এখন পর্যন্ত ভারতে বাংলাদেশের ছয়টি টেলিভিশন চ্যানেলের সম্প্রচার বন্ধ করেছে ইউটিউব। বাংলাদেশের এই চ্যানেলগুলোর ইউটিউব চ্যানেল দেখা যাচ্ছে না ভারত থেকে।

শনিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে তথ্য যাচাইকারী প্রতিষ্ঠান ডিসমিসল্যাব।

গতকাল শুক্রবার ডিসমিসল্যাব জানিয়েছিল যমুনা টিভি, একাত্তর টিভি, বাংলাভিশন এবং মোহনা টিভির ইউটিউব চ্যানেলের সম্প্রচার ভারত থেকে বন্ধ করেছে ইউটিউব।

আজ শনিবার ডিসমিসল্যাব তাদের হালনাগাদ প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বাংলাদেশের আরও দুটি টেলিভিশন চ্যানেল- সময় টিভি এবং ডিবিসি নিউজের ইউটিউব চ্যানেলের সম্প্রচারও ভারত থেকে বন্ধ করা হয়েছে। এই ছয়টি চ্যানেলই ইউটিউব ভেরিফায়েড (স্বীকৃত)। এদের মোট সাবস্ক্রাইবার ৫ কোটি ৪২ লাখের বেশি।

এতে বলা হয়, ভারতে এসব চ্যানেলের অনলাইন ঠিকানায় প্রবেশ করলে এই বার্তা দেখাচ্ছে যে– “এটি বর্তমানে এই দেশে প্রদর্শনের জন্য অনুমোদিত নয়, কারণ এটি জাতীয় নিরাপত্তা বা জনশৃঙ্খলার ভিত্তিতে সরকারি নিষেধাজ্ঞার আওতাভুক্ত। ভারতের তথ্যপ্রযুক্তি আইন, ২০০০-এর ৬৯ (ক) ধারার অধীনে, সরকারের কাছে এমন অধিকার রয়েছে—যদি কোনও তথ্য জাতীয় নিরাপত্তা, সার্বভৌমত্ব কিংবা জনশৃঙ্খলার জন্য হুমকি সৃষ্টি করে, তবে সেটি বন্ধ করার নির্দেশনা দিতে পারে।”

এদিকে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেছেন, এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার ইউটিউবের কাছে ব্যাখ্যা চাইবে। যদি সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা না পাওয়া যায়, তাহলে পাল্টা পদক্ষেপ।

বিষয়টি নিয়ে শুক্রবার রাতে ফয়েজ আহমদ নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি পোস্ট দেন। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘বাংলাদেশের অন্তত ৪টি টিভি স্টেশন জিও ব্লক করেছে ইউটিউব ভারত। ব্রডকাস্ট মিডিয়ামের ভৌগোলিক লোকেশন হিসেবে বাংলাদেশকে ব্লক করায় ভারতে বসবাসরত বাংলাদেশি নাগরিকদের যারা এসব চ্যানেল নিয়মিত দেখেন তাদের অধিকার ক্ষুণ্ন হচ্ছে। এমন কাজ কনজিউমার রাইটসের (ভোক্তা অধিকার) আন্তর্জাতিক নীতিবিরুদ্ধ বলেই প্রতীয়মান। আমরা ইউটিউবের কাছে এর ব্যাখ্যা চাইব। সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা না পেলে আমরা পাল্টা পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হব।’

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) মাধ্যমে আগামী দুই কর্মদিবসের মধ্যেই ইউটিউব কর্তৃপক্ষের কাছে ব্যাখ্যা চেয়ে চিঠি দেওয়া হবে। এসব চ্যানেল বৈধভাবে সম্প্রচার করে আসছে এবং কোনো ধরনের ভুয়া তথ্য বা উসকানিমূলক কনটেন্ট (আধেয়) প্রচারের প্রবণতা নেই।

ফয়েজ আহমদ আরও বলেন, ইউটিউব যদি বন্ধের বিষয়ে গ্রহণযোগ্য কোনো ব্যাখ্যা দিতে না পারে তাহলে ধরে নিতে হবে এটা ভারতের রাজনৈতিক পদক্ষেপ। সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশও একই পদক্ষেপ নেবে। কারণ বাংলাদেশ এসবের মধ্যে জড়াতে চায়নি।

বাংলাদেশের পদক্ষেপের বিষয়ে ফয়েজ আহমদ বলেন, রিপাবলিক বাংলাসহ ভারতের কিছু গণমাধ্যম বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নিয়মিতভাবে ভুল তথ্য ও বিভ্রান্তিমূলক প্রচার চালিয়ে আসছে। এ ধরনের কর্মকাণ্ডের প্রমাণ রয়েছে। তাই প্রয়োজনে এসব চ্যানেলের বিরুদ্ধেও বাংলাদেশও অনুরূপ ব্যবস্থা নেবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: এসব চ য ন ল পদক ষ প সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

