দফায় দফায় সময় বাড়লেও শেষ হয়নি সড়কের কাজ
Published: 26th, June 2025 GMT
কোনো রোগী রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে পারেন না। গরমের সময় বাড়িঘর, দোকানপাট ধুলোয় ঢেকে যায়। বৃষ্টির সময় কাদাপানিতে জীবন অতিষ্ঠ। এই সড়ক দিয়ে চলাচলে সুস্থ মানুষও অসুস্থ হয়ে পড়েন। সড়ক সংস্কারের দাবিতে মানববন্ধনে অংশ নিয়ে এসব কথা বলেছেন আবুল হোসেন নামে এক দোকানি।
দফায় দফায় সময় বাড়লেও বাগেরহাটের দশাআনি-রামপাল-মোংলা সড়কে নির্মাণকাজ শেষ হয়নি। এ কারণে দুর্বিষহ জীবন কাটছে এই সড়কে চলাচলকারী মানুষের। গতকাল বুধবার দুপুরে বাগেরহাট শহরের দশআনি ট্রাফিক মোড় এলাকায় সড়কটি দ্রুত সংস্কারের দাবিতে মানববন্ধন করা হয়েছে।
এলাকাবাসীকে বাঁচাতে হলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও বাগেরহাট সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীকে আইনের আওতায় আনতে হবে বলে দাবি করেছেন বক্তারা। তারা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মাহবুব ব্রাদার্সের কার্যাদেশ বাতিল করে, নতুন ঠিকাদার নিয়োগ দিয়ে দ্রুত কাজ সম্পন্ন করার দাবি জানান। অন্যথায় আরও কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন।
সরেজমিন দেখা যায়, নির্মাণকাজের জন্য বিভিন্ন স্থানে খোঁড়াখুঁড়ি করে রাখা হয়েছে। রাস্তার ওপরে এলোমেলো খোয়া, কিছুদূর পরপর বড় বড় গর্ত। এসব কারণে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে জেলার গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি। এতে দীর্ঘদিন ধরে ভাঙাচোরা সড়ক দিয়ে যাতায়াত করতে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন এলাকাবাসী।
স্থানীয় জেমিস মল্লিক বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এই সড়কের অবস্থা খুবই খারাপ। রাস্তা দিয়ে চলাচলের কোনো উপায় নেই। যখন-তখন দুর্ঘটনা ঘটে।
সড়ক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ৩৩ দশমিক ৮৭ কিলোমিটার বাগেরহাট-রামপাল-মোংলা সড়ক সংস্কারে ৪টি প্যাকেজে ৩টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ২০২২ সালের আগস্টে কার্যাদেশ দেওয়া হয়। ৮টি সেতু, ২১টি কালভার্ট, জমি অধিগ্রহণসহ নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৬৭ কোটি টাকা। প্রথম প্যাকেজে দশআনি থেকে হেলাতলা পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার সড়কের কাজ করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মাহাবুব ব্রাদার্স। দুই দফা সময় বাড়ানো হলেও প্রতিষ্ঠানটি ১৫ শতাংশ কাজও শেষ করতে পারেনি। গত ২২ মে ঠিকাদারের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করেছে সড়ক বিভাগ। নতুন ঠিকাদার নিয়োগের জন্য কাজ চলছে বলে জানান সড়ক বিভাগ, বাগেরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল ইসলাম।
তিনি বলেন, এই সড়কের ৪টি প্যাকেজের তিনটি প্যাকেজের প্রায় ৮০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। প্রথম প্যাকেজের কাজ দুই দফায় সময় বাড়িয়েও শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মাহবুব ব্রাদার্স; যার কারণে চুক্তি বাতিল করা হয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব গ রহ ট ব গ রহ ট সময় ব ড় এই সড়ক সড়ক র
এছাড়াও পড়ুন:
পে-স্কেল বাস্তবায়নের দাবিতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে মানববন্ধন
১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে নবম পে-স্কেল নবম পে-স্কেল বাস্তবায়নের দাবিতে মানববন্ধন করেছে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১ থেকে ২০তম গ্রেডের কর্মচারীরা।
বাংলাদেশ আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী ফেডারেশনের আহ্বানে রবিবার (১৬ নভেম্বর) পৃথকভাবে এ প্রতিবাদী কর্মসূচি পালন করেন তারা।
আরো পড়ুন:
বেরোবিতে যৌন হয়রানিকারীদের স্থায়ী বহিষ্কার দাবি
