গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান বলেছেন, প্রতিটি ভবন নিরাপদ, পরিবেশবান্ধব এবং দুর্যোগসহনশীল হতে হবে। এজন্য রাজউককে যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে। ভবনের নির্মাণ পর্যায়ে তদারকি ও মান যাচাইয়ের জন্য দক্ষ ও আধুনিক পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। এর অভাবে অগ্নিকাণ্ড ও বিপর্যয় ঘটে। এজন্য ভবনের মালিক, প্রকৌশলী, স্থপতি ও ঠিকাদার সবার সচেতন হতে হবে।

মঙ্গলবার (৬ মে) ঢাকায় হোটেল সোনারগাঁওয়ে রাজউক ও জাইকার যৌথ আয়োজনে ‘ভবন সংক্রান্ত দুর্যোগের (ভূমিকম্প ও অগ্নি) ঝুঁকি প্রশমনে জনসচেতনতা বৃদ্ধি’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।

উপদেষ্টা বলেন, রাজউক ও জাইকা আয়োজিত আজকের সেমিনারে জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মাধ্যমে শক্তিশালী কর্মপন্থা নির্ধারণ করা যাবে, যা ভবিষ্যতে আমাদের কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নে দিকনির্দেশক হিসেবে কাজ করবে। 

তিনি বলেন, স্টেকহোল্ডররা আইন না মানলে কঠিন আইন করেও নিরাপদ নগর নিশ্চিত করা সম্ভব হবে না। আমাদের সমাজে আইন না মানার সংস্কৃতি রয়েছে। প্রভাবশালীদের মাঝে এ প্রবণতার হার বেশি। এর ফলে অনেক ক্ষেত্রেই রাজউকের কর্মকর্তারা অসহায়। অগ্নিকাণ্ড ও দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে রাজউকসহ সংশ্লিষ্টদের দায় এড়ানোর সুযোগ নেই।

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো.

রিয়াজুল ইসলামের সভাপতিত্বে সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নজরুল ইসলাম।

রাজউকের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মো. রিয়াজুল ইসলাম বলেছেন, নকশাবহির্ভূত ভবনে রাজউকের অভিযান চলছে। এসব অভিযানকে সাধারণ জনগণ স্বাগত জানাচ্ছে ও তাদের সহযোগিতা পাওয়া যাচ্ছে। 

জাইকার প্রতিনিধি কবুতা সেমিনারে ‘ইম্প্রুভমেন্ট অব ডিজাইন অ্যান্ড কন্সট্রাকশন কোয়ালিটি ফর রেজিলেন্স অব প্রাইভেট বিল্ডিং (ডিসিকিউআর)’ প্রকল্পের রূপরেখা উপস্থাপন করেন। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. রাকিব আহসান। স্বাগত বক্তব্য দেন রাজউকের সদস্য (উন্নয়ন)  মোহা. হারুন অর-রশিদ।

দিনব্যাপী এ সেমিনারে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, রাজউক, সিটি কর্পোরেশন, ফায়ার সার্ভিস ও রিহ্যাবের কর্মকর্তা এবং স্থপতি, প্রকৌশলী, নগর পরিকল্পনাবিদসহ বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/রফিক

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র জউক র

এছাড়াও পড়ুন:

‘তুমি কি মুসলিম’ বলেই নিউইয়র্কের সাবওয়েতে নারীর ওপর হামলা

নিউইয়র্ক নগরের সাবওয়েতে ৫৫ বছর বয়সী নারী হামলার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন। ওই নারী বলেন, ‘তুমি কি মুসলিম’ প্রশ্ন করার পরই তাঁকে মারধর করেছেন হামলাকারী।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ডব্লিউএবিসির এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। সংবাদমাধ্যমটি ওই নারীর সঙ্গে সরাসরি কথা বলেছে।

গত বুধবার ভোরে নিউইয়র্ক নগরের কুইন্স এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ওই নারী যখন সাবওয়েতে ট্রেনে উঠছিলেন, তখন ৩৪ বছর বয়সী নাভেদ দুরানি নামের ওই হামলাকারী তাঁর খুব কাছাকাছি চলে আসেন।

ওই নারী বলেন, ‘তিনি (হামলাকারী) আমাকে বললেন, তুমি কোথা থেকে এসেছ? তুমি কি মুসলিম?’

