দুর্ঘটনায় একসঙ্গে এত মানুষের মৃত্যু দেখেননি কাজিয়াকান্দার মানুষ
Published: 21st, June 2025 GMT
ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার কাজিয়াকান্দা গ্রাম। ফুলপুর পৌর এলাকার এই গ্রামের ময়মনসিংহ-হালুয়াঘাট আঞ্চলিক সড়কে গতকাল শুক্রবার রাতে সড়ক দুর্ঘটনায় আটজনের প্রাণহানি ঘটেছে। একসঙ্গে এত মানুষের এমন মৃত্যু দেখেননি গ্রামের বৃদ্ধরাও। দুর্ঘটনার পর এলাকাটি আজ শনিবার সকালেও যেন শোকে স্তব্ধ।
আজ সকাল নয়টার দিকে দুর্ঘটনাস্থল কাজিয়াকান্দা গ্রামের ইন্দিরাপাড় এলাকায় নানা বয়সী নারী-পুরুষের ভিড় দেখা যায়। স্থানটির এখানে-সেখানে ছড়িয়ে আছে দুর্ঘটনাকবলিত যানবাহনের ভাঙা কাচের টুকরা ও লোহালক্কড়। এসব দেখে আক্ষেপ করছিলেন তাঁরা। আর পাশেই সরু রাস্তাটি দিয়ে দ্রুতগতিতে চলছিল কয়েকটি যানবাহন। এসব চালককে ধীরে গাড়ি চালানোর পরামর্শ দিচ্ছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা ও কৃষক রুহুল আমিন (৭৮)।
আরও পড়ুনমুহূর্তেই বাস-মাহিন্দ্রার সংঘর্ষ হয়, আহত অবস্থায় সবাই গড়িয়ে নিচের দিকে যাচ্ছিলেন২ ঘণ্টা আগেগতকালের দুর্ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে রুহুল আমিন বলেন, একটি লরি (ট্রাক্টর) নষ্ট হয়ে হালুয়াঘাটমুখী সড়কের একপাশে দাঁড়িয়ে ছিল। সেই লরিকে ওভারটেক করতে গিয়ে বাসের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে জড়ায় দ্রুতগতির মাহিন্দ্রাটি (অটোরিকশা)। মুহূর্তেই মাহিন্দ্রাটি দুমড়েমুচড়ে যায়। বিকট শব্দ শুনে দুর্ঘটনাস্থলে দৌড়ে যান তিনিসহ আরও কয়েকজন। সংঘর্ষের পর মাহিন্দ্রাটি বিদ্যুতের খুঁটিতে গিয়ে আছড়ে পড়ে। এর ভেতরে থাকা একটি মানুষও নড়াচড়া করতে পারেননি। সবাই একেবারে চিড়েচ্যাপটা হয়ে যান।
এই পর্যায়ে জামাল উদ্দিন (৪০) নামের আরেক বাসিন্দা বলে ওঠেন, ‘দুর্ঘটনার পর দৌড়ে এসে গাড়ির নিচ থেকে মানুষ টাইন্না তুলছি। মানুষগুলো বিকৃত হয়ে গেছিন, সবাই ছিল রক্তাক্ত ও চেপটানো। এত মরণ এই গেরামের মানুষ দেখে নাই।’
আরও পড়ুনময়মনসিংহে বাস-অটোরিকশা সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৮৩ ঘণ্টা আগেদুর্ঘটনাকবলিত যাত্রীবাহী বাস ও মাহিন্দ্রাটি ফুলপুর থানায় নিয়ে যান পুলিশ সদস্যরা। আজ সকাল ১০টার দিকে সেখানে গিয়ে দেখা যায় ট্রাক্টরের ওপরে তুলে আনা হয়েছে দুমড়েমুচড়ে যাওয়া মাহিন্দ্রাটি। পাশেই দুর্ঘটনাকবলিত বাসটি রাখা। বিক্ষুব্ধ জনতার ক্ষোভের আগুনে পুড়ে গেছে বাসটির ভেতরের অংশ। এসব যানবাহন দেখছিলেন স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা ও স্কুলশিক্ষার্থী। এ সময় কথা হয় আবদুর হামিদ নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘মাহিন্দ্রাটির যে অবস্থা হয়েছে, তাতে কোনো মানুষের বেঁচে থাকা সম্ভব ছিল না।’
