উত্তর মেরু অভিযানে যাচ্ছেন বাংলাদেশি কিশোর আবদুল্লাহ
Published: 24th, June 2025 GMT
উত্তর মেরুতে এক রোমাঞ্চকর অভিযানে অংশ নিতে যাচ্ছেন বাংলাদেশের স্কুল শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল মাহমুদ। চলতি বছরের আগস্ট মাসে রাশিয়ার পরমাণু শক্তি চালিত আইসব্রেকার জাহাজে চড়ে এই পথ পাড়ি দেবেন তিনি। আবদুল্লাহ আল মাহমুদ ১৪-১৬ বছর বয়সী ২০ জন বিদেশি স্কুল শিক্ষার্থীদের মধ্যে একজন, যিনি এই অনন্য সুযোগ লাভ করেছেন।
অভিযানে বিদেশি শিক্ষার্থী ছাড়াও রাশিয়ার উন্মুক্ত এবং আন্তর্জাতিক নির্বাচন প্রক্রিয়া এবং অন্যান্য আঞ্চলিক ও বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী আরো ৪৫জন অংশ নেবেন।
মঙ্গলবার (২৪ জুন) বিকেলে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পরমাণু সংস্থা রোসাটম-এর সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
আরো পড়ুন:
শাবিপ্রবিতে নারীদের নিরাপত্তার দাবিতে ছাত্রশিবিরের স্মারকলিপি
উচ্চশিক্ষার মান উন্নয়নে ওবিই কারিকুলাম অপরিহার্য: বেরোবি উপাচার্য
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সম্প্রতি মস্কোতে ‘আইসব্রেকার অফ নলেজ’ শীর্ষক একটি আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান ও শিক্ষা প্রকল্পের অধীণে পরিচালিত প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিযোগিতায় বিজয়ী ২০ জন বিদেশি শিক্ষার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়। এটি ছিল এই প্রতিযোগিতার ষষ্ঠ আসর। রাশিয়ার পরমাণু শিল্পের ৮০ বছর এবং উত্তর সমুদ্র পথ আবিষ্কারের ৫০০ বছর পূর্তি উপলক্ষে এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।
চলতি বছর ‘আইসব্রেকার অফ নলেজ’ প্রতিযোগিতায় রাশিয়া ব্যাতীরেকে বাংলাদেশসহ বিশ্বের ২০টি দেশের ৩ হাজার ৫০০ এর অধিক ১৪-১৬ বছর বয়সী শিক্ষার্থীরা আবেদন করে। রোসাটমের সহায়তায় এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে রাশিয়ার পারমানবিক শিল্প তথ্যকেন্দ্র নেটওয়ার্ক। এবারের নির্বাচনী প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ, বেলারুশ, বলিভিয়া, ব্রাজিল, হাঙ্গেরি, ভিয়েতনাম, ভারতসহ ২০টি দেশের স্কুল শিক্ষার্থীরা অংশ নিয়েছিল। বাংলাদেশ থেকে অংশগ্রহণ করেছে রেকর্ড সংখ্যক ১৫৩ জন শিক্ষার্থী। এই প্রকল্পটির লক্ষ্য হলো- প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের বিভিন্ন ডিসিপ্লিন এবং পরমাণু প্রযুক্তির প্রচার।
প্রতিযোগিতাটি অনলাইনে goarctic.
