দাউদ হায়দার, বন্ধু আমার, ক্ষমা করে দিস
Published: 3rd, August 2025 GMT
দাউদ নেই। বার্লিনের এক হাসপাতালের শয্যায় না ঘুম, না জাগরণের এক দীর্ঘ ঘোর শেষে তার মৃত্যু হয়েছে। ৪০ বছরের বেশি দেশের বাইরে। খুব দেশে ফিরতে চেয়েছিল, স্বল্প সময়ের জন্য হলেও। তার আর দেশে ফেরা হলো না।
দাউদ আর আমি একই স্কুলের ছাত্র, থাকতামও একই পাড়ায়। সেই প্রায়-ফিকে বয়স থেকেই জানতাম দাউদ কবিতা লেখে। যা লেখে তার মাথামুণ্ডু কিছুই বুঝতাম না। আমরা জানতাম, ওর সব ভাই-ই কবি। ফলে ধরেই নিয়েছিলাম, বড় কোনো ভাইয়ের কবিতা টুকলিফাই করে ও বাহাদুরি দেখায়। একবার ‘সব পাখি ঘরে ফেরে সন্ধ্যায়, আমি তবু প্রতীক্ষায়’ বা এ–জাতীয় একটি কবিতা স্কুলে ঘরভর্তি ছাত্রদের পড়ে শুনিয়েছিল। তখন বুঝিনি, কিসের প্রতীক্ষা। এখনো বুঝি না। তবে এটুকু জানি, ঘরে ফেরার জন্য দাউদের যে ব্যাকুলতা, তাতে কোনো খাদ ছিল না।
খুব অল্প বয়স থেকেই দাউদ খবরের শিরোনাম হয়েছে। কলেজে পড়ার সময় ‘জন্মই আমার আজন্ম পাপ’ এই নামের একটি কবিতা লিখে রীতিমতো হইচই ফেলে দিয়েছিল। ইংরেজি অনুবাদে সে কবিতা দেশের বাইরে ছাপা হয়েছিল, কী যেন একটা পুরস্কারও পেয়েছিল। মনে আছে, গাঁটের টাকা খরচ করে আমরা কয়েকজন মিলে ঢাকায় মিলনায়তন ভাড়া করে ওর সংবর্ধনার ব্যবস্থা করেছিলাম।
দাউদ আমাদের কাছে ‘হিরো’ হয়ে উঠেছিল, তা কিন্তু কবিতা নয়, একটি গল্পের জন্য, সাপ্তাহিক চিত্রালীতে ছাপা হয়েছিল। আমাদের স্কুলের লাগোয়া এক দোতলা বাসার একটি মেয়েকে নিয়ে লেখা। পরদিন শুনি দাউদকে হন্যে হয়ে খুঁজছে মেয়েটির ডাকাবুকো এক ভাই। শুনেছি, মেয়েটির সেই ভাই বঙ্গবন্ধু হত্যার সঙ্গে জড়িত ছিল।অথচ যে লেখাটির জন্য ও আমাদের কাছে ‘হিরো’ হয়ে উঠেছিল, তা কিন্তু কবিতা নয়, একটি গল্প, সাপ্তাহিক চিত্রালীতে ছাপা হয়েছিল। গল্পের নামধাম মনে নেই, শুধু মনে আছে, বেশ রগরগে প্রেমের গল্প। আমাদের স্কুলের লাগোয়া এক দোতলা বাসার একটি মেয়েকে নিয়ে লেখা। যাবতীয় বিবরণ, মায় মেয়েটির নাম পর্যন্ত টায় টায় মিলে গিয়েছিল। মেয়েটির প্রতি দাউদের গোপন প্রণয়ের কথা আমরা জানতাম, মেয়েটি সম্ভবত জানত না। গল্পটি ছাপা হয়েছিল শুক্রবার। সেদিন কোনো অঘটন ঘটেনি। পরদিন শুনি দাউদকে হন্যে হয়ে খুঁজছে মেয়েটির ডাকাবুকো এক ভাই। ওর ঠ্যাং না ভাঙা পর্যন্ত রেহাই নেই। এরপর এক সপ্তাহ দাউদের পাত্তা নেই। সম্ভবত পাবনায় ওদের গ্রামের বাড়িতে পালিয়েছিল। পরে শুনেছি, মেয়েটির সেই ভাই বঙ্গবন্ধু হত্যার সঙ্গে জড়িত ছিল।
