২০ মাসে মধ্যপ্রাচ্যের পাঁচ অঞ্চলে ইসরায়েলের ৩৫ হাজার হামলা
Published: 27th, June 2025 GMT
২০ মাসের বেশি সময় ধরে ফিলিস্তিন ভূখণ্ডসহ মধ্যপ্রাচ্যের চার দেশে প্রায় ৩৫ হাজার হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি হামলা হয়েছে ফিলিস্তিনে। ইসরায়েলের হামলার শিকার হওয়া দেশ চারটি হলো—ইরান, সিরিয়া, লেবানন ও ইয়েমেন।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অলাভজনক প্রতিষ্ঠান আর্মড কনফ্লিক্ট লোকেশন অ্যান্ড ইভেন্ট ডেটা প্রজেক্ট (এসিএলইডি) এ তথ্য তুলে ধরেছে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ফিলিস্তিনের গাজায় হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। এরপর গত ২৩ জুন ইরানের সঙ্গে যুদ্ধবিরতিতে যায় ইসরায়েল। মাঝের ২০ মাসের বেশি সময়ে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন অঞ্চলে ইসরায়েলের হামলার তথ্য বিশ্লেষণ করেছে এসিএলইডি।
এসিএলইডির নথিবদ্ধ তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েল সবচেয়ে বেশি অন্তত ১৮ হাজার ২৩৫টি হামলা চালিয়েছে ফিলিস্তিনিদের ভূখণ্ড লক্ষ্য করে। লেবাননে ১৫ হাজার ৫২০টি হামলা চালিয়েছে দেশটি। এরপর যথাক্রমে সিরিয়ায় ৬১৬টি, ইরানে ৫৮টি ও ইয়েমেন ৩৯টি হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী।
মধ্যপ্রাচে্য চালানো এসব হামলায় মধ্যে রয়েছে যুদ্ধবিমান ও ড্রোনের ব্যবহার, গোলাবর্ষণ, ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ, দূরনিয়ন্ত্রিত বোমা বিস্ফোরণ এবং সুপরিকল্পিতভাবে সম্পত্তি ধ্বংস করা।
গাজায় ৬২৮ দিনের বেশি সময় ধরে ধ্বংসাত্মক অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। উপত্যকাটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, সেখানে এখন পর্যন্ত ৫৬ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। গাজায় হামলা চালাতে ইসরায়েলের ব্যবহার করা কৌশলের অনেকগুলোই এখন অধিকৃত পশ্চিম তীরে জমি দখল ও নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে কাজে লাগানো হচ্ছে। জাতিসংঘের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, পশ্চিম তীরে গত ২০ মাসে প্রায় ১ হাজার ফিলিস্তিনিকে হত্যা করা হয়েছে।
গাজা সংকটের মধ্যেই ইসরায়েল ও লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর মধ্যে প্রায় ১৪ মাস ধরে সংঘাত হয়। ২০২৪ সালের ২৭ নভেম্বর যুদ্ধবিরতিতে যায় দুই পক্ষ। সংঘাতটি চলেছিল দুই দেশের সীমান্তে। এতে হাজারের বেশি মানুষ নিহত হন।
সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের পতনের দুই দিন পর ২০২৪ সালের ১০ ডিসেম্বর দেশটিতেও ব্যাপক হামলা শুরু করে ইসরায়েল। সিরিয়ার প্রধান বিমানবন্দর, আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা, যুদ্ধবিমান ও অন্যান্য কৌশলগত স্থাপনায় হামলা চালিয়ে ধ্বংস করে দেয় ইসরায়েল। এসিএলইডির হিসাবে, গত ছয় মাসে সিরিয়াজুড়ে ২০০টির বেশি হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী।
ইয়েমেনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হুতি নিয়ন্ত্রিত বিভিন্ন অবকাঠামোতেও হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। গত বছরের শেষের দিকে এই হামলা তীব্র আকার ধারণ করে। ২০২৫ সালেও হামলা হয়েছে।
ইসরায়েলের ধারাবাহিক এসব হামলায় সর্বশেষ যুক্ত হয় ইরানের নাম। ১৩ জুন থেকে টানা ১২ দিন পাল্টাপাল্টি হামলা চালায় দুই দেশ। এরপর ২৩ জুন যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয় তারা।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে বিএনপির মাসব্যাপী কর্মসূচি
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে মাসব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। আগামী ৩০ জুন থেকে ৬ আগস্ট পর্যন্ত এ কর্মসূচি পালন করবে দলটি। গণঅভ্যুত্থান, শোক ও বিজয়ের বর্ষপূর্তি পালন কমিটির ব্যানারে এসব কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, আলোচনা সভা, রক্তদান, গ্রাফিতি, পথনাটক, ফুটবল টুর্নামেন্ট, শিশু অধিকার-বিষয়ক অনুষ্ঠান, ডেঙ্গু ও করোনা প্রতিরোধে জনসচেতনতামূলক কার্যক্রমসহ ২২টি ভিন্নধর্মী আয়োজনের মাধ্যমে ‘জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান’কে স্মরণ করবে বিএনপি।
কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে– ৩০ জুন শহীদ মিনারে (রাত) ছাত্রদলের উদ্যোগে ‘আলোয় আলোয় স্মৃতি সমুজ্জ্বল’; ১ জুলাই বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে ঢাকা বাস্তবায়ন কমিটির উদ্যোগে সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে ‘গণঅভ্যুত্থান ২০২৪: জাতীয় ঐক্য ও গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা’শীর্ষক আলোচনা সভা ও শহীদ পরিবারের সম্মানে বিশেষ অনুষ্ঠান; ৩ জুলাই ড্যাবের উদ্যোগে দেশব্যাপী রক্তদান কর্মসূচি; ৫ জুলাই ঢাকা ধানমন্ডি ক্লাব মাঠে ফুটবল টুর্নামেন্ট; ৯ জুলাই ঢাকা বাস্তবায়ন কমিটির উদ্যোগে সেমিনার; ১১ জুলাই জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থার উদ্যোগে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান; ১২ জুলাই ছাত্রদলের উদ্যোগে ছাত্রদলের সব শহীদ পরিবারের সঙ্গে তারেক রহমানের মতবিনিময় সভা; ১৪ জুলাই ঢাকা (শহীদ মিনার) বাস্তবায়ন কমিটির সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সারদের নিয়ে অনুষ্ঠান; ১৫ জুলাই ছাত্রদলের উদ্যোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণঅভ্যুত্থানের বাঁক বদলের দিন (বিশেষ আলোচনা অনুষ্ঠান); ১৬ জুলাই ছাত্রদলের উদ্যোগে শহীদ ওয়াসিম ও শহীদ আবু সাঈদ স্মরণে চট্টগ্রাম ও রংপুরে ছাত্র সমাবেশ; ১৭ জুলাই ছাত্রদলের উদ্যোগে ঢাবিতে স্মরণসভা; ১৮ জুলাই ওলামা দলের উদ্যোগে দেশব্যাপী দোয়া মাহফিল, মৌন মিছিল ও কালো ব্যাজ ধারণ; ১৯ জুলাই বসুন্ধরা কনভেনশন সেন্টার ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের উদ্যোগে ‘গণঅভ্যুত্থান ২০২৪-এ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়’; ২০ জুলাই কৃষক দল ও আমরা বিএনপি পরিবারের উদ্যোগে সবুজ পল্লবে স্মৃতি অম্লান (শহীদ জিয়া উদ্যান ও সারাদেশে বৃক্ষরোপণ)।
২১ জুলাই ঢাকা গণঅভ্যুত্থানে পেশাজীবীদের অবদান নিয়ে আলোচনা; ২২ জুলাই ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে নারীদের অবদান; ২৩ জুলাই শাহবাগে মোমবাতি প্রজ্বালন বাস্তবায়ন কমিটির উদ্যোগে ‘স্মৃতিস্তম্ভ: জুলাই-এ লাশের সারি’; ২৪ জুলাই দৃক গ্যালারিতে ফ্যাসিবাদের ছবি ও কার্টুন প্রদর্শনী; ২৫ জুলাই দৃক গ্যালারিতে ফ্যাসিবাদের ছবি ও কার্টুন প্রদর্শনী (কূটনীতিকদের জন্য সংরক্ষিত); ২৬ জুলাই মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে বাস্তবায়ন কমিটির উদ্যোগে গ্রাফিতি অংকন– ‘গণঅভ্যুত্থান ২০২৪ দেশে দেশে’ কর্নার ‘গণসংগীত’; ২৭ জুলাই বিভাগীয় পর্যায়ে গ্রাফিতি অঙ্কন; ২৮ জুলাই ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক দলের উদ্যোগে ডেঙ্গু প্রতিরোধে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান; ২৯ জুলাই ‘আমরা বিএনপি পরিবার ও মায়ের ডাক’ গণতান্ত্রিক পথযাত্রায় শিশু; ৩০ জুলাই ‘নারকীয় জুলাই’ (সাভার-আশুলিয়া থানায় লাশ পোড়ানোর স্থানে জনসভা);
৩১ জুলাই ঢাকাসহ সারাদেশে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের উদ্যোগে মার্চ ফর জাস্টিস; ১ আগস্ট ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির উদ্যোগে গণঅভ্যুত্থান-২০২৪ এর বিশেষ স্থান যাত্রাবাড়ী, রামপুরা, উত্তরা ও মিরপুরে জনসভা; ২ আগস্ট নয়াপল্টনে জনতার জুলাই-আগস্ট; জনতার কারফিউ (পথনাটক)– ‘পালাব না, কোথায় পালাব?, শেখ হাসিনা পালায় না’; ৩ আগস্ট শহীদ মিনারে ছাত্রদলের উদ্যোগে ছাত্র সমাবেশ; ৪ আগস্ট যুবদলের উদ্যোগে ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলন ও আমার না বলা কথা’ কর্মসূচি; ৬ আগস্ট গণঅভ্যুত্থান ২০২৪: ছাত্র-জনতার বিজয় মিছিল করবে বিএনপি।