হতাহতদের ক্ষতবিক্ষত হওয়ার ছবি-ভিডিও প্রকাশের ক্ষেত্রে ঝাপসা করতে হবে: হাইকোর্ট
Published: 3rd, August 2025 GMT
রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভবনে বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় নিহত–আহত ব্যক্তিদের ক্ষতবিক্ষত (ডিস্টর্ট) হওয়ার যেসব ছবি ও ভিডিও মানসিক পীড়া দেয় সেগুলো প্রকাশের ক্ষেত্রে ব্লার (ঝাপসা) করতে হবে বলে আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি কাজী জিনাত হক ও বিচারপতি আইনুন নাহার সিদ্দিকার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ রোববার রুলসহ এ আদেশ দেন।
ওই ঘটনায় হতাহত ব্যক্তিদের ছবি–ভিডিও সরাতে এবং সেগুলো ছড়িয়ে পড়া বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তাসমিয়াহ নুহিয়া আহমেদ গত ২৯ জুলাই রিটটি করেন। রিটের ওপর গত ৩১ জুলাই শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট আদেশের জন্য আজকের দিন রাখেন।
আদালতে রিটের পক্ষে তাসমিয়াহ নুহিয়া আহমেদ নিজেই শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো.
আদেশের পর আইনজীবী তাসমিয়াহ নুহিয়া আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ ধরনের ছবি ও ভিডিও প্রচার–প্রকাশের ক্ষেত্রে কিছু বিধিবিধান আছে। সে অনুসারে প্রচারিত–প্রকাশিত হচ্ছে না। এ ক্ষেত্রে নিষ্ক্রিয়তা দেখা যাচ্ছে। অর্থাৎ পোশাকহীন ও অগ্নিদগ্ধ অবস্থার ছবি–ভিডিও সরানো বা ব্লার করার বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না—এ বিষয়ে রুল ইস্যু করা হয়েছে। আদালত নির্দেশনা দিয়েছেন। পরবর্তী সময়ে এ ধরনের ছবি–ভিডিও যখন প্রকাশিত বা প্রচারিত হবে তখন বিধিবিধানগুলো যেন মানা হয় এবং ক্ষতবিক্ষত যেসব ছবি–ভিডিও ইতিমধ্যে প্রকাশিত বা প্রচারিত হয়েছে, যা মানুষকে কষ্ট দেয়, সেগুলো ব্লার করে দিতে বলা হয়েছে।’
তবে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নূর মুহাম্মদ আজমী প্রথম আলোকে বলেন, আদালত বলেছেন হতাহতের ডিস্টর্ট ছবি–ভিডিও প্রকাশের ক্ষেত্রে ব্লার (ঝাপসা) করতে হবে। অর্থাৎ ভবিষ্যতে প্রকাশের ক্ষেত্রে। এ বিষয়ে বিটিআরসিসহ বিবাদীদের প্রতি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গত ২১ জুলাই উত্তরার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভবনে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ৩০ জুলাই পর্যন্ত হিসাবে, ওই ঘটনায় মৃতের সংখ্যা ৩৪।
রিট আবেদনকারীর ভাষ্য, ওই দুর্ঘটনায় আহত–নিহত ব্যক্তিদের ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ ও ডিজিটাল মাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সেগুলোতে শিশুদের প্রায় পোশাকহীন, অগ্নিদগ্ধ ও আহত অবস্থায় দেখা যায়। এসব ছবি–ভিডিও শিশুদের পরিবারের পাশাপাশি সাধারণ নাগরিকদের ট্রমাটাইজ (মানসিকভাবে আঘাত) করে দিচ্ছে। আন্তর্জাতিক নীতিমালা অনুযায়ী এ ধরনের দুর্ঘটনায় আহত–নিহত ব্যক্তিদের ছবি–ভিডিও প্রকাশে সংবেদনশীল হওয়ার বিষয়ে বলা হয়েছে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প রক শ র ক ষ ত র প রক শ ত ঘটন য় হওয় র
এছাড়াও পড়ুন:
ছাদ ধসের ঘটনায় নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে ইউজিসির তদন্ত দল
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন ১০ তলা আবাসিক হলের ছাদ ধস তদন্তে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) প্রতিনিধিরা।
রবিবার (৩ আগস্ট) তদন্তকারীরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে নির্মাণ কাজের বিভিন্ন দিক পর্যবেক্ষণ করেন।
তদন্ত কমিটির নেতৃত্ব দেন ইউজিসির পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের পরিচালক ও কমিটির আহ্বায়ক মোহাম্মদ মাকসুদুর রহমান ভূঁইয়া। দলের অন্য সদস্যরা হলেন- সহকারী পরিচালক (প্রকৌশল) তানভির মোরশেদ, অতিরিক্ত পরিচালক সুরাইয়া ফারহানা ও সিনিয়র সহকারী পরিচালক (প্রকৌশল) মোশারফ হোসেন।
আরো পড়ুন:
নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাদ ধসের ঘটনায় ইউজিসির তদন্ত কমিটি
রাবির কলা অনুষদভুক্ত বিভাগগুলোর শিক্ষক নিয়োগ স্থগিত
পরিদর্শনে তারা নির্মাণাধীন অংশের খুঁটির সংখ্যা ও দূরত্ব, নকশা অনুযায়ী নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহারের বিষয়গুলো নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করেন। পাশাপাশি ছবি, ভিডিও ধারণসহ বিভিন্ন প্রমাণাদি সংগ্রহ করেন।
পরিদর্শন শেষে মাকসুদুর রহমান বলেন, “নির্মাণে খুঁটির যথাযথ ব্যবহার হয়নি এবং বাঁশের ব্যবহার নীতিমালার বাইরে। ঢালাইয়ের আগে চেকলিস্ট বা ক্লিয়ারেন্সেরও কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানানো হবে।”
তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় নথিপত্র চাওয়া হয়েছে। সেগুলো যাচাই করে পরামর্শক, বাস্তবায়নকারী সংস্থা এবং অনুমোদন প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা খতিয়ে দেখা হবে। তদন্তের ভিত্তিতে দায়ীদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে ইউজিসি।”
সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী মোশারফ হোসেন বলেন, “রডের বিন্যাস নকশা অনুযায়ী হলেও প্রপিং, স্টেজিং ও স্ক্যাফোল্ডিংয়ের ক্ষেত্রে নকশা মানা হয়নি। কিছু জায়গায় বেআইনিভাবে বাঁশ ব্যবহৃত হয়েছে এবং ডেসিংও ছিল অপর্যাপ্ত। নিরাপত্তা ও অনুমোদন সংক্রান্ত কোনো তথ্য হাতে আসেনি।”
তদন্ত কমিটির প্রধান আরো বলেন, “শ্রমিক নিরাপত্তায় কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। শতভাগ নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।”
গত ৩১ জুলাই বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্রোহী হলের পূর্ব পাশে নির্মাণাধীন ছাত্র হলের দ্বিতীয় তলার পার্কিং এক্সটেনশনের ছাদ ধসে পড়ে। এতে ১২ জন শ্রমিক আহত হন।
ঢাকা/মুজিবুর/মেহেদী