সংস্কারের মাধ্যমে নতুন গণতান্ত্রিক পদ্ধতি জনগণের কাছে উপস্থাপন করতে না পারলে গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা ব্যর্থ হবে এবং ঐকমত্য কমিশনের সব চেষ্টা ব্যর্থ হবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন। তিনি বলেন, ‘সাংবিধানিক পদে নিয়োগের জন্য সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান জনগণের চাওয়া। সে ধারণাটির বিপক্ষে বিএনপি ও এর সমমনারা অবস্থান নিয়েছে।

আমাদের আহ্বান থাকবে জনগণের মতামতের সঙ্গে সংহতি রেখে, জনগণের চাওয়াকে শ্রদ্ধায় রেখে এবং বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ রাষ্ট্রকাঠামো যেন এক ব্যক্তির কাছে সীমাবদ্ধ না থাকে, সে বিষয়টিকে নিশ্চিত করতে বিএনপি এবং সমমনা দলগুলো যেন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে নিয়োগের বিষয়ে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।

বুধবার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় দফা বৈঠকের ষষ্ঠ দিনের আলোচনা শেষে এ আহ্বান জানান আখতার হোসেন।

রাষ্ট্রের মূলনীতি হিসেবে কমিশনের সংশোধিত প্রস্তাবের বিষয়ে এনসিপির সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘কমিশন বিদ্যমান সংবিধানের মূলনীতি থাক বা না থাক, তাদের প্রস্তাবিত সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচার, গণতন্ত্র এবং ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সম্প্রীতি যুক্ত করার কথা বলেছে। আমরা মনে করি, বাংলাদেশের বাহাত্তরের সংবিধান বা পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে যেসব মূলনীতি যুক্ত করা হয়েছে, তা দলীয় মূলনীতি।

বাহাত্তরের সংবিধানের মুজিববাদী মূলনীতিগুলো গণ-অভ্যুত্থানের পক্ষের মূলনীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য নয়। এ কারণে এনসিপি মনে করে, সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক ন্যায়বিচার, গণতন্ত্র—এ বিষয়গুলোকে মূলনীতি হিসেবে গ্রহণ করতে হবে। আজকে মূলনীতির বিষয়ে ঐকমত্য হয়নি। আমরা প্রস্তাব রেখেছি, বাহাত্তরের সংবিধানের মূলনীতি বাদ দিয়ে প্রস্তাবিত মূলনীতিগুলো গ্রহণ করতে হবে।’

জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিলের (এনসিসির) পরিবর্তে সংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ কমিটি প্রস্তাব করেছে কমিশন। বিষয়টিতে একমত বলে জানিয়ে আখতার হোসেন বলেন, ‘নাম পরিবর্তনের বিষয়ে আমাদের আপত্তি নেই। এ কমিটির আওতা কী হবে, তা নিয়ে ঐকমত্য হয়নি। আমরা মনে করি নির্বাচন কমিশন, দুদক, পিএসসি, অডিটের মতো বিষয়গুলো আছে, সেগুলো যাতে এ কমিটি নিয়োগ করতে পারে।’

কয়েকটি দল অভ্যুত্থানের মাধ্যমে নতুন গণতান্ত্রিক কাঠামো দিয়ে রাষ্ট্রকে পরিচালনার মনস্তত্ত্বের সঙ্গে, জনগণের চাওয়ার সঙ্গে একাত্মতা নেই বলে মন্তব্য করেন আখতার হোসেন।

এনসিসির বিকল্প প্রস্তাবের বিষয়ে আখতার হোসেন বলেন, ‘যে সাতজনের মাধ্যমে নিয়োগ কমিটির কথা বলা হয়েছে; তাতে আমাদের প্রস্তাব হলো অন্তত পাঁচজনের ঐকমত্যের ভিত্তিতে নিয়োগ সম্পন্ন হয়, যার মধ্যে একজন বিরোধী দল থেকে হওয়া বাধ্যতামূলক থাকে। তার মাধ্যমে সংলাপ পরিস্থিতি তৈরি হবে। সরকারি ও বিরোধী দলের মেলবন্ধনের মাধ্যমে নিরপেক্ষভাবে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ কাজ শেষ হবে।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আখত র হ স ন প রস ত ব জনগণ র ঐকমত য এনস প

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে আগামী সপ্তাহে আবার আলোচনায় বসছে ঐকমত্য কমিশন

ছবি: প্রথম আলো

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সংখ্যাগরিষ্ঠরা কেন ন্যায্য হিস্যা পাবে না
  • সংস্কার: বাস্তবায়নের পথ খুঁজতে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠকে ঐকমত্য কমি
  • ‘আলংকারিক’ রাষ্ট্রপতিকে এভাবে ক্ষমতায়নের চেষ্টা নজিরবিহীন
  • নারী আসন নিয়ে ঐকমত্য কমিশনকে আবারও আলোচনায় বসতে হবে
  • নারীকে টোকেন হিসেবে রাখার মানসিকতা গ্রহণ করা হবে না: নাজিফা জান্নাত
  • প্রায় এক বছরেও নির্বাচন নিয়ে সংলাপের কোনো উদ্যোগ নেই: এবি পার্টি
  • বাস্তবায়ন পদ্ধতি নির্ভর করছে দলগুলোর ওপর
  • ঐকমত্য কমিশন বয়েজ ক্লাব: শাহীন আনাম
  • রাজনীতিতে পরিবর্তন ও ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে
  • জুলাই সনদ বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে আগামী সপ্তাহে আবার আলোচনায় বসছে ঐকমত্য কমিশন