চূড়ান্ত পর্বে অংশগ্রহণকারীদর একটি ভিডিও প্রেজেন্টেশন তৈরি করতে বলা হয়, যার মূল বিষয় ছিল- তাদের নিজস্ব ভাবনায় কীভাবে নিজের দেশের জনগণের জীবনযাত্রার উন্নয়নে পরমাণু প্রযুক্তি ব্যবহৃত হতে পারে। একটি আন্তর্জাতিক বিচারক প্যানেল প্রেজেন্টেশনগুলো মূল্যায়ন করে চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করে।
প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের বিভিন্ন ডিসিপ্লিন এবং পরমাণু প্রযুক্তির প্রচার ছাড়াও এই প্রকল্পটির অন্য একটি লক্ষ্য হলো- প্রতিভাবান শিশুদের খুঁজে বের করা এবং তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা ও ক্যারিয়ার গাইডেন্স প্রদান করা। চূড়ান্ত পর্বে বিজয়ীরা আইসব্রেকারে করে উত্তর মেরু অভিযানে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়ে থাকেন। গত ছয় বছরে বিভিন্ন দেশের ৩৫০ এর অধিক শিক্ষার্থী এই অভিযানে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছেন।
বর্তমানে বিশ্বে একমাত্র রাশিয়ারই একটি নিজস্ব পরমাণু শক্তিচালিত আইসব্রেকারের বহর রয়েছে। FSUE Atomflot নামক এই বহরে পরমাণু আইসব্রেকার সংখ্যা মোট আটটি।
ঢাকা/শাহীন/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর রকল প পরম ণ
এছাড়াও পড়ুন:
অ্যান্টার্কটিকায় সাগরের তলদেশে মাছের ভিন্ন আবাসস্থলের খোঁজ
অ্যান্টার্কটিকার পশ্চিম ওয়েডেল সাগরে ১ হাজারের বেশি মাছের আবাসস্থল খুঁজে পেয়েছে একটি ডুবো রোবট। সমুদ্রের তলদেশে থাকা আবাসস্থলটি বিক্ষিপ্ত অবস্থার বদলে সুস্পষ্ট নকশায় সজ্জিত। অ্যান্টার্কটিকার লারসেন সি আইস শেলফ বা বরফের স্তর থেকে বিশাল আইসবার্গ ভেঙে যাওয়ার পর উন্মোচিত হওয়া আবাসস্থলটি বহু দশক ধরে লোকচক্ষুর আড়ালে থাকা সুসংগঠিত প্রজননক্ষেত্রের দিকে ইঙ্গিত করছে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
বিজ্ঞানীরা ২৭ ঘণ্টার সমুদ্র তলদেশের ভিডিও বিশ্লেষণ করে মাছের আবাসস্থলের মানচিত্র তৈরি করেছেন। এ বিষয়ে যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব এসেক্সের বিজ্ঞানী রাসেল বি কনেলি বলেন, এই অভিযানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার হচ্ছে ছয়টি স্বতন্ত্র জ্যামিতিক বাসার নকশার খোঁজ। রিমোটলি অপারেটেড ভেহিকেলের মাধ্যমে অ্যান্টার্কটিক মাছের বাসার খোঁজ পাওয়া গেছে। রোবটের চোখে বক্ররেখা, রেখা, গুচ্ছ, ডিম্বাকৃতি, ইউ আকৃতি ও বিচ্ছিন্ন এককভাবে গোষ্ঠীভুক্ত বাসার অবস্থার চিত্র ধারণ করা হয়েছে। অ্যান্টার্কটিকার সাগরে এমন বাসার বিন্যাস মাছের সেলফিশ হার্ড বা স্বার্থপরভাবে গোষ্ঠীবদ্ধ থাকার তত্ত্বের সঙ্গে খাপ খায়। এই ধারণা অনুসারে শিকারি প্রাণীর হাত থেকে নিজেদের রক্ষা করতে প্রাণীরা তাদের প্রতিবেশী প্রাণীদের নিজেদের ও শিকারিদের মাঝে রাখে।
২০১৭ সালের জুলাই মাসে এ৬৭ আইসবার্গ লারসেন সি থেকে ভেঙে যায়। তখন বরফ ঢাকা এলাকায় গবেষণা শুরু হয়। বরফের খণ্ডটি প্রায় ২২৪০ বর্গমাইল এলাকাজুড়ে ছিল। বরফখণ্ড ভেসে যাওয়ার পরে সমুদ্রের তলদেশের বাসস্থানের তথ্য জানা যায়। ২০১৯ সালের ওয়েডেল সাগর অভিযানের সময় প্রকৌশলীরা এসএ আগুলহাস ২ জাহাজ থেকে রিমোটলি অপারেটেড ভেহিকেল পরিচালনা করে। রোবটে একটি ক্যামেরা ও লেজার আছে। রোবটের মাধ্যমে দেখা যায়, খোঁজ পাওয়া বাসা আসলে ইয়েলোফিন নোটি প্রজাতির। এই ছোট মাছ মেরু অঞ্চলের পানিতে পাওয়া যায়।
কমিশন ফর দ্য কনজারভেশন অব অ্যান্টার্কটিক মেরিন লিভিং রিসোর্সেস ওয়েডেল সি এমপিএ বা মেরিন প্রোটেক্টেড এরিয়া ঘোষণা করার পরিকল্পনা করেছে। পুরো গবেষণার ফলাফল ফ্রন্টিয়ার্স ইন মেরিন সায়েন্স সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে।
সূত্র: আর্থ