ভারত-পাকিস্তানের শত্রুতার ‘মূল কেন্দ্রবিন্দু’ কাশ্মীর বিতর্ক: ফক্স নিউজকে পাকিস্তানি রাষ্ট্রদূত
Published: 3rd, May 2025 GMT
ভারতের সঙ্গে নতুন করে পাকিস্তানের সম্পর্ক অবনতি হওয়ার মূল কারণ কাশ্মীর সমস্যা। কয়েক দশকের পুরোনো এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান না হলে পারমাণবিক শক্তিধর এই দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে শান্তি সম্ভব নয়। তাই এই সমস্যার সমাধান করতে আন্তর্জাতিক মহলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রে নিয়োজিত পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত রিজওয়ান সাঈদ শেখ। আজ শনিবার ফক্স নিউজ ডিজিটালে সম্প্রচারিত এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথাগুলো বলেন।
রিজওয়ান সাঈদ শেখ বলেন, ‘সাময়িক কোনো সমাধান নয়, কাশ্মীর সমস্যার স্থায়ী সমাধান দরকার। প্রেসিডেন্ট [ডোনাল্ড] ট্রাম্প কাশ্মীর সমস্যার সমাধানে অংশ নিয়ে তাঁর [চুক্তির মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের] উত্তরাধিকারকে সমৃদ্ধ করতে পারেন।’ কাশ্মীর ইস্যু ‘পারমাণবিক উত্তেজনার কেন্দ্রবিন্দুতে’ পরিণত হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত।
গত ২২ এপ্রিল ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ এক হামলায় ২৬ জন নিহত হন, যাঁদের বেশির ভাগই পর্যটক। এই হামলার সঙ্গে পাকিস্তানের সংশ্লিষ্টতা আছে বলে দাবি করেছে ভারত। তবে নিজেদের দাবির পক্ষে এখন পর্যন্ত কোনো প্রমাণ দেয়নি নয়াদিল্লি। পাকিস্তান সেই দাবি প্রত্যাখ্যান করে পেহেলগাম হামলার নিরপেক্ষ আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি জানিয়েছে।
পেহেলগামের হামলার পর থেকে উভয় দেশ ধারাবাহিকভাবে পাল্টাপাল্টি ব্যবস্থা নিচ্ছে। ফলে বৈরী দেশ দুটি আবার সামরিক সংঘাতে জড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইসলামাবাদের শঙ্কা, ভারত যেকোনো সময় হামলা চালাতে পারে। তাই তারা বিভিন্ন ধরনের সামরিক প্রস্তুতি নিচ্ছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র, চীন, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), ইরান, সৌদি আরব, তুরস্ক, কাতারসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ উভয় পক্ষকে সংযম দেখানোর আহ্বান জানিয়েছে।
সাক্ষাৎকারে ফক্স নিউজকে রিজওয়ান সাঈদ বলেন, কাশ্মীর পরিস্থিতি ‘এর আগেও যখন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিল, তখনো আন্তর্জাতিক মহল বিষয়টির প্রতি নজর দিয়েছিল। কিন্তু সমস্যার পুরোপুরি সমাধান হওয়ার আগেই তারা চোখ ফিরিয়ে নিয়েছে।’ তাই কাশ্মীর সমস্যার স্থায়ী সমাধান করতে আন্তর্জাতিক শক্তিগুলোর প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘যেকোনো ভুল পদক্ষেপ বা ভুল হিসাব পারমাণবিক সংঘর্ষের দিকে নিয়ে যেতে পারে। এমন জনবহুল অঞ্চলে সেটি অবশ্যই কাম্য নয়।’ পাকিস্তান এই অঞ্চলে কোনো অস্থিরতা চায় না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা একটি শান্তিপূর্ণ প্রতিবেশী চাই।’
গত বৃহস্পতিবার নিউজউইক সাময়িকীকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারেও উত্তেজনা কমাতে ভূমিকা রাখতে ট্রাম্পের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন রিজওয়ান সাঈদ। তখন তিনি বলেছিলেন, ট্রাম্প প্রশাসন ‘বিশ্বে শান্তির পক্ষে অবস্থান নিয়েছে’, যা গুরুত্বপূর্ণ। এই মুহূর্তে কাশ্মীর বিষয়ের চেয়ে ‘আর কোনো গুরুত্বপূর্ণ উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি নেই’ বলেও মন্তব্য করেছিলেন তিনি।
ওই সাক্ষাৎকারে পাকিস্তানি রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, গত জানুয়ারির শপথ অনুষ্ঠানে ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘শান্তির দূত ও ঐক্যের প্রতীক হিসেবে আমি গর্বের সঙ্গে স্মরণীয় হয়ে থাকতে চাই।’
ট্রাম্প এরই মধ্যে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি করেছেন। যদিও তা পরবর্তীতে ভেঙে গেছে। তিনি ইউক্রেন ও রাশিয়ার যুদ্ধ থামাতেও জোর চেষ্টা করছেন। অন্যদিকে ইরানের সঙ্গেও নতুন করে পারমাণবিক চুক্তি করতে চাইছেন।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে সুবিধামতো সময়ে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে একটি বৈঠক আহ্বান করা হবে বলে জানিয়েছেন আসিম ইফতিখার আহমদ। জাতিসংঘে নিয়োজিত পাকিস্তানের এই রাষ্ট্রদূত শুক্রবার নিউইয়র্কে এক সংবাদ সম্মেলনে এই কথা জানান।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ক শ ম র সমস য সমস য র স
এছাড়াও পড়ুন:
নর্ডিক স্কলারশিপে সম্পূর্ণ অর্থায়নে স্নাতকোত্তর ও পিএইচডির সুযোগ
উত্তর ইউরোপের দেশগুলোর আগ্রহী শিক্ষার্থীদের জন্য গবেষণার সুযোগ নিয়ে এসেছে নর্ডিক স্কলারশিপ প্রোগ্রাম ২০২৬। এই প্রোগ্রাম ঘোষণা করেছে সুইডেনের নর্ডিক আফ্রিকা ইনস্টিটিউট (NAI)। সামাজিক বিজ্ঞান ও মানবিক বিষয়ে যাঁরা আফ্রিকান স্টাডিজ বা সমসাময়িক আফ্রিকা নিয়ে গবেষণা করছেন, তাঁদের জন্য এই আন্তর্জাতিক বৃত্তি উন্মুক্ত।
এই বৃত্তির মাধ্যমে সুইডেন, ফিনল্যান্ড, ডেনমার্ক ও আইসল্যান্ডের কোনো বিশ্ববিদ্যালয় বা গবেষণাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত মাস্টার্স, পিএইচডি ও পোস্টডক্টরাল গবেষকেরা এক মাসের জন্য নর্ডিক আফ্রিকা ইনস্টিটিউটে গবেষণার সুযোগ পাবেন। এই প্রোগ্রাম আবেদনকারীর নাগরিকত্বের ওপর নির্ভরশীল নয়। মূল লক্ষ্য হলো, আফ্রিকা–বিষয়ক গবেষণায় নর্ডিক অঞ্চলে সক্ষমতা বৃদ্ধি করা এবং নর্ডিক গবেষকদের মধ্যে সহযোগিতার নেটওয়ার্ক তৈরি করা।
নর্ডিক স্কলারশিপ প্রোগ্রাম ২০২৬–এর শেষ তারিখ আগামী ১২ অক্টোবর ২০২৫।