প্রেম করতে গিয়ে ঠ্যাং ভাঙার উপক্রম দাউদের সেই প্রথম নয়। স্কুলে পড়তে পড়তেই এক সহপাঠীর ছোট বোনের কাছে প্রণয় নিবেদন করে বসে ও। সহপাঠী হলে কী হবে, রীতিমতো ডাকসাইটে গুন্ডা সে ভাইটি। এখন আর মনে নেই, সেবার কয় সপ্তাহের জন্য পাবনায় পালিয়ে ছিল দাউদ। তবে পালিয়েছিল নির্ঘাত। শুনেছি উনিশ শ বাহাত্তরে জোড়া খুন করে ছেলেটি জার্মানিতে পালিয়ে যায়। দাউদও রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়ে জার্মানিতে, সে খবর তার জানা ছিল কি না, জানি না। তবে নতুন করে ঠ্যাং ভাঙার কোনো ঘটনার কথা শুনিনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্র থাকার সময়ই দাউদ দৈনিক সংবাদ–এর সাহিত্য সম্পাদকের দায়িত্ব পায়। সে পাতায়ই ‘কালো সূর্যের কালো বন্যা.
প্রায় এক যুগ পর, ১৯৮২ সালে কলকাতায় দাউদের সঙ্গে দেখা। সে শহরে দাউদ তখন রাজপুত্র। এক সপ্তাহ ওর সঙ্গে শহরের এমাথা থেকে ওমাথা চষে বেড়িয়েছি দুজন। তখন মনে হয়েছে, এই শহরে ওর অপরিচিত মানুষ একজনও নেই। ‘নন্দন’-এ গেছি নাটক দেখতে। টিকিট নেই। দাউদ ম্যানেজারের উদ্দেশে ছোট এক টুকরা চিরকুট পাঠাতে না পাঠাতেই তিনজন লোক এসে আমাদের একদম প্রথম সারিতে বসিয়ে দিল। সেক্রেটারিয়েটে গেছি। গেট পাসের কোনো বালাই নেই, দাউদ হনহন করে টেনে নিয়ে গেল সোজা পশ্চিম বাংলা সরকারের হোম সেক্রেটারির ঘরে। (পরে জেনেছি, তাঁর নাম রথীন সেনগুপ্ত)। অফিসভর্তি লোক। আমি ঢাকা থেকে ৫৫৫ সিগারেটের প্যাকেট নিয়ে এসেছিলাম, তার দুই প্যাকেট হাতে গুঁজে দিয়ে বলল, ‘আপনার জন্য ঢাকা থেকে এনেছে।’ ক্যালকাটা ক্লাবে খোলা মাঠে মল্লিকা সারাভাইয়ের নাচের অনুষ্ঠান হচ্ছে, ‘বাই ইনভাইটেশন অনলি’। দাউদ মল্লিকাকে কী লিখে পাঠাল কে জানে, ভিআইপির রো-তে জায়গা মিলে গেল। শুধু তা-ই নয়, বিরতিতে মল্লিকার সঙ্গে সাক্ষাতের নির্দেশ পর্যন্ত এসে হাজির। পরে নিউইয়র্কে এক অনুষ্ঠানে মল্লিকাকে আমি সে কথা মনে করে দিয়েছিলাম। মহিলা ভারি মজা পেয়েছিলেন।
সে সময় দাউদ অন্নদাশঙ্কর রায়ের বাসায়, প্রায় ছেলের মতো আদরযত্নে থাকত। দুই রাত সেখানে আমিও থাকার সুযোগ পেয়েছি। প্রতিদিন সকালে লীলা রায় নিজে হাতে প্রাতরাশ সাজিয়ে ডাক দিতেন, গল্প করতে করতে গভীর যত্নে খেতে দিতেন। পাশেই আরামকেদারায় বসে অন্নদাশঙ্কর একটা কিছু পড়তে পড়তে আমাদের দুই অপোগণ্ড বালকের আবোলতাবোল কথা শুনতেন, কখনোবা মুচকি হেসে আমাদের দিকে তাকাতেন। দাউদ আমাকে তাঁদের শান্তিনিকেতনের বাসায় নিয়ে গিয়েছিল। রাতে চাঁদ উঠেছিল, ছাদে উঠে যাওয়া মাধবীলতার সুবাস সারা বাড়িতে। সে কথা বলাতে অন্নদাশঙ্কর সস্নেহে দাউদের দিকে তাকালেন। পরে জেনেছি, গাছটির পেছনে দাউদের যত্ন ছিল।
ঢাকায় ফিরে দাউদের জন্য একটি সুতির পাঞ্জাবি একজনের হাতে পাঠিয়েছিলাম। আপ্লুত দাউদ চিঠি লিখে জানিয়েছিল, ‘তোমার পাঠানো পাঞ্জাবি গায়ে দিয়ে মনে হচ্ছে পুরো বাংলাদেশকে ধারণ করে আছি।’
