দেশের শীর্ষস্থানীয় নির্মাণসামগ্রী প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান আনোয়ার গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ এবং রিয়েল এস্টেট খাতের অন্যতম স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান বে ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের মধ্যে একটি কৌশলগত সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। বে ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের করপোরেট অফিসে গত মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) এ সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

এই কৌশলগত অংশীদারত্বের আওতায় আনোয়ার গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ তাদের নির্মাণসামগ্রী বিভাগ থেকে বে ডেভেলপমেন্টস লিমিটেডের কাছে কঠোর মানদণ্ড অনুযায়ী উচ্চমানের নির্মাণসামগ্রী সরবরাহ করবে।

বে ডেভেলপমেন্টস তাদের উচ্চমানের আবাসিক প্রকল্পের মাধ্যমে বিলাসবহুল ও আধুনিক জীবনযাত্রার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, সেটি পূরণে আনোয়ার গ্রুপের পণ্যের গুণমান, উদ্ভাবন এবং উৎকর্ষ ভূমিকা রাখবে।

এ অংশীদারত্ব শুধু মানসম্পন্ন নির্মাণসামগ্রী সরবরাহের চেয়ে বেশি কিছু। এটি উভয় প্রতিষ্ঠানের উচ্চমানের রিয়েল এস্টেট খাতে টেকসই উন্নয়নের প্রতি অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি এবং মূল্যবোধ ও উচ্চাকাঙ্ক্ষার কৌশলগত সমন্বয়ের প্রতিফলন।

এ অংশীদারত্বের মাধ্যমে উভয় প্রতিষ্ঠান উন্নত গুণমান, উদ্ভাবনী সমাধান ও টেকসই নির্মাণব্যবস্থা বজায় রাখার লক্ষ্যে একত্রে কাজ করবে। বিলাসবহুল ও আধুনিক জীবনযাত্রার মান তৈরিতে এ দুই গ্রুপের অংশীদারত্ব আবাসন শিল্পে নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।

চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করেন আনোয়ার গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক ওয়াইজ আর হোসেন এবং বে ডেভেলপমেন্টস লিমিটেডের প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা মোহাম্মদ মুস্তফা হাসান।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বে ডেভেলপমেন্টস লিমিটেডের ভাইস প্রেসিডেন্ট জি এম শিফাতুর রহমান, সহকারী ভাইস প্রেসিডেন্ট এ এন এম তাওহিদুজ্জামান এবং আনোয়ার গ্রুপের নির্মাণসামগ্রী বিভাগের করপোরেট সেলস প্রধান দিবাকর বিশ্বাস, হেড অব মার্কেটিং মো.

ফাহিম হোসেনসহ উভয় প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা।

এ অংশীদারত্ব শুধু পণ্যের গুণমান রক্ষায় নয়, বরং দেশের রিয়েল এস্টেট খাতের টেকসই উন্নয়ন ও ভবিষ্যৎ প্রবৃদ্ধির পথকে আরও সুদৃঢ় করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ড ভ লপম ন ট

এছাড়াও পড়ুন:

মসজিদে দাঁড়িয়ে প্রতিজ্ঞা: ভালো হতে চেয়ে হলেন মাদক সম্রাট

মসজিদে দাঁড়িয়ে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, ফিরবেন সৎ জীবনে। কিন্তু কয়েক মাসের মধ্যেই সেই ‘প্রতিজ্ঞাবদ্ধ’ সাখাওয়াত হোসেন এখন পরিণত হয়েছেন গাজীপুরের কালিগঞ্জ উপজেলার দুর্বাটি এলাকার মাদক সম্রাটে। স্থানীয়দের বিশ্বাস ভেঙে, সমাজের বিভিন্ন শ্রেণিকে ব্যবহার করে, তিনি গড়ে তুলেছেন একটি ভয়ঙ্কর এক মাদক সাম্রাজ্য।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে কালীগঞ্জ পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের দুর্বাটি এলাকার মসজিদে দাঁড়িয়ে মো. সাখাওয়াত হোসেন (৩৮) ঘোষণা দিয়েছিলেন, তিনি আর কখনো মাদক ব্যবসায় জড়াবেন না। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর আইনের চোখ এড়িয়ে চলতে এ প্রতিজ্ঞা করেছিলেন বলে জানান স্থানীয়রা।

সেদিন উপস্থিত মুসল্লিরা তাকে সংশোধনের সুযোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু কয়েক সপ্তাহ যেতে না যেতেই সাখাওয়াত পুনরায় মাদক ব্যবসায় নেমে পড়েন আরও সংগঠিতভাবে। এখন তিনি শুধু নিজের এলাকাতেই সীমাবদ্ধ নন বরং আশেপাশের উপজেলাগুলোতেও মাদক সরবরাহ করছেন বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।

