পাথর লুট ঠেকাতে ধলাই সেতুর নিচে নৌকা চলাচলে নিষেধাজ্ঞা
Published: 20th, September 2025 GMT
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের ধলাই নদে বালু ও পাথর লুট ঠেকাতে নৌকা চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে উপজেলা প্রশাসন। নির্দেশনা অনুযায়ী, ধলাই সেতুর নিচের দুই পাশের ৫০০ মিটার এলাকা থেকে সাদাপাথর পর্যটনকেন্দ্র পর্যন্ত পর্যটকবাহী নৌকা ছাড়া অন্য নৌকা চলাচল করতে পারবে না।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ রবিন মিয়া বলেন, ধলাই সেতু রক্ষার পাশাপাশি পাথর ও বালু লুট ঠেকাতে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, এ বিষয়ে নির্দেশনা জারি করে গতকাল শুক্রবার বিকেল থেকে প্রচার করা হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দরা বলছেন, ধলাই সেতুর নিচের এলাকা থেকে পাথর ও বালু লুটপাটের কারণে সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। পাথর ও বালু লুটের প্রতিবাদে তাঁরা মানববন্ধন, বিক্ষোভ, স্মারকলিপি দেওয়ার কর্মসূচি পালন করেছেন। এরপরও ধলাই সেতুর নিচ থেকে অবৈধভাবে বালু ও পাথর লুট চলছিল।
বালু উত্তোলনের দায়ে দুজনের কারাদণ্ডগতকাল রাতে ধলাই সেতুর নিচ থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের দায়ে দুজনকে এক বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত। দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন কোম্পানীগঞ্জের ডাকঘর গ্রামের শফিক আহমেদ (৪০) ও মোহাম্মদ কুদ্দুস (৩০)।
গতকাল রাত দেড়টার দিকে কোম্পানীগঞ্জের ইউএনও মোহাম্মদ রবিন মিয়ার নেতৃত্বে পরিচালিত অভিযানে এ কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মহারশি নদীর বাঁধ ভেঙে ১১ বসতঘর ভেসে গেছে
টানা কয়েক দিনের ভারি বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার মহারশি নদীর বাঁধ ভেঙে কয়েকটি গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে ১১ বসতভিটা পানির স্রোতে ভেসে গেছে। ওই পরিবারগুলো স্থানীয় বিদ্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য জাহিদুল হক মনির জানান, বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুর দেড়টার দিকে মহারশি নদীর ব্রিজ সংলগ্ন খৈলকুড়া এলাকায় নদীর বাঁধ ভেঙে যায়। এতে কয়েকটি গ্রামের নিম্নাঞ্চল পানিতে তলিয়ে যায়। একইসঙ্গে ঝিনাইগাতী উপজেলা সদর বাজারে পানি প্রবেশ করে। স্রোতে অন্তত ১১টি বসতভিটা ভেসে গেছে।
ঝিনাইগাতী উপজেলার কৃষি অফিস জানিয়েছে, বাঁধ ভেঙে আকস্মিক বন্যায় ৫০টিরও বেশি মাছের ঘের ভেসে গেছে। ৩৪৫ হেক্টর জমির আমন ধান ও ১০ হেক্টর সবজি ক্ষেত নিমজ্জিত হয়েছে।
ঝিনাইগাতী বণিক সমিতির সভাপতি মোখলেছুর রহমান খান বলেন, ‘‘হঠাৎ করে নেমে আসা বন্যায় অনেক দোকানে পানি ঢুকে মালামাল নষ্ট হয়ে গেছে।’’ এমন পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ পেতে মহারশি নদীর পাশে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ, বাজার এলাকায় টেকসই ড্রেন নির্মাণের জোর দাবি জানান তিনি।
ইউপি সদস্য জাহিদুল হক মনির বলেন, ‘‘২০২২ সালের ঢলের পানিতে ব্রিজপাড়ের এই বাঁধ ভেঙে গেলেও সংস্কার হয়নি। তাই এ বছর একই জায়গায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। আমরা বারবার বলেছি কিন্তু পানি উন্নয়ন বোর্ড ব্যবস্থা নেয়নি।’’
শেরপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আখিনুজ্জামান বলেন, ‘‘মহারশি নদীর স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের জন্যে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশরাফুল আলম রাসেল বলেন, ‘‘বৃষ্টি না থাকায় নদীর পানি কমে এসেছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ চলছে। ক্ষতিগ্রস্তদের সরকারিভাবে সহায়তা করা হবে। ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়াতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে।’’
এদিকে, ঝিনাইগাতী উপজেলায় মহারশি নদীতে পাহাড়ি ঢলের পানিতে ভেসে আসা গাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ ইসমাইল হোসেনের (১৭) লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বিকালে ওই কিশোরের বাড়িতে গিয়ে তার পরিবারের সদস্যদের হাতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নগদ ২৫ হাজার টাকা দিয়েছেন ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশরাফুল আলম রাসেল।
ঢাকা/তারিকুল/বকুল