আম উৎপাদনে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান সপ্তম। উৎপাদন-পরবর্তী বাজারজাতকরণ ও মিষ্টতা নির্ধারণ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমের স্বাদ গ্রহণ না করে মিষ্টতা নির্ণয় করা অসম্ভব। তাই পৃথিবীর অনেক দেশে মিষ্টতার পার্থক্যের ভিত্তিতে আম বাজারজাত করা হলেও, আমাদের দেশে হয় না। এ অবস্থায় ‘ই-নোজ’ প্রযুক্তি ব্যবহার করে আমের মিষ্টতা ও কঠিনতা নির্ণয়ের গবেষণা করেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) একদল গবেষক।
দেশে প্রথমবারের মতো ‘ই-নোজ’ এবং ‘এমকিউ সেন্সর’ ব্যবহার করে সাফল্য পেয়েছেন বলে দাবি করেছেন প্রধান গবেষক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষিশক্তি ও যন্ত্র বিভাগের অধ্যাপক ড.
ড. আনিসুর রহমান জানান, এমকিউভিত্তিক ইলেকট্রনিক নোজ (ই-নোজ) ব্যবহার করে আমের গুণমানের পূর্বাভাস প্রকল্পের আওতায় গত বছরের জুলাই থেকে গবেষণার কাজ শুরু হয়। এক বছর মেয়াদি এ প্রকল্প বাস্তবায়নে পাঁচ লাখ টাকা অর্থায়ন করেছে দেশের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়। ইতোমধ্যে এ প্রকল্পের একটি গবেষণাপত্র ‘কিউ ওয়ান’ জার্নালে ‘স্মার্ট এগ্রিকালচারাল টেকনোলজি’ প্রকাশিত হয়েছে।
বর্তমানে কৃষক ও ভোক্তা সবাই আম হাতে চেপে বা চোখের আন্দাজে জাত অনুযায়ী মিষ্টতা এবং কঠিনতা অনুমান করেন। এটি সব ক্ষেত্রে সঠিক হয় না। আবার এমন চাপ প্রয়োগে আমের গুণাগুণ দ্রুত নষ্ট হয়। এ সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে স্পর্শ ছাড়া আমের মিষ্টতা ও কঠিনতা নির্ণয় জরুরি।
আনিসুর রহমান আরও বলেন, ‘ই-নোজ বা ইলেকট্রনিক নোজ মূলত আম থেকে বের হওয়া ঘ্রাণ বা গ্যাসের মধ্যে অবস্থিত মিষ্টতা নির্ধারক পদার্থের পরিমাণ সেন্সরের মাধ্যমে নির্ণয় করতে পারে। একটি আম ই-নোজের চেম্বারে রেখে দিলে কিছুক্ষণের মধ্যে তা কতটুকু মিষ্টি বা শক্ত তা নির্ধারণ করে দেবে।’ খুব কম খরচে ই-নোজ ব্যবহার করে আমের মিষ্টতা নির্ণয় করা যাবে বলে জানান এ গবেষক।
গবেষণা কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত স্নাতকোত্তরে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী কাজী সাকিবুর রহমান বলেন, ‘ই-নোজ ব্যবহারের মাধ্যমে উন্নত দেশের মতো আমাদের দেশেও এখন মিষ্টতা অনুযায়ী আমসহ অন্যান্য ফলের শ্রেণি বিভাগ করা যাবে। এতে ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরাও চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী মিষ্টতার ভিত্তিতে ফল খেতে পারবেন।’
গবেষণাটি মাঠ পর্যায়ে খামারিদের কাছে পৌঁছে দিতে পারলে আমের বাজার ও ভোক্তা অনেক উপকৃত হবেন বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। v
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব যবহ র কর র রহম ন
এছাড়াও পড়ুন:
গজারিয়ায় পরিবারকে জিম্মি করে অর্ধলক্ষাধিক টাকার মালামাল লুট
