ইবিতে সাজিদ হত্যার বিচার দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
Published: 3rd, August 2025 GMT
শিক্ষার্থী সাজিদ আব্দুল্লাহর হত্যার বিচার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে উত্তাল হয়ে উঠেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি)।
রবিবার (৩ আগস্ট) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ক্যাম্পাসের জিয়া মোড় থেকে মিছিল শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে প্রধান ফটকে এসে সমাবেশে মিলিত হয়।
এসময় সাজিদ হত্যায় জড়িতদের বিচার নিশ্চিত করা না হলে এবং নিরাপদ ক্যাম্পাসের ১৫ দাবি বাস্তবায়নের সুষ্ঠু জবাব প্রশাসন না দিতে পারলে প্রশাসনিক ভবন অবরোধসহ ক্যাম্পাস শাট ডাউনের হুঁশিয়ারি দেন তারা।
মিছিলে শিক্ষার্থীরা ‘বিচার বিচার চাই, সাজিদ হত্যার বিচার চাই’, ‘দড়ি লাগলে দড়ি নে, খুনিদের ফাঁসি দে’, ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাইরে’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
সমাবেশে শিক্ষার্থী জেরিন তাসনিম পুষ্প বলেন, “আমরা জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানে একটি পঙ্গু প্রশাসনকে দেখেছি, যারা ছাত্রদের উপর হামলা, নিপীড়ন-নির্যাতনের বিপক্ষে চুপ ছিল। তারা কোনো শব্দ করেনি, তারা কোনো প্রতিবাদ জানায়নি। এবারো যদি এই প্রশাসন কোনো শব্দ না করে, কোনো প্রতিবাদ না জানায়, নিজেদের অপারগতা স্বীকার না করে, এই হত্যাকাণ্ডের বিচার করতে তারা যদি ব্যর্থ হয়, তাহলে তারা নিজেদের পঙ্গু হিসেবে প্রমাণ করবে।”
শাখা ছাত্রশিবিরের ছাত্র অধিকার-বিষয়ক সম্পাদক জাকারিয়া বলেন, “সাজিদ আমাদের ভাই। সে সিনায় ৩০ পারা কোরআন ধরে রেখেছিল। সাজিদ তার বাবার ও বংশের একমাত্র সন্তান ছিল। তাকে যারা হত্যা করেছে, তার মায়ের বুক যারা খালি করেছে, তাদের অতি দ্রুত বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটির মাধ্যমে তদন্ত করে, খুনিদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। আল-কোরআন বিভাগের নেতৃত্বে সাজিদ হত্যার বিচার এবং সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত না করা পর্যন্ত আমরা মাঠ ছাড়বো না।”
শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য নুর উদ্দিন বলেন, “খুন হয়েছে আমার ভাই, ঘরে থাকার সময় নেই। সাজিদের হত্যার বিচার বিভাগীয় তদন্তের কথা আমরা বহুবার বলে আসছি। যদি পিবিআই কিংবা বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে এই হত্যাকারীদের না ধরা হয়, তাহলে অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে এই ক্যাম্পাসকে শাটডাউন করে দেওয়া হবে। ক্যাম্পাসে কোনো প্রকার ক্লাস-পরীক্ষা চলবে না।”
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, “যদি আপনারা আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সাজিদ হত্যাকারী কাউকে গ্রেপ্তার না করতে পারেন, তাহলে এই বিশ্ববিদ্যালয়কে শাটডাউন করে দেওয়া হবে। আমরা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার প্রত্যেকটা নেতাকর্মী আল-কুরআন ডিপার্টমেন্টের ঘোষিত সব প্রোগ্রামের সঙ্গে শুরু থেকেই একাত্মতা পোষণ করে রাজপথে আছি, ভবিষ্যতে থাকব।”
ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের ইবি শাখার সভাপতি ইসমাইল হোসেন রাহাত বলেন, “আজ আমরা, সাজিদের পরিবার ও ১৮ হাজার শিক্ষার্থী ভালো নেই। সাজিদ হত্যার ১৫ দিন হয়ে গেলেও ১৭৫ একরের ভিতরে কিভাবে হত্যা করা হলো, তা প্রশাসন বের করতে পারেনি। আজ সাজিদের লাশ, কাল আমাদের লাশ পাওয়া যাবে না- এর কোনো নিশ্চয়তা আছে?”
