রাজধানীর শাহবাগ, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আজ রোববার পৃথক সমাবেশ ও অনুষ্ঠান চলছে। এসব আয়োজনকে ঘিরে গতকাল শনিবারই সংশ্লিষ্ট এলাকায় যান চলাচল নিয়ন্ত্রণে বিশেষ নির্দেশনা জারি করে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি )। এর ফলে আজ রাজধানীর সড়কে গণপরিবহনের সংখ্যা ছিল তুলনামূলক কম। তাই নিত্য ও জরুরি প্রয়োজনে বের হওয়া নগরবাসীকে হিমশিম খেতে হয়। তাঁদের দাবি, রাজনৈতিক দলগুলো যেন এমন বড় সমাবেশ ছুটির দিনে আয়োজন করে।

আজ জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে, ছাত্রদল শাহবাগে সমাবেশ করছে। এ ছাড়া সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সাইমুম শিল্পীগোষ্ঠীর অনুষ্ঠান চলমান। এদিকে সকালের দিকে ছিল বিসিএস ও এইচএসসির পূর্বনির্ধারিত পরীক্ষা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা থেকে মহাখালীতে রওনা হয়েছেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মজীবী জান্নাতুল ফেরদৌস। বেলা তিনটার দিকে বিজয় সরণি পৌঁছান। সেখানে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘বেলা দুইটায় মহাখালীর উদ্দেশে রওনা দিয়েছি। প্রথমত, কোনো গাড়িই পাইনি। তারপরও যা পেলাম, সেটা নিয়মিত চলাচলের পথ না ধরে এদিক-ওদিক করে ঘুরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। যেহেতু শাহবাগ বন্ধ, গাড়ি নীলক্ষেত দিয়ে ধানমন্ডি দিয়ে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ হয়ে বিজয় সরণি দিয়ে এখন মহাখালী যাচ্ছে। যে পথেই যাচ্ছে, ওখানেই জ্যাম। গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে তো আছেই। ২০-২৫ মিনিটের পথ এক ঘণ্টার বেশি হয়ে গেছে, এখনো আমি পথে। কখন গন্তব্যে পৌঁছাতে, পারব জানি না।’

শাহবাগে বড় দুটি হাসপাতাল। অথচ আজ গণপরিবহন না থাকায় সেসব হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের বেশ ভোগান্তি পোহাতে হয়.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: শ হব গ

এছাড়াও পড়ুন:

৯ ঘণ্টা ধরে শাহবাগ অবরোধ, জনভোগান্তি চরমে

জুলাই ঘোষণাপত্র ও জুলাই সনদ বাস্তবায়ন এবং দ্রুত স্থায়ী বিধানে যুক্ত করার দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ মোড় ৯ ঘণ্টা ধরে অবরোধ করে রেখেছেন ‘জুলাই যোদ্ধারা’। আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে জুলাই শহীদ পরিবার ও জুলাই যোদ্ধাদের (আহত) ব্যানারে তাঁরা এ ‘অবস্থান কর্মসূচি’ পালন করছেন।

রাজধানীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই মোড় দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এর প্রভাব পড়ে আশপাশের সড়কগুলোতে। এসব সড়কে দিনভর ব্যাপক যানজট তৈরি হয়। ফলে বৃষ্টির মধ্যে জীবনের তাগিদে ঘর থেকে বের হওয়া মানুষদের বেশ ভোগান্তি পোহাতে হয়। বাধ্য হয়ে বিকল্প পথে চলে গণপরিবহন, অনেক যাত্রীকে গন্তব্যে পৌঁছাতে দেখা গেছে হেঁটে হেঁটে। বিশেষ করে অফিসফেরত মানুষকে বেশি ভোগান্তিতে পড়তে হয়।

বেলা ১১টায় শাহবাগ মোড়ের সঙ্গে যুক্ত সব সড়কের মুখ আটকে দিয়ে সড়কের মাঝখানে অবস্থান নেন অবরোধকারীরা। এ সময় তাঁরা জুলাই সনদ দ্রুত বাস্তবায়নসহ বিভিন্ন দাবি জানান। অবরোধকারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জুলাই যোদ্ধা সংসদ নামে একটি প্ল্যাটফর্ম ওই কর্মসূচির উদ্যোগ নেয়। এ সময় অবরোধকারীরা ‘জুলাই নিয়ে টালবাহানা, চলবে না চলবে না’, ‘জুলাইয়ের চেতনা দিতে হবে ঘোষণা’, ‘জুলাই সনদ দিতে হবে, দিতে হবে, দিতে হবে’ স্লোগান দিতে থাকেন।

