বাংলাদেশের প্রতিদিনকার খাবারের তালিকায় ‘ভাত’ যেন রাজাধিরাজ। সকালে, দুপুরে, রাতে ভাত যেন অনিবার্য এক অনুষঙ্গ। ভাত ছাড়া বাঙালী অসহায়। তবে ৫৩ বছর ধরে এক কণা ভাত মুখে তোলেননি নরসিংদীর রহমত আলী। 

রহমত আলীর বাড়ি নরসিংদীর পলাশ উপজেলার চরসিন্দুর ইউনিয়নে। বয়স ৫৩ বছর। শৈশব থেকেই ভাতের প্রতি তার তীব্র অনীহা। মুখে ভাত দিলেই শুরু হতো কান্না আর বমি। তাই একপর্যায়ে পরিবারও হাল ছেড়ে দেয়। খাবার হিসেবে তাই রুটি আর মুড়িকেই বেছে নেন তিনি।

রহমত আলীর ভাই মো.

সিরাজ বলেন, “জন্মের ছয় মাস বয়সে যখন শিশুরা ধীরে ধীরে ভাত খাওয়া শেখে, তখনই দেখা দেয় রহমতের ভিন্নতা। ভাতের গন্ধে বিরক্ত হতো। মুখে নিলেই বমি। দুই বছর বয়স পর্যন্ত চলেছিল দুধ, রুটি আর বিস্কুটের উপর নির্ভরতা। এরপর ধীরে ধীরে যোগ হয় মাছ, মাংস, মুড়ি আর ঝোল। তবে ভাতের ধারে-কাছেও নয়। বহুবার ভাত খাওয়ানোর চেষ্টা করা হয়েছে। জোর করে, ফুঁসলিয়ে, এমনকি অন্য খাবারের সঙ্গে ভাত মিশিয়েও খাওয়ানোর চেষ্টাও হয়েছে। কিন্তু ফল সেই একই বমি আর অসুস্থতা। চিকিৎসক, কবিরাজ, গ্রাম্য চিকিৎসা সব পথই অনুসরণ করা হয়েছে। কিন্তু কোনো সমাধান মেলেনি।”

এ বিষয়ে রহমত আলী বলেন, “ভাত খাওয়ার চেষ্টা করেছি বড় হওয়ার পর। কিন্তু মুখে নিলেই বমি আসে। গন্ধটাই সহ্য করতে পারি না। তিনবেলা রুটি, মুড়ি, ঝোল এই খেয়েই ভালো আছি। শুধু ভাত নয়, সবজির প্রতিও আগ্রহ কম। তবে বড় মাছ, মাংস আর ঝোল থাকলেই খুশি।”

অদ্ভুত এই খাদ্যাভ্যাস থাকলেও রহমত আলী শারীরিকভাবে বেশ সুস্থ। জ্বর-ঠান্ডা ছাড়া কোনো বড় ধরনের রোগে আক্রান্ত হননি কখনও। কৃষিকাজ করেই চলে তার সংসার, রয়েছে স্ত্রী, তিন মেয়ে ও এক ছেলে।

এ বিষয়ে পলাশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আব্দুল্লাহ আল মামুন বাপ্পী বলেন, “ভাত না খাওয়ার ফলে শরীরের কোনো বড় ক্ষতি হয় না। ভাত শর্করা জাতীয় খাবার। রুটি, আলু বা অন্যান্য খাবার থেকেও শর্করা পাওয়া যায়। এটা কোনো রোগ নয় বরং খাদ্যরুচির ভিন্নতা।”

রহমত আলী এলাকায় ‘ভাত না খাওয়া মানুষ’ নামে পরিচিত। আত্মীয়-স্বজনরাও আর কোনো প্রশ্ন তোলে না। সবাই মেনে নিয়েছে। রহমত আলী ভাত খায় না এবং খাবেও না। এটাই তার স্বাভাবিক জীবন।

ঢাকা/হৃদয়/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

ফেনী পুলিশ লাইন্সে সহকর্মীর বঁটির কোপে আনসার সদস্য আহত 

ফেনী পুলিশ লাইন্সে সহকর্মীর বঁটির কোপে মো. রহমত আলী (৫৪) নামে বিশেষ আনসারের এক সদস্য আহত হয়েছেন। অভিযুক্ত আনসার সদস্য আলী মনোয়ার হোসেনকে (৫৫) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

বুধবার (১৩ আগস্ট) দুপুর পৌনে ১টার দিকে পুলিশ লাইন্স মেসে ঘটনাটি ঘটে। 

এ ঘটনায় অভিযুক্ত আলী মনোয়ারকে আসামি করে পুলিশ লাইন্সের মেস ম্যানেজার নায়েক সুব্রত দাস বাদী হয়ে ফেনী মডেল থানায় মামলা করেছেন। ওই মামলায় আলী মনোয়ারকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। 

আরো পড়ুন:

রাঙামাটিতে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামীর যাবজ্জীবন

টাঙ্গাইলে ফারুক হত্যা: খালাসপ্রাপ্ত ১০ আসামিকে আত্মসমর্পণের নিরদে

আটক আলী মনোয়ার চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গার পাইকপাড়া এলাকার মৃত মোজায়েরের ছেলে। আহত রহমত আলী খুলনার ভাটিয়াঘাটা এলাকার মৃত সৈয়দ এমদাদ আলীর ছেলে। 

পুলিশ সূত্র জানায়, বিশেষ আনসারের দুই সদস্য ফেনী পুলিশ লাইন্সে দায়িত্বরত ছিলেন। দুপুরে পুলিশ লাইন্সের মেসে খাবার খেতে গিয়ে তারা বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। একপর্যায়ে রহমত আলীকে মেসের তরকারি কাটার জন্য রাখা বঁটি দিয়ে কুপিয়ে জখম করেন আলী মনোয়ার। ঘটনাস্থল থেকে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে ফেনী জেনারেল হাসপাতাল ও পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। তাৎক্ষণিক অভিযুক্ত আলী মনোয়ারকে আটক করে পুলিশ। 

ফেনী মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ সামসুজ্জামান বলেন, ‍“আহত আনসার সদস্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। অভিযুক্ত আনসার সদস্যকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।” 

ঢাকা/সাহাব/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ফেনী পুলিশ লাইন্সে সহকর্মীর বঁটির কোপে আনসার সদস্য আহত