তিনি বলেন, “সাজিদের হত্যা আমাদের প্রত্যেকের নিরাপত্তার সঙ্গে সম্পর্কিত। সাজিদ হত্যার বিচার দাবিতে আমরা দলমত, বর্ণ নির্বিশেষে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আন্দোলন করে যাবো। এই প্রশাসন বিচার না করতে না পারলে আমরা জুলাই আন্দোলনে যেভাবে ফ্যাসিস্টকে বিদায় করেছি, তেমনিভাবে এ প্রশাসনকে বিতাড়িত করা হবে।”
রবিবার (৩ আগস্ট) সাজিদের মৃত্যুর ভিসেরা রিপোর্ট অনুযায়ী তাকে শ্বাসরোধে মৃত্যু হয়েছে। রিপোর্টে স্বাক্ষর করেছেন সিআইডি মহাখালীর রাসায়নিক পরীক্ষাগারের প্রধান নজরুল ইসলাম ও খুলনা বিভাগীয় পরীক্ষক জনি কুমার ঘোষ।
এদিকে, রাত পৌনে ৮ টার দিকে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ নিয়ে উচ্চতর তদন্তের সুপারিশ করেছে ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটি।
ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড.
তিনি বলেন, “আমরা সব তথ্য ক্রস-চেক করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন ইবি প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করেছি। পাশাপাশি সরকারের উচ্চপদস্থ তদন্ত সংস্থাগুলো দিয়ে এই ঘটনার তদন্তের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে।”
গত ১৭ জুলাই বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুকুর থেকে সাজিদের ভাসমান মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনে পরদিন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও হল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে পৃথক দুই কমিটি করা হয়।
সাজিদ আল-কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০২১-২২ বর্ষের শিক্ষার্থী। এদিকে সাজিদের মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্তের দাবিতে বিক্ষোভ করে আসছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
ঢাকা/তানিম/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স জ দ হত য র ব চ র তদন ত র আম দ র ইসল ম ক রআন
এছাড়াও পড়ুন:
শেফালি আর দীপ্তিতে নতুন মুম্বাইয়ে নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ভারত
নাবি মুম্বাই। নয়া মুম্বাই। নতুন সেই মুম্বাইয়ে কাল নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন পেল মেয়েদের ওয়ানডে বিশ্বকাপ। ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ভারত।
দীপ্তি শর্মার করা ৪৬তম ওভারের তৃতীয় বলে নাদিন ডি ক্লার্কের তোলা ক্যাচটি এক্সট্রা কাভারে ভারত অধিনায়ক হারমানপ্রীত কৌরের হাতে জমা হতেই বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের আনন্দে মাতল পুরো ভারত। দক্ষিণ আফ্রিকা ২৪৬ রানে অলআউট, ভারত ৫২ রানে জয়ী।
ভারতের জয়ের উৎসব অবশ্য শুরু হয়ে গিয়েছিল পাঁচ ওভার আগেই। লরা ভলভার্টকে ফিরিয়ে পথের কাঁটা উপড়ে ফেলেই উদ্যাপন শুরু করেছিল ভারতীয়রা। অসাধারণ এক সেঞ্চুরি করে দক্ষিণ আফ্রিকান অধিনায়ক চোখ রাঙাছিলেন ভারতের উৎসব ভন্ডুল করার। কিন্তু সেঞ্চুরি করার পরপরই ক্যাচ তুললেন ভলভার্ট। আর সেই ক্যাচ নিতে গিয়ে আমানজোত কৌর ভারতের প্রায় শত কোটি মানুষের হৃৎস্পন্দন প্রায় থামিয়ে দিয়েছিলেন। একবার নয়, দুবার নয়, তৃতীয়বারের চেষ্টাতেই ক্যাচ নিতে পারেন আমানজোত। এবারও বোলার সেই অফ স্পিনার দীপ্তি শর্মা।
৯৮ বলে ১০১ রান করে ভলভার্ট যখন ফিরলেন দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোর ৪১.১ ওভারে ২২০/৭। এরপর শুধু আনুষ্ঠানিকতাই ছেড়েছে ভারত। দীপ্তি আরও ২টি উইকেট নিয়ে পেয়ে গেছেন ৫ উইকেট। আর ভারত হয়ে গেছে চ্যাম্পিয়ন। এর আগে ব্যাট হাতেও ৫৮ বলে ৫৮ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেছেন দীপ্তি।
ব্যাট হাতে ৮৭ রান করা শেফালি বর্মা বল হাতে নিয়েছেন ২ উইকেট