বন্ধ হয়ে পড়ে শাহবাগ থেকে ফার্মগেট, সায়েন্স ল্যাব ও গুলিস্তানগামী প্রধান সড়কগুলোও। ফলে সকাল থেকেই এসব এলাকায় যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। এসব সড়কে চলাচলকারী গণপরিবহনগুলো বিকল্প পথে চলাচল করে।

বেলা তিনটার দিকে দেখা যায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ–সংলগ্ন মূল সড়কে পুলিশের ব্যারিকেড ও বাঁশ ব্যবহার করে সড়ক আটকে রেখেছেন অবরোধকারীরা। শাহবাগ থানার সামনের সড়কেও প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেন তাঁরা।

বারডেম হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা ষাটোর্ধ্ব নূরে আলম বলেন, ‘কেরানীগঞ্জে যাব। কোনো বাস পাচ্ছি না। রিকশায় যে কিছু দূর যাব, তারাও ভাড়া বেশি চাচ্ছে।’ একপর্যায়ে হেঁটেই রওনা দেন তিনি।

এক পথচারী ইমরান হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘দুই দিন পরপর সড়ক অবরোধ হয়। এর ভোগান্তি পোহাতে হয় আমাদের মতো সাধারণ মানুষদের।’

বেলা সাড়ে তিনটার দিকে শাহবাগ থানার সামনে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডা হতে দেখা যায় মোটরবাইক আরোহীদের। শাহবাগ থানার সামনে সিএনজিচালিত একটি অটোরিকশাকে বাধা দিলে চালক বলেন, ‘এত দাবিদাওয়া এত দিন আছিলো কই।’ তবে গণপরিবহন আটকে দেওয়া হলেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর যানবাহন এবং তাদের ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচল করতে দেখা গেছে। এ ছাড়া রোগী বহনকারী অ্যাম্বুলেন্স শুরু থেকেই চলাচল করতে দেখা গেছে।

অবরোধকারীদের দাবি

অবরোধকারীদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে জুলাই শহীদ ও জুলাই যোদ্ধাদের স্বীকৃতি; শহীদ পরিবার ও আহতদের আজীবন সম্মান; চিকিৎসা, শিক্ষা ও কল্যাণের পূর্ণ নিশ্চয়তা প্রদান করা; শহীদ পরিবার ও আহতদের প্রতি দায়িত্ব গ্রহণ করা; আহতদের চিকিৎসা, পুনর্বাসন, কর্মসংস্থান ও কল্যাণমূলক ব্যয় রাষ্ট্রকে বহন করা; আহত ও শহীদ পরিবারের জন্য আজীবন সম্মানজনক ভাতা নিশ্চিত করা; শহীদ পরিবার ও আহতদের জন্য বিশেষ আইনি সুরক্ষা ও সহায়তাকেন্দ্র গঠন করা; শহীদ ও আহতদের ওপর সংগঠিত দমন-পীড়নের জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে বিচারকাজ সম্পন্ন করা এবং একটি স্বাধীন সত্য ও ন্যায় কমিশন গঠন করা।

শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খালিদ মনসুর বলেন, সকাল থেকেই শাহবাগে অবরোধের কারণে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। শাহবাগ থানা-পুলিশ আলোচনার মাধ্যমে অবরোধকারীদের সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন।

তবে জুলাই যোদ্ধা সংসদের মুখ্য সংগঠক মাসুদ রানা জানান, তাঁদের আন্দোলন চলছে। সনদ ঘোষণা না আসা পর্যন্ত তাঁরা এখানেই থাকবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অন্তর্বর্তী সরকারের ওয়াদা পূরণের উপায় কী
  • ছাত্র সমাবেশ ঘিরে জনদুর্ভোগের জন্য আগাম দুঃখ প্রকাশ ছাত্রদলের
  • শাহবাগ, শহীদ মিনার ও সোহরাওয়ার্দীতে রোববার সমাবেশ, যান চলাচলে ডিএমপির বিশেষ নির্দেশনা
  • ৯ ঘণ্টা ধরে শাহবাগ অবরোধ, জনভোগান্তি চরমে