পিআর পদ্ধতিতে স্থায়ী সরকারব্যবস্থা হয় না: সালাহউদ্দিন আহমদ

আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতির নির্বাচন ব্যবস্থা প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, পিআর পদ্ধতি হচ্ছে একটি পার্মানেন্ট রেস্টলেসনেস, যার মধ্য দিয়ে সব সময় অস্থিতিশীল পরিস্থিতি বিদ্যমান থাকে। এটা বিভিন্ন দেশে দেখা গেছে।

সালাহউদ্দিন আহমদ মন্তব্য করেন, পিআর পদ্ধতির মাধ্যমে কোনো স্থায়ী সরকারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয় না। কখনো সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে সরকার গঠন করা সম্ভব হয় না। একটি ঝুলন্ত পার্লামেন্ট থাকে।

আমরা পিআর মানে মনে করি, পাবলিক রিলেশনস। আমরা পিআর মানে মনে করি, জনসংযোগ। এখন সবাই জনসংযোগে আছে। সেই পিআরে আমরা বিশ্বাস করি।—সালাহউদ্দিন আহমদ, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য।

আজ মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন সালাহউদ্দিন আহমদ। জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ধর্মের ভিত্তিতে রাজনীতিতে কোনো বিভাজন বিএনপি চায়নি, চায়ও না। সামনেও দলটি এ ধরনের রাজনীতি করবে না। গণতান্ত্রিক সংস্কারের মাধ্যমে শক্তিশালী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সবাইকে অংশ নিতে হবে।

আরও পড়ুনপিআর সম্পর্কে ধারণা নেই ৫৬ শতাংশের২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

দেশের মানুষ পিআর পদ্ধতির বিপক্ষে বলেন সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি আরও বলেন, একটা জরিপে ৫৬ শতাংশ মানুষের পিআর পদ্ধতি সম্পর্কে ধারণা নেই বলে জেনেছেন। আরেক জরিপে দেখেছেন, কোনো একটা দল বলছে, ৭০ শতাংশ লোক পিআর চায়। এই দুই জরিপের প্রসঙ্গ তুলে ধরে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘যদি ৫৬ পার্সেন্ট মানুষ পিআর পদ্ধতি না-ই বোঝে, তাহলে ৭০ পার্সেন্ট মানুষ কীভাবে পিআর পদ্ধতি চায়, সেটি আমাদের বুঝে আসে না।’

পিআর পদ্ধতি প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আমরা পিআর মানে মনে করি, পাবলিক রিলেশনস। আমরা পিআর মানে মনে করি, জনসংযোগ। এখন সবাই জনসংযোগে আছে। সেই পিআরে আমরা বিশ্বাস করি। যারা প্রোপোশনাল রিপ্রেজেন্টেটিভ মানে, পার্মানেন্ট রেস্টলেসনেস প্রতিষ্ঠা করতে চায়, তারা সফল হবে না।’

আরও পড়ুনপিআর মানে হলো ‘পারমানেন্ট রেস্টলেসনেস’: সালাহউদ্দিন আহমদ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

দেশের জনগণ এখন নির্বাচনমুখী উল্লেখ করে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, দেশে এখন নির্বাচনী আমেজ চলছে। সব প্রার্থী, সম্ভাব্য প্রার্থী এবং জনগণ জনসংযোগে আছেন। এ অবস্থায় কোনো দল যদি বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে, নির্বাচন অনুষ্ঠান বাধাগ্রস্ত করতে চায়, তাহলে জনগণ তাদের চিহ্নিত করবেন। রাজনৈতিকভাবে তাদের প্রত্যাখ্যান করারও সম্ভাবনা আছে।

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক উত্তরণের প্রক্রিয়াতে বাধা সৃষ্টি করতে কেউ কেউ ষড়যন্ত্র করছে। এখানে আন্তর্জাতিক মহলও থাকতে পারে।

আরও পড়ুন‘৭০ ভাগ জনগণ পিআর পদ্ধতির পক্ষে সমর্থন জানিয়েছে’১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গাজীপুরে ড্রাম ট্রাকের ধাক্কায় অটোরিকশার ২ যাত্রী নিহত
  • ভাষাসংগ্রামী আহমদ রফিক মারা গেছেন
  • ভাষাসৈনিক আহমদ রফিক আর নেই
  • গবেষণালব্ধ বই যুগের আলোকবর্তিকা: ধর্ম উপদেষ্টা
  • বারডেম হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ভাষাসৈনিক আহমদ রফিক
  • পিআর পদ্ধতিতে স্থায়ী সরকারব্যবস্থা হয় না: সালাহউদ্দিন আহমদ