হামলার শিকার নারী বলেন, ‘আমি বললাম, হ্যাঁ। তখনই ওই ব্যক্তি আমাকে লাথি–ঘুষি মারতে শুরু করেন, সবদিক থেকে আঘাত করেন।’

ডব্লিউএবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রেনের দরজা বন্ধ হওয়ার পরপরই হামলা শুরু হয়। পরবর্তী স্টেশনে যাওয়া পর্যন্ত হামলা চলে। পরের স্টেশনে ট্রেন থামার পর নাভেদ দুরানি পালিয়ে যান।

ওই নারী বলেন, ‘আমি শুধু বলছিলাম, থামুন থামুন। কিন্তু হামলাকারী থামেননি। আমি বুঝতেই পারিনি, কী হচ্ছে।’

নিউইয়র্ক নগর পুলিশ বিভাগের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, নাভেদ দুরানি মুখ ঢেকে রেখেছিলেন। তিনি ওই নারীর মুখ, মাথা ও ঘাড়ে ঘুষি ও লাথি মেরেছেন।

ডব্লিউএবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পুলিশ জানিয়েছে, দুরানি ওই নারীকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, তিনি মুসলিম কি না। পরে তাঁকে মারধর করে পালিয়ে যান। দুজন নারী যাত্রী ও সাবওয়ে কন্ডাক্টরের সহায়তায় পুলিশ দুরানিকে শনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছে।

নিউইয়র্ক নগর পুলিশ বিভাগ ইনডিপেনডেন্টকে জানিয়েছে, ঘৃণা ছড়ানোর অপরাধ ও আক্রমণের অভিযোগে দুরানিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

ডব্লিউএবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, আক্রান্ত নারী মাথায় চোট পেয়েছেন। হামলায় তাঁর নাক ভেঙে গেছে এবং তিনি সারা শরীরে আঘাত পেয়েছেন।

ওই নারী বলেন, ‘এই মর্মান্তিক অভিজ্ঞতা আমাকে তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে। আগে কখনো এমন কিছু ঘটেনি। আমি কীভাবে তাঁর (হামলাকারীর) মুখ ভুলতে পারি?’

ওই নারীর চিকিৎসা, মানসিক সহায়তা, বাসাভাড়া ও খাবার কেনার মতো জরুরি খরচ মেটাতে ‘গো ফান্ড মি’ নামে একটি ফেসবুক পেজ তৈরি করা হয়েছে। উদ্যোক্তা নিজেকে ওই নারীর সন্তান উল্লেখ করে পেজে লিখেছেন, ‘তিনি (ওই নারী) শুধু নিজের ও তাঁর পরিবারের দুজন সদস্যের ভরণপোষণের চেষ্টা করছিলেন। একজন ব্যক্তি তাঁর কাছে এসে জিজ্ঞাসা করলেন, তিনি মুসলিম কি না। তিনি শান্তভাবে ‘‘হ্যাঁ’’ বলার পরপরই লোকটি আচমকা তাঁকে হিংস্রভাবে আঘাত করেন।’

ওই নারী ‘শারীরিক ও মানসিক যন্ত্রণা ভোগ করছেন’ বলে জানিয়েছেন তহবিল সংগ্রহকারী। তিনি বলেন, সন্দেহভাজন হামলাকারীকে আটক করা হলেও ‘শুধু ন্যায়বিচার পেলেই মানসিক আঘাত দূর হয় না, চিকিৎসার খরচও কমানো সম্ভব নয়।’

তহবিল সংগ্রাহক আরও বলেন, ‘জরুরি চিকিৎসা, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দেখানো, ওষুধ এবং পরীক্ষা–নিরীক্ষার খরচ অনেক বেশি। তার চেয়েও খারাপ কথা হলো, মাথায় আঘাতের লক্ষণ এখনো যাচ্ছে না। এর ফলে তিনি কাজে ফিরতে পারছেন না। এ জন্য নিজের ও পরিবারের সদস্যদের খরচ জোগাড় করতে পারছেন না। বাসাভাড়া, বিদ্যুৎ ও ন্যূনতম জীবনযাত্রার খরচ মেটাতেও হিমশিম খাচ্ছেন।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