আশির দশকের শেষ সময় থেকে দাউদ বার্লিনে। বাংলাদেশ থেকে যত দূরে ওকে যেতে হয়েছে, বাংলাদেশকে সে তত বেশি আঁকড়ে ধরেছে। দেশে না ফিরলেও ফেরার স্বপ্ন দেখা থামায়নি। চার দশকের বেশি সময় দেশের বাইরে, অথচ সে খাতায় যখন কবিতার শব্দ বসিয়েছে, ঘুরেফিরে জীবন্ত হয়ে উঠেছে ফেলে আসা স্বদেশ।আশির দশকের শেষ সময় থেকে দাউদ বার্লিনে। বাংলাদেশ থেকে যত দূরে ওকে যেতে হয়েছে, বাংলাদেশকে সে তত বেশি আঁকড়ে ধরেছে। দেশে না ফিরলেও ফেরার স্বপ্ন দেখা থামায়নি। চার দশকের বেশি সময় দেশের বাইরে, পূর্ব-পশ্চিমের হেন দেশ নেই, যা সে চষে বেড়ায়নি। কলকাতা বা বার্লিন, প্যারিস বা কোপেনহেগেন, কবিতার খাতা নিয়ে তন্নতন্ন করে ঘুরেছে। অথচ সে খাতায় যখন কবিতার শব্দ বসিয়েছে, ঘুরেফিরে জীবন্ত হয়ে উঠেছে ফেলে আসা স্বদেশ। যখনই গভীর, গোপন যন্ত্রণার কথা বলেছে, বলেছে স্বপ্ন ও ভালোবাসার কথা, তখন কেবলই শোনা গেছে ‘বাংলাদেশের’ নাম।
‘হে জীবন, তোমাকে সুখের মুখ দেখাব বলে
সেই কবে থেকে প্রতীক্ষমাণ—
এক যুগ কেটে গেল, কলকাতায়
এখনো আশায় বসে আছি
যদি কেউ ফেরায় সস্নেহে, পিতৃদেশে।’
সামরিক শাসক এরশাদের আমলে দাউদের পাসপোর্ট বাজেয়াপ্ত হয়, সে পাসপোর্ট আর সে ফেরত পায়নি। সামরিক সরকারের আমলে তার দেশে ফেরা হবে না, এ কথা দাউদ ধরেই নিয়েছিল। কিন্তু নব্বইয়ের গোড়ায় বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক সরকার ক্ষমতায় আসীন হওয়ার পর ও এই ভেবে আশায় বুক বেঁধেছিল, এবার বুঝি নিয়ম বদলাবে। নতুন প্রতিটি সরকারের কাছেই দেশে ফেরার আবেদন জানিয়েছে। নিজের দেশ, শুধু পর্যটকের মতো দিন কয়েকের জন্য সেখানে এসে ঘুরে যেতে চেয়েছে। কিন্তু বিএনপি বা আওয়ামী লীগ সরকার, কোনো তরফ থেকেই কোনো সাড়া মেলেনি। এক–এগারোর-এর পটপরিবর্তনের পর যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় আসে, তার কাছেও আবেদন করেছিল। পরিচিত আমলা, নামজাদা বুদ্ধিজীবীদের মাধ্যমে অনুরোধ-উপরোধ করা হয়েছিল, তদবিরেরও কোনো কমতি ছিল না। কোনো কাজ হয়নি। সবার যুক্তি, দাউদকে ফিরতে দিলে জামায়াত-শিবিরকে উসকে দেওয়া হবে।
আমি নিজে আওয়ামী আমলের এক পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে অনুরোধ করেছিলাম তাকে যেন দেশে ফেরার অনুমতি দেওয়া হয়। আমাকে সেই মন্ত্রী, সম্ভবত আন্তরিকভাবেই বললেন, ‘সময়-সুযোগ হলে কবি অবশ্যই ফিরবেন। কিন্তু এখন, দেশে যখন সরকারবিরোধী কোনো আন্দোলন নেই, তাঁকে ফিরিয়ে আনলে বিরোধীদের হাতে একটা অস্ত্র তুলে দেওয়া হবে। আপনিই বলেন, সেটা কি সুবিবেচকের মতো কাজ হবে?’
