সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ প্রস্তাবে বিএনপিকে একমত হওয়ার আহ্বান এনসিপির
Published: 26th, June 2025 GMT
সংস্কারের মাধ্যমে নতুন গণতান্ত্রিক পদ্ধতি জনগণের কাছে উপস্থাপন করতে না পারলে গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা ব্যর্থ হবে এবং ঐকমত্য কমিশনের সব চেষ্টা ব্যর্থ হবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন। তিনি বলেন, ‘সাংবিধানিক পদে নিয়োগের জন্য সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান জনগণের চাওয়া। সে ধারণাটির বিপক্ষে বিএনপি ও এর সমমনারা অবস্থান নিয়েছে।
আমাদের আহ্বান থাকবে জনগণের মতামতের সঙ্গে সংহতি রেখে, জনগণের চাওয়াকে শ্রদ্ধায় রেখে এবং বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ রাষ্ট্রকাঠামো যেন এক ব্যক্তির কাছে সীমাবদ্ধ না থাকে, সে বিষয়টিকে নিশ্চিত করতে বিএনপি এবং সমমনা দলগুলো যেন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে নিয়োগের বিষয়ে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।
বুধবার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় দফা বৈঠকের ষষ্ঠ দিনের আলোচনা শেষে এ আহ্বান জানান আখতার হোসেন।
রাষ্ট্রের মূলনীতি হিসেবে কমিশনের সংশোধিত প্রস্তাবের বিষয়ে এনসিপির সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘কমিশন বিদ্যমান সংবিধানের মূলনীতি থাক বা না থাক, তাদের প্রস্তাবিত সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচার, গণতন্ত্র এবং ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সম্প্রীতি যুক্ত করার কথা বলেছে। আমরা মনে করি, বাংলাদেশের বাহাত্তরের সংবিধান বা পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে যেসব মূলনীতি যুক্ত করা হয়েছে, তা দলীয় মূলনীতি।
বাহাত্তরের সংবিধানের মুজিববাদী মূলনীতিগুলো গণ-অভ্যুত্থানের পক্ষের মূলনীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য নয়। এ কারণে এনসিপি মনে করে, সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক ন্যায়বিচার, গণতন্ত্র—এ বিষয়গুলোকে মূলনীতি হিসেবে গ্রহণ করতে হবে। আজকে মূলনীতির বিষয়ে ঐকমত্য হয়নি। আমরা প্রস্তাব রেখেছি, বাহাত্তরের সংবিধানের মূলনীতি বাদ দিয়ে প্রস্তাবিত মূলনীতিগুলো গ্রহণ করতে হবে।’
জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিলের (এনসিসির) পরিবর্তে সংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ কমিটি প্রস্তাব করেছে কমিশন। বিষয়টিতে একমত বলে জানিয়ে আখতার হোসেন বলেন, ‘নাম পরিবর্তনের বিষয়ে আমাদের আপত্তি নেই। এ কমিটির আওতা কী হবে, তা নিয়ে ঐকমত্য হয়নি। আমরা মনে করি নির্বাচন কমিশন, দুদক, পিএসসি, অডিটের মতো বিষয়গুলো আছে, সেগুলো যাতে এ কমিটি নিয়োগ করতে পারে।’
কয়েকটি দল অভ্যুত্থানের মাধ্যমে নতুন গণতান্ত্রিক কাঠামো দিয়ে রাষ্ট্রকে পরিচালনার মনস্তত্ত্বের সঙ্গে, জনগণের চাওয়ার সঙ্গে একাত্মতা নেই বলে মন্তব্য করেন আখতার হোসেন।
