারি মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা, বীরাঙ্গনার সন্তানদের জন্য সংরক্ষিত ৫ শতাংশ আসনে শিক্ষার্থী ভর্তির বিষয়ে উপদেষ্টা পরিষদের সভায় আলোচনা করা হয়। এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত আসতে পারে আগামী সভায়।
গত বৃহস্পতিবার রুবিনা ইয়াসমিন জানান, মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষায় মুক্তিযোদ্ধা কোটায় প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত যে ১৯৩ জনের কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করার কথা ছিল, তাদের মধ্যে ৪৯ জন নির্ধারিত সময় অর্থাৎ ২৯ জানুয়ারি পর্যন্ত আসেনি।
ঢাকা/হাসান/এনএইচ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম ড ক ল কল জ উপদ ষ ট সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
বিদেশে শ্রমবাজার সম্প্রসারণসহ ৯ বিষয়ে সুপারিশের জন্য নতুন উপদেষ্টা কমিটি
বিদেশে শ্রমবাজার সম্প্রসারণসহ ৯ বিষয়ে সুপারিশের জন্য ১১ সদস্যের উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি গঠন করা হয়েছে। গতকাল রোববার ‘বাংলাদেশিদের বিদেশে নিয়োগ–সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি’ গঠনের প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। একই প্রজ্ঞাপনে ২০২৪ সালের ৮ এপ্রিল জারি হওয়া প্রজ্ঞাপন বাতিল করা হয়েছে।
প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা আসিফ নজরুলকে আহ্বায়ক করে গঠিত এ কমিটিতে ১১ জন উপদেষ্টা রয়েছেন। তাঁরা হলেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, শিক্ষা উপদেষ্টা চৌধুরী রফিকুল আবরার, স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া, শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন, সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন এবং সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। আগের সরকারের একই কমিটি ছিল ১৩ সদস্যের।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব বা প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সচিব, অর্থসচিবসহ ১৬ জন সচিব এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর হচ্ছেন কমিটির সহায়তাদানকারী কর্মকর্তা। প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় কমিটিকে সাচিবিক সহায়তা দেবে। কমিটি প্রয়োজন অনুযায়ী বৈঠক করবে এবং চাইলে নতুন সদস্য যুক্ত করতে পারবে।
কমিটির কার্যপরিধির মধ্যে রয়েছে বিদেশে জনশক্তি নিয়োগসংক্রান্ত কাজের সমন্বয়, শ্রমবাজার সম্প্রসারণ ও নতুন শ্রমবাজার অন্বেষণের দিকনির্দেশনা, বৈদেশিক কর্মসংস্থানসংক্রান্ত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা, অভিবাসী কর্মীদের সামগ্রিক কল্যাণ, অভিবাসনপ্রত্যাশীদের দক্ষতা উন্নয়ন, বৈধ পথে প্রবাসী আয় পাঠানো ইত্যাদি ৯ ধরনের বিষয়ে সুপারিশ তৈরি করা। ২০২৪ সালের কার্য পরিধি যা ছিল, গতকালের কার্যপরিধিও একই। দুই কার্যপরিধিতে দাঁড়ি, কমা ও সেমিকোলনের কোনো পরিবর্তন নেই।
বাংলাদেশ জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে বিদেশে তিন লাখ কর্মীর কর্মসংস্থান কমে গেছে। কারণ, মালয়েশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ওমান—এ তিন শ্রমবাজার বন্ধ রয়েছে। বড়দের মধ্যে টিকে আছে শুধু সৌদি আরবের শ্রমবাজার।
বিএমইটির তথ্য অনুযায়ী, করোনা চলাকালীন ২০২১ সালে বিভিন্ন দেশে কাজ করতে গেছেন ৬ লাখ ১৭ হাজার কর্মী। ২০২২ সালে গেছেন ১১ লাখের বেশি। ২০২৩ সালে গেছেন আরও বেশি অর্থাৎ ১৩ লাখ। তবে ২০২৪ সালে ৩ লাখ কমে ১০ লাখে দাঁড়ায়। এর মধ্যে ৯০ শতাংশই গেছেন ৫ দেশে। এগুলো হচ্ছে সৌদি আরব, মালয়েশিয়া, কাতার, সিঙ্গাপুর ও সংযুক্ত আরব আমিরাত।
জানা গেছে, মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার বন্ধ ২০২৪ সালের জুন থেকে। ওমানে ২০২৩ সালে গিয়েছিলেন যেখানে সোয়া লাখের বেশি, ২০২৪ সালে গিয়েছেন মোটে ৩৫৮ জন। একই অবস্থা সংযুক্ত আমিরাতেও। এ দেশে ২০২৩ সালে কর্মী গিয়েছিলেন প্রায় ১ লাখ, আর ২০২৪ সালে গেছেন অর্ধেকের কম অর্থাৎ ৪৭ হাজার। তবে সৌদি আরবে ২০২৩ সালে প্রায় ৫ লাখ কর্মী গেলেও ২০২৪ সালে গেছেন সোয়া ৬ লাখ।
সূত্রগুলো জানায়, সরকারিভাবে ১৬৮টি দেশে কর্মী পাঠানোর দাবি করা হলেও ২০২৪ সালে ১৩৫টি দেশে কর্মী গেছেন। এর মধ্যে অধিকাংশ দেশে কর্মী গেছেন নামমাত্র। যেমন ১৪টি দেশে কর্মী গেছেন একজন করে। ১৪টি দেশে গেছেন দুজন করে। ১০ হাজার কর্মী গেছেন, এমন দেশ ৮টি। আর লাখের বেশি কর্মী পাঠানো দেশ শুধু সৌদি আরব।
কমিটির নাম ‘বাংলাদেশিদের বিদেশে নিয়োগসংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি’ রাখা হলো কেন এবং ‘নিয়োগ’ শব্দটিই রাখার উদ্দেশ্য কী—এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একজন শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তা জানান, নিয়োগের বদলে এটা হওয়া উচিত ‘কর্মসংস্থানের সুযোগ’। কিন্তু মন্ত্রীদের বদলে উপদেষ্টাদের নাম বসানো ছাড়া আগের প্রজ্ঞাপন থেকে হুবহু সব নেওয়ার কারণে ঘটনাটি এমন হয়েছে।