সকাল সাড়ে ১০টার দিকে থানা থেকে ছোট ভাই কাজিম উদ্দিনের মরদেহ (২৮) নিতে আসেন লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার নিজ গুড্ডিমারী গ্রামের আবুল কালাম আজাদ। গতকালের দুর্ঘটনার সময় অটোরিকশার যাত্রী ছিলেন কাজিম। আবুল কালাম জানান, কাজিম তিন বছর ধরে হালুয়াঘাটে ইটভাটার খননযন্ত্রচালকের কাজ করতেন। তাঁর এক বছর আট মাস বয়সী একটি ছেলে আছে।
ফুলপুর থানা চত্বরেও দুর্ঘটনাকবলিত যানবাহন ঘিরে উৎসুক জনতা। আজ সকালে তোলা.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: দ র ঘটন কবল ত দ র ঘটন র স ঘর ষ
এছাড়াও পড়ুন:
সিএমজির সঙ্গে যৌথ পথচলায় আগ্রহী বাংলাদেশ বেতার
চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম চায়না মিডিয়া গ্রুপ—সিএমজির সঙ্গে পারস্পরিক বিনিময়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ বেতার।
বুধবার (৬ আগস্ট) দুপুরে সিএমজি বাংলার ঢাকা ব্যুরো অফিস পরিদর্শনে এসে এমন আগ্রহ প্রকাশ করেন বাংলাদেশের বেতারের মহাপরিচালক এ এস এম জাহিদ।
সিএমজি ও বাংলাদেশ বেতারের মধ্যে কীভাবে জয়-জয় সহযোগিতা বাড়াতে পারে সে লক্ষ্যে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় বাংলাদেশ বেতারের মহাপরিচালক ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন চীনা দূতাবাসের কালচারাল কাউন্সেলর লি শাও ফেং।
আরো পড়ুন:
সাহসী সাংবাদিক সম্মাননা পেয়েছেন বেরোবিসাসের ৫ সদস্য
ঢাকা পোস্টের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক কামরুল ইসলাম
সিএমজির বাংলা বিভাগের পরিচালক ইউ কুয়াং ইউয়ে আনন্দী বাংলাদেশ বেতারের প্রতিনিধি দলকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, “বাংলাদেশের শ্রোতাদের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য আমরা বাংলাদেশ বেতারের মাধ্যমে তুলে ধরতে চাই। দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নিয়ে আমরা একসঙ্গে কাজ করতে পারি।”
বাংলাদেশ বেতারের মহাপরিচালক এ এস এম জাহিদ বলেন, “আমরা সিএমজির সঙ্গে বাংলাদেশ বেতারের জয়-জয় সহযোগিতার সম্পর্ক গড়তে পারি। চীনের মেডিকেল, শিক্ষা, পর্যটন, বিনিয়োগের নানা বিষয় নিয়ে বাংলাদেশের মানুষের আগ্রহ আছে।”
এছাড়া চীনা ভাষা শেখার অনুষ্ঠান নিয়ে আগ্রহের কথাও জানান তিনি।
লি শাও ফেং বলেন, “চীন বাংলাদেশের সম্পর্ক আরো উচ্চতর পর্যায়ে নিয়ে যেতে দুই দেশের গণমাধ্যম একসঙ্গে কাজ করতে পারে।”
শুধু দুই সরকারের মধ্যে নয়, জনগণের মধ্যেও সম্পর্ক আরো গভীর করতে কাজ করার আগ্রহের কথা জানান তিনি।
বৈঠকে আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বেতারের অতিরিক্ত মহাপরিচালক আনোয়ার হোসেন মৃধা, প্রধান প্রকৌশলী মুনির আহমদ, উপ-মহাপরিচালক (বার্তা) মো. শরিফুল কাদের এবং অর্থ ও প্রশাসক বিভাগের পরিচালক রুবাইয়াত শামীম চৌধুরী এবং সিএমজি বাংলার ঢাকা ব্যুরোর সংবাদকর্মীরা।
ঢাকা/হাসান/সাইফ