ইসরায়েলের তেল আবিবসহ তিন জায়গায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান। ইসরায়েলের হোলোন, তেল আবিব ও রামাতগনে বৃহস্পতিবার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। 

ইসরায়েলি গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় হোলোন শহরে তিনজন গুরুতর আহত হয়েছেন। তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

রামাতগন এলাকায় প্রায় ২০ জন হালকা আঘাত পেয়েছেন বলে জানানো হয়েছে। তেল আবিবও হামলার শিকার হয়েছে।

ইসরায়েলের সাহায্য সংস্থাগুলো বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, ইরানি হামলায় মোট আহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৫ জনে। ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনী এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এটি ছিল ‌‘ইরানি সশস্ত্র বাহিনীর ১৪তম শক্তিশালী সমন্বিত হামলা’ যা তারা বিভিন্ন কৌশলগত স্থাপনার ওপর চালিয়েছে। তবে এর চেয়ে বিস্তারিত কিছু জানায়নি তারা।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

সৌদি আরবে নজরকাড়া ‘ব্লু হোলস’

লোহিত সাগরের চোখজুড়ানো নীলাভ পানি। পাখির চোখে এই সাগরের একাংশের তলদেশে দেখা পাওয়া যাবে সারি সারি খাদের। খাদগুলোর গাঢ় নীল পানি সাগরে যোগ করেছে অনন্য এক রূপ। রঙের সঙ্গে মিলিয়ে এগুলোর নাম দেওয়া হয়েছে ‘ব্লু হোলস’ বা ‘নীল খাদ’।

এই ব্লু হোলসের অবস্থান সৌদি আরবে। দেশটির দক্ষিণ–পশ্চিমে পবিত্র মক্কা থেকে জাজান শহর পর্যন্ত সাগরের উপকূলজুড়ে রয়েছে খাদগুলো। অপরূপ সৌন্দর্যের কারণে একে সৌদি আরবের সবচেয়ে আকর্ষণীয় প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য বলা হচ্ছে। তবে এই সৌন্দর্য এক–দুই দিনে নয়, গড়ে উঠেছে লাখ লাখ বছর ধরে।

ছোটখাটো কোনো ঘটনার জেরেও এই খাদগুলো সৃষ্টি হয়নি। সাগরের গভীরে পাথরে ধরা ফাটল, পানির সঙ্গে মিশে যাওয়া চুনাপাথর, ভূগর্ভস্থ টেকটোনিক প্লেটের স্থানবদল এবং সাগরের নিচের গুহাগুলো ধসে পড়ার মাধ্যমে ধীরে ধীরে এই খাদগুলো তৈরি হয়েছে। তাই তো এই খাদগুলোকে বলা হচ্ছে ভূতাত্ত্বিকদের জন্য অমূল্য তথ্যের ভান্ডার।

খাদগুলোর মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা ফিরে যেতে পারবেন সুদূর অতীতে। খাদের দেয়াল ও নিচে স্তরে স্তরে জমে থাকা পলিমাটি থেকে জানতে পারবেন প্রাচীনকালের জলবায়ুর ধরন সম্পর্কে। বুঝতে পারবেন, কীভাবে বদল এসেছে সমুদ্রপৃষ্ঠে। গবেষণার সুযোগ রয়েছে, লোহিত সাগরের অববাহিকা কীভাবে ধীরে ধীরে বিকশিত হয়েছে, তা নিয়েও।

মধ্য আমেরিকার দেশ বেলিজ ও চীনেও সাগরের অগভীর তলদেশে এমন খাদ দেখা যায়। সৌদি আরবের প্রতিবেশী দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতেও তুলনামূলক ছোট আকারের এই খাদ রয়েছে। এমন খাদগুলোয় ভিন্ন একধরনের বাস্তুসংস্থান সৃষ্টি হয়। এখানে ঠিকানা তৈরি করে নেয় কচ্ছপ, প্রবাল প্রাচীর ঘিরে বসবাস করে মাছ, বিভিন্ন স্তন্যপায়ী প্রাণী—এমনকি অমেরুদণ্ডী প্রাণীও।

পরিবেশগত এসব কারণ এবং বৈজ্ঞানিক গুরুত্বের কথা চিন্তা করে লোহিত সাগরের খাদগুলোকে সংরক্ষিত এলাকা ঘোষণা করেছে সৌদি আরব। ১৬ হাজার ৫০০ বর্গকিলোমিটারের বেশি এলাকা এবং ২০টির বেশি দ্বীপ নিয়ে এই অঞ্চল এখন সৌদি আরবের সবচেয়ে বড় সংরক্ষিত এলাকা। সংরক্ষণের এই উদ্যোগের সঙ্গে মিল রয়েছে দেশটির ‘ভিশন–২০৩০’–এর লক্ষ্যেও।

ভিশন–২০৩০–এর একটি লক্ষ্য হলো, সংরক্ষিত প্রাকৃতিক এলাকার আকার বাড়ানো আর এর মাধ্যমে দেশি–বিদেশি মানুষকে পর্যটনে আগ্রহী করে তোলা। লোহিত সাগরের নজরকাড়া খাদগুলোর মাধ্যমে সেদিকেই এগিয়ে যাচ্ছে সৌদি আরব। আর এই খাদগুলো সম্পর্কে যত নিত্যনতুন রহস্য সামনে আসবে, তখন পর্যটকদের আগ্রহ আরও বাড়বে, তা বলাই চলে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