আবু সাঈদ হত্যা মামলার তদন্তে ‘দৃশ্যমান অগ্রগতি না থাকায়’ ক্ষোভ বড় ভাইয়ের
Published: 15th, May 2025 GMT
রংপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যার ১০ মাস পার হলেও মামলার তদন্তে দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই বলে অভিযোগ করেছেন তাঁর বড় ভাই আবু হোসেন। তিনি বলেছেন, ‘জুলাই বিপ্লবের প্রথম শহীদ আবু সাঈদ। যার আত্মত্যাগের কারণে কোটা সংস্কার আন্দোলন পরবর্তী সময়ে গণ–অভ্যুত্থানে রূপ নেয়, দেশ ফ্যাসিস্ট–মুক্ত হয়; সেই আবু সাঈদের হত্যা মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য আজ আবু সাঈদের পরিবার ও সহযোদ্ধাদের মানববন্ধনে দাঁড়াতে হয়, এটা আমাদের জন্য লজ্জার।’
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে আবু সাঈদ হত্যা মামলার সুষ্ঠু তদন্ত, বিচার ও আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবিতে আয়োজিত মানববন্ধনে আবু হোসেন এ কথাগুলো বলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে এই মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
আবু হোসেন অভিযোগ করেন, পুলিশের নির্দেশদাতা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আসামি হলেও তাঁরা ধরাছোঁয়ার বাইরে। বিভিন্ন সূত্রে জানতে পারছেন, তাঁরা নিজ নিজ কর্মস্থলে বহাল তবিয়তে আছেন। এটার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান তিনি। আবু সাঈদ হত্যা মামলায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যাঁরা জড়িত, তাঁদের দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রেপ্তার ও আইনের আওতায় আনার দাবি জানান আবু হোসেন।
মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রংপুর মহানগর কমিটির সদস্যসচিব রহমত আলী, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র সমন্বয়ক শামসুর রহমান, আমির আলী প্রমুখ।
রহমত আলী বলেন, ‘আবু সাঈদ শহীদ হওয়ার ১০ মাস হলেও খুনিরা এখনো গ্রেপ্তার হয়নি। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিতে চাই, আপনারা আমাদের অনেকবার আশ্বস্ত করেছেন, কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি আবু সাঈদের হত্যায় জড়িত সেই পুলিশ এখনো ইউনিফর্ম পরে কর্মরত অবস্থায় আছে।’
গত বছরের ১৬ জুলাই রংপুরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে পুলিশের গুলিতে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ নিহত হন। একই বছরের ১৮ আগস্ট আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুন, রংপুর রেঞ্জের সাবেক উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) আবদুল বাতেন, রংপুর মহানগর পুলিশের সাবেক কমিশনার মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ঈদ র
এছাড়াও পড়ুন:
সোনারগাঁয়ে বিদ্যালয়ের মালামাল বিক্রির ঘটনায় ঝাড়ু-জুতা মিছিল
সোনারগাঁয়ে পঞ্চমীঘাট উচ্চ বিদ্যালয়ের মালামাল রাতের আধাঁরে গোপনে বিক্রির ঘটনায় জড়িতদের কঠোর শাস্তির দাবীতে ঝাড়ু ও জুতা মিছিল করেছেন বিদ্যালয়ের বর্তমান–সাবেক শিক্ষার্থী ও স্থানীয় এলাকাবাসী।
রবিবার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে সাদিপুর ইউনিয়নের পঞ্চমীঘাট স্কুলের সামনে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। অভিযুক্ত বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মনিরুজ্জামান ভূইয়া, সাবেক সভাপতি কামরুজ্জামান ভূইয়া মাসুম এবং একাধিক অভিযোগের মুখে থাকা প্রধান শিক্ষক মো. জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের প্রতি দাবি জানান তারা।
মানববন্ধনে সাদিপুর ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি তাজুল ইসলাম বলেন, “এ ইউনিয়নকে যেন ব্যক্তিগত সম্পত্তি মনে করে মাসুম ও মনিরুজ্জামান নিজেদের ইচ্ছেমতো সব কিছু সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন।
তাদের নেতৃত্বে বিদ্যালয়ের মালামাল রাতের আধাঁরে নিয়মবহির্ভূতভাবে বিক্রি করা হয়। পরে এলাকাবাসী মালামাল ভর্তি গাড়ি আটক করে। কিন্তু এখন উল্টো ভালো মানুষদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ ছড়ানো হচ্ছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি চাই।”
সাদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য হাবিবুর রহমান মাসুদ মোল্লা বলেন, “একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মালামাল চুরি করে বিক্রি করার মতো ন্যাক্কারজনক ঘটনা আমাদের ইউনিয়নের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছে।
স্কুলের মতো পবিত্র জায়গায় দুর্নীতি ও অনিয়ম কোনোভাবেই বরদাশত করা হবে না। এ ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “এলাকাবাসী রাতেই মালামাল আটকে দিয়ে প্রমাণ করেছে—এ এলাকার মানুষ অন্যায়ের বিরুদ্ধে সবসময় ঐক্যবদ্ধ। আমরা চাই প্রশাসন যেন বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করে।”
এলাকাবাসীরা জানান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মালামাল বিক্রির মতো ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে প্রয়োজন কঠোর নজরদারি ও পরিচালনা কমিটিতে সৎ-নিষ্ঠাবান ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্তি।
মানববন্ধন শেষে এলাকাবাসী ঝাড়ু ও জুতা প্রদর্শন করে দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতীকী প্রতিবাদ জানান।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত সাবেক সভাপতি কামরুজ্জামান ভূইয়া মাসুম জানান, একটি কুচক্রী মহল উদ্দেশ্যপ্রণীত ভাবে আমাদের বিতর্কিত করতে বিক্রি করা মালামাল চুরির ঘটনা সাজিয়েছে। আমরা তাদের বিরুদ্ধে গতকাল মিটিং করেছি৷
অভিযুক্ত বর্তমান কমিটির সভাপতি মনিরুজ্জামান ভূইয়া জানান, আমরা স্কুলের একটি কমিটি করে বিক্রি করেছি। তবেমাধ্যমিক শিক্ষা অফিস থেকে কোনো অনুমতি নেই নি। বিক্রি করার পর গাড়িতে উঠাতে রাত হয়ে যায়। এখানে কোনো চুরির ঘটনা ঘটে নি।
উল্লেখ্য, গত (৯ সেপ্টেম্বর) শনিবার স্কুল বন্ধ থাকা সত্ত্বেও সভাপতি ও প্রধান শিক্ষককের নির্দেশে রাতের আধাঁরে নিয়মবহির্ভূতভাবে পঞ্চমীঘাট স্কুলের মালামাল বিক্রি করা হয়। যা স্থানীয় এক ভাঙ্গারীর পিক-আপ ভ্যানে নেয়ার সময় স্থানীয়রা আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।