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ার একটি বাড়িতে প্রবেশ করে অস্ত্রের মুখে পরিবারের সদস্যদের জিম্মি করে স্বর্ণালংকারসহ অর্ধলক্ষাধিক টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে ডাকাতরা।
রবিবার (২ নভেম্বর) মধ্যরাত ৩টার দিকে উপজেলার বালুয়াকান্দি ইউনিয়নের বালুয়াকান্দি দক্ষিণপাড়া এলাকার অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য ফজলুল হকের বাড়িতে ঘটনাটি ঘটে।
আরো পড়ুন:
ভাড়া নেওয়ার কথা বলে বাসায় ঢুকে গৃহবধূকে বেঁধে ডাকাতি
বগুড়ায় বৃদ্ধাকে খুন করে ডাকাতি: গ্রেপ্তার ৪, টাকা উদ্ধার
ভুক্তভোগী সাথী বেগম বলেন, “রাত ১টার দিকে একটি শব্দ পেয়ে আমার ঘুম ভাঙে। সে সময় বিষয়টি সেভাবে আমলে নেইনি। রাত ৩টার দিকে উঠে তাহাজ্জুতের নামাজ পড়তে বসলে জানালার গ্রিল কেটে বাসার ভেতরে প্রবেশ করে দুই যুবক। তারা প্রথমে আমাকে, পরে আমার ছেলে সাবিদকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে। পরে তারা আমাদের বিল্ডিংয়ের চারটি ফ্ল্যাটের প্রত্যেকটিতে একের পর এক লুট করতে থাকে। প্রায় ৪৫ মিনিট ধরে চলে এই ডাকাতি।”
তিনি বলেন, “ডাকতরা নগদ ৩ লাখ টাকা, ৩২ ভরি স্বর্ণালংকার ও ৯টি মোবাইল ফোন নিয়ে যায়। যাওয়ার সময় তারা আমাদের সবাইকে একটি রুমে আটকে রেখে বাহির থেকে তালা লাগিয়ে যায়।”
প্রত্যক্ষদর্শী সাবিদ বলেন, “জানালার গ্রিল কেটে রুমের ভেতরে প্রবেশ করে দুইজন। পরে ডাকাত দলের আরো ২২-২৩ জন সদস্য বাসার ভেতরে প্রবেশ করে। বাইরে আরো কয়েকজন পাহারায় ছিল। ডাকাত দলের অধিকাংশ সদস্যের মুখে মাস্ক ও গামছা ছিল। তারা অস্ত্রের মুখে আমাকে জিম্মি করে আমাকে দিয়েই অন্যান্য ফ্ল্যাটের দরজা খোলান। আমার চোখের সামনে একের পর এক রুমে ডাকাতি হয়।”
অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য ফজলুল হক বলেন, “আমার তিন ছেলে দেশের বাহিরে থাকে। তাদের পাঠানো প্রায় ৩২ ভরি স্বর্ণালংকার, কয়েকদিন আগে ব্যাংক থেকে তোলা নগদ ৩ লাখ টাকা ও ৯টি মোবাইল সেট লুট করে নিয়ে গেছে ডাকাতরা। তারা আমাদের পরিবার সম্পর্কে অনেক কিছু জানত। কোন রুমে কী আছে, আমরা কবে ব্যাংক থেকে টাকা তুলেছি এমনকি বাসায় ওয়াইফাই বন্ধ সবই জানত। আমার ধারণা, স্থানীয় লোক এর সঙ্গে জড়িত। আমি থানায় লিখিত অভিযোগ দেব।”
ভুক্তভোগীর প্রতিবেশী লাক মিয়া বলেন, “আমরা ভোর ৫টার দিকে বিষয়টি প্রথমে বুঝতে পারি। পরবর্তীতে বাইরে থেকে লক করা রুম খুলে আমরা আটকে থাকা পরিবারের সদস্যদের উদ্ধার করি। তারপর বিষয়টি জানাজানি হয়।”
রবিবার (৩ নভেম্বর) গজারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আনোয়ার আলম আজাদ বলেন, “সকাল ৬টার দিকে দিকে আমি ৯৯৯ থেকে একটি কল পেয়ে এ বিষয়ে জানতে পারি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। আমরা ঘটনাটি খতিয়ে দেখছি।”
ঢাকা/রতন/মাসুদ