স্থানীয় অনুসন্ধানে জানা গেছে, দুর্বাটি ও বাঙ্গালহাওলা এলাকায় অন্তত ১৩টি স্থানে সক্রিয়ভাবে ইয়াবা, হেরোইন, গাঁজা ও চোলাই মদের বেচাকেনা হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে—বাঙ্গালহাওলা ব্রিজের পূর্ব পাশের তমির ভিটা, গণি মিয়ার পুকুরপাড়, সাধুর হাট, তুমলিয়া রেল ব্রিজ, খ্রিস্টান পাড়ার একাংশ, শিমুলতলা, ফকির বাড়ি, ফারুক চেয়ারম্যানের সড়ক এবং মাদক কারবারি হৃদয়ের নিজ বাড়িসহ একাধিক স্পট।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রতিদিন সন্ধ্যার পর এসব জায়গায় মাদকসেবীদের আনাগোনা বেড়ে যায়। এলাকাবাসী নিজ উদ্যোগে পাহারার ব্যবস্থা করলেও কোনো ফল মেলেনি। স্থানীয়দের অভিযোগ, পুলিশকে অসহযোগিতা এবং সাখাওয়াতের ‘ম্যানেজমেন্ট’ এসব কর্মকাণ্ডের পেছনে বড় ভূমিকা রাখছে। 

সাখাওয়াতের নেটওয়ার্কে রয়েছে দুর্বাটি গ্রামের আব্দুল মান্নান ভূঁইয়ার ছেলে হৃদয় ভূঁইয়া, মৃত মো. মোশারফ হোসেনের ছেলে প্রবাস ফেরত মোফাজ্জল হোসেন ও মৃত মহসিন মছেনের ছেলে মো. হাবিবুর রহমান হাবি। তারা সবাই প্রকাশ্যে মাদক সরবরাহ করছে, এমনকি পুলিশি অভিযানের ভয়ও তাদের নেই বলে অভিযোগ রয়েছে।

মাদকের প্রভাবে এসব এলাকায় পারিবারিক সংকট চরমে উঠেছে। জানা গেছে, এক মাদকসেবী ছেলে নিজের পরিবারের শেষ সম্বল গরুটিও বিক্রি করে দিয়েছে মাদক কেনার জন্য। আরেকজন স্ত্রীর জমানো টাকা না পেয়ে তাকে মারধর করেছে।

এদিকে, চুরি, ছিনতাই, এমনকি ডাকাতির মত অপরাধও বেড়েছে আশঙ্কাজনক হারে। এলাকাবাসীর ভাষায়, ‘এখনকার দুর্বাটি যেন এক খোলা মাদক বাজার!’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক স্থানীয় বাসিন্দা জানান, সাখাওয়াত মসজিদে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, তিনি আর মাদক বিক্রি করবেন না। কিন্তু এখন তিনি উপস্থিত মুসল্লিদের মান-সম্মান শেষ করে দিয়েছেন। কোথাও গেলে লোকে বলে, আমরা নাকি মাদক কারবারির এলাকা থেকে এসেছি। পরিবারের শিশু-কিশোররাও আজ মাদকের ফাঁদে পড়ে গেছে।

দুর্বাটি ও বাঙালহাওলা এখন এক অঘোষিত মাদক হটস্পট। এলাকা রক্ষায় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ, গণসচেতনতা ও সম্মিলিত প্রয়াস ছাড়া বিকল্প দেখছেন না কেউ।

এলাকাবাসী বলছেন, যে মসজিদে দাঁড়িয়ে প্রতিজ্ঞা করেছিল, আজ সেই মসজিদের পাশেই নেশার কারবার চালাচ্ছে সাখাওয়াত। আর কতকাল চলবে এই প্রতারণা? প্রশ্ন তাদের।

কালীগঞ্জ পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মোফাজ্জল হোসেন আকন্দ মোমেন বলেন, “আমি প্রতিটি মসজিদে গিয়েছি, উঠান বৈঠক করেছি। সাখাওয়াতকে সংশোধনের সুযোগ দিয়েছি। কিন্তু সে কথা রাখেনি। পুলিশকে আমরা সহযোগিতা করতে প্রস্তুত, এখন তাদেরই পদক্ষেপ নেওয়ার সময়।”

কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আলাউদ্দিন বলেন, “আমি আগস্টের পর এই থানায় যোগদান করেছি। বাঙালহাওলা ও দুর্বাটি এলাকার মাদক স্পট সম্পর্কে আগে অবগত ছিলাম না। তবে এখন জেনেছি, দ্রুত সময়ের মধ্যেই অভিযান চালানো হবে।”

তিনি আরও বলেন, “মাদকের ব্যাপারে আমরা জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করি। স্থানীয়রা তথ্য দিলে আমরা আরও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারব। কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়।”

ঢাকা/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সিলেটে পাঁচ দিন ৩৯ এলাকায় সাড়ে ৫ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকবে
  • ইউক্রেনের সেনা বিতাড়নের পর প্রথমবার কুরস্কে পুতিন
  • এশিয়ার প্রতিরক্ষা শিল্পে তুরস্কের প্রভাব বাড়ছে
  • পাকিস্তানকে সমর্থন জানালো চীন
  • হুতিদের সঙ্গে যুদ্ধে আমেরিকা কেন পিছু হটল
  • নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আসছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়
  • লোডশেডিংয়ে ‘নাকাল’ গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা
  • ইবিতে স্থাপিত হবে বৈদ্যুতিক উপকেন্দ্র
  • মসজিদে দাঁড়িয়ে প্রতিজ্ঞা: ভালো হতে চেয়ে হলেন মাদক সম্রাট
  • চট্টগ্রাম বন্দরের কৌশলগত সিদ্ধান্তে সতর্ক হওয়া জরুরি