জাপানে ম্যানহোলে পড়ে চার শ্রমিকের মৃত্যু
Published: 3rd, August 2025 GMT
জাপানের রাজধানী টোকিওর কাছে পয়ঃনিষ্কাশন পাইপ পরীক্ষা করার সময় একটি ম্যানহোলে পড়ে চার শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। রবিবার (৩ আগস্ট) স্থানীয় পুলিশের বরাত দিয়ে রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম এনএইচকে এ তথ্য জানিয়েছে। খবর আল-জাজিরার।
এনএইচকে জানিয়েছে, শনিবার (২ আগস্ট) টোকিওর উত্তরে অবস্থিত সাইতামা প্রদেশের গিয়োদা শহরে এই দুর্ঘটনাটি ঘটে। সেখানে একটি পয়ঃনিষ্কাশন পাইপ পরীক্ষা করার সময় একজন শ্রমিক ম্যানহোলে পড়ে যান। তাকে উদ্ধারের চেষ্টা করতে গিয়ে আরো তিন শ্রমিক প্রাণ হারান। এই শ্রমিকদের সকলেই বয়স পঞ্চাশের কাছাকাছি।
নগর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন যে, চলতি বছরের জানুয়ারিতে ক্ষতিগ্রস্ত পয়ঃনিষ্কাশন পাইপের কারণে বিশাল একটি রাস্তা ধসে পড়ার পর কেন্দ্রীয় সরকার পৌরসভাগুলোকে জরুরি পরিদর্শনের নির্দেশ দিয়েছিল। শনিবার শ্রমিকরা সেই কাজ করতে গিয়েই ম্যানহোলে পড়ে যান।
আরো পড়ুন:
আগস্টে পদত্যাগ করতে যাচ্ছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা
জাপান ও ফিলিপাইনের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তির ঘোষণা ট্রাম্পের
পরিদর্শনের সময় প্রায় ১০ জন শ্রমিক ঘটনাস্থলে ছিলেন, প্রয়োজনে পাইপ থেকে দূষিত পনি ও কাদা পরিষ্কার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
পুলিশের মতে, ম্যানহোলটি ৬০ সেমি (২৪ ইঞ্চি) ব্যাস এবং ১০ মিটার (৩৩ ফুট) এরও বেশি গভীর।
দমকল বিভাগ জানিয়েছে, উদ্ধারকর্মীরা ম্যানহোল থেকে বেরিয়ে আসা উচ্চ ঘনত্বের বিষাক্ত হাইড্রোজেন সালফাইড গ্যাস শনাক্ত করেছেন। তবে শহরের কর্মকর্তারা প্রাথমিকভাবে ম্যানহোলে পড়ার কারণ সম্পর্কে কিছু বলতে রাজি হননি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে গিয়োদা শহরের একজন কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, “দুর্ঘটনার কারণ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য এখনও অজানা, তাই এ সম্পর্কে কিছু বলা সম্ভব নয়।”
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, চার শ্রমিককে ম্যানহোল থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়া হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের মৃত বলে ঘোষণা করে।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
যেসব মালিক ব্যাংকঋণ নিয়ে পালিয়েছেন, সেসব কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে: শ্রম উপদেষ্টা
নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, ‘কিছু লোক শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন টাকা এদিক-সেদিক করার জন্য। তাঁরা ব্যাংকঋণ নিয়ে শ্রমিকদের টাকা না দিয়ে দেশ থেকে পালিয়ে গেছেন। এ কারণে কিছু কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। এর জন্য আমি দায়ী নই।’
আজ শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় রাজশাহীর তেরখাদিয়া এলাকায় জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্যনিরাপত্তা–বিষয়ক গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি। এর আগে তিনি শ্রম অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, কর্মচারী ও ট্রেড ইউনিয়ন নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় এবং শ্রমিকদের মধ্যে চেক বিতরণ করেন।
সাখাওয়াত বলেন, কারখানা বন্ধ থাকলে ৭–৮ আট শতাংশ রপ্তানি বাড়ল কীভাবে? ভালো মালিকেরা শ্রমিকদের দেখভাল করছেন এবং দেশে রয়ে গেছেন। শ্রমিক সংগঠন নিয়ে তিনি বলেন, ‘শ্রমিক ফেডারেশন বা শ্রমিক সংগঠন যেগুলো আছে, সেগুলোতে একজন ছিল, তাকে সরিয়ে এখন আরেকজন বসে গেছে। কিন্তু কোনো নির্বাচন হয়নি। শ্রমিক সংগঠনে একজন নির্বাচনে জিতলে সারা জীবন থাকতে চান, যা এর আগে আপনারা দেখেছেন। আশা করি, এই প্র্যাকটিসগুলো থাকবে না। নির্বাচনের মাধ্যমে ভালো প্রতিনিধি উঠে আসার প্র্যাকটিস চালু হবে। এটি স্টেট লেভেলে হলেই হবে না, প্রতিটি জায়গাতেই হতে হবে।’
শ্রমিকদের আন্দোলন প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, ‘দাবিদাওয়া থাকতেই পারে, কেউ চাইলে আন্দোলনে নামতে পারেন। আমিও চাইলে রাস্তায় নামতে পারি।’
একই দিনে একই ভবনে ‘কর্মস্থলে শ্রমিকদের পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা সুরক্ষা’ শীর্ষক গবেষণা সম্মেলনের আয়োজন করে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর। এতে কারিগরি সহায়তা দেয় আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও)।
সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা বলেন, ‘প্রত্যেক শ্রমিকের অধিকার রয়েছে শোভন কর্মপরিবেশে কাজ করার ও সুস্থভাবে ঘরে ফেরার। শ্রম খাত উন্নয়নে আমরা গবেষণাভিত্তিক নীতিনির্ধারণে কাজ করছি।’ চা-বাগানে শ্রমিকদের দুরবস্থা নিয়ে তিনি বলেন, অনেক বাগানে শৌচাগার নেই, বিশুদ্ধ পানিও নেই। এতে শ্রমিকেরা অসুস্থ হচ্ছেন। এসব অবকাঠামো নিশ্চিত করতে হবে।
পোশাকশিল্প প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রিগুলো ঢাকা শহরে। এমনিতেই ঢাকা শহরের অবস্থা খুব খারাপ। কেন এটা নর্থবেঙ্গলে হচ্ছে না। রাজশাহী, রংপুর, দিনাজপুর এখানে কেন ইন্ডাস্ট্রি করা যাচ্ছে না। সবাই ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ গিয়ে গার্মেন্টস করছে। কিছু হলেই রাস্তা বন্ধ। যারা এসব কারখানা করছেন, তাঁদের বিষয়টি চিন্তা করতে হবে।’
সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন কারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক ওমর মো. ইমরুল মহসিন। বক্তব্য দেন শ্রম মন্ত্রণালয়ের সচিব এ এইচ এম শফিকুজ্জামান, আইএলওর রন জনসন, শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রধান সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহম্মদ, সচিব জাহেদা পারভিন ও অধ্যাপক রেহানা খানম।