‘নগদে’ প্রশাসক নিয়োগ নিয়ে রিট খারিজের রায় স্থগিত
Published: 12th, May 2025 GMT
মোবাইলে আর্থিক সেবাদাতা (এমএফএস) প্রতিষ্ঠান ‘নগদ’ পরিচালনায় প্রশাসক নিয়োগ নিয়ে করা রিটটি গ্রহণযোগ্য নয় বলে তা খারিজ করে হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছিলেন, তা স্থগিত হয়েছে।
হাইকোর্টের রায় আট সপ্তাহের জন্য স্থগিত করে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত ৭ মে আদেশ দেন। এই সময়ের মধ্যে আবেদনকারীকে নিয়মিত লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) দায়ের করতে নির্দেশ দেওয়া হয়।
আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতের ৭ মে দেওয়া আদেশের অনুলিপি সোমবার হাতে পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন আবেদনকারী পক্ষের আইনজীবী।
এর আগে ‘নগদে’ প্রশাসক নিয়োগের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে নগদের স্বতন্ত্র পরিচালক মো.
হাইকোর্টের ওই রায় স্থগিত চেয়ে শাফায়েত আলম আপিল বিভাগে আবেদন করেন, যা আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে ৭ মে ওঠে। সেদিন শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি মো. রেজাউল হক ওই আদেশ দেন।
এ আদেশের অনুলিপি সোমবার হাতে পাওয়ার কথা জানান রিট আবেদনকারীপক্ষের অন্যতম আইনজীবী জামিলুর রহমান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘হাইকোর্টের রায় আট সপ্তাহের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। ফলে এই সময়ে প্রশাসক কার্যক্রম চালাতে পারবেন না।’
এর আগে গত বছরের ২১ আগস্ট বাংলাদেশ ব্যাংক নগদে প্রশাসক নিয়োগ বিষয়ে অভ্যন্তরীণ আদেশ জারি করে। প্রশাসক নিয়োগের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে নগদের স্বতন্ত্র পরিচালক মো. শাফায়েত আলমের করা রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট ‘নগদে’ প্রশাসক নিয়োগ প্রশ্নে রুল দেন।
২০০৪ সালের পরিশোধ ও নিষ্পত্তাব্যবস্থা আইনের ৩১(১) ও (২) ধারা প্রতিপালন না করে ‘নগদে’ প্রশাসক নিয়োগের গত ২১ আগস্টের মেমো (আদেশ) কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, রুলে তা জানতে চাওয়া হয়।
রুল বিচারাধীন থাকা অবস্থায় প্রশাসকের নীতিগত কার্যক্রম পরিচালনা নিয়ে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে রিট আবেদনকারী সম্পূরক আবেদন করেন। এর শুনানি নিয়ে গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর হাইকোর্ট প্রশাসকের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কার্যক্রম পরিচালনায় পক্ষগুলোকে অন্তর্বর্তী সময়ের জন্য স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে নির্দেশ দেন। পরে মেয়াদ বাড়ানো হয়। চূড়ান্ত শুনানি শেষে রিটটি গ্রহণযোগ্য নয় বলে রুল ডিসচার্জ (খারিজ) করে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট রায় দেন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আপ ল ব ভ গ র চ ম ব র গত বছর র
এছাড়াও পড়ুন:
১২ দিনের নতুন কর্মসূচি দিল জামায়াত
জুলাই জাতীয় সনদের ভিত্তিতে আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনসহ পাঁচ দফা দাবিতে ১ থেকে ১২ অক্টোবর কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। এর আগে একই দাবিতে সেপ্টেম্বর মাসে তিন দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছিল দলটি।
মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জামায়াতের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের আল ফালাহ মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন দলটির সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার।
আরো পড়ুন:
কক্সবাজারে ছাত্রলীগ কর্মীর ছুরিকাঘাতে জামায়াতের যুব বিভাগের নেতা নিহত
ক্ষমতায় গেলে কাউকে দাবি নিয়ে রাস্তায় দাঁড়াতে হবে না: জামায়াতের আমির
পাঁচ দফা দাবিতে আন্দোলনের পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণার জন্য এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
জামায়াত ঘোষিত কর্মসূচিগুলো হলো-
৫ দফা দাবির পক্ষে জনমত গঠনের লক্ষ্যে ১ অক্টোবর থেকে ৯ অক্টোবর পর্যন্ত সারা দেশে গণসংযোগ। এ উপলক্ষে মতবিনিময় সভা। গোলটেবিল বৈঠক। সেমিনার ইত্যাদি।
এছাড়া কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে ১০ অক্টোবর রাজধানীসহ সব বিভাগীয় শহরে গণমিছিল এবং ১২ অক্টোবর সারা দেশে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি পেশ।
যে পাঁচ দাবিতে কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে সেগুলো হলো-জুলাই জাতীয় সনদের ভিত্তিতে আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন আয়োজন করা। আগামী জাতীয় নির্বাচনে উভয় কক্ষে পিআর পদ্ধতি চালু করা। অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড (সবার জন্য সমান সুযোগ) নিশ্চিত করা। ফ্যাসিস্ট সরকারের সব জুলুম-নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা। স্বৈরাচারের দোসর জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার।
এতে বলা হয়, জামায়াতে ইসলামী জুলাই সনদকে আইনগত ভিত্তি দেওয়ার বিষয়ে জোরাল ভূমিকা পালন করে আসছে। জাতির ক্রান্তিলগ্নে ‘ডকট্রিন অব নেসেসিটি' হিসেবে অতীতের বিভিন্ন নজির ও উদাহরণ তুলে ধরে জুলাই সনদের আইনগত ভিত্তির বিষয়ে জামায়াতের অবস্থান বারবার ব্যক্ত করে আসছে। এ লক্ষ্যে জুলাই জাতীয় সনদের আইনগত ভিত্তি দেওয়ার জন্য আইন ও সংবিধান বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতে জামায়াত ইতোমধ্যে সরকারের কাছে দুটি প্রস্তাব করেছে।
প্রথমত, জুলাই জাতীয় সনদের জন্য ‘সংবিধান আদেশ' জারি করা। দ্বিতীয়ত, এই সনদের অধিকতর আইনি ভিত্তি দেওয়ার জন্য নির্বাচনের আগে গণভোট করে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করা।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়েছে, সেটা না হলে জুলাই সনদের আইনগত ভিত্তি ছাড়া ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে অর্জিত অভ্যুত্থান ও তার অর্জন ব্যর্থতায় পর্যবসিত হতে পারে।
জনগণের দাবিগুলো কার্যকর করতে সরকার কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না বলে জানিয়েছে জামায়াত।
জামায়াতের এর আগে ঘোষণা করা পাঁচ দফা জনগণের কাছে যৌক্তিক ও গ্রহণযোগ্য হয়েছে বলে জানিয়েছে দলটি। তাই জনগণের পাঁচ দফা দাবি মেনে নিয়ে জুলাই সনদের ভিত্তিতে আগামী ফেব্রুয়ারিতে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আয়োজন করার দাবি জানিয়েছে জামায়াত।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল হালিম ও হামিদুর রহমান আযাদ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য সাইফুল আলম খান, মিডিয়া ও প্রচার বিভাগের প্রধান এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুল প্রমুখ।
ঢাকা/রায়হান/সাইফ