রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মো. রিয়াজুল ইসলাম বলেছেন, “রাজধানীর মতিঝিলে রাজউক এবং গণপূর্ত অধিদপ্তরের মালিকানাধীন জায়গায় জলাধার, শিশুদের খেলার মাঠসহ পার্ক নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।”

বুধবার (৭ মে) মতিঝিলে জায়গাটি পরিদর্শনে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

ইঞ্জিনিয়ার মো. রিয়াজুল ইসলাম বলেন, মতিঝিল এলাকায় প্রস্তাবিত পার্কটি গড়ে তুলতে পারলে তা সমগ্র ঢাকাবাসীর জন্য একটি স্বস্তির জায়গা হয়ে উঠবে। সৌন্দর্য বর্ধনের পাশাপাশি তা পরিবেশ দূষণ কমাতে এবং দর্শনার্থীসহ নিয়মিত ভ্রমণকারীদের জন্যও একটি প্রিয় গন্তব্য হয়ে উঠবে।”

তিনি বলেন, “রাজউকের অধিগ্রহণকৃত জায়গা দখল করে নির্মিত বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনা পরিদর্শন করে তা অপসারণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়েছে।”

প্রায় ১১ একর জায়গা নিয়ে রাজউক এবং গণপূর্ত অধিদপ্তরের মালিকানাধীন মতিঝিল এলাকায় জলাধার, পার্ক ও শিশুদের খেলার মাঠসহ বিভিন্ন সেবামূলক স্থাপনা নির্মাণের লক্ষ্যে রাজধানীর মতিঝিল এলাকায় জমি অধিগ্রহণ করে রাজউক। বর্তমানে প্রকল্প এলাকার অধিকাংশ জায়গা দখল করে গড়ে উঠেছে অবৈধ স্থাপনা, যার মধ্যে রয়েছে কিছু সরকারি ভবন। 

পার্ক নির্মাণের জন্য জায়গা দখলমুক্ত করার উদ্যোগ থেকেই আজ স্থাপনাগুলো পরিদর্শন করেন রাজউক চেয়ারম্যান। এসব জায়গার বড় অংশ দখল করে গড়ে উঠেছে বেশ কিছু গাড়ির গ্যারেজ, যা একইসঙ্গে পরিবেশ দূষণেরও কারণ হিসেবে প্রকট হয়ে উঠেছে।

রাজউক চেয়ারম্যান সেখান থেকে মতিঝিল রাজস্ব সার্কেলের সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কার্যালয় পরিদর্শন করেন, যা রাজউকের অধিগ্রহণকৃত জায়গার ওপর কোনো প্রকার ভবন নির্মাণের অনুমতি না নিয়েই নির্মিত হয়েছে। এ কার্যালয় অন্যত্র প্রতিস্থাপিত করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা প্রদান করেন রাজউক চেয়ারম্যান। 

এসময় উপস্থিত ছিলেন- রাজউকের সদস্য (উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ) মোহা.

হারুন-অর-রশীদ, প্রধান নগর স্থপতি মোশতাক আহমেদ, প্রধান প্রকৌশলী মো. নুরুল ইসলাম প্রমুখ।

ঢাকা/এএএম/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র জউক চ য মত ঝ ল র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

নারী অভিযাত্রীর খোঁজে ‘ ট্র্যাক উইথ নিশাত’