এনসিসির বিকল্প প্রস্তাবের বিষয়ে আখতার হোসেন বলেন, ‘যে সাতজনের মাধ্যমে নিয়োগ কমিটির কথা বলা হয়েছে; তাতে আমাদের প্রস্তাব হলো অন্তত পাঁচজনের ঐকমত্যের ভিত্তিতে নিয়োগ সম্পন্ন হয়, যার মধ্যে একজন বিরোধী দল থেকে হওয়া বাধ্যতামূলক থাকে। তার মাধ্যমে সংলাপ পরিস্থিতি তৈরি হবে। সরকারি ও বিরোধী দলের মেলবন্ধনের মাধ্যমে নিরপেক্ষভাবে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ কাজ শেষ হবে।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আখত র হ স ন প রস ত ব জনগণ র ঐকমত য এনস প
এছাড়াও পড়ুন:
ককটেল নিক্ষেপ ও অগ্নিসংযোগ করলে গুলির নির্দেশ ডিএমপি কমিশনারের
কর্তব্যরত অবস্থায় পুলিশকে বা জনগণকে লক্ষ্য করে ককটেল নিক্ষেপ কিংবা গাড়িতে আগুন দিলে হামলাকারীকে গুলি করার নির্দেশ দিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী।
রবিবার (১৬ নভেম্বর) বিকেলে বেতার বার্তায় মাঠ পর্যায়ে নিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের এমন নির্দেশনা দেন তিনি। ডিএমপির একাধিক কর্মকর্তা বিষয়টি গণমাধ্যমের কাছে স্বীকার করলেও কেউ বক্তব্য দিতে রাজি হননি।
আরো পড়ুন:
অতিরিক্ত আইজি-ডিআইজিসহ পুলিশের ৩১ কর্মকর্তাকে বদলি
ক্লাস শেষে বাড়ি ফেরা হলো না শিক্ষকের
নাশকতাকারীদের লক্ষ্য করে গুলির নির্দেশ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএমপি কমিশনার বলেছেন, “হ্যাঁ, বলেছি। বলেছি, বাসে আগুন দিলে, পুলিশ ও জনগণের গায়ে আগুন দিয়ে গুলি করে দিতে বলেছি।”
এটা কি আইনে কাভার করে? জানতে চাইলে তিনি বলেন, “একশ’তে একশ’ কাভার করে। চাইলে আপনিও পারেন এটা!”
পুলিশ কিংবা নাগরিক নাশকতাকারীর বিরুদ্ধে কীভাবে ব্যবস্থা নিতে পারে, তা ব্যাখ্যা করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, “দণ্ডবিধির ৯৬ থেকে ১০৪ ধারাতে যা বলা আছে, সে অনুযায়ী, আপনিও পারেন এটা। তাতে বলা আছে যে, যেকোনো লোকের সম্পদ বা জানের হেফাজতের জন্য সে গুলি করতে পারে, তার যদি গান থাকে।”
তিনি বলেন, “সে আইন অনুযায়ী এই বার্তাটা আমি স্মরণ করায় দিলাম আমার কলিগদের যে, যে কোনো বাসে আগুন দিবে, তোমার গায়ে ককটেল মারবে, জনগণের গায়ে ককটেল মারবে, তুমি গুলি করে দিবা।”
উল্লেখ্য, দণ্ডবিধির ৯৬ ধারায় বলা হয়েছে, ‘ব্যক্তিগত প্রতিরক্ষার অধিকার প্রয়োগকালে কৃত কোনোকিছুই অপরাধ নহে।’
গত সপ্তাহে চট্টগ্রামে কয়েকটি ‘টার্গেট কিলিংয়ের’ পর দিশেহারা নগর পুলিশের কমিশনার হাসিব আজিজ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের গুলি করে হত্যার নির্দেশ দেন। গত ১১ নভেম্বর দুপুরে বেতার বার্তার মাধ্যমে এ নির্দেশনা দেন সিএমপি কমিশনার।
এর পরদিন সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সিএমপি কমিশনারের এই সিদ্ধান্তে উদ্বেগ জানায় মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)।
সংস্থাটি বলেছে, দেশের সংবিধান যেকোনো নাগরিকের জীবনের অধিকার এবং আইনের আশ্রয় পাওয়ার নিশ্চয়তা দেয়। সন্দেহভাজন অপরাধীকেও আইনি প্রক্রিয়া ছাড়া হত্যা বা গুলি চালানোর নির্দেশ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
ঢাকা/এমআর/রফিক