সাংবাদিক শামছুলের বিরুদ্ধে করা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত জিডি প্রত্যাহার দাবি
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি)
দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বরে কুবির ১১ থেকে ২০তম গ্রেডের কর্মচারীরা মানববন্ধন করেন।
মানববন্ধনে গণিত বিভাগের কম্পিউটার অপারেটর এ কে এম কামরুল হাসান বলেন, “মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা অপানি বৈষম্যবিহীন এবং দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার প্রকল্প হাতে নিয়েছেন। কিন্তু আমাদের পেটে যদি ভাত না থাকলে দুর্নীতি না, এর চেয়ে ভয়ংকর কিছু করতে বাধ্য হব। আমাদের যদি দুর্নীতিমুক্ত রাখতে চান তাহলে নবম পে-স্কেল দ্রুত বাস্তবায়ন করেন।”
তিনি আরো বলেন, “আপনারা যদি কর্মচারীদের এভাবে দাবিয়ে রাখেন তাহলে দেশ অচল হয়ে যাবে। সবসময় দেশ দুর্নীতিতে প্রথম হবে। দেশকে দুর্নীতি মুক্ত করার জন্য দেশের কর্মচারীদের একটি মানসম্মত পে-স্কেল দিতে হবে আগামী ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে।”
বাংলাদেশ আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী ফেডারেশনের সহ-সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক মো. মাসুদ আলম বলেন, “কর্মচারীদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার একটা পে কমিশন গঠন করেন এবং বাংলাদেশের পেশাজীবী সংগঠনগুলোকে আমন্ত্রণ জানিয়ে ছিলেন। তখন থেকেই আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী ফেডারেশনের দাবি জানিয়েছেন, ১৫ ডিসেম্বর এর মধ্যেই আমরা একটি প্রজ্ঞাপন চাই। কিন্তু এই সরকার আমাদের সঙ্গে প্রতারণার ফাঁদ পেতেছেন নানা রকম অজুহাতে।”
নবম পে-স্কেল বাস্তবায়নে প্রহসন চলছে অভিযোগ করে তিনি আরো বলেন, “নবম পে-স্কেল আমাদের প্রাণের দাবি। কমিশন গঠন করেছেন আপনারা, নতুন স্বপ্ন দেখিয়েছেন আপনারা। নতুন পে-স্কেল আপনারাই বাস্তবায়ন করবেন।”
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়
নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী সমিতির উদ্যোগে দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে আগামী ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫-এর মধ্যে দাবি মেনে নেওয়ার আল্টিমেটাম দেওয়া হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, ২০১৫ সালে ঘোষিত অষ্টম পে–স্কেলে ১১ থেকে ২০ গ্রেডের কর্মচারীরা চরম বৈষম্যের শিকার হয়েছেন। ২০ থেকে ১৯ গ্রেডে বেতন বেড়েছে মাত্র ২০০ থেকে ৩০০ টাকা, সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা। অথচ ১১ থেকে ১০ গ্রেডে এই পার্থক্য ছিল ৪০০০ থেকে ৫০০০ টাকা পর্যন্ত।
এমনকি ওপরের দিকের কিছু গ্রেডে ১০ হাজার টাকারও বেশি ব্যবধান তৈরি করা হয়েছে দাবি করে কর্মচারী নেতারা বলেন, সাধারণত প্রতি ৫ বছর অন্তর নতুন পে–স্কেল দেওয়া হলেও ২০১৫ সালের পর দীর্ঘ ১০ বছরেও নতুন স্কেল বাস্তবায়ন করা হয়নি। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি কর্মচারীরা বিশেষ আশাবাদী ছিলেন। সরকার বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে বৈঠক করলেও বর্তমানে বলা হচ্ছে—এই সরকারের সময় পে–স্কেল বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। বক্তারা সরকারের এমন অবস্থানের তীব্র নিন্দা জানান।
কর্মচারী সমিতির সভাপতি নজরুল ইসলাম কাজলসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য দেন।
গত জুলাই মাসে নতুন পে কমিশন গঠন করা হয় এবং এই কমিশনকে ৬ মাসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়। যার পরিপ্রেক্ষিতে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা ছিল অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের। তবে অর্থ উপদেষ্টা জানান, এখন হচ্ছে না নতুন পে স্কেল। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবে আগামী নির্বাচিত সরকার।
ঢাকা/এমদাদুল/মুজিবুর/মেহেদী