জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০ শিক্ষক-কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসর দেওয়া হয়েছে। গতকাল শনিবার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের ২৬৯তম সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

আজ রোববার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এ এস এম আমানুল্লাহর সভাপতিত্বে ধানমন্ডির নগর কার্যালয়ে সিন্ডিকেটের সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক ও ১৯ জন কর্মকর্তার চাকরির মেয়াদ ২৫ বছর পূর্ণ হওয়ায় অবসরে পাঠানো হয়।

২৫ বছর চাকরির মেদায় হওয়ায় ঐচ্ছিক অবসর এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থে কোনো কর্মচারীকে অবসর প্রদান করার বিধান জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরি সংবিধিতে অন্তর্ভুক্ত করে চাকরি সংবিধি সংশোধন করার প্রস্তাব সিন্ডিকেটের ২৬৩তম সভায় অনুমোদিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষ সিনেট অধিবেশনে অনুসমর্থিত হওয়ায় উক্ত বিধি অনুযায়ী সিন্ডিকেট এই ২০ শিক্ষক ও কর্মকর্তাকে অবসর প্রদান করেছে।

যাঁরা বাধ্যতা অবসর পেলেন
 অধ্যাপক ড.

আবু মো. ইকবাল রুমী শাহ্,  উপ-রেজিস্ট্রার মো. হারুন অর রশিদ,  উপ-রেজিস্ট্রার সরকার মোহাম্মদ এরশাদ, উপ-রেজিস্ট্রার মাহাবুবা খানম, উপ-রেজিস্ট্রার নাদিরা বেগম, উপ-রেজিস্ট্রার মো. মামুনুর রশিদ, উপ-রেজিস্ট্রার সুব্রত সাহা, উপ-রেজিস্ট্রার মনজু সরকার, উপ-রেজিস্ট্রার মো. শাহাজামাল, উপ-রেজিস্ট্রার মো. ওয়াজিয়ার রহমান, উপ-রেজিস্ট্রার মো. রাফিজ আলী খান, উপ-রেজিস্ট্রার মো. আব্দুর রাকিব, উপ-পরিচালক মো. সুলতান উদ্দিন, উপ-পরিচালক মো. আসাদুজ্জামান খান, উপ-পরিচালক সাকিল আহম্মেদ, উপ-পরিচালক জাহানারা বেগম, সহকারী রেজিস্ট্রার আফরোজ আহমেদ বর্ণা, সহকারী রেজিস্ট্রার মাহফুজা খাতুন, সহকারী পরিচালক এ কে এম সেলিম রেজা এবং সেকশন অফিসার মানিক চক্রবর্তী।  

সিন্ডিকেট সভায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. মোখলেস উর রহমান, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব সিদ্দিক জোবায়ের, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক, অধ্যাপক ড. এ আই মাহবুব উদ্দিন আহমেদ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর মো. লুৎফর রহমান, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. নূরুল ইসলাম, ট্রেজারার প্রফেসর ড. এ টি এম জাফরুল আযম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. আমিনুল ইসলাম তালুকদার, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন, রেজিস্ট্রারসহ সিন্ডিকেটের অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে গত ১৭ ডিসেম্বর সিন্ডিকেটের ২৬৫তম সভায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আরো ২০ শিক্ষক-কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসর দেওয়া হয়।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: উপ র জ স ট র র ম কর মকর ত ক ব ধ যত

এছাড়াও পড়ুন:

বাঘ ও তিমির গল্প

গত ১৮ মে সিঙ্গাপুর যাচ্ছিলাম। ইউসুফ এস আহমেদ লিখিত এবং ইশতিয়াক হাসান অনূদিত উইথ দ্য ওয়াইল্ড অ্যানিমেলস অব বেঙ্গল বইটি অবসরে পড়ার জন্য সঙ্গে নিলাম। ইউসুফ এস আহমেদ একসময় পাকিস্তানের ইন্সপেক্টর জেনারেল অব ফরেস্ট ছিলেন। ১৯২৬ সালে তিনি বন বিভাগে যোগ দেন এবং ১৯৫৯ সালে অবসরে যান। তাঁর ৩৩ বছরের অভিজ্ঞতাসমৃদ্ধ বইটির ৪১ পৃষ্ঠায় লিখিত বক্তব্যটি আমার নজর কাড়ে। ততক্ষণে বিমান সিঙ্গাপুরের মাটি ছুঁয়েছে, যে দেশটি তার শেষ বাঘটি হারিয়েছে ১৯৩০ সালে।