এভারেস্টজয়ী নিশাত মজুমদার অনেক দিন ধরে চিন্তা করছিলেন, পর্বত আরোহণে নারীকে কীভাবে উদ্বুদ্ধ করা যায়। অভিযাত্রী গ্রুপের সদস্যদের সঙ্গে আলাপও করেছেন এই বিষয়ে। আলাপ-আলোচনার পর সিদ্ধান্ত হয়– মেয়েদের নিয়ে যত দ্রুত সম্ভব কাজটি শুরু করতে হবে। বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হবে। সদস্যরা সবাই ঠিক করলেন এই আয়োজনের নাম হবে ‘ট্র্যাক উইথ নিশাত’।
২০২২ সালে শুরু হয় প্রতিযোগিতা। ট্র্যাক উইথ নিশাতে অংশগ্রহণকারী মেয়েদের বয়স ২৫ বছরের মধ্যে হতে হবে। মৌখিক ও ফিটনেস পরীক্ষার মাধ্যমে এখান থেকে ১০ জনকে বাছাই করা হয়। এই ১০ জন ১৫ কেজি ওজনের ব্যাগ কাঁধে বহন করে সিলেট অঞ্চলের কালাপাহাড়ে সারাদিন হাঁটতে হবে। ফিরে এসে লিখিত পরীক্ষা হবে। এর পর শেষে ভোটের একটি ব্যবস্থা থাকবে; যেখানে ভলান্টিয়াররা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী শেষ পর্যন্ত যে ক’জন টিকে থাকবেন, তাদের মধ্যে একজনকে নির্বাচিত করবে।
আমাকে দায়িত্ব দেওয়া হয় ফিটনেস পরীক্ষা কীভাবে নিতে হবে। আমিও এর মধ্যে ফিটনেস পরীক্ষার একটি পরিকল্পনা তৈরি করে ফেললাম। নিশাত মজুমদার তাদের অভিযাত্রী দলের সঙ্গে এসব বিষয়ে কথা বলে দিন-তারিখ ঠিক করে ফেলেন। অভিযাত্রী সদস্যরা সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত এই আয়োজনের জন্য। 
তারিখ ঘোষণা করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। আমাদের একটা চিন্তার বিষয় ছিল। এ রকম একটি ঝুঁকিপূর্ণ প্রতিযোগিতায় শেষ পর্যন্ত কাঙ্ক্ষিত সংখ্যক নারী রেজিস্ট্রেশন করবেন কিনা। আশ্চর্যের ব্যাপার হলো– শেষ তারিখ পর্যন্ত ঢাকা এবং এর বাইরে থেকে রেজিস্ট্রেশনকারীর সংখ্যা আমাদের ধারণার থেকেও বেশি। এ রকম উৎসাহ দেখে কিছুটা অবাক হয়েছি। বিষয়টি ভালো লাগল যে, আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। মৌখিক পরীক্ষায় এমনও নারী পেয়েছি– যিনি কখনও খেলাধুলা করেননি। এর পরও আমরা তাদের বাদ দিইনি। আমরা চেয়েছি তিনি ফিটনেস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে জানুন, তাঁর শরীরের কী অবস্থা? 
এর মাধ্যমে পরে অনেক মেয়ের আগ্রহ আরও বেড়েছে। তারা কল দিয়ে জানতে চাইতেন ফিটনেস ভালো করার জন্য আর কী কী করতে পারি? আমি মনে করি, এই জায়গাতেও ট্র্যাক উইথ নিশাতের বড় সফলতা। 
ফিটনেস পরীক্ষায় এমনও দেখা গেছে, বমি করেও কেউ থেমে থাকেননি। কী অসম্ভব আগ্রহশক্তি! আমাদের এই আয়োজনে সার্বক্ষণিক একজন চিকিৎসক আছেন।
ট্র্যাক উইথ নিশাতের ২০২২ সালের প্রথম প্রতিযোগিতায় সব বিষয়ে সফলভাবে শেষ করে নির্বাচিত হন ঢাকা মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী প্রজ্ঞা পারমিতা রায়। নিশাত মজুমদার প্রজ্ঞাকে নেপালের ৮ হাজার মিটারের পর্বত মানাসলুর বেসক্যাম্পে নিয়ে যান এবং তিনি বেসক্যাম্প সফলভাবে শেষ করে ফিরে আসেন। ২০২৩ সালে দ্বিতীয় বছর প্রতিযোগিতায় নির্বাচিত নারীর নাম তাহুরা সুলতানা রেখা। নিশাত মজুমদারের সঙ্গে আমাদাবলাম বেসক্যাম্প সফলভাবে অভিযান শেষ করে ফিরে আসেন তিনি। ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাসে নিশাতের সঙ্গে শীতকালীন অভিযানে যে পাঁচজন নারী অংশগ্রহণ করেন, তার মধ্যে রেখা একজন। এখন রেখা অভিযানের জন্য নেপালেই সময় কাটাচ্ছেন। ২০২৪ সালে তৃতীয় আয়োজনে নির্বাচিত হন উম্মুল আখিয়ার। আশ্চর্যের ব্যাপার হলো, তিন বিজয়ীর বাড়িই চট্টগ্রামে।
এ বছর শুরু হয়েছে ট্র্যাক উইথ নিশাতের চতুর্থ আয়োজন। নারীদের এখন পর্বত অভিযানের ইচ্ছা আগে থেকে অনেক বেড়েছে। ট্র্যাক উইথ নিশাত মূলত এক বছরের মেন্টরশিপ প্রোগ্রাম। নিশাত মজুমদারের কাছ থেকে এক বছর মেন্টরিং পাবে। তারপর বছর শেষে এই মেন্টরশিপ প্রোগ্রামের শেষ ধাপ হলো হিমালয়ে নিশাত মজুমদারের কাছ থেকে ট্র্যাকিংয়ে হাতেখড়ির সুযোগ। নিশাত মজুমদার প্রতি বছর এই প্রতিযোগিতা আয়োজনের মাধ্যমে নারীদের হিমালয়ের বিভিন্ন অভিযানে নিয়ে যাচ্ছেন। প্রতি বছর এপ্রিল-মে মাসে আবেদন আহ্বান করা হয়ে থাকে। এবারের রেজিস্ট্রেশন শেষ। জুন মাসের শেষ নাগাদ বাছাই পর্ব শুরু হবে বলে জানানো হয়েছে। সম্ভাব্য তারিখ কিছুদিনের মধ্যে জানানো হবে। v
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অনুর্ধ্ব-১৬ ব্যাডমিন্টন ও ভলিবল প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত
  • নারী অভিযাত্রীর খোঁজে ‘ ট্র্যাক উইথ নিশাত’