মহাকাশ নিয়ে মানুষের জানার আগ্রহের শেষ নেই। আর তাই তো আরেকটি পৃথিবীর খোঁজ পেতে দীর্ঘদিন ধরেই অনুসন্ধান চালিয়ে যাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। সম্প্রতি আমাদের পৃথিবীর মতোই বিশাল এক গ্রহের সন্ধান পাওয়া গেছে। গ্রহটিতে পানি থাকার সম্ভাবনাও রয়েছে।

পৃথিবী থেকে প্রায় ১৫৪ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত নতুন গ্রহটির নাম রাখা হয়েছে টিওআই-১৮৪৬বি। প্রাথমিকভাবে গ্রহটির বয়স ৭২০ কোটি বছর বলে অনুমান করা হচ্ছে। সৌরজগতের বাইরে থাকা বিশাল গ্রহটিকে সুপার-আর্থ বা বরফ-পানির বিশ্ব হিসেবে অনুমান করা হচ্ছে।

মরক্কোর ওউকাইমেডেন অবজারভেটরির আবদেরাহমানে সৌবকিউর নেতৃত্বে বিজ্ঞানীদের একটি দল গ্রহটি আবিষ্কার করেছেন। এ জন্য তাঁরা ব্যবহার করেন নাসার ট্রানজিটিং এক্সোপ্ল্যানেট সার্ভে স্যাটেলাইট। এ বিষয়ে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছে, তাঁরা স্যাটেলাইটের তথ্যাদি ও স্থলভিত্তিক ফটোমেট্রিক ডেটা আর ইমেজিং বর্ণালি পর্যবেক্ষণ ব্যবহার করে গ্রহটির সন্ধান পেয়েছেন। গ্রহটির ব্যাসার্ধ পৃথিবীর ব্যাসার্ধের প্রায় ১ দশমিক ৭ গুণ। প্রতি ৯ দশমিক ৯৩ দিনে গ্রহটি তার নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণ করছে। গ্রহটির তাপমাত্রা ৫৬৮ কেলভিন বলে অনুমান করা হচ্ছে।

গ্রহটির মূল নক্ষত্র টিওআই-১৮৪৬ ধরে আবর্তন করছে। এই বছর এ নিয়ে দুটি সুপার আর্থের খোঁজ মিলল। আমাদের সৌরজগতের বাইরে অবস্থিত অপর সুপার-আর্থ গ্রহটির নাম এইচডি ২০৭৯৪ ডি। গ্রহটির ভর পৃথিবীর চেয়ে প্রায় ছয় গুণ বেশি।

সূত্র: এনডিটিভি

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গ রহট র

এছাড়াও পড়ুন:

সৌরজগতের বাইরে থাকা গ্রহের প্রথম ত্রিমাত্রিক মানচিত্র তৈরি

বৃহস্পতি গ্রহের চেয়ে ১০ গুণ বড় ‘ওয়াস্প-১৮ বি’ নামের দৈত্যকার একটি দূরবর্তী গ্যাসীয় গ্রহের ত্রিমাত্রিক মানচিত্র তৈরি করেছেন বিজ্ঞানীরা। নাসার জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের তথ্য ব্যবহার করে এবারই প্রথম সৌরজগতের বাইরে থাকা কোনো গ্রহের ত্রিমাত্রিক মানচিত্র তৈরি করা সম্ভব হয়েছে বলে দাবি করেছেন তাঁরা।

বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, এই যুগান্তকারী মানচিত্র গ্রহ বিজ্ঞানের একটি বড় পদক্ষেপ। সূর্যের বাইরের অন্য কোনো নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণ করা গ্রহের ত্রিমাত্রিক মানচিত্র এর আগে তৈরি করা হয়নি। মানচিত্র তৈরির এ কৌশল ব্যবহার করে মহাবিশ্বে আবিষ্কৃত ছয় হাজারের বেশি বহির্গ্রহকে আরও ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হবে।

বহির্গ্রহ নিয়ে বিজ্ঞানীদের আগ্রহ অনেক দিনের। সৌরজগতের বাইরের নানা ধরনের গ্রহ দেখা যায়। কিছু গ্রহ আছে যাদের দুষ্টু গ্রহ বলা হয়। এসব গ্রহ কোনো নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণ করে না। মহাবিশ্বে অনেকটা স্বাধীনভাবে বা বন্ধনহীনভাবে ভেসে বেড়ায়। নাসার এক্সোপ্ল্যানেট সায়েন্স ইনস্টিটিউটের তথ্যমতে, ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত মোট ৬ হাজার ২৮টি বহির্গ্রহ শনাক্ত করা হয়েছে। আরও প্রায় আট হাজার বহির্গ্রহ গ্রহের মর্যাদার পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছে।

বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, থ্রিডি ইক্লিপস ম্যাপিং কৌশল ব্যবহার করে ত্রিমাত্রিক মানচিত্রটি তৈরি করেছেন। এই প্রক্রিয়া স্পেকট্রোস্কোপিক ইক্লিপস ম্যাপিং নামেও পরিচিত। এর আগে বিজ্ঞানীরা ২০২৩ সালে জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের তথ্য ব্যবহার করে বহির্গ্রহের টুডি বা দ্বিমাত্রিক মডেল তৈরি করেছিলেন। বিভিন্ন বহির্গ্রহ পৃথিবী থেকে পর্যবেক্ষণ করা বিজ্ঞানীদের জন্য কঠিন বলে নতুন ত্রিমাত্রিক মানচিত্র বেশ উপকারী হবে।

বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ২০০৯ সালে আবিষ্কৃত ওয়াস্প-১৮ বি গ্রহের পৃষ্ঠের তাপমাত্রা ৫ হাজার ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত হতে পারে। গ্রহটির বায়ুমণ্ডলে জলীয়বাষ্পের উপস্থিত রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্বিজ্ঞানী রায়ান চ্যালেঞ্জার বলেন, ‘টেলিস্কোপ ও এই নতুন কৌশলটির মাধ্যমে আমরা আমাদের সৌরজগতের প্রতিবেশীদের মতোই বহির্গ্রহকে বোঝার সুযোগ পাব।’

সূত্র: স্পেস ডট কম

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সৌরজগতের বাইরে থাকা গ্রহের প্রথম ত্রিমাত্রিক মানচিত্র তৈরি