ইউসুফ এস আহমেদ ১৯২৯ সালে সুন্দরবন ডিভিশনের দায়িত্ব পান। বন্য প্রাণীর প্রতি আগ্রহের কারণে শিগগিরই ‘ওয়াইল্ড ম্যান অব ফরেস্ট ডিপার্টমেন্ট’ নামে পরিচিতি পেলেন। তিনি লিখেছেন, ‘ভোলা নদীর ওপারে ধানসাগর গ্রাম সুন্দরবনের এই অংশে পুবের সীমানা হিসেবে কাজ করছে। ১৯২৯/১৯৩০ সালের শীতকাল। বাঘের চামড়া এবং মাথাসহ পুরস্কার দাবি করে একটি চিঠি এল স্থানীয় পুলিশ ক্যাম্প থেকে।’

বাঘটি ধানসাগর গ্রামে ঢুকে পড়লে স্থানীয় শিকারিদের সহায়তায় পুলিশের একজন অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব ইন্সপেক্টরের গুলিতে মারা পড়ে। ধানসাগর শরণখোলা উপজেলার অধীন বন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের অন্তর্গত। এটি প্রায় ১০০ বছর আগের ঘটনা।

শত বছর পর ইদানীং বাঘ-মানুষ দ্বন্দ্ব একটি পর্যায়ে এসেছে। বাংলাদেশ বন বিভাগের সহযোগিতায় ওয়াইল্ডটিম নামক সংগঠনটি সুন্দরবনের চারপাশে ‘ভিলেজ টাইগার রেসপন্স টিম’ গঠন করেছে। সুন্দরবনের প্রায় ৮০ শতাংশ গ্রামে এখন ৩৪০ জন স্বেচ্ছাসেবক ৪৯টি দলে ভাগ হয়ে প্রায় ১৮ বছর ধরে বাঘ-মানুষ দ্বন্দ্ব নিরসনে কাজ করে যাচ্ছেন। কোনো বাঘ গ্রামে ঢুকলেই এই দলের সদস্যরা বন বিভাগের সহযোগিতায় বাঘটিকে বনে ফিরিয়ে দেন। 

দেশের কোথাও বন্য প্রাণী, বিশেষ করে বাঘ মারলে একসময় এলাকায় তিনি ‘হিরো’ হয়ে যেতেন। এটি ছিল সামাজিক স্বীকৃতি। কিন্তু ব্রিটিশরা ভাবলেন, সুন্দরবনের যেসব এলাকা থেকে রাজস্ব বেশি আয় হয়, সেখানকার বনকর্মীদের পুরস্কৃত করলে ওই সব এলাকা বাঘশূন্য করা যাবে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের অধ্যাপক রঞ্জন চক্রবর্তী লিখেছেন, ১৬ নভেম্বর ১৮৮৩ সালে সরকার ‘ক্যালকাটা গেজেট’–এর মাধ্যমে ঘোষণা করলেন: একটি পূর্ণবয়স্ক বাঘ মারলে ৫০ রুপি এবং বাচ্চা মারলে ১০ রুপি পাওয়া যাবে। অবশ্য চামড়া ও মাথার খুলি জমা দিতে হবে। ১৯০৬ সালে এটি বাড়িয়ে ১০০ রুপি এবং ১৯০৯ সালে ২০০ রুপি করা হলো। ১৮৮১ থেকে ১৯১২ সাল পর্যন্ত ২ হাজার ৪০০টি প্রাপ্তবয়স্ক বাঘ মারা পড়েছে। যদিও এটি সরকারি হিসাব, বেসরকারি হিসাব কখনো জানা যায়নি। বাংলাদেশে একসময় প্রায় সর্বত্রই বাঘ ছিল, কিন্তু সুন্দরবনই আজ আমাদের ১২৫টি বাঘের শেষ আশ্রয়স্থল।

সিঙ্গাপুর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের লি কং চিয়ান প্রাকৃতিক ইতিহাস জাদুঘরে প্রদর্শিত তিমির কঙ্কাল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ শিক্ষক ও ১৯ কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসর
  • নেইমারের বাসায় গিয়ে ইয়ামাল বললেন ‘আমার ভাই’
  • বাঘ ও তিমির গল্প
  • ৫ সচিব বাধ্যতামূলক অবসরে