গাজীপুর মহানগরীর মীরের বাজার এলাকায় গ্যাসলাইনের ছিদ্র থেকে বিস্ফোরণে আড়াই মাসের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। দগ্ধ হয়ে শিশুটির মা–বাবাও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

আজ রোববার ভোর সাড়ে চারটার দিকে মীরের বাজার এলাকার সাজ্জাদ হোসেনের বাসায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। শিশুর নাম মো. রায়হান। দগ্ধ ব্যক্তিরা হলেন রায়হানের বাবা রিপন হোসেন (২৩) ও মা হাফিজা আক্তার (২০)।

স্থানীয় লোকজন বলেন, রিপন–হাফিজা দম্পতি গতকাল শনিবার ওই বাসায় উঠেন। আজ ভোর সাড়ে চারটার দিকে শিশুর দুধ বানাতে রান্নাঘরে গিয়ে চুলা জ্বালানোর চেষ্টা করছিলেন হাফিজা। তখনই বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণের পর বাড়ির অন্য ভাড়াটেরা তিনজনকে উদ্ধার করে ঢাকায় জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের জরুরি বিভাগে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক শিশু রায়হানকে মৃত ঘোষণা করেন। রিপন ও হাফিজাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, শিশুসহ তিনজনকে দগ্ধ অবস্থায় নিয়ে আসা হলে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করা হয়। শিশুটির বাবার শরীরের ৮০ শতাংশ ও মায়ের শরীরের ৭০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে।

রিপন হোসেন ও তাঁর স্ত্রী হাফিজা আক্তার গতকাল শনিবার গাজীপুর মহানগরীর মীরের বাজার এলাকার এই বাসায় উঠেছিলেন.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ তোলায় ছাত্রদল সভাপতিকে ‘মিথ্যাবাদী’ বললেন

‘উপাচার্য শিক্ষার্থীদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করে নিয়োগের নামে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন’ সম্প্রতি এক সমাবেশে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সভাপতি সুলতান আহমেদ রাহী এ কথা বলেন। একটি সংবাদমাধ্যমের প্রকাশিত এই বক্তব্যের ফটোকার্ড নিজের ফেসবুকে শেয়ারও করেন তিনি।

রাহীর এ বক্তব্যকে মিথ্যা, মনগড়া, অনাকাঙ্ক্ষিত ও অসম্মানজনক বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মোহা. ফরিদ উদ্দীন খান। এছাড়া উপাচার্য অধ্যাপক ড. সালেহ্ হাসান নকীব রাবি ছাত্রদল সভাপতিকে মিথ্যাবাদীও বলেছেন।

সুলতান আহমেদ রাহীর ফটোকার্ড শেয়ার করার ছবি স্ক্রিনশট দিয়ে নিজের ফেসবুকে শেয়ার করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ফরিদ উদ্দীন খান। সেখানে তিনি লিখেছেন, “রাবির একজন সাবেক ছাত্রের কাছ থেকে এ ধরনের মিথ্যা ও মনগড়া মন্তব্য অনাকাঙ্ক্ষিত এবং অসম্মানজনক! সাবেক এই শিক্ষার্থীর নিকট বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের উচিত এ মন্তব্যের সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা চাওয়া।”

আরো পড়ুন:

চাকসুতে এমফিল-পিএইচডি শিক্ষার্থীদের প্রার্থিতার সুযোগ নিয়ে সমালোচনা

‘বিচার প্রক্রিয়া ও সংস্কারের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে হবে’

একইসঙ্গে শাখা ছাত্রদলের সভাপতির বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. ইফতিখারুল আলম মাসউদ। তিনিও রাহীর ফটোকার্ড শেয়ার করার ছবি স্ক্রিনশট দিয়ে ফেসবুকে শেয়ার করে লিখেছেন, “একজন প্রাক্তন ছাত্রের কাছে তার প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সেই প্রতিষ্ঠান প্রধানের বিরুদ্ধে এ ধরনের মিথ্যাচার অত্যন্ত গর্হিত কাজ। ভিসি মহোদয়ের শত্রুরাও এ অভিযোগ বিশ্বাস করবে না! এ ধরনের অভিযোগের প্রমাণ দিতে হবে অভিযোগকারীকে। অন্যথা এ মানহানিকর বক্তব্যের দায় নিতে হবে।”

এ বক্তব্যের প্রতিবাদে রাবির ছাত্র উপদেষ্টা ড. আমিরুল ইসলাম কনক তার ফেসবুকে লিখেছেন, “ব্যক্তিগত কোনো পছন্দ অপছন্দের বিষয় নয়, কোনো ব্যক্তির প্রতি অনুরাগ বা বিরাগও নয়। যে ব্যক্তি বা সংগঠনেরই হউক, কোনো অছাত্র ক্যাম্পাসের ছাত্র রাজনীতিতে থাকা সমীচীন নয়। মিথ্যাচার, মানহানিকর বক্তব্য দিয়ে কেউ আইন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করলে মূল সংগঠনসহ সংশ্লিষ্ট শাখা সংগঠনকে তার দায় নিতে হবে।”

নিয়োগ বাণিজ্যে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগের কোনো প্রমাণ আছে কি না জানতে চাইলে সুলতান আহমেদ রাহী বলেন, “আমি তো আর আদালত না। সাংবাদিকদের সংবাদের উপর ভিত্তি করে আমি বক্তব্য দেই। সাংবাদিকদের সুবাদে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ আমাদের কাছে এসেছে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে আমি এই বক্তব্যটা দিয়েছি। আজ দেখলাম স্যারেরা ফেসবুকে আমার বক্তব্যের ব্যাখ্যা চেয়েছেন। আমিও চাই প্রশাসন আমার কাছে ব্যাখ্যা আহ্বান করুক। এর ব্যাখ্যা দিতে আমি প্রস্তুত আছি।”

নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ তুলে ছাত্রদলের এ নেতা আরো বলেন, “আমরা জাসদ ছাত্রলীগের নেতাকে নিয়োগ দেওয়ার নিউজ দেখেছি। আওয়ামী লীগের সভাপতির জামাইকে নিয়োগের বিষয়টা দেখেছি। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সদস্যের স্ত্রীর নিয়োগের বিষয়টা দেখেছি। বিভিন্ন টেন্ডার বাণিজ্যের অনিয়ম হয়েছে, ইন্টার পাশে নবম গ্রেডের চাকরি দেওয়ার বিষয়ে দেখেছি। এমন ভুরি ভুরি অভিযোগ আমাদের কাছে আছে।”

ছাত্রদল নেতার এমন মন্তব্যের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সালেহ্ হাসান নকীব বলেন, “এটা সম্পূর্ণ মিথ্যাচার। তিনি সম্পূর্ণ মিথ্যাবাদী ও অপবাদকারী। কোটি কোটি টাকা তো দূরের কথা, একটি পয়সাও আমার বা আমাদের তরফ থেকে দুর্নীতি হয়নি।”

ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ তোলায় ছাত্রদল সভাপতিকে ‘মিথ্যাবাদী’ বললেন
  • কর্মক্ষেত্রে বুলিং: শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব