নারায়ণগঞ্জে দুই খুন : সাবেক কাউন্সিলরকে ‘হুকুমের আসামি’ করে ৪৩ জনের নামে হত্যা মামলা
Published: 23rd, June 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুটি পক্ষের সংঘর্ষে দুটি খুনের ঘটনায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। রাজমিস্ত্রি আবদুল কুদ্দুস (৭০) হত্যার ঘটনায় তাঁর মেয়ে রোখসানা আক্তার গতকাল রোববার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে বন্দর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
মামলায় বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা ও সিটি করপোরেশনের ২২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর হান্নান সরকারকে ‘হুকুমের আসামি’ করা হয়েছে। মামলায় বাবু ওরফে জুয়াড়ি বাবুসহ ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
আরও পড়ুননারায়ণগঞ্জে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আড়াই ঘণ্টার ব্যবধানে দুজন খুন২২ জুন ২০২৫বন্দর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সাইফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, আবদুল কুদ্দুস হত্যা মামলায় শাকিল ও জজ মিয়া নামের দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদিকে, একই সংঘর্ষে নিহত মেহেদী হাসান হত্যার ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছেন এই কর্মকর্তা।
আবদুল কুদ্দুসের জামাতা মিনার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার শ্বশুর আবদুল কুদ্দুস নিরীহ মানুষ ছিলেন। তিনি কখনো ঝগড়া-ঝামেলার সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। তাঁকে পরিকল্পিতভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।’ এ ঘটনায় আসামিদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি।
আরও পড়ুনএলাকায় থমথমে অবস্থা, আতঙ্কে দোকানপাট বন্ধ১৮ ঘণ্টা আগেগত শনিবার রাত ৯টার দিকে বন্দর শাহী মসজিদ এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও অটোরিকশাস্ট্যান্ড দখল নিয়ে বিএনপির হান্নান সরকার ও আবুল কাউসার–সমর্থিত দুটি পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে রাজমিস্ত্রি আবদুল কুদ্দুসকে কুপিয়ে হত্যা করেন প্রতিপক্ষের লোকজন। এই ঘটনার আড়াই ঘণ্টা পর রাত সাড়ে ১১টার দিকে মেহেদী হাসানকেও পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা হান্নান সরকার–সমর্থিত বাবু-মেহেদী এবং মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাবেক কাউন্সিলর আবুল কাউসার–সমর্থিত রনি-জাফর পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে আধিপত্য নিয়ে বিরোধ চলছিল। এই বিরোধের জেরেই ওই দুই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে এলাকাবাসীর ভাষ্য।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আবদ ল ক দ দ স ব এনপ র র ঘটন ঘটন য়
এছাড়াও পড়ুন:
ফতুল্লায় ময়লার স্তূপে পাঁচ বস্তা এনআইডি ও নির্বাচনীসামগ্রী
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লা স্টেডিয়াম এলাকায় ময়লার স্তূপ থেকে পাঁচ বস্তা জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি), পোলিং এজেন্টদের পরিচয়পত্র ও নির্বাচনী সিল উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল রোববার রাতে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের পাশ থেকে এগুলো উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, গতকাল সন্ধ্যায় একটি সাদা গাড়িতে করে কয়েকজন ফতুল্লা স্টেডিয়ামের সামনে ময়লার ভাগাড়ে কয়েকটি বস্তা ফেলে যান। স্থানীয় লোকজনের সন্দেহ হলে বস্তা খুলে দেখতে পান ভেতরে হাজারো এনআইডি কার্ড, পোলিং এজেন্টদের কার্ড ও সিল রয়েছে। খবর পেয়ে রাতে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে এবং এসব সামগ্রী নির্বাচন কমিশনের নারায়ণগঞ্জ অফিসে জমা দেয়।
স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা নাজমুল হাসান সাংবাদিকদের বলেন, ‘স্টেডিয়াম এলাকায় আমার একটি স মিল রয়েছে। সেখানে ময়লা না ফেলার জন্য দীর্ঘদিন ধরে প্রচার চালাচ্ছি। রোববার সন্ধ্যায় সাদা গাড়ি থেকে কয়েকজন লোক বস্তা ফেলে যায়। আমাদের কর্মীরা গিয়ে দেখতে পায়, এগুলো ময়লা নয়, বরং এনআইডি কার্ডসহ নির্বাচনীসামগ্রী। তখনই পুলিশে খবর দেওয়া হয়।’
এ ঘটনায় নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা সহকারী নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবদুস সাত্তার বাদী হয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।
জিডিতে উল্লেখ করা হয়েছে, নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লা মডেল থানার রামারবাগ এলাকায় স্টেডিয়ামের পাশে ময়লার স্তূপে গাজীপুর সদর উপজেলার বিভিন্ন নামের লেমিনেটিং করা প্রায় চার হাজার জাতীয় পরিচয়পত্র পড়ে ছিল। সংবাদ পেয়ে তাঁরা ঘটনাস্থলে যান এবং জাতীয় পরিচয়পত্রগুলো নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও অন্য কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে অফিসের হেফাজতে সংরক্ষণ করা হয়।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক সার্কেল) মো. হাসিনুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, উদ্ধার হওয়া লেমিনেটড এনআইডি কার্ডের সংখ্যা চার হাজার ও সিল পুরোনো। বিষয়টি নির্বাচন কমিশনকে জানানো হয়েছিল। তারা এসে ফতুল্লা মডেল থানায় একটি জিডি করে সেগুলো নিয়ে গেছে। তারা যদি মামলা দেয়, তাহলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।