কী আশ্চর্য, বাংলাদেশি নাগরিক, নিজের দেশে ফিরবে। অথচ তাকে আসতে দেওয়া হবে না মৌলবাদীদের রাজনৈতিক পাঁয়তারার কারণে? অথচ প্রায় অর্ধশতক আগে, প্রায় কৈশোরে লেখা এক নির্বোধ কবিতার জন্য দেশে ফিরতে পারবে না কবি?
‘আমার মৃত্যুর পরে লিখে দিও/ জননী জন্মভূমি ছেড়ে অচেনা নগরে তার/ মৃত্যু হয়েছিল।/ মূলত সে কবি, তারও আকাঙ্ক্ষা ছিল/ স্বাধীনতা, গণতন্ত্র, সাম্য, ছিল স্বপ্ন/ বিজয়ী যোদ্ধার মতো।’দাউদ হায়দার২.
কবির একমাত্র আশ্রয় তার কবিতা। বুকের ভেতর জমাটবাঁধা বেদনার কথা দাউদ তাই কবিতাতেই প্রকাশ করেছে। ক্রমেই স্মৃতিতে ধুলো জমেছে, মনের ভেতর জমিয়ে রাখা ছবি মলিন হয়ে এসেছে, কিন্তু প্রতীক্ষার অবসান হয়নি। যে দেশ একদিন তার কাছে ছিল প্রতিদিনের সত্য, তা ক্রমেই হয়ে উঠেছে স্মৃতির সুতোকাটা ঘুড়ি। ফিকে হয়ে এসেছে গ্রামের মেঠোপথের মানচিত্র। মুনশিবাড়ির চুলখোলা যে মেয়েটিকে ভালো লেগেছিল, তার নাম আর মনে নেই। একসময় গ্রামের পাশে বইত যে নদী, এখন তা শুকিয়ে কাঠ। তবু বুকের মধ্যে, মনের মধ্যে দীর্ঘদিন আগে ফেলে আসা সে দেশকেই সে ধরে রেখেছে। কবিতায় যখনই কথা বলেছে, দাউদের চেতনায় একমাত্র সত্য হয়ে প্রকাশিত হয়েছে স্বদেশ।
‘আমার মৃত্যুর পরে লিখে দিও
জননী জন্মভূমি ছেড়ে অচেনা নগরে তার
মৃত্যু হয়েছিল।
মূলত সে কবি, তারও আকাঙ্ক্ষা ছিল
স্বাধীনতা, গণতন্ত্র, সাম্য, ছিল স্বপ্ন
বিজয়ী যোদ্ধার মতো।’
৩.
আমরা দুজনেই দেশের বাইরে, তা সত্ত্বেও অনেকবারই দেখা হয়েছে। প্যারিসে এক কনফারেন্সে গেছি, ট্রেনে চেপে বার্লিন থেকে দাউদ এসে হাজির। হেঁটে শহরের পূর্ব থেকে পশ্চিমে হন্যে হয়ে ছুটেছি দুজন। অফিসের কাজে বুদাপেস্টে গেছি, সেখানেও দাউদ এসে হাজির। নাটক দেখতে গিয়ে আমি মানিব্যাগ হারিয়ে ভয়ে কাতর। দাউদের ভরসা পেয়ে সেই থিয়েটারে ফিরে গেছি, মাঝরাতে দ্বাররক্ষীকে ডেকে তুলে যে সারিতে বসেছিলাম, তা তন্নতন্ন করে খুঁজেছি।
বার কয়েক নিউইয়র্কেও এসেছে দাউদ, আমার বাড়িতেই উঠেছে। একবার নিউইয়র্ক বাংলা বইমেলায় পৌরোহিত্য করেছে। সেবার লক্ষ করেছি, নিজের কবিতা পড়ার চেয়ে কবিতা নিয়ে কথা বলতেই ভালোবাসত। আর ভালোবাসত নিজ হাতে নানা পদের রান্না করতে। বাড়ির পেছন-আঙিনায় বসে আমার স্ত্রী রাণুর সঙ্গে শাক বেছে পরে নিজে রান্না করে খাইয়েছে। প্যারিসে, শিল্পী শাহাবুদ্দিনের বাসায় দেখেছি, সেখানেও সে আনা ভাবির সঙ্গে রান্নায় হাত লাগিয়েছে।
শেষবার, সম্ভবত ২০১৬ সালে, নিউইয়র্কে আমার জন্য একটি কাঠের রঙিন লক্ষ্মীপ্যাঁচা এনে দিয়েছিল। সেটি এখনো আমার বইয়ের তাকে।
দাউদের মৃত্যুর আগের এক বছর আমার সঙ্গে ওর কোনো বাক্যালাপ হয়নি, এমনকি ফোনেও নয়। সামান্য কারণে মনোমালিন্য হয়েছিল, হয়তো অভিমানও। কত দিন অপেক্ষায় থেকেছি, হয়তো ওর ফোন পাব। আমিও ফোন হাতে নিয়ে বসেছি, ডায়াল ঘোরানো হয়নি।
দাউদ, ভাই আমার, বন্ধু আমার। নির্বোধ আমাকে ক্ষমা করে দিস।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন উইয়র ক র দশক র র জন য আম দ র কর ছ ল হয় ছ ল কলক ত সরক র র একট
এছাড়াও পড়ুন:
বগুড়ায় পৃথক ঘটনায় নিহত ২
বগুড়ার শাজাহানপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ও মাটির দেয়াল ধসে ২ জন নিহত হয়েছেন। রবিবার (৩ আগস্ট) উপজেলার পৃথক এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- নন্দীগ্রাম পৌরসভার বৈলগ্রাম উত্তরপাড়ার মৃত তাছিম উদ্দিনের ছেলে বুলু মিয়া ও রাজশাহীর বুধপাড়া এলাকার মৃত বক্কর সিদ্দিকীর ছেলে কিবরিয়া।
নন্দীগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোজহারুল ইসলাম বলেন, ‘‘গ্রামের একটি মসজিদে মুয়াজ্জিন হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন বুলু মিয়া। রবিবার ফজরের আজান দেওয়ার জন্য বাড়ি থেকে মসজিদে যাচ্ছিলেন তিনি। পথিমধ্যে সড়কে ছিঁড়ে পড়ে থাকা বৈদ্যুতিক তারে পা দিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।’’
আরো পড়ুন:
শ্বাসরোধে ইবি শিক্ষার্থী সাজিদের মৃত্যু: ভিসেরা রিপোর্ট
বজ্রপাতে ১১টি মহিষের মৃত্যু, ভাসিয়ে দেওয়া হলো নদীতে
কৈগাড়ী পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) আল মাহমুদ বলেন, ‘‘অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতে মাটির বাড়ির দেয়াল নরম হয়ে যায়। রবিবার সকালে দেয়াল ধসে পড়ে ঘুমন্ত কিবরিয়ার ওপর। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা ঘটনাস্থলে এসে তাকে উদ্ধার করে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।’’
ঢাকা